History of dakshin dinajpur, bangla bible, DAKSHIN DINAJPUR, Uttar DINAJPUR, Malda, chiristanity, santhal,indian tribe,mahli tribe, unknown facts, tourist place of Malda, tourist place of Dakshin DINAJPUR ,bible, bible story, bible story in bangla,dakshin dinajpur news,adibashi,sautal,indian tribe culture,

TRANSLATE ARTICLE TO YOUR LANGUEGE

রবিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২০

মাহলে সমাজের লোকেদের মাৎ ,বিতি কামি বা বাঁশের কাজ || MALHE BAMBOO CRAFT ||

মাহলে সমাজের লোকেদের মাৎ ,বিতি কামি।প্রথমেই বিতি তৈরীর উপকরণ--- বাঁশ, খুড়ো,কাঁতু,শোদা ও মুগোর। (বিতি কথার অর্থ লতি)

মালহে-মাহলে-মাহলি-মাহালি
বাঁশের কাজে ব্যাস্ত মাহালি সম্প্রদায়ের একজন

বাঁশ
এটা সবাই জানেন বা চিনেও থাকেন। এই বাঁশ অনেক লম্বা লম্বা হয়।আমরা বাঁশ গাছগুলোকে বাঁশঝাড় বলি। এই বাঁশ দিয়েই মাহলে দের বিভিন্ন জিনিস তৈরী করা হয়। আর যে বিতি কাজ বলছি সেটাও কিন্তু এই বাঁশ থেকেই হয়।
ঘুড়ো
হচ্ছে এমন একটি জিনিস যা বাঁশ দিয়েই তৈরী হয়। গোটা বাঁশের শেষ অংশ ডোগলা দিয়ে হয়। ওই ১থেকে ২ মিটার বাঁশ লাগবে। শেষ অংশটা কেটে নিয়ে খানিক করে চার সাইডে ফাটানো হয় আর দুটি মজবুত কাটি গুজে দিলেয় সুন্দর খুড়ো তৈরী হয়ে যায়। যা অনেকটা ত্রিভুজের মতন দেখতে হয়।
মুগোড়
মুগোড় ও বাঁশ দিয়েই  তৈরী করা হয়। বাঁশের সব থাকে মোটা আর গিট অংশ ওই এক হাত থেকে কিছু বেশি কাটলেই খুব ভালো ও শক্ত মুগোর তৈরী হয়ে যায়।
কাঁতু
কাঁতু বাঁশের সামগ্রী তৈরির প্রধান বস্ত কিন্তু কাঁতু বাঁশ দিয়ে তৈরি হয় না। এটা লোহা বা পাত দিয়ে কামারসালে তৈরী করে নিতে হয়। এই কাঁতু ছোট,বড়ো অনেক রকমের হয়। যার যেটা সুবিধা সেটাই ব‍্যবহার করতে পারে।
শোদা- শোদাও পাত বা লোহার ই তৈরী।ছোটগুলো কাঁতু আর বড়ো গুলো শোদা বলা হয়। গোটা অত বড়ো বাঁশ কে নিমিষে টুকরো করে দেয় এই শোদা। ধারলো হয় খুব।

এখন মাহলেরা কি ভাবে বিতি বা লোতি তৈরী করেন তার জন‍্য দুই এক কথা
মাহলেরা গোটা বাঁশকে ফাটিয়ে পাতলা,পাতলা করে বিতি বের করে।এই বিতি তো একটি দুটি নয় একেবারে একগাদা করে করতে হয়। প্রথমে বিতি বের করা হয় তারপর জলের ছিট দিয়ে হুশিদ করতে হয়। হুশিদ মানে মসৃণ করে চাঁচতে হয়। প্রতিটি বিতি কে কিন্তু সুন্দর করে মসৃণ করা হয়। সব বিতি মসৃণ যখন হয়ে যায় তখন দেখতে খুব খুব সুন্দর লাগে। আর একটি কথা যখন বিতি মসৃণ (হুশিদ) চলবে তখন একটি সুন্দর আওয়াজ আসে। পাশে কেউ থাকলে বুঝতে পারবে বিতি হুশিদ চলছে। মসবণ করার পর সব বিতিগুলোকে খানিক রোদে রাখতে হয় । যাতে ঘুঁন না লাগতে পারে।


এখন বিতি দিয়ে কি কি জিনিস তৈরী হয়
বিতি দিয়ে অনেক রকম জিনিস তৈরী হয়।যেমন- হাটাঃ,খেচলাঃ,ফেতয়াঃ,টুপলাঃ,দৌড়াঃ আরো অনেক জিনিস হয় (মাহালী শব্দ হাটাঃ মনে কুলো) হাটাঃ তৈরী করতে ছয় থেকে সাত গন্ডা বিতি লাগে অর্থাৎ ২৮টি বিতি। একটা কথা মাহলে লোকেরা বেশির ভাগ গন্ডা কথায় বলেন। সব থেকে ভালো  করে বুনলে সকাল থেকে সন্ধ‍্যা অবদি ২৪ থেকে ২৫ টি কুলো তৈরী করা হয়। সুপতিঃ মানে ছোট কুলো। এটা তৈরী করতে ১৫ থেকে ১৬ টি বিতি লাগবে। দিনে ২৮থেকে২৯টি সুপতিঃ , তৈরী করা যাবে। এটা ছোট তো তাই একটু বেশি বুনা যায়।
খেচলাঃ  মানে বড়ো ডালা।১৬ থেকে ১৮ টি বিতি লাগবে সঙ্গে খানিকটা মোটা কাটি। বতি মধ‍্যে ছেপটি দিয়ে উঠিয়ে নিতে হয় পরে কটি দিয়ে পুরোটা কভার করলে সুন্দর খেচলাঃ তৈরী হয়ে যায়।এখানে ছেপটি বলে একটি কথা বললাম। এই ছেপটি বাঁশ দিয়ে তৈরী একদম পাতলা, সুরু হয়। এটি সারাদিনে ৫ থেকে ৬ খেচলাঃ তৈরী হয়।
ফেতয়াঃ মানে সবজি রাখার ঝুড়ি। এটা তৈরী করতে বিতি লাগবে ১২ থেকে ১৪ টি। সঙ্গে ছেপটি, ও কাটি। কাটিগুলো সরু ,সরু হয়। সারাদিনে ১০ থেকে ১২ টি বুনা যায়। টুকুই মানে সব থেকে ছোট্ট ঝুড়ি। এটা তৈরী করতে ৬ থেকে ৮ টি বিতি লাগে সঙ্গে ছেপটি আর এগদম সরু ,সরু কাটি। দিনে ১৮ থেকে ২০ টি বুনা যায়।
দৌড়ঃ মানে বিয়ের বড় ডালা। সাঁওতাল দের বিয়েতে এই দৌড়াঃ লাগবেই। এটা তৈরী করতে ২৫ থেকে ২৬ টি বিতি, সঙ্গে খানিক শক্ত ছেপটি, আর একটু শক্ত কাটি। এগুলো ডিজাইন, ডিজাইন হয়। এটা দিনে খুব জোর  ৩ থেকে৫ টি বুনা যেতে পারে। এই ভাবেই মাহলেরা দিনের পর দিন বিভিন্ন ধরনের বাঁশের জিনিস তৈরী করেন। এইসব জিনিস তৈরী করতে প্রচুর মেহনতি করতে হয়।সকাল থেকে সরাদিন বসে কত যত্ন করে  বুনতে হয় এই সব জিনিস, সেটা বসে না দেখলে কেউ বুঝতে পারবেন না।

আর একটি কথা হল গোটাবাঁশটা পুরু কাজ করার পর যেগুলো বাদ পড়ে যা মাহলেরা বলেন গাসকো,পটর,মাৎউটি।এগুলো জ্বালানি হিসাবে ব‍্যবহার করেন। তাই বলছি এই শিল্প কাজের এত গুন কোন আংশোই বাদ দেওয়া যায় না।

   

     

দুলোন দেবী মহুলী


WhatsApp

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন