History of dakshin dinajpur, bangla bible, DAKSHIN DINAJPUR, Uttar DINAJPUR, Malda, chiristanity, santhal,indian tribe,mahli tribe, unknown facts, tourist place of Malda, tourist place of Dakshin DINAJPUR ,bible, bible story, bible story in bangla,dakshin dinajpur news,adibashi,sautal,indian tribe culture,

TRANSLATE ARTICLE TO YOUR LANGUEGE

বৃহস্পতিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

গঙ্গারামপুর পিরপাল দরগা বখতিয়ার খিলজির সমাধি।

দক্ষিন দিনাজপুর আমাদের প্রীয় জেলা। আর এই জেলার বিভিন্ন এলাকাই ছরিয়ে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন কালের বিভিন্ন ঐতিহাসিক সাক্ষি বহনকারী বিভিন্ন ধংসাবশেষ। কিন্তু দুংখের বিষয় হল যদিও প্রশাসন এগুলি রক্ষার্তে এগিয়ে এসেছে, তবুও তা যথেষ্ট না। আর পাশাপাশি এটাও বলতে চাই, দক্ষিন দিনাজপুরের ইতিহাস জেলাবাসির কাছে খুব একটা পরিচিত না, আর যার ফলে দক্ষিণ দিনাজপুরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে অনেক ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। আর এটা আমার ছোট একটি প্রচেষ্টা যাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের মানুষ এই জেলার প্রকৃত ইতিহাস ও ঐতিহ্য জানতে পারে।

পিরপাল দরগা 

গঙ্গারামপুরের অদূরে অবস্থিত নারায়নপুর গ্রাম আর সেখানে অবস্থিত এককালের বিখ্যাত তুর্কি বীর, তথা বাংলা দখল করে বাংলাই মুসলিম শাষন প্রতিষ্ঠা কারি মহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজির সমাধিখেত্র ,আর যেটি পিরপাল দরগা নামে পরিচিত।
TOMB OF BAKHTIYAR KHILJI
বর্তমানে সমাধিটি পৃথকভাবে ভঙ্গুর অবস্থায় গঙ্গারামপুরের নারায়নপুরে পরে রয়েছে, একমাত্র বখতিয়ার খলজির জন্যই বাংলাই মুসলিম ধর্ম প্রচার পেয়েছে, যার ফলে মুসলিমদের কাছে এছাড়া এখানকার স্হানিয় লোকেদের কাছে এই সমাধিটির একটি বিশেষ মূল্য রয়েছে।  বর্তমানে নারায়ণপুরের বাসিন্দারা এই সমাধিটির বিশেষ যত্ন নিয়ে থাকেন এবং সংরক্ষণ কাজ শুরু করার জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে অনুরোধ জানায়েছেন। যাই হোক যদিও এই সমাধিটি মুসলিমদের কাছে খুবি পবিত্র তবুও হিন্দু ও আদিবাসী অধুসিত নারায়ণপুর গ্রামের গ্রামবাসীরা এই  সমাধিটি সুরক্ষিত রেখেছে।
প্রতি বছর বৈশাখির বাঙালি মাসে মুসলিম ফকিররা এই কবরটি পরিদর্শন করে এবং  মোমবাতি জ্বালিয়ে এই কবরটি আলোকিত করে, এছাড়াও স্হানিয় লোকেদের বিশ্বাস যে যদি তারা এই কবরের কাছে মাটির তৈরি ঘোড়া উপহার দিলে তা পুরোন হয়।

 বখতিয়ার খলজি

এবার এই বখতিয়ার খলজি কে ছিলেন তা জেনে নেওয়া যাক। বখতিয়ার খলজি গোড়ার দিকে কুতুব উদ্দিন আইবকের অধীনে একজন তুর্কি সামরিক বাহিনীর জেনারেল হিসাবে কাজ করতেন। মুহম্মদ বখতিয়ার খিলজী সম্পুর্ন নাম ছিল ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি, এই নামের পাশাপাশি তিনি
 মালেক গাজী নামেও পরিচিত ছিলেন।
তাঁর জিবনের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব হলো বাংলা বিজয়, যা পরবর্তীতে বাংলাই মুসলিম শাসন ও ধর্ম প্রসারিত করতে সাহায্য করে। এছাড়াও বখতিয়ার খলজি তার জিবনে অনেক কাজ করেছেন, তার মধ্যে প্রধান হল 1193 সালে  নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাচীন শিক্ষা শহর বিক্রমিশীলাকে ধংস্ব করে দেন।
ফার্সি ইতিহাসবিদ মিনহাজ তাঁর তাবাকাত-ই-নাসরিতে লিখেছেন যে এই  ঘটনাই হাজার হাজার ভিক্ষুক জীবিত পুড়ে মারা যায় এছাড়াও বহু বৌদ্ধমঠ ভেঙ্গে ধংস্ব করে দেওয়া হয়।

বংশ পরিচয়

ইখতিয়ার উদ্দিন বখতিয়ার খিলজি একজন খিলজি বংশের তুর্কি উপজাতির সদস্য ছিলেন এবং দক্ষিণ আফগানিস্তানে গরমশির এলাকাই জন্ম গ্রহণ করেন। তারপর তিনি 1193 খ্রিস্টাব্দে ভারতে আসেনএবং কুতুব উদ্দিন আইবকের সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।

বাংলা দখল

1203 খ্রীঃ তিনি বিহার আক্রমণ করেন একই বছরে তিনি তাঁর বাহিনী বাংলায় নিয়ে যান এবং নবদ্বীপ শহরে তিনি প্রবেশ করলে নবদ্বীপের রাজা সেখান থেকে পালিয়ে যায় এবং 1203 সালে বাংলা সম্রাট লক্ষ্মণ সেনকে হারিয়ে নওয়াব পদটি দখল করেন ও রাজধানী এবং প্রধান শহর হিসাবে গৌড়কে বেছে নেন আর এই ভাবে তিনি  বেশিরভাগ বাংলা দখল করেন।
বখতিয়ার খিলজি একসময় দেবকোট শহর থেকে (বর্তমান গঙ্গারামপুর বানগড় ) তিব্বত আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি নেন কিন্তুু তিব্বতীদের আকস্মিক আক্রমণে খিলজি বাহিনী বিপর্যস্ত হয় আর মাত্র একশ বেঁচে থাকা সৈনিকের সঙ্গে খিলজি দেবকোট পুনরায় ফিরে আসেন  আর ফিরে আসার পর তিনি দেবকোটে অসুস্থ হয়ে পড়েন আর এই অসুস্হতার সুযোগ নিয়ে তার অনুচর আলী মরদান খাঁ বখতিয়ার খলজিকে খুন করেন এবং পরবর্তীতে তার মৃতদেহ দেবকোটের কাছে বর্তমান নারায়নপুরে কবর দেওয়া হয়, আর যেটি পিরপাল দরগা হিসাবে পরিচিত।

যাবার রাস্তা 

এখানে পৌছানোর জন্য বিশেষ কোনো যানবাহনের সুযোগ নেই। তবে এখানে যেতে গেলে আপনারা দুটি রাস্তার মধ্যে যে কোন একটি ব্যবহার করতে পারেন। 1 ম রাস্তা হিসাবে আপনি গঙ্গারামপুর থেকে সুকদেবপুর পর্যন্ত গাড়ি দিয়ে গিয়ে ,সেখান থেকে আপনাকে টোটো ধরতে হবে। 2 য় এছাড়া গঙ্গারামপুর কালীতলা থেকে আপনারা টোটো দ্বারা এখানে যেতে পারেন তবে এই রাস্তাই যেতে গেলে বেশ খানিকটা পথ পায়ে হেটেও যেতে পারেন। 
WhatsApp

1 টি মন্তব্য: