History of dakshin dinajpur, bangla bible, DAKSHIN DINAJPUR, Uttar DINAJPUR, Malda, chiristanity, santhal,indian tribe,mahli tribe, unknown facts, tourist place of Malda, tourist place of Dakshin DINAJPUR ,bible, bible story, bible story in bangla,dakshin dinajpur news,adibashi,sautal,indian tribe culture,

TRANSLATE ARTICLE TO YOUR LANGUEGE

রবিবার, ৯ আগস্ট, ২০২০

রাম-রাজত্ব এবং শুদ্র দলিত সমাজ ।। Ram Rajya and dalit samaj ||

 "রাম রাজত্ব" বস্তুটি আসলে কেমন, ভক্তের ভগবান অন্তরে বিরাজমান,' অন্তরই ভগবানের আপন মন্দির , তা সে রেগুলার ইউজ মেডিসিনি বলুন  বা দশরথ নন্দনি বলুন। সবার ভক্তি আপন আপন জায়গাই জড়-ভরত। রাম ভক্ত হনুমান লঙ্কা তছনছ করতে পারে, তবে RUM ভক্ত মাতাল একটা বাড়ি তছনছ করলে দোষ কোথাই?

সংবিধানের প্রস্তবনাই বলা হয়েছে - 'WE THE PEOPLES OF INDIA' খুব শিঘ্রই পরিবর্তিত হয়ে -'WE THE HINDUS OF HINDUSTAN' হতে চলেছে। না,না এটা কোনো নেপোটিজম নই, এটাই দেশ ভক্তি। অখন্ডতা,সেকুলারিটী চুলোই যাক, খ্রীষ্টান রাষ্ট্র হতে পারে, মুসলিম রাষ্ট্র হতে পারে তবে হিন্দু রাষ্ট্র হবে না কেন? তোরা বাধা দেবার কে? বিশ্বের অন্যতম স্বীকৃতি প্রাপ্ত ধর্ম বৌদ্ধ, সেই গৌতমের জন্ম নাকি ভারতেই, শুধু তাই নই জৈন ধর্মের মহাপুরুষ মহাবীরের জন্ম, এমনকি শিখ ধর্মের প্রবর্তক গুরু নানকের জন্মও আমাদের ভারতেই, সুতরাং এই অখন্ডতাকে ভুল পথে চালানোটাকেই নেপোটিজম বলা যেতে পারে।

দলিত-রাম-রাজত্ব-শুদ্র-শম্বুক-হত্যা
রাম-রাজত্ব ও দলিত সমাজ

 রাম রাজত্ব কেমন?
"রামরাজত্ব" পেতে চাই, আমারো বড় শখ , তবে রামরাজত্ব কেমন সেটা না জেনে সমর্থন করা কতটা যুক্তিযুক্ত? জানা সম্ভব একমাত্র রামায়ণ থেকেই, আশা করি ভগবান রামের রাজত্বে জাত-পাত,উচ-নিচ,সামাজিক বৈষম্য ছিল না এবং জ্ঞান চর্চার অধিকার সবারি ছিল।
রামচরিত্র আর রামরাজত্ব এক জিনিস নই সেটা সবারি অবগত। রাম তার রাজত্ব চালানোর প্রাথমিক ভাবে বিশেষ নিতি পালন করতেন, রামচন্দ্র নিজেই বলেছেন , যেটা মূল রামায়ণ গ্রন্থেও রয়েছে, রামচন্দ্র বালুকে হত্যার আগে বলেন -
"শাক্য ত্যায়াপি তৎকার্য ধর্মমেবানুবর্ততা,
               সূয়াৎে মনুনা গীতো শ্লোকে চারিত্রবাৎসাল্যে।"
আমি মনুর শ্লোকে পরিচালিত, মনুর দর্শন মেনে চলি তাই তোমাকে হত্যা করছি।
মহর্ষি মনু সমাজ পরিচালনার উদ্দেশ্যে "মনুসংহিতা" রচনা করেন। সুতরাং রামচন্দ্র তার রাজ্য পরিচালনায় মনুবাদ অনুসরন করতেন তার দ্বি-মত হতে পারে না, কারন রামচন্দ্র নিজ মুখেই স্বিকার করেছেন তিনি মনুর মতবাদের সাথে একমত। সুতরাং রামরাজত্বের অর্থ হয়ে দাড়াই এমন এক সমাজ ব্যবস্থা যেটা পরিচালিত হবে মহর্ষি মনুর দার্শনিক "মনুস্মৃতি" মতবাদের উপর ভিত্তি করে।
মনুবাদ
মহর্ষি মনুর দর্শন মতবাদ প্রতিষ্ঠিত বর্ণ প্রথার উপর ভিত্তি করে। "মনুস্মৃতি" তে বলা হয়েছে -
                 মুখতো ব্রাহ্মণা জাতা উরসঃ ক্ষত্রিয়াস্তথা।
                   ঊরুভ্যাং জজ্ঞিরে বৈশ্যাঃ পদ্ভ্যাং শূদ্রা ইতি শ্রুতিঃ।। 

যার অর্থ -
মানবজাতির কল্যানের জন্য পরম সৃষ্টি কর্তা ব্রহ্মা নিজের মুখ থেকে ব্রাহ্মণদের জন্ম দেন, ক্ষত্রিয়দের নিজের বাহু থেকে, বৈশ্যকে নিজের উরু থেকে আর শুদ্রকে নিজের পায়ের তলা থেকে জন্ম দেন। (৩০)
এখান থেকেই শুরু বর্ণপ্রথার, তাই রামের রাজত্বেও যে বর্ণপ্রথার উপরেই ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছিল তা বলাই যাই, তবে সেটা বিশ্লেষণ করার আগে আরো কিছু তথ্য বিচার্য। মুনসংহিতাই আরো বলা হয়েছে-
১০০ বছরের ক্ষত্রিয়কেও ১০ বছরের ব্রাহ্মণের সন্তানকে পিতার ন্যায় মনে করা উচিত।(অধ্যায় ১১, শ্লোক ১৩৫)
মহর্ষি মনুর অনুসারে সমাজ ব্যবস্থাই ছোট-বড় , গুরুজন বলে কোনো স্থান থাকা উচিত নই , কারন সেই স্থান একমাত্র ব্রহ্মণদেরই প্রাপ্ত। মনু আরো বলেন-
ব্রাহ্মণদের কখনই নিম্নবর্ণের লোকেদের খাবারের অামন্ত্রণ জানাবে না। যদি কেউ ব্রাহ্মণের কাছে ভোজন চাই তবে ব্রাহ্মণ বেচে যাওয়া খাবারের কিছু অংশ দিতে পারে, তাও সেই খাবার ব্রাহ্মণের চাকর বাইরে গিয়ে আসবে, ব্রাহ্মণ সেটা নিজে গিয়ে দিতে পারবে না।
সুতরাং রাম-রাজত্বে যে উচ-নিচ ,বর্ণ-ভেদ যে চড়ম আকার ধারণ করেছিল সেটা ধারনা করাই যাই। মনু সমাজ ব্যবস্থার এই কটি বিষয়ের উপর গুরত্ব আরোপ করেছিল বললে হয়তো ভুল হবে, শিক্ষা ক্ষেত্রেও বিশেষ গুরত্ব আরোপ করেছিলেন। মনুসংহিতাই বলা হয়েছে-
একজন শুদ্র কখনই জ্ঞান পাবার যোগ্য নই, তাই ব্রাহ্মনদের উচিত শুদ্রদের জ্ঞান না দেওয়া। এছাড়া আরো বলা হয়েছে -এটা আবশ্যক নই যে কোনো শুদ্রদের সংহিতা ও নিয়মের বিষয়ে জানা প্রয়োজন। এই জন্য শুদ্রদের শিক্ষাদান কোনো আবশ্যিক বিষয় নই। ( অধ্যায় ৪ শ্লোক ৭৮-৮১)
মনুবাদের মতাদর্শে বিশ্বাসী রাম-রাজত্বের শ্লোগানে যারা মাতোয়ারা তারাও এই সু-শিক্ষার নিতীতে আসতে চাইবে কি না সন্দেহ থেকে যাই। সু- শিক্ষাই পারে ন্যায় বিচারের মানদন্ড নির্ধারণ করতে, "মনুস্মৃতি" অনুসারে-
শুধুমাত্র একজন ব্রাহ্মণি সভ্য হয়ে থাকে , তাই ন্যায়াধীস হিসাবে এদের কাজ করা উচিত, কিন্তু কোনো শুদ্র এমন কাজ করতে পারে না।(অধ্যায় আট ,শ্লোক ৫০ ও ৫৬)
"জয় শ্রী রাম" রাম রাজত্বে সকলেই ন্যায় বিচার পাবে। এর থেকে বড় কোনো কথাই হতে পারে না। কারন, বিচারের একচেটিয়ে প্রাপ্তি ব্রাহ্মনদের।

দলিত-রাম-রাজত্ব-শুদ্র-শম্বুক-হত্যা
দলিত সমাজ

রামের রাজত্ব কেমন ছিল?
শ্রী রামচন্দ্র স্ব-মুখেই বলেছেন তিনি মহর্ষি মনরু দর্শন মেনে চলেন। এবং তার প্রতিফলন আমরা রামায়ণেও দেখতে পাই। বাংলা রামায়ণের অন্যতম রচয়িতা কৃত্তিবাস ওঝাঁ এবং তার কৃত্তিবাসী রামায়ণের অরন্যকান্ডের কয়েকটি শ্লোক শুনাতে চাই।
  "তপস্বী বলে আমি হই শূদ্র জাতি।
         শম্বুক নাম ধরি আমি শুন মহামতি"।।
  "তপস্বীর বাক্যে কোপে কাঁপে রাম-তুন্ড।
            খড়গ হাতে কাটিলেন তপস্বীর মুন্ড "।।
  "সাধু সাধু শব্দ করে যত দেবগণ।
             রামের উপরে করে পুষ্প বরিষণ"।।
  "ব্রহ্মা বলিলেন, রাম কৈলে বড় কাজ।
               শূদ্র হয়ে তপ করে পাই বড় লাজ"।।(পৃষ্টা নং ৬০৭)

এই শ্লোক গুলোর সংক্ষিপ্তসার~ গভীর বনের মধ্যে চলার পথে শ্রী রাম একজনকে তপস্যাই দেখতে পান, যার তপস্যা আর অগাধ জ্ঞান দেখে রামচন্দ্র খুশী হয়ে তার নাম জানতে চাইলেন, উত্তরে তিনি জানালেন তার নাম শম্বুক এবং তিনি শুদ্র বা ছোটজাতির লোক। এই কথা শুনে রাম প্রচন্ড রেগে গেলেন এবং তার হাতের খড়গ দিয়ে শম্বুকের গলা কেটে টুকরো করে মেরে ফেললেন। রামচন্দ্রের এই কাজে দেবতারা খুশি হয়ে রামের উপর স্বর্গ থেকে ফুল ছেটাতে শুরু করে। স্বয়ং ব্রহ্মাও এই বিষয়ে বলেন রামচন্দ্র শম্বুককে মেরে ফেলে ভালো কাজি করেছে, শুদ্র বা ছোট জাতের হয়ে জ্ঞান চর্চা করছে এটা খুবি লজ্জার বিষয়।
উপরের তথ্যে যদি ফল-প্রসূ না হয়ে থাকে তবে মহর্ষি তুুলসি দাস এর "শ্রী রামচরিৎমানস" থেকে একটি শ্লোক তুলে ধরতে চাই -
ঢোল গাঁওয়ার শুদ্র পশু নারি || সকল তাড়না কে আধিকারি । (গ্রন্থাগার কোড ৮১ , সুন্দরকান্ড-ষষ্ঠ অধ্যায়, পৃষ্টা নং ৭৬৭ ,শ্লোক নং ৫৯)
যার বাংলা অর্থ দাঁড়াই ঢোল,গাঁওয়ার(যাদের কোনো নিতি নাই),শুদ্র , পশু এবং নারি, এরা সকলেই মার বা পেটানোর অধিকারি হয়ে থাকে।
এখন প্রশ্ন হল 'রামরাজত্ব' যদি এমনি হয়ে থাকে, যেখানে জাত-পাত,উচ-নিচ এমনকি ছোটজাতি বা শুদ্রদের জ্ঞান অর্জন করাও পাপ ,সেই বর্ণভেদি সমাজ কেউ চাইবে না।
শ্রী রাম ও রাম-রাজত্ব
শ্রী রাম এবং রাম-রাজত্ব এক জিনিস নই, সুতরাং শ্রী রামের সাথে রাম-রাজত্বের তুলনা না করাই ভালো, কারন রামায়নে শ্রী রামের জীবনির কয়েকটি অংশ রয়েছে প্রথমে রাজপুত্র ,তারপর বনবাসি এবং শেষে একজন রাজা।
এই তিনটি পর্যায়ে পর্যাক্রমে শ্রী রামের বিভিন্ন চারিত্রীক বৈশিষ্ট ফুটে উঠে। দায়িত্বশীল পুত্র, দাদা, স্বামি, সর্বপরি একজন রক্ষনশীল রাজা। এমনি কি বলা হয়  "রঘুপতি রাঘব রাজা রাম", সুতরাং রাজা হিসাবে শ্রী রামচন্দ্রকেও তার রাজত্ব পরিচালনার জন্য কিছু নিতির প্রয়োজন ছিল, আর ব্রাহ্মন্যবাদে জড়িত সেই সমাজ ব্যবস্থাই মনুবাদের নিতি গ্রহন করা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।
ক্ষুদে রাম

বাস্তবে শ্রী রামচন্দ্র যে বর্ণবাদের পক্ষে ছিলেন না, তার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক কিছুই রামায়নে রয়েছে শবরি নামের শুদ্রের সাথে এটোঁ খাবারের ভাগাভাগি, এমনি রামায়ণের লেখক মুনি বাল্মিকী নিজেও একজন শুদ্র ছিলেন।

WhatsApp

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন