History of dakshin dinajpur, bangla bible, DAKSHIN DINAJPUR, Uttar DINAJPUR, Malda, chiristanity, santhal,indian tribe,mahli tribe, unknown facts, tourist place of Malda, tourist place of Dakshin DINAJPUR ,bible, bible story, bible story in bangla,dakshin dinajpur news,adibashi,sautal,indian tribe culture,

TRANSLATE ARTICLE TO YOUR LANGUEGE

বুধবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৯

চাঁচল রাজবাড়ী ও ঠাকুরবাড়ীর কিছু অজানা তথ্য। CHANCHAL RAJBARI THAKURBARI HISTORY

চাঁচল রাজবাড়ী

মালদা জেলার চাঁচল বাসিদের কাছে চাঁচল রাজবাড়ী ও ঠাকুরবাড়িকে ঘিরে গভীর আবেগ রয়েছে। তাই চাঁচল বাসিরা এই রাজবাড়ী ও ঠাকুরবাড়িটিকে হেরিটেজ সাইট হিসাবে পরিণত করার জন্য বদ্ধপরিকর। প্রায় 300 বছর আগে চাঁচলের পার্শবর্তি এলাকাই প্রায় দেড় বিঘা জমিতে ৯ লক্ষ টাকা খরচ করে এই রাজবাড়ী ও ঠাকুরবাড়িটি তৈরি করেন রাজা শরচ্চন্দ্র রায় চৌধুরী। বর্তমান সময়ে রাজাও নেই এবং রাজপরিবারও নেই, তাই এই রাজবাড়ী ও ঠাকুরবাড়িটি ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। প্রায় 300 বছর আগে রাজা শরৎ চন্দ্র রায় চৌধুরী এই  রাজবাড়ী ও ঠাকুরবাড়ির নকশা ও তৈরি করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন ইউরোপের ব্রিটিশ বিখ্যাত আর্কিটেক কোম্পানি মার্টিন অন্য বার্ন কোম্পানিকে। একে তো রাজার মন্দির ও বাড়ি বলে কথা, তার উপর বিদেশী কোম্পানির দ্বারা এই রাজবাড়ী ও মন্দির তৈরি হওয়াই এর শিল্প রীতিতে ভারতিয় পাশাপাশি ইউরোপিয় শিল্পের মেলবন্ধন দেখতে পাওয়া যায়।
CHANCHAL rajbari THAKURBARI 


রাজমন্দির

চাঁচল রাজবাড়ি ও ঠাকুরবাড়িকে ঘিরে স্থানীয় মানুষের প্রচুর আবেগ রয়েছে, তাই মালদা জেলার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল এখানকার পুজোটি। একে তো রাজমন্দির তার উপর এই মন্দিরটির সাথে ধর্মীও আবেগ জরিত থাকাই রাজা শরৎ চন্দ্র রায় চৌধুরী এই মন্দিরটির জন্য সব রকম প্রয়োজনিয় সেগুন কাঠ নিয়ে আসেন মায়ানমার থেকে। বেলজিয়াম থেকে আনেন উন্নতমানের কাঁচ। মন্দিরের প্রয়োজনীয় ইস্পাত আনা হয় ল্যাঙ্কাশায়ার থেকে। যেহেতু মন্দিরটি বিদেশী কোম্পানির দ্বারা তৈরি হয়েছিল তাই এই মন্দিরটির মধ্যে ফরাসি স্থাপত্য এবং ভারতীয় ভাস্কর্যের মেলবন্ধন দেখা যায়। এই রাজবাড়ির মন্দিরের ছাদে দুটি উঁচু চুড়ার চারপাশে রয়েছে আরও চারটি করে চুড়া। আর এই মন্দিরের ভিতরে অধিষ্ঠিত আছে দেবী চন্ডির কষ্টিপাথরের মূর্তি। যদিও এই মন্দিরে এই চন্ডি মূর্তি রয়েছে তবুও তা এই মন্দিরটিতে পূজিত না হয়ে পাহারপুরে পূজিত হয় আর এই মূর্তি স্হাপনের পিছনে রয়েছে একটি বিশেষ কাহিনী। যেটি একটু পরে আলোচনা করছি।
Chanchal THAKURBARI 


অনান্য বিষয় সমূহ

রাজমন্দিরের পাশাপাশি এই রাজবাড়ীটিকে আরো কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে যার মধ্যে একটি কলেজ, আদালত, প্রাথমিক বিদালয় ও উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে। বর্তমানে এই ঐতিহাসিক রাজবাড়ী ও ঠাকুরবাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্যসরকারের নিজস্ব সংস্থা চাঁচল রাজ ট্রাস্ট এস্টেট পরিচালন সমিতির হতে। বহু পুরোনো আর কিছুটা ভঙ্গুর অবস্থা হওয়ার ফলে এই মন্দিরটি আর রাজবাড়ীর ছাদে উঠা এখন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রতিবছরি এখানে এক বিরাট আয়োজন একটি চন্ডি পুজা করা হয় যার দায়িত্বে রয়েছে রাজবাড়ী ট্রাস্টিটি। আর প্রতিবছরি চন্ডি ঠাকুরের বিসর্জনের সময় একটি বিশেষ রীতি আজো অনুষ্ঠান পালিত হয়। আর সেটি হল প্রায় তিনশো বছর ধরে চলে আসা বিদ্যানন্দপুর ও পাহারপুর এর সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিশেষকরে মুসলিমরা দেবী বিসর্জনের সময় লন্ঠনের আলো দেখিয়ে বিদায় দেয় যা এখনো ব্যতিক্রম ঘটেনি ।

পাহারপুর গ্রাম

পাহাড়পুর মালদা জেলার চাঁচল 1 নম্বর ব্লকের অন্তর্গত একটি গ্রাম| পাহাড়পুর গ্রামটি সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, এখানকার চণ্ডীমণ্ডপটি|সাধারনত লোকমুখে এই চণ্ডীমণ্ডপ "চাঁচল পাহাড়পুরে চণ্ডীমণ্ডপ" নামে পরিচিত| প্রায় তিনশো বছর ধরে প্রতি বছর একই নিয়ম-নীতি ধরে এই চণ্ডীমণ্ডপে মা চণ্ডীর পূজা করা হয়।
এই চণ্ডীমণ্ডপটি আগে রাজ পরিবারের একটি মন্দির ছিল।

চন্ডি পুজোর কাহিনী

জনশ্রুতি রয়েছে, রাজা ঈশ্বরচন্দ্র রায় চৌধুরীর পিতা রামচন্দ্র রায় চৌধুরী চন্ডিদেবির স্বপ্নাদেশ পেলেন, দেবী চন্ডি তাঁকে জানালেন মহানন্দা নদীর সতীঘাটে রয়েছে তার বিগ্রহ, তারপর রাজা শরৎচন্দ্র রায় সোজা সতীঘাট থেকে চন্ডির কোষ্ঠীপাথরের মূর্তিটি উদ্ধার করেন এবং সেটি চাঁচল রাজার ঠাকুরবাড়িতে স্থাপন করলেন রাজা শরৎ চন্দ্র রায় বাহাদুর। কিন্তু দেবীর নির্দেশ ছিল পাহাড়পুরের যে জায়গা থেকে তিনি উঠে এসেছেন সেই জায়গাতেই তিনি পুজো নেবেন।তারপর স্বপ্নে পাওয়া দেবীর আদেশ অনুযায়ী পাহাড়পুরে ঘরের ছাউনি দেওয়া ঘরে দেবীর পূজা শুরু হলো ।
জনশ্রুতি, মুসলিম অধ্যুষিত গ্রামে পুজোর সময় কলেরা হয়েছিল। রাজবাড়ির প্রতিমা গ্রামের ভেতর দিয়ে বিসর্জনে নিয়ে যাওয়ার সময় অন্ধকারে লন্ঠনের আলো দেখিয়েছিল গ্রামের মুসলিমরা। তারপর না কি গ্রামের সবাই সুস্থ হয়ে যায়। সেই থেকে আজও একইভাবে এই প্রথা চলে আসছে। আর এই প্রথাটি পালিত হয়  ঠিক এই ভাবে দশমীর দিন মৃন্ময়ী চণ্ডী প্রতিমাকে গোধূলিবেলায়  মহানন্দা নদীতে বিসর্জন করা হয় । মহানন্দা নদীর অপারে বিদ্যানন্দপুরের সকল মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরা দশমীর দিন দেবীর বিসর্জনের সময় জড়ো হয় এবং লন্ডনের আলো দেখিয়ে দেবীকে বিদায় জানাই ।
WhatsApp

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন