History of dakshin dinajpur, bangla bible, DAKSHIN DINAJPUR, Uttar DINAJPUR, Malda, chiristanity, santhal,indian tribe,mahli tribe, unknown facts, tourist place of Malda, tourist place of Dakshin DINAJPUR ,bible, bible story, bible story in bangla,dakshin dinajpur news,adibashi,sautal,indian tribe culture,

TRANSLATE ARTICLE TO YOUR LANGUEGE

রবিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৯

ছটপুজা ও ছটপুজার অর্থ। CHOOTPUJA BANGLA MEANING

ছটপুজা আর আমার শৈশব এই দুটি যদি যোগ করা যায় তবে যেটি বেরিয়ে আসবে সেটি হল আমার স্মৃতি আর ভালোলাগার সেই ঠেকুয়া। এখনো মনে আছে ছটপুজার দ্বিতীয় দিন সময় করে ভোর বেলা উঠে পশ্চিমা ও বিহারী পরিবারের কিছু ব্যাক্তিদের মাটিতে শুয়ে কাঠি দিয়ে দাগ কাটা আর এক ধাপ করে এগোনোর প্রথাটা দেখা আর একটু সময় গোরোলেই তাদের বাড়ির সামনে হাজিরা শুধুমাত্র ঠেকুয়া খাবার লোভে, আর আমার এই  লোভটি এখনো রয়ে গেছে। এখন অবশ্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঠেকুয়া খাওয়ার জন্য কোথাও হাজিরা দিতে হল না কিংবা সেই শিশু মনে লুকিয়ে থাকা প্রশ্নগুলোর আর উত্তর খুজতে হল না , কারণ এই উৎসবটি পালনের পিছনের প্রকৃত রহস্য কি সেটা এখন যেনে গেছি,  তারা এমন ভাবে মাটিতে কেন শুয়ে পরতেন।

ছটপুজার রিতী

মুলত এই ছটপুজা অনুষ্ঠানটি চার দিনের হয়ে থাকে, আর এই চার দিনের প্রত্যেকটির আলাদা আলাদা রিতি থাকে, এসময় উপবাসের সঙ্গে সঙ্গে সূর্যদেব ও তার স্ত্রী ঊষার আরাধনা করা হয় এছাড়া গঙ্গার পবিত্র জলে স্নানের প্রথাও রয়েছে গঙ্গার পার্শবর্তি এলাকাই। যেমন -  প্রথম দিন বিহারী বা পশ্চিমী পুণ্যার্থীরা  গঙ্গার আরাধনার মাধ্যমে এই ছটপুজার শুরু করেন ও স্নানের আগে একটা গোটা কলার কাঁদি সূর্যদেবকে উৎসর্গ করেন  ও স্নানের আগে পর্যন্ত তাদের নির্জলা উপোস থাকতে হয় এবং সুর্যদেবের আরাধনা ও স্নানের পর পরিবারের সকলেই মিলে খাবার খান ।

ছটপুজার মহুর্ত 
দ্বিতীয় দিন যাদের সুর্যদেবের কোন প্রকার বিশেষ প্রার্থনা থাকে তারা উপোস করেন ও সুর্যদেবকে গুড়ের পায়েস ও  নিবেদন করেন। পুজোর পরেই সেই উপবাস ভেঙ্গে ফেলা হয়। তৃতীয় দিন অধিকাংশ ক্ষেত্রে মহিলারা পালন করে থাকেন এবং এই দিন সূর্য দেবের স্ত্রী ঊষাকে উৎসর্গ করা হয় । আর এই কয়েকটি দিন পুর্নার্থিরা প্রায় কোমরজলে দাঁড়িয়ে সূর্যদেবকে তাদের আরাধনা অর্পন করেন। এবং তার সাথে বিভিন্ন ফল ভোগ হিসাবে অর্পন করা হয় যেমন-  আমার প্রিয় ঠেকুয়া, চালের নাড়ু, কলা, আখ ইত্যাদি ইত্যাদি। এরপর মহিলারা স্নান সেরে কমলা রঙের সিঁদুর পরে থাকেন। আর এই উৎসবে যাদের বিশেষ কোন প্রার্থনা সুর্যদেবের কাছে থাকে (মানসিত) তারা খুব ভোরে উঠে খালি পেটে দু পা জোর করে সুর্যদেবকে প্রনাম জানিয়ে মাটিতে শুয়ে পরে সামনের দিকে দাগ কাটতে হয় এবং পুনরায় সেই দাগটিতে গিয়ে একি পদ্ধতি পুনরায় অবলম্বন করে এগিয়ে যেতে হয় , যতখন না পুর্নস্নানের জন্য নদী ঘাটে না পৌছয়।
ছটপুজা র ঠেকুয়া

ছটপুজার অর্থ ও উৎপত্তি 

দীপাবলির ঠিক পরের মহুর্তে সাধারনত গোটা ভারতে বছরে একবার এই ছটপূজা হয় ,তবে উত্তর ভারতের কোন কোন জায়গাই বছরে দুবার ছটপূজা হয় । এই বিষয়ে একটা জেনে রাখা প্রয়োজন নেপালি, মৈথিলী ও হিন্দি ভাষাই ছট বা ছাটি কথাটির অর্থ হলো ছয়। অনেকে মনে করেন এই ছট বা ছাটি শব্দ থেকেই উঠে এসেছে এই ছটপুজা শব্দটি, অর্থাৎ অনেকে মনে করেন ছয় ঝৃতুর ভালো ফসলের কৃতঙ্গতা সুর্যদেবকে জানানোর উদ্দেশ্য এই ছটপুজার আয়োজন হয় । আবার অনেকের মতে, হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী কার্তিক মাসের ছয় তারিখ থেকে এই পুজো শুরু হয় বলে এটিকে ছটপুজা বলে, আবার অনেকে ছটপুজার অর্থ ও উৎপত্তির বিষয়ে রামায়ণ ও মহাভারতের কিছু পর্বের কথা তুলে ধরেন।

রামায়ন ও মহাভারত মতে

রামায়ণের মতে ভগবান রাম ছিলেন সূর্যদেবের বংশধর। চৌদ্দ বৎসর বনবাসের পর অযোধ্যায় ফিরে এসে তিনি এবং সীতা দুজনেই সূর্য দেবের তপস্যায় উপবাস রাখেন ও পরদিন ভোরে সেই উপবাস ভঙ্গ করেন।
অন্যদিকে মহাভারতের কর্ণ (মহাভারতের গল্পের আমার একমাত্র প্রিয় চরিত্র, বাকি গুলো বোগাস) ছিলেন সূর্যদেব ও কুন্তীর পুত্র আর এই কর্ণ একবুক জলে দাঁড়িয়ে সূর্য দেবের আরাধনা করতেন।
ছটপুজা 
পরবর্তী কালে এই রীতিই ছট পুজোর রূপ নেয়। সুতরাং মানে টা বড্ড সহজ ছটপুজার উৎপত্তির কারণ বিষয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।

অন্যান্য বিষয় 

আমার শৈশবের মত অনেকেরি হয়ত এই বিশেষ দিনের মাহাত্ম্য ও ছটপুজার কারণ জানতে ইচ্ছা করে, শৈশবে এই ছটপুজা বিষয়ে আমার তেমন ধারণা ছিল না, তবে আজ একটু হলেও সেই ধারনাটা রয়েছে যেগুলো আমি আমার পরিচিত কিছু লোকেদের কাছ থেকে পেয়েছি, আর গুগল বাবাজিও আমাকে অনেকটা সাহায্য করেছেন,  ছটপুজার অর্থ ও কারনের উত্তর পেতে। ছটপুজা মুলত সারা ভারতে পূজিত হলেও উত্তর ভারত ও বিহারে সূর্যদেবের এবং তাঁর পত্নী ঊষাদেবীর উদ্দেশে এই ছটপুজা উৎসবটি বিশেষভাবে পালিত হয়।
তবে আমার বিচারে ঠেকুয়া খাওয়ার এই বিশেষ ছটপুজা দিনটি গোটা ভারতেই হওয়া উচিত,  যাতে ভারতের সব প্রান্তের লোক ঠেকুয়ার সেই মিষ্টিস্বাদ নিতে পারে। 
WhatsApp

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন