History of dakshin dinajpur, bangla bible, DAKSHIN DINAJPUR, Uttar DINAJPUR, Malda, chiristanity, santhal,indian tribe,mahli tribe, unknown facts, tourist place of Malda, tourist place of Dakshin DINAJPUR ,bible, bible story, bible story in bangla,dakshin dinajpur news,adibashi,sautal,indian tribe culture,

TRANSLATE ARTICLE TO YOUR LANGUEGE

বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৯

মাহালি আদিবাসি সমাজ ও তাদের পিছিয়ে পরার কারন সমূহ ।


"মানুষ সমাজবদ্ধ প্রানি" এই কথাটি আমরা প্রায় সকলেই জানি , কিন্তু সমাজ বদ্ধ প্রানি হিসাবে মানুষের কি করণীয় সেটা হয়তো সকলে জানেন না, আর আমি এই বিষয়েও নিশ্চিত যে সমাজবদ্ধ প্রানি হিসাবে মানুষ কেন এই সমাজ সৃষ্টি করছিল সেটাও হয়তো জানেন না অনেকেই । এই গুরুত্বপুর্ন প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে হলে আপনাকে যেতে হবে ইতিহাসের পাতায় , শুরু করতে হবে নতুন করে অধ্যায়ন ,কারন আপনি যখন ইতিহাস জানবেন তখনি আপনি পারবেন সমাজকে পরিবর্তন করতে আর এগিয়ে নিয়ে যেতে ।  কিন্তু বর্তমান সমাজে সমাজকে জানার সময় কারি বা আছে । তাই বেছে  নিতে হবে বিকল্প ব্যাবস্থা , চলুন প্রথম প্রশ্নটি নই বরং দ্বিতীয় প্রশ্নটির উত্তরটাই দিচ্ছি ।
মানুষ এই জন্য সমাজ তৈরি করে যাতে তাদের নিজেস্বতা বজায় রেখে এক দলবদ্ধ সমাজ হিসাবে এটি নিশ্চিত করা  যে কোন মানুষ তার সামাজিক জীবনে ( যেমন বিপদ,অপদ)  একা না হয়ে পরে । আজকে হঠাৎ এই বিষয়টি তুলে ধরছি কেন ,সেটিও একটি বিষয় - কারন এর পূর্বে আমি মাহালি আদিবাসি সমাজ নিয়ে কিছু আলোচনা করেছিলাম যেটি অনেকেরি ভালো লেগেছিল আবার অনেকের খারাপো লেগে ছিল , ভালো লাগার মধ্যে একজন প্রশংসক আমাকে ফোন মারফত প্রশ্ন করে - দাদা মাহালি সমাজ আজ এত পিছিয়ে গেছে কেন ? এই মাহালী সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আপনি কিছু করুন । প্রথম প্রশ্নটির উত্তরটি ছিল আলোচনা সাপেক্ষ যেটি ফোনের মধ্যে বলা সম্ভব ছিল না , আর দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরে আমি বলেছিলাম - আমি নিজেই একজন ভবঘুরে , সমাজকে কি আর রাস্তা দেখাবো ,তবে ঘুরার পথে যদি সঠিক স্থান পেয়ে যায় তবে এটা কথা দিচ্ছি ছোট করেও হোক না কেন কিছু একটা করবো ।
এবার আসছি সেই ব্যাক্তির প্রথম প্রশ্নের উত্তরে , যেটি আলোচনা সাপেক্ষ , তাই আমার যতটুকু সামর্থ ঠিক ততটুকুই আলোচনা করছি ।
Bamboo craft,mahali tribe,mahali culture
মাহালিদের বাঁশের কাজ
অতিরিক্ত শিল্প নির্ভর জাতি
এই বিষয়ে আলোচনা করার আগে আপনাদের বিচারের সুবিধার্তে কয়েকটি কোম্পানির নাম আমি বলছি ,যেমন - ফুজি, নিকন, জ্যাকুবি, সোনাটা , এছাড়া আরো রয়েছে যারা তাদের উৎপাদিত বস্তুু দ্বারা গোটা বিশ্বকে জয় করেছিল কিন্তু বর্তমানে দেওলিয়া একটি কোম্পানি  । উদাহরণ স্বরুপ ফুজি একসময় ছবি তোলা ক্যামেরার রিল তৈরি করতেন যার বিশ্বব্যাপি বিক্রীর পরিমান ছিল প্রায় নব্বই শতাংশের বেশি , কিন্তু সময়ের সাথে পরিবর্তনের ধারা টিকে গ্রহন না করায় আজ প্রায় দেওলিয়া । সময়ের পরিবর্তনের সাথে মানুষের রিল দ্বারা পরিচালিত ক্যামেরার প্রয়োজনো কমতে থাকে , এমনকি সোনাটা ঘরি ,বাজাজ স্কুটার এই পরিবর্তনের ধারায় ধংস্ব হয়ে গেছে , ভারতের বিখ্যাত পার্লেজি বিস্কুটো এখন এই পরিবর্তনের ধারায় অসহায়, যাই হোক কিছু কিছু কোম্পানি এই পরিবর্তনের ধারা বুঝতে পেরে তারা তাদের রিতি পরিবর্তন করেছে ,কিন্তু যারা সেটি করেনি তারা এখন প্রায় বিলুপ্ত। মাহালি জাতির ক্ষেত্ৰেও একি জিনিস ঘটেছে । মাহালি জাতির বিশেষ পরিচয়টিই হল বাঁশের কাজ ,যেটি বলতে গেলে বাঁশের এই শিল্পকর্মকে মাহালি সমাজের সংস্কৃতির অংশই বলা চলে । এটা ঠিক যে, শিল্প যে কোন সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যায় কিন্তু সেটা নির্ভর করে সময়ের পরিবর্তনের ধারা অনুযায়ী আমি আগেই বলেছিলাম মাহালি জাতি বাঁশের শিল্প কর্মের সাথে যুক্ত একটি তপশিলী উপজাতি , সেই হিসাবে বাঁশের শিল্পকলার উপর নির্ভর করেই এই জনজাতির লোকেরা নিজেদের জীবন অতিবাহিত করেন ,তবে বর্তমানে এর পাশাপাশি চাষ আবাদো অনেকে করে থাকেন । মাহালি জনজাতির লোকেরা মূলত বাঁশের তৈরি ডালা, কুলা, টুপি, ও বিভিন্ন আসবাবপত্র তৈরি করে থাকেন , এক সময় প্রায় সব বাড়ীতেই বাঁশের তৈরি ডালা কুলা ব্যবহার করা হত ,যেটি বর্তমানে মাত্র ৫ শতাংশে গিয়ে দাড়িয়েছে । বর্তমানে মানুষ বাঁশের তৈরি ডালা কুলার বদলে অপেক্ষাকৃত হালকা, সস্তা প্লাস্টিকের ডালা ,কুলা ব্যবহার করতে বেশি পছন্দ করে । এই বিষয়ে একটা স্বীকারক্তি আমাদের বাড়ীতওে শুধু একটিই বাঁশের ডালা রয়েছে আর বাকি ডালা, কুলা সব কিছুই প্লাস্টিকের তৈরি । শুধুমাত্র এই একটি কারনই দায়ি যার জন্য আজ মাহালি সমাজ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে এতটা পিছিয়ে গেছে ,যার জন্য অনেকেই প্রতিষ্ঠিত বাঁশের শিল্প কর্ম বাদ দিয়ে বাইরে কাজ করতে যাচ্ছে । 
আমি এটা বলছি না যে মাহালিরা তাদের ঐতিহ্য মন্ডিত বাঁশের কাজ ছেড়ে ফেলুক , বাঁশের কাজ থাকনা ক্ষতি কথায় ,শুধু রিতিটা পরিবর্তন করতে হবে । এতিমধ্যে কিছু কিছু মাহালি গ্রাম সরকারি সহযোগিতায় তাদের রিতি পরিবর্তন করে কিছুটা আশার আলো জাগিয়েছে ।
মাহালি হিসাবে সঠিক ধারনা না থাকা
মাহালি সমাজের প্রথম থেকেই শিল্প নির্ভর জাতি ,এই বিষয়ে প্রায় সকলেরি পরিষ্কার একটা ধারনা রয়েছে , কিন্তু বেশি ভাগ মাহালি এটাই জানেন না তারা জাতি হিসাবে কতটা যোগ্য আর পরিপক্ক । জিনিসটা একটু খুলেই বলছি , তার আগে কয়েকটি প্রশ্ন করছি  , ১ মাহালিদের প্রকৃত পদবি কি ? ,২ মাহালিদের ধর্মের নাম কি ? । আশা করছি এই দুটি সাধারন প্রশ্নের উত্তর সকলেই দিতে পেরেছেন , কিন্তু তেমনটা যে আসা করা যে বৃথা এটা সকলের অবগত । ঠিক এটাই এখানে আমি এখানে বলতে চেয়েছি । মাহালি সমাজের লোকেদের মধ্যে জাতিগত পরিচয় নিয়ে একটু উদাসিনতা রয়েছ । যে সমাজ  নিজের জাতিসত্বা বিষয়ে তেমন কিছু জানেনা ,সেই সমাজ উন্নয়নো ঠিক মত করতে পারে না ।
আমাদের দেশের প্রাচিন শাস্ত্র গুলো কি বলে জানেন , উদাহরন স্বরুপ মনসামঙ্গল ( দুঃখিত গ্রন্থটি মনসামঙ্গল না অন্য কোন গ্রন্থ সেটা মনে করতে পারছি না, কিন্তু যতটুকু সম্ভব মনসামঙ্গলি হবে ।) যেখানে একটি বিশেষ জাতির কথা বলা হয়েছিল যারা বাঁশের শিল্পকর্মের সাথে যুক্ত আর যারা তাদের শিল্পকর্ম ব্যবসায়িক দিক দিয়েও প্রসার করিয়েছিল । নিজের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের উপর দায়বদ্ধ হতে হবে ।আশা করি এই স্বল্প আলোচনায় আপনারা বুঝতে পেরেছেন জাতি বিষয়ে ধারনা থাকাটা কতটা জরুরি ।
 সাঁওতাল সমাজের অগ্রাসন
মাহালি সমাজের লোকেরা বর্তমানে  তাদের পদবি হিসাবে প্রধানত হেমরম ,মার্ডি , মারান্ডি, মুরমু ইত্যাদি পদবি ব্যবহার করে থাকে । যেটি প্রধানত সাঁওতালরা ব্যবহার করেন । এই মাহালি জনগোষ্ঠির লোকেরা মূলত অস্ট্রোরয়েড গোষ্ঠীর মধ্যে পরে,  জাতিসত্তাগতভাবে এরা সাঁওতাল জানজাতির কাছাকাছি হলেও এরা সাঁওতাল থেকে আলাদা , তাছাড়াও সাঁওতাল জনজাতির লোকেরা মাহালি জনজাতির থেকে অনেক বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠ । আর এই কথাটি চরম সত্য যে - একটি শক্তিশালী জাতির মধ্যে তার থেকে অপেক্ষাকৃত কম শক্তিশালি জাতিকে গ্রাস করার প্রবনতা প্রথম থেকেই থাকে । তাছাড়াও সংখ্যালঘু মাহালি সম্প্রদায়ের মধ্যে গ্রাস করার সমস্ত উপকরণী এর মধ্যে রয়েছে ,যেমন - ভাষাগত মিল, আচরনগত মিল, এমনকি পদবিগত মিল, এই সমস্ত মিলের জন্য খুব সহজেই মাহালি জাতির লোকেরা খুব সহজেই সাঁওতাল জনজাতির মধ্যে বিলিন হয়ে যাচ্ছে । এই প্রসঙ্গে একটি জিনিস জানিয়ে মাহালিকে স্বচক্ষে দেখেছি যারা নিজেদের প্রকৃত জাতিসত্তাও জানেনা , এমনকি খোঁজ নিলে আপনি এমন অনেক মাহালি লোকেদের পেয়ে যাবেন যারা তাদের জাতিগত শংসাপত্রে মাহালি না বসিয়ে সাঁওতাল বলেই উল্লেখ্য থাকে । যেটিও মাহালি জাতির পিছিয়ে পরার অন্যতম কারন ।
এছাড়াও আরো বহু কারন রয়েছে যেগুলি মাহালি জাতির পিছিয়ে পরার কারন, যেমন - শিক্ষার অভাব, সঠিক শিক্ষার অভাব , অনুকরনতা, ইত্যাদি ইত্যাদি । আমি সমস্ত বিষয়ে আলোচনা না করে সেই বিষয়গুলিই আলোচনা করলাম যেগুলো খুবই  অপেক্ষাকৃত জটিল । যদি সাহস দেন তাহলে আরো অনেক বিষয় আছে যেগুলো তুলে ধরা যেতে পারে । আপনাদের জন্য শুভ কামনা রইলো ।
WhatsApp

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন