History of dakshin dinajpur, bangla bible, DAKSHIN DINAJPUR, Uttar DINAJPUR, Malda, chiristanity, santhal,indian tribe,mahli tribe, unknown facts, tourist place of Malda, tourist place of Dakshin DINAJPUR ,bible, bible story, bible story in bangla,dakshin dinajpur news,adibashi,sautal,indian tribe culture,

TRANSLATE ARTICLE TO YOUR LANGUEGE

মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০

ডোকরা শিল্প পশ্চিমবঙ্গ ও বাঁকুড়ার গৌরব || DOKRA SHILPO ART OF BENGAL ||

 ডোকরা শিল্প  || Dokra Shilpo

ডোকরা শিল্প বাংলার দক্ষিনবঙ্গের গর্ব স্বরুপ। যা পশ্চিমবঙ্গের নাম উজ্বল করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এই আদিম
ডোকরা শিল্প পুনরাই জীবিত হবার
পথে, গ্রাম থেকে গ্রামাঞ্চলে, দেশ থেকে দেশান্তরে, সর্বত্রই ডোকরা শিল্পের চাহিদা তুঙ্গে। ভারতে এই শিল্প আদিবাসী ডোকরা-ডামার উপজাতির দ্বারা উৎপত্তি হয়েছে বলেই অনেকেই মনে করেন, কিন্তু মহেঞ্জোদারোর খনন কার্যে উঠে আসা তথ্য, এই ডোকরা শিল্পের সৃষ্টিকাল বহুকাল পিছনে সরিয়ে দিয়েছে।

west-bengal-bankura-dhokra-dokra-shilpo-sculpture
ডোকরা শিল্পকলা

মহেঞ্জোদারো ব্রোঞ্জ নির্মিত নর্তকি এই শিল্পরি উদাহরণ। আনুমানিক প্রায় চারহাজার বছর আগে ডোকরা শিল্পকলার উৎপত্তি। কিন্তু সবথেকে অবাক করার বিষয়টি হল সেই সময় শুধু ভারতেই নয় ,সেই সময় শুধু ভারতেই নই আফ্রিকা, মালয়েশিয়া, চীন, প্রাচীন মিশর, জাপান এবং সুদূর মধ্য আমেরিকাতেও এই শিল্পের অস্তিত্ব ছিল বলে জানা যায়।
পশ্চিমবঙ্গে ডোকরা || Dokra Shilpo
পশ্চিমবঙ্গের ডোকরা এখন জগৎব্যাপি খ্যাতি অর্জন করেছে, যার শীর্ষে রয়েছে বাঁকুরা ও বর্ধমান, এছাড়াও মেদিনীপুর এবং অল্প বিস্তর দক্ষিনবঙ্গের বাকি কিছু কিছু জেলাই ছড়িয়ে পরেছে, তবে এই শিল্পটি বর্তমানে উত্তরবঙ্গের গুটি কয়েক স্থানেও দেখা যাই। যাই হোক, মনে করা হয় মধ্যপ্রদেশের বস্তার এলাকাই এই শিল্পের প্রথম বিকাশ ঘটে সেখানকার রাজা রানিদের অলংকারের চাহিদা মেটাতে। কালক্রমে এই শিল্প ভারতের বিভিন্ন প্রান্তরে ছড়িয়ে পরে বিভিন্ন স্থানের চাহিদা অনুসারে, পশ্চিমবঙ্গেও এর প্রবেশ ঘটে মধ্যভারতের উচ্চভূমি হয়ে ঝাড়খন্ডের পথ ধরেই এর বাংলাই প্রবেশ।
ভারতের বাংলাই দুই ধরনেরই ডোকরা শিল্পই দেখা যাই, ১- ফাঁকা ডোকরা ২- ভরাট ডোকরা। বাঁকুড়ার বিকনা,লক্ষীসাগর, লাদনা,শববেড়িয়া,ছাতনা এলাকাই, বর্ধমানের দরিয়াপুর, গুসকরায়, পুরুলিয়ার নাডিহায়, যার মধ্যে বাঁকুড়ার বিকনার ডোকরা বেশ প্রসিদ্ধ, যার ফলে বর্তমানে এই গ্রামটির পরিচিত নাম হয়ে উঠেছে ডোকরা গ্রাম।
আরো পড়ুন- নকল ইলিশ মাছ থেকে সাবধান।

west-bengal-bankura-dhokra-dokra-shilpo-sculpture
ডোকরা শিল্পের দূৰ্গা মূৰ্তি

ডোকরা শিল্পকাজ || Dokra
প্রাচীন এই শিল্পকলা আধুনিক কালেও তার পুরোনো শিল্পসত্ত্বা বাঁচিয়ে রেখেছে। ডোকরা শিল্পীরা যাযাবরের স্থান ছেড়ে এই শিল্পকে তার দ্বিতীয় প্রজন্মকে স্থানান্তরিত করে চলেছে। ফাঁকা ডোকরা আর ভরাট ডোকরা দুটো শিল্পকর্মের পদ্ধতি প্রায় একই, তফাৎ শুধু অস্তারন দেবার পদ্ধতির মাঝেই - ফাঁকা ডোকরার ছাঁচটি মাটি দিয়ে তৈরি করে তার উপর মোমের অস্তারন লাগানোর পর পুনরাই তার উপর মাটির অস্তারন দেওয়া হয়। অন্যদিকে ভরাট ডোকরা পদ্ধতিতে প্রথমেই ডোকরার পুরো ছাঁচটি বানানো হয় মোম দিয়ে। তার উপর দেওয়া হয় মাটির অস্তারন।
শেষে এটিকে গরম করে একটি ছিদ্রপথে বের করে আনা হয় তরল এবং সেই পথেই তরল ধাতুর মিশ্রন, বিশেষ করে পিতল ও তামা মিশ্রিত বিবিধ ধাতু ঢেলে তৈরি করা হয় বিভিন্ন শিল্পকলার অবয়ব।
ডোকরা শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি
চলার মাঝপথে উত্থান পতন চলার সঙ্গী, জীবনের চলার পথে তার অস্তিত্ব মেনে নিতে হয়, কেননা মাঝপথে এই ডোকরা শিল্প ক্রমশঃ ঝুঁকে পরেছিল, সরকারের সহযোগিতা এইক্ষেত্রে সু-ফল প্রদান করে। বাঁকুড়ার ডোকরা শিল্পীদের হাত ধরে এই শিল্প পারি দিয়েছে বিদেশেও, অর্জন করেছে সুনাম, এই শিল্পের মধ্যস্থতায় অনেকেই পুরষ্কৃত হয়েছেন দেশে বিদেশে।
তবে কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি ও করোনা অতিমারিতে এই শিল্পের বেগ কিছুটা মন্থর হয়ে পরেছে, কিন্তু ডোকরা শিল্পের চাহিদা নেই বললে হবে না। গোটা বিশ্বেই এর চাহিদা বেড়ে চলেছে ক্রমশঃ।
ডোকরা শিল্প হাতির মূর্তি


এছাড়াও বেশ কিছু নামি, দেশী-বিদেশী সংগঠন এগিয়ে এসেছে এই শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। বিগত বছরেই কাঁথির নান্দনিক ক্লাব এই শিল্পকে জনমানবে তুলে ধরার উদ্দেশ্য নিয়ে এই শিল্পটিকেই তাদের থিম হিসাবে বেছে নেই। ডোকরা শিল্পের সৌন্দর্যই এই শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে গেছে, বলা-বাহুল্য কি নেই এই শিল্পে, অঙ্গ সাজানোর অলংকার থেকে ঘর সাজানোর উপকরণ, প্রানি জগতের সকল পশু, দেবদেবীর মূৰ্তি সব চাহিদাই যেন মেটাতে পারে এই শিল্প। আগামিতে এই শিল্প আরো উৎকর্ষতা পাবে এটাই শ্রেয়।

WhatsApp

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন