মাহালী ক্ষুদ্র আদিবাসী উপজাতি প্রতিনিয়ত ঝুকেঁ চলেছে ভিন্ন সংষ্কৃতি দিকে , ভিন্ন সংষ্কৃতির জাঁক-জমকে পা বাড়িয়ে মাহালি উপজাতি আজ নিজের ঐতিহ্যের শ্রেষ্ঠ অংশ গুলিকেও হারাতে বসেছে। মহান নৃতত্ত্ববীদ রিজলে বলেছেন মাহালি উপজাতি হল শিল্পী জাতি। শিল্পী জাতির অংশ হিসাবে সংগীতে এবং নৃত্যতে এই উপজাতি বেশ পারদর্শী। মাহালী উপজাতির মহান লেখক তথা সংগীত রচনাকার মহাকবি স্বর্গীয় ঘাসীরাম মাহালি ,নাগপুরি সান্দরি ভাষাই গান রচনা করে গেছেন প্রচুর। এমন সংগীত-প্রীয় ও নৃত্য-প্রীয় শিল্পী উপজাতি ক্রমশঃ তাদের স্বকীয় সংগীত এবং নৃত্য ,যেটি পরিচিত ঝুমের হিসাবে , সেটি আজ হারাতে বসেছে ।এমনাবস্থায় কিছু স্বজাতীয় সংস্কৃতি-প্রীয় ব্যাক্তিত্ব তাদের সেই ঝুমের ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনা জীবনের অন্যতম উদ্দেশ্য হিসাবে মনে করেছেন , তাদের মধ্যে একজন হলেন বোলপুর,শান্তিনীকেতনে দুলোন মহুলী ও তার দল গীতাঞ্জলী মাহলে ঝুমের দল।। শিল্পি দুলন মহুলীর কলমে ছোট্ট প্রতিবেদন :~
মাহলে সমাজে ঝুমের
ভারতে আদিবাসী সম্প্রদায়ের অন্তরগর্ত একটি জনগোষ্টী হচ্ছে মাহালী জাতি।অন্যান্য আদিবাসী সম্প্রদায়ের তুলনায় মাহালীদের জনসংখ্যা খুবোই কম।মাহালী জন গোষ্টীর আদি বাসভূমি হচ্ছে দুমকা জেলায়।সেখান থেকে পরবর্তী কালে নানান রাজ্যে বংশ পরম্পায় বসবাস করতে থাকে।
গীতাঞ্জলি মাহালি ঝুমের নৃত্যদল শান্তিনিকেতন |
মাহালী জনগোষ্টীর লোকেরা কঠোর পরিশ্রমী, রসিক ওআনন্দপ্রিয়।মাহালীদের প্রধান কর্ম হচ্ছে বাঁশ কাজ।এই বাঁশ দিয়ে তাঁরা নানা রকম জিনিস তৈরী করে।সংসারে পুরুষ ও মহিলা উভয়েই সারা দিন কঠোর পরিশ্রম করে বিকেলে পচুই মদ বা মহুয়া সেবন করে থাকে।শরীরের ক্লান্ত দূর করার জন্য আর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কথা এই সময় ঝুমুর গান ও নাচ পুরুষ ও মহিলা দুজন ই করেন একটু আনন্দ করে মনের দুঃখকে দুর করান আর রীতিমত পরের দিন একোই রকম পরিশ্রম করে যান ।
এছাড়াও মাহালী জনগোষ্টীর লোকেরা পরবে গোটা পাড়ার লোক মিলে বিরাট আনন্দ করেন ।সারা দিন রাত ধরে ঝুমুর নাচ ও গান চলে পরবে ।করম পরবে দু দিন ধরে নাচ গান চলে।আর বিয়ের অনুষ্টানে তো বলতে নেই গোটা পাড়ায় শুধু মাদলের আওয়াজ। এই ভাবেই মাহালীরা নিজের কালচার,সংস্কৃতি,নাচ গান সব কিছুকে বাঁচিয়ে রেখেছে।আজোও চলছে পরবর্তী কালেওএই রকম চলতে থাকবে।
মাহলে জন জাতিরা কঠোর পরিশ্রমি হয় তারা সারা দিন স্বামী,স্ত্রী মিলে পরিশ্রম করে বিকেল একটু আনন্দ করে,একটু হাড়িয়া খায়ে এই ঝুমের নাচ ,গান করে ।মনেও একটু শান্তি পাই।আবার সকালে যে যার কর্মে চলে যায়।ঝুমের গান আর বাজনার এত তাল ছন্দ যা কল্পনা হিন।এই তাল,ছন্দ যে অনুভব করে সে যেন কোলের ছোট্টো বাচ্চাকে রেখে দিয়েও ওই ঝুমের আখাড়াতে ছুটে যাবে।প্রতিটি ঝুমের গানের সুন্দর মানে থাকবে যা শুনে অঙ্গে ভিজবে।
আমি দুলোন মহুলী ছোট বেলায় দাদু,ঠাকুমা গন করতো তখন গান শুনে বিরক্ত হতাম।কিন্তু এখন আমি নিজে টিম করেছি।ঝুমের গানের সার ,রশ,গন্ধ সব অনুভব করে মনে করি এই ঝুমের গান ,নাচ কি জিনিস।গান যদি করতে লাগি তো কখন দিন থেকে রাত হয় তাও টের পাই না।আজকে আমার দাদু,ঠাকুমার কথা খুব মনে পড়ে।ওরা থাকলে আরো অজানাকে জানার চেষ্টা করতাম এই মাহলে ঝুমের গানের,নাচের,কর্মের মধ্যদিয়ে। আমি বর্তমান টিম করে অনেক জায়গাই এই ঝুমের পোগ্ৰাম করেছি।প্রচুর সম্মান পেয়েছি।শিল্পীর মান ও পেয়েছি।আমি রাজ্যতে পর পর তিন বছর ঝুমেছর গানে প্রথম স্থান অর্জন করেছি।তো বলুন এই থেকে বড়ো আর কি হতে পারে।আমি এখন আমার পাড়াতে আরো একটি দল করে দিয়েছি যাতে সবাই বুঝুক যানুক মাহলে কলচার ।আর সবাই যেন একত্রীত হয় যে আমরা মাহলে।সেটা সফল ও হয়েছে।যায় হো সব মহলে কে বলছি আমরা কখোনোই আমাদের কালচার,সংস্কৃতিকে হারা বো না।সবাই মিলে আমাদের কালচারকে বাঁচিয়ে রাখবো।
দুলোন মহুলী
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন