ভারতীয় রাজনীতিতে বিহার বিধানসভা ফলাফলের গুরুত্ব
বিহার বিধানসভা নির্বাচনের বুথ ফেরত সমীক্ষা মহাজোটের জয়ী হবার সম্ভাবনা দেখাচ্ছে, যা তাৎপর্যপূর্ণ ও শিক্ষনীয় বটে। যদিও এই ধরনের সমীক্ষার কোন বৈজ্ঞানিক ব্যখ্যা হয় না। তবুও প্রতিবার ভোটের পরে নির্বাচনী ফলাফলের একটা আভাস পাওয়ার চেষ্টা এই ধরনের সমীক্ষার মাধ্যমে ফুটে উঠে। অনেক সময় দেখা গেছে এই ধরনের সমীক্ষা গুলি সঠিকও হয়েছে। যাই হোক, কেন এই ফলাফল তাৎপর্যপূর্ণ তা আলোচনা করা যাক।
আরো পড়ুন - কোলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল
প্রথমতঃ যদি সত্যিই NDA পরাজিত হয়, তাহলে তা হবে পর পর বিভিন্ন রাজ্যে পরাজয়ের ধারাবাহিকতা। এর আগে রাজস্থান ,মধ্যপ্রদেশ ,ঝাড়খন্ড ,মহারাষ্ট্র সহ আরো কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি জোট পরাজিত হয়েছিল।
বিহার ভোট কোন পথে? |
তৃতীয়তঃ করোনা পরবর্তী সময়ে প্রথম নির্বাচন সেই রাজ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যেখানে সবচেয়ে বেশি পরিযায়ী শ্রমিক ফিরে এসেছিল । কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি পরিযায়ী শ্রমিকদের যে বঞ্চনার অভিযোগ তার প্রতিফল হিসাবে রাজনৈতিক দল গুলি যে এই ফলাফল তুলে ধরবে সে বিষয়ে দ্বিমতের কোন অবকাশ নেই।
চতুর্থতঃ কেন্দ্রীয় শাসকদলের পরাজয় এ ইঙ্গিতও বহন করে যে বিহারের মানুষ ধর্ম , জাতপাত, সীমান্ত সমস্যা এই সব এজেন্ডার বাইরে চিন্তা ভাবনা করে ভোট দিয়েছেন। যা পরবর্তীকালের নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলের কাছে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা রুপে পরিগণিত হবে।
পঞ্চম মহাজোটের তরফ থেকে কর্মসংস্থানের যে দাবি করা হয়েছিল তা যে যুব সমাজ গ্রহণ করেছেন তা সমীক্ষা থেকে স্পষ্ট। তাই এর পরবর্তীতে রাজনৈতিক দলগুলির বিশেষ ভাবে বেকার সমস্যার সমাধানে নজর দেওয়া প্রয়োজন হয়ে পড়বে। এই সমীক্ষা ফলাফল বিশ্লেষণ করলে বলা যায় অসত্য তথ্য দিয়ে বেশি দিন মানুষ কে বোকা বানাতে তারা পারবেন না।
ষষ্ঠতঃ এই নির্বাচনের সমীক্ষা ফলাফল যদি মিলে যায় তা হলে পশ্চিমবঙ্গে শাসক ও বিরোধী উভয় দলকে তাদের রণকৌশল নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।
আরো পড়ুন - রাম রাজত্ব ও শুদ্র দলিত সমাজ।
বিভিন্ন চেনেলের দ্বারা সমীক্ষার ফল |
সপ্তমতঃ এই সমীক্ষার ফলাফল থেকে সবচেয়ে বড় যে সিদ্ধান্ত দাঁড়াবে, তা হল সব রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে শুধু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কে সামনে রেখে নির্বাচনী বৈতরণী পাড় করা সম্ভব নাও হতে পারে। তাই স্থানীয় স্তরে দৃঢ় নেতৃত্বের প্রয়োজন সব সময় দরকার পরবে।
সব শেষে নির্বাচনী ফলাফলের জন্য আমাদের আগামী ১০/১১/২০২০ তারিখ অবধি অপেক্ষা করতে হবে।
কলমে
রাজীব সাহা
( রাষ্ট্রবিজ্ঞান সহকারি অধ্যাপক )
WhatsApp UNIQUE KNOWLEDGE
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন