কখনো বা ধর্মের নামে , কখনো বা জাতিগত বৈষম্যের নামে আজ বিদ্বেষের আগুন ছড়াচ্ছে জাতিবিদ্বেষীরা, বাবড়ী মসজিদের দখল নেওয়ার সুবাদে কিছুটা দাঙ্গার ধোঁয়াই হাল্কা অগ্নি ফুলকি পড়লেই রাজধানী দিল্লী হয়তো জতুগৃহে পরিণত হতে পারতো। কিন্তু যে ধর্মাবেগ উগ্রতার রুপ নিচ্ছে তাতে জাতীভেদ আরো প্রকোট হয়ে দাঁড়িয়েছে , তৈরি হয়েছে,জাতিবিদ্বেষের বাতাবরন যার পরিপ্রেক্ষিতে শুধু ঘৃনা নয়, চলছে অগনিত দলিতনিধন, দলিত নির্যাতন এবং দলিত উৎপীড়ন।
সুযোগ সন্ধানি বাবুদের দল (শিল্পপতী বর্গ) এমন সুবর্ণ সুযোগের হাতছাড়া করতে নারাজ। ছলেবলে, কলেকৌশলে SC/ST দলিতদের দাবিয়ে রাখার কতই না চেষ্টা ওরা করে চলেছে ধরতে পারবেন না।
আদিবাসী পুজো |
ছলেবলে সিদ্ধহস্ত বাবুরা হাতে ফুলের ডালা, মুখে আত্মীয় সুলভ হাসি , তার উপর জঙ্গল মহলের আদিবাসীদের অতিথীবরণের নম্রতা ,সুযোগ বুঝে পিঠের পিছনে লুকিয়ে রাখা ছুরিটা চালিয়েদিলো বাবুরা , এখানে প্রসঙ্গটা একটু খুলে বলি স্বর্গীয় পন্ডিত রঘুনাথ মূৰ্মু সাঁওতালি অলচিকী হরফে শিল্পপতিদের সংরক্ষন প্রদানে এগিয়ে আসা আর সুযোগ বুঝে আদিবাসীদের স্বভূমি থেকে উচ্ছেদ করা। ভারতীয় সরকার এখন বুঝে গেছে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নতির পক্ষে উগ্র প্রাকৃতির জাতীয়তাবাদ আর সাথে বেসরকারীকরনের প্রয়োজন রয়েছে , সম্পূৰ্ণ PPP প্রাইভেট পার্টনার পলেসি , প্রথমে রেল, তারপর একএক করে LIC, BSNL,BPCL এখন আবার কয়লা আবন্টনে বেসরকারি করন, ওহ আরেকটি বিষয় রয়েছে সরকারি চাকুরিও নাকি বেসরকারি করনের আয়তাই আসতে চলেছে । সুতরাং দেশের সার্বিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে দরকার পর্যাপ্ত পরিমানে জায়গার। আমাদের দেশ মাতার বক্ষে জায়গা প্রচুর , জঙ্গল মহলতো রয়েছেই , সেখানে অল্প শিক্ষীত সরল মনের আদিবাসীদের সরানো কোন বড় ব্যাপার নই, তাইতো 'আত্মনির্ভর ভারত অভিযান’ প্রকল্পের নামকরনে ৪১টি কয়লা খনির বাণিজ্যিকীকরণের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী , যে সমস্ত কয়লাখনির শিংহভাগই রয়েছে আদিবাসী সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাই।
কয়লা খনির বেসরকারিকরণ চলছে |
দুই ধাপে মোট ৪১টি কয়লা খনি বেসরকারি হাতে তুলে দিতে ইলেকট্রনিক নিলাম প্রক্রিয়া চালু করেছে কেন্দ্র ,সুতরাং বাবুরা নতুন করে ফিরে আসবে উপহারের থালা নিয়ে, কারন রয়েছে সন্তান স্বরুপ জঙ্গলবাসী আদিবাসীরাই তো এই কয়লাখনির পর্যাপ্ত জায়গা আর শ্রমিক জুটাবে, এই প্রসঙ্গে দেশের নেতৃত্বের দাবী জঙ্গল এলাকাই কয়লাখনির বেসরকারী করনে লাভ হবে মূলত আদিবাসীদেরই , সত্যি আদিবাসী সরলতাকে বোকামি ভাবাটা একপ্রকার খেয়ালীপনা স্বরুপি বলা চলে ,একটু একটু করে অগ্রাসন চলবে, সুপ্রিম কোর্টতো রয়েছেই কলমের একটা খোঁচাই ভূমিপুত্রদের ভিটে মাটি থেকে বহিষ্কার করতে, সুতরাং আগে দাবি হওয়া উচিত পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরন তারপর কয়লা বেসরকারিকরণ । তাইতো আসলে সব কিছুই যে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন , G 5 এর সদস্য রাষ্ট্র ভারতও সুতরাং উন্নয়ন শিল রাষ্ট্র হিসাবে শিল্পপতিদের স্থান ও ভারী কর্মে পটু শ্রমিকের চাহিদা পূরণ করার একটাই রাস্তা আদিবাসীদের দমিয়ে দাও , এদের দমালেই জায়গা আর শ্রমিক দুটোই পূরণ হবে।
অন্যদিকে সবকিছুর বেসরকারীকরণ তো চলছেই ভূমিপুত্র আদিবাসীদের বাঁগিয়ে আনার সব বন্দোবস্ত প্রায় সমাপ্ত , ১ এন আর সি ,২ সুপ্রিম কোর্টের রায় বাবদ জমি থেকে উচ্ছেদ ৩ সরকারি মাধ্যমের বেসরকারিকরণ । বেসরকারী ক্ষেত্রে কোন সংরক্ষন নেই , সুতরাং সদ্য শিক্ষার আলোকে প্রানবন্ত আদিবাসী যুবকেরাও শ্রমিকের আশন নেবে, ঠিক তো সংরক্ষনের বিষয়টি আবার উঠে এলো , সংরক্ষন দেশের সার্বিক উন্নয়নে বাধা দিচ্ছে সুতরাং সংরক্ষন তুলে দেবার দরকার ? সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল সংরক্ষন প্রস্তাবনাই লেখা নেই , আর প্রস্তাবনাতো সংবিধানের আত্মা - সুতরাং সংরক্ষন কোন বাধ্যতা নই।
অন্যদিকে সবকিছুর বেসরকারীকরণ তো চলছেই ভূমিপুত্র আদিবাসীদের বাঁগিয়ে আনার সব বন্দোবস্ত প্রায় সমাপ্ত , ১ এন আর সি ,২ সুপ্রিম কোর্টের রায় বাবদ জমি থেকে উচ্ছেদ ৩ সরকারি মাধ্যমের বেসরকারিকরণ । বেসরকারী ক্ষেত্রে কোন সংরক্ষন নেই , সুতরাং সদ্য শিক্ষার আলোকে প্রানবন্ত আদিবাসী যুবকেরাও শ্রমিকের আশন নেবে, ঠিক তো সংরক্ষনের বিষয়টি আবার উঠে এলো , সংরক্ষন দেশের সার্বিক উন্নয়নে বাধা দিচ্ছে সুতরাং সংরক্ষন তুলে দেবার দরকার ? সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল সংরক্ষন প্রস্তাবনাই লেখা নেই , আর প্রস্তাবনাতো সংবিধানের আত্মা - সুতরাং সংরক্ষন কোন বাধ্যতা নই।
মন চাইছে একটা ছোট্ট তথ্য তুলে ধরতে - বেসরকারি ক্ষেত্রে সংরক্ষন নেই , সরকারি ক্ষেত্রে মাত্র ৩% এর একটু কম ,আবার সংরক্ষিত পদে কাজ করা কর্মচারীর সংখ্যা 2% এর থেকেও কম। তাহলে বুঝতেই পারছেন কত শতাংশ ছাত্র ছাত্রী সংরক্ষণের সুযোগ নিয়ে চাকুরি পায়, অন্যদিকে সরকারি বেসরকারিকরনে নব শিক্ষায় শিক্ষিত আদিবাসীদের সেই জায়গাটাও বন্ধ হয়ে যাবে, সদ্য প্রকাশিত পি এস সির ST তালিকা আরো কঠিন বাস্তব তুলে ধরছে। ঠিক বলেছিলেন দেশের নেতা - ' দেশ বাদাল রাহা হে । ইয়ে নায়া ইন্ডিয়া হে। সাবকা সাথ সাবকা বিকাশ।" তাই তো আমরা পেয়েছি দলিত রাষ্ট্রপতি , পেয়েছি কাশ্মিরে আদিবাসী লেফটেন্যান্ট জেনারেল।
হুম ঠিক ধরেছেন রাম রাজত্ব এসে গেছে যেখানে দলিত, আদিবাসী বলে কেও নেই , কিন্তু তার সাথে এসে গেছে সামাজিক মাধ্যমের যুগও ,প্রথমে জুতোই জল ভরে দলিতকে পান করানো ,শেষে মূত্র ভরে পান করানো , দেশের সার্বিক উন্নয়নের অন্যদিক তুলে ধরে। এই সার্বিক উন্নয়নে আমেরিকাও পিছনে নই - প্রমান হয়ে গেছে আমেরিকাই অন্যায়ের প্রতিবাদ দূৰ্বলেরাও করতে জানে , এক কৃষ্ণাঙ্গের মৃতুতে গোটা আমেরিকাই আন্দোলন হয়েছে। এবার ভারতের পালা , ভারতের আদিবাসী ও দলিত সমাজ যেদিন এটা করতে পারবে , সেদিন আবার রবীন্দ্র নাথের সংগীত পুনরাই তার বাস্তবিকতা প্রমান করবে - ভারত আবার জগৎ মাঝে শ্রেষ্ঠ আসন লবে।
আমেরিকার প্রতিবাদ দেখেছে বিশ্ব |
বুঝতে পারলাম না, মূল লেখাটা বাংলায় লেখা, না বাংলায় অনুবাদ করা হয়ছে। নিঃসন্দেহে সময়োপযোগী লেখা। জনসচেতনামূলক। বর্ণবাদী কেন্দ্রীয় সরকার যে উন্নয়নের নামে আদিবাসী ও দলিত শ্রেণীর বিরুদ্ধে ক্ষতিকর ও ধ্বংসকামী নীতির প্রণয়ন ও প্রয়োগ করে চলেছে ও করতে যাচ্ছে তার একটা চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা এখানে আছে। তবে লেখককে অনুরোধ করব তবে বানান বাক্যগঠনে আরও যত্নবান হতে। হাতের কাছে একটা বাংলা বানান অভিধান রাখা যেতে পারে, সন্দেহ হলেই দেখে নেওয়া যায়। লিখতে লিখতে উন্নতি হবে। লেখা চলতে থাকুক।
উত্তরমুছুন