History of dakshin dinajpur, bangla bible, DAKSHIN DINAJPUR, Uttar DINAJPUR, Malda, chiristanity, santhal,indian tribe,mahli tribe, unknown facts, tourist place of Malda, tourist place of Dakshin DINAJPUR ,bible, bible story, bible story in bangla,dakshin dinajpur news,adibashi,sautal,indian tribe culture,

TRANSLATE ARTICLE TO YOUR LANGUEGE

বৃহস্পতিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২০

ভাষা পরিচয় হারানোর শঙ্কাই মাহালী আদিবাসী উপজাতি দ্বিতীয় পর্ব ।। MAHALI TRIBE ।।

 Barnacle একটি বিশেষ প্রজাতির হাঁস, বিশেষঙ্গদের মতে যেই প্রজাতির  জীবন সংগ্রাম সবথেকে কঠিন, নিজের অস্তিত্ব বাঁচাতে মৃত্যুর মুখোমুখি হয় নিয়ত, কিন্তু জীবন তার পথ খুঁজে নিয়েছে সর্বদা। আসলে সমাপ্ত শব্দটির পরিভাষা কোনো বিন্দু নই, সবকিছুই টিকেথাকার লড়াই , লড়াইটা নিজের অস্তিত্ব, নিজেস্বতা, নিজের বিশ্বাসকে জিইয়ে রাখার। পরিচয় বিহীন আগন্তুকের ঠাঁই নেই কোথাও, আবার আগন্তুকের কোনো পরিচয় ছিল না বলাটা বোকামি। ঠিক গল্পের ১৬ নম্বর আসামির মত, দীর্ঘ জেলবন্দি দশাই '১৬ নম্বর আসামি" ডাক শুনতে শুনতে নিজের প্রকৃত নাম ভুলে নিজের পরিচয় থেকে নাম ওই একটা নাম্বারের মধ্যেই সিমাবদ্ধ। সুতরাং পরিচয় ও ব্যাক্তিত্ব সময়ের উপর নির্ভরশীল , তাই সময় থাকতেই সেগুলো সংরক্ষনের প্রয়োজন রয়েছে। আর যদি তা সম্ভব না হয় তবে একপ্রকার পরিচয় বিহিন বিরোধাভাস তৈরি করে প্রচুর, আর যে বিরোধাভাস বিচ্ছিন্নতার দিকে এগিয়ে নিয়ে চলে মন্থর বেগে। ঠিক একই ভাবে মাহালী উপজাতির মধ্যে তৈরি হওয়া বিরোধাভাস বিচ্ছিন্নতার দিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে।

 মাহালি পরিচয়ে বিরোধাভাস
আত্মপরিচয় কোনো গ্লানী নই, বরং অহংকারের কারণ, কিন্তু সেই পরিচয় যদি মিথ্যা প্রতিশ্রুতীর উপর কায়েম হই , তবে ফলাফল মারাত্মক। ভারতীয় আদিবাসী উপজাতিদের মূলত তিনটি প্রধান শ্রেনীতে পৃথকীকরন  করা হয়েছে ~ ১ অষ্ট্রলয়েড, প্রোটো অষ্ট্রলয়েডএবং ৩ দ্রাবীড়িয়ান। দীর্ঘ পর্যালোচনা ও অসম্পূর্ণ তথ্যের উপর ভিত্তি করেই মাহালি উপজাতি কখনো প্রোটো অষ্ট্রোলয়েড আবার কখনো দ্রাবীড়িয়ান হিসাবে উল্লেখ করেছেন অনেক চিন্তাবিদ, পর্যবেক্ষক ও গবেষক।

বাঁশ-ডালা-মাহালি-মালহে
বাঁশের কাজে ব্যাস্ত মাহালিরা 

চিন্তাবিদ তথা গবেষকদের এহেন বিরোধাভাসি পর্যালোচনাই আজ মাহালি আদিবাসী উপজাতি আজ তার প্রকৃত পরিচয় বিহিন জনগোষ্টিতে পরিনত হতে চলেছে। একদিকে পন্ডিত ধিরেন্দ্রনাথ বাস্কে রিজলের কিতাবের হাওয়ালা দিয়ে মাহালীদের প্রোটো অষ্ট্রলয়েডের অংশ হিসাবে উল্লেখ্য করে মাহালীদের সাঁওতালদের বিচ্ছিন্ন অংশ হিসাবে উল্লেখ্য করেছেন তার লেখা কিতাব "পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসি সমূহ-প্রথম খন্ড" তে। অন্যদিকে বাংলার মুক্তিযুদ্ধ ও আদিবাসী বিষয়ক লেখক ও গবেষক জনাব সালেক খোকন মাহালিদের দ্রাবিড়ীয়ান জনগোষ্ঠির অংশ হিসাবে বর্ননা করেছেন। এখানে একটি প্রশ্ন নিশ্চিত ভাবে উঠে আসে মাহালিদের প্রকৃত পরিচয় তবে কি? মাহালিরা প্রোটো অষ্ট্রলয়েড নাকি দ্রাবিড়ীয়ান কোনটি সঠিক?
ভাষা-গত বিরোধাভাস
বরাবরই সাঁওতালরা মাহালি উপজাতিকে নিজেদের অংশ হিসাবে দাবি জানিয়ে আসছে বহু দিন থেকে। কিন্তু সত্যি কোনটা সেটাই বিচার্য। প্রকৃতপক্ষে মাহালি আজ মিশ্র ভাষাই পরিপূৰ্ণ এক বিশেষ জাতিতে পরিণত হয়েছে। স্থান ভেদে মাহালি ভাষার ব্যবহারিক সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যাই, উদাহরণ - বাংলাই কথন বাক্য 'মা ডাকছে" সেটিই মাহালিদের স্থান ভেদে - মাই হোঁহুই দে ( সাঁওতাল ভাষার সাথে সাদৃশ্য রাখে), মা হাঁকাই (মালো ভাষার সাথে সাদৃশ্য রাখে), আয়োঁ ভুলাথেঁ (সাঁন্দরি ভাষার সাথে সাদৃশ্য রাখে)। এমনাবস্থাই মাহালিদের প্রকৃত ভাষা কোনটি, এবং কোন ভাষাটিকে মাহালিদের ভাষা হিসাবে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত, সেটিও একটি বড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি করে মাহালি চিন্তাবিদদের মধ্যে। এখন ভাষা-গত বিভিন্নতা মাহলিদের উপর প্রতিকূল পরিস্থিতীর জন্ম না দেই এটাই কাম্য। বস্তুত এই ভাষাগত সাদৃশ্যের জন্য আজ মাহালিদের মধ্যে পরিচয়ের এক বিচ্ছিন্নতাবাদি মতবাদ সৃষ্টি করেছে।

মাহালি

 মহান রিজলের মতবাদ
মাহালি আদিবাসী উপজাতি যখন এত বিরোধাভাসি মতবাদে জরিয়ে আছে তখন মহান নৃতত্ত্ববীদ হারবার্ট হোপ রিজলের মতবাদ একমাত্র ভরসা হয়ে দ্বারাই। মহান রিজলে বৃটিশ প্রশাসক এবং ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসের এক সদস্য থাকা কালিন বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির বিভিন্ন উপজাতি ও জাতিগুলির উপর দীর্ঘকালিন বিস্তারিত গবেষণা চালিয়ে মাহালি জাতির উপর তার মতবাদ প্রকাশ করেন তার পুস্তক  'THE TRIBES AND CASTES OF BENGALS"  এ।
ভারতের বাংলা প্রেসিডেন্সীতে থাকা কালিন তিনি আদিবাসিদের আদিম আদিবাসি (primitive tribe) হিসাবে  ৮ টি এবং আদিবাসি উপজাতি (scheduled tribe) হিসাবে ২৪ টি জাতিকে চিহ্নিত  করেন। তিনি ভারতের সমগ্র আদিবাসী সমূদায়কে ১ সাদান , রাজপুত ,এবং ৩ আদিম জনজাতি হিসাবে পৃথকিকরণ করেন। এই সাদান বিভাগে রয়েছে - মাহালি, লোহরা , বিরাজিয়া, কিষান , চিকবারাইক, কারমালি, গোরাইল, জাতি সমূহ, যার মধ্যে লোহারা ও কারমালি ব্যাতিত সকলকেই দ্রাবিড়ীয়ান হিসাবে রিজলে উল্লেখ্য করেন। সুতরাং মহান রিজলের মতে মাহালি দ্রাবিড়ীয়ান জনগোষ্ঠির লোক।
প্রতিবেদনটি পড়তে ক্লিক করুন

সুতরাং মাহালীরা সাঁওতালদের থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো উপজাতি নন, মাহালিরা পৃথক এক উপজাতি, এই পৃথক মাহালি আদিবাসী উপজাতিকে রিজলে পাঁচটি বিশেষ কয়েকটি জাতি হিসাবে দেখিয়েছেন, যেগুলি হল পাতার মাহালি, বাঁশফোর মাহালি, সুলকি মাহালি, মুন্ডা মাহালি, এবং তাঁতি মাহালি। যাদের প্রধান জীবিকা হিসাবে বাঁশের শিল্পকর্মকে উল্লেখ করেন, কিন্তু তার পাশাপাশি বিভিন্ন মাহালিরা  বিভিন্ন পেশাই যুক্ত ছিলেন বলে রিজলে উল্লেখ করেছেন।
এতকিছু পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও কিছু কিছু উপজাতি ভাষাগত সাদৃশ্যের জন্য মাহালিদের তাদের বিচ্ছিন্ন জাতি হিসাবে দাবি করে। এমনাবস্থায় মাহালিদের প্রকৃত ভাষা কি এবং তাদের প্রকৃত পরিচয় কি? সেই বিষয়ে নতুন করে নৃতত্ত্ব ও ভাষাগত ভাবে পুনরাই পর্যালোচনার প্রয়োজন বলে আমার মনে হয়।

(চলবে)

সুমন্ত হেমরম 

WhatsApp

২টি মন্তব্য:

  1. মাহালী জাতিদের সঠিক উৎস বা ইতিহাস জানতে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন আর সুন্দর ভাবে তাদের কথা তুলে ধরুন। এটাই আপনার কাছে বিনীত অনুরোধ ।

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. উল্লেখিত জাতি বিন্যাস আমার দ্বারা করা হয়নি, যারা করেছেন তাদের নাম সহ রেফারেন্স বই দিয়েছি। খোদ ভারত সরকার রিজলে সাহেবের বইকে প্রতিযোগিতা পরিক্ষার ক্ষেত্রে , সেই অবস্থাই নতুন করে কেউ নিজের তথ্যে দিতে চাইলে সেটা মহা বোকামি হবে, তবুও কেও সঠিক রেফারেন্স সহ তথ্য দিতে চাইলে সানন্দে সেটা গ্রহন করবো।

      মুছুন