History of dakshin dinajpur, bangla bible, DAKSHIN DINAJPUR, Uttar DINAJPUR, Malda, chiristanity, santhal,indian tribe,mahli tribe, unknown facts, tourist place of Malda, tourist place of Dakshin DINAJPUR ,bible, bible story, bible story in bangla,dakshin dinajpur news,adibashi,sautal,indian tribe culture,

TRANSLATE ARTICLE TO YOUR LANGUEGE

শুক্রবার, ২০ নভেম্বর, ২০২০

নেশা যেখানে সমাজের অঙ্গ || আদিবাসী উৎসবে হাড়িয়া মদ বা মেথা || adibashi drinks hariya metha wine ||

 "জাতে মাতাল, তালে ঠিক" কথাটি কানে এলেই  জ্যাকস-স্পেরো নামক সমুদ্রজাহাজ লুন্ঠনকারীর চরিত্রটি ভেসে ওঠে। টাল-মাটাল অবস্থা কিন্তু মারাত্মক চালাক, বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই তার এই চরিত্রের প্রসংশক, এমনকি আমিও। কথার আঁকিবুকিঁতে নতুন মোড়ের দিকে পদার্পণ, আদিবাসী সমাজ ব্যবস্থায় মদ্যপানের প্রবণতা বিষীয়ে দিচ্ছে নাতো গোটা সমাজকে?

হাড়িয়া-মেথা-হাড়িয়া-মেথা-পচানি-মদ-চুল্লু
মদ বানানোর ব্যস্ততা

স্বল্প আলাপ-চারিতাই তর্কালঙ্কার মূৰ্তি ধারন করে মহূৰ্তে দুটো দলের উদয়, একপক্ষ আরেক পক্ষকে বিধঁছে তর্কবাণে। আমি কোন পক্ষের যোদ্ধা হিসেবে  পদার্পণ করবো, আমি তো সেই সমাজেরই এক প্রতিনিধি, যারা আতিথ্যে মদ্যপানের রেওয়াজ রেখেছে আজো। সময়ের ধারাবাহিকতাই যদিও এই প্রবণতা শেষের দিকে তবুও, পিছু ছাড়েনি। পাশ্চাত্যের কিছু কিছু দেশে সম্মান প্রদর্শনের অঙ্গ শ্যাম্পেন বা ওয়াইন পরিবেশন, কিন্তু যত দোষ আদিবাসীদের। পাশ্চাত্য আর প্রাচ্যের তর্কে করোনা অতিমারীতে চলতে থাকা লক-ডাউনের মাঝে, হঠাৎ মাতালদের একদিনের স্বস্তি, কোলকাতার মদের দোকানে দীর্ঘ লাইন, সেই চিত্র দেখেছে বঙ্গবাসী। কোই?সেই ভিড়ে তো আদিবাসীদের সংখ্যা নেই! আমি বাবু, হিসাব করি লম্বা লাইন দেখে নই, শতাংশের হার দেখে। বলুনতো কোনো এক পাড়ার চোলাই মদের দোকানে মোট ২০ জন মাতাল মদ্যপান করছে, যার মাঝে ১২ জন দিকু (অআদিবাসী) এবং ৮ আদিবাসী, চলুন না হয় সংখ্যাটা আরেকটু পরিবর্তন করি দিকু (অ-আদিবাসী) ১৫ জন আর আদিবাসী ৫ জন, তাহলে কারা বেশি মাতাল? চাক্ষুষ বিচারে দিকু অবশ্যই, কিন্তু শতাংশের বিচারে? আরে বাবা! প্রত্যেক সমাজের অভ্যন্তরে নেশাক্ষোর লোকেরা শতাংশের পরিপ্রেক্ষীতে খানিকটা রয়েছে, কোনোটাতে কম আবার কোনোটাতে বেশী, কিন্তু  শতাংশের পরিমানটা বেড়ে গেলেই সেই সমাজ জতুগৃহে পরিণত হয়, পাশাপাশি তা অত্যাধিক হলেই তার ফল গোটা সমাজটাকেই ভোগ করতে হয়, কিন্তু এর পরিসংখ্যান আজো হাতছাড়া।
 আরে পড়ুন- রাম রাজত্ব আর শুদ্র দলিত সমাজ।

এবার না হয় বিষয়বস্তুর একটু গভীরে প্রবেশ করা যাক। কে মাতাল? কে রাখাল? সেটা সরিয়ে আদিবাসী সমাজের গভিরে একটু অধ্যায়ণ করা যাক। পূৰ্ব থেকেই আদিবাসীরা তাদের সমাজ ব্যবস্থার পুরানো রিতি নিতিকে আগলে রেখেছে নিজ সন্তানের মত। সংস্কার, রিতি-রেওয়াজ, পরম্পরা, ভাষা, খাদ্যাভাষ প্রভৃতি কোন জাতি বিশেষকে অন্য সকল জাতিদের থেকে  আলাদা করে। আদিবাসী সমাজ ব্যবস্থায় বিভিন্ন পরব ও অনুষ্ঠানে হাঁড়িয়া বা মেথা রাখার পরম্পরা রয়েছে, যা আগত সকল পরিজনদের বরন এবং আনন্দ উৎসবে আনন্দের খোরাক হিসাবে পরিবেশিত হয়।

রান্নার তাগিদে আদিবাসী মহিলা
হাঁড়িয়া নেশা জাতীয় পানিয়, আদিবাসী সমাজ সংস্কৃতির অভিন্ন অঙ্গ। আবার তার পাশাপাশি রয়েছে চাল, মহুয়া ও গুড়ের চোলাই মদ, পরিচীত নাম চুল্লু। এই দুই প্রকার নেশা জাতীয় পানীয় বানানোর প্রক্রিয়া একে অপরের ভিন্ন এবং অন্য নেশাজাতীয় পানীয় তৈরীর থেকে সম্পূৰ্ণ আলাদা। এই দুই প্রকার পানীয় তৈরিতে ব্যবহার করা হয় রানু নামক একপ্রকার বিভিন্ন ভেষজ মিশ্রিত বড়ি, কিছু কিছু স্থানে এর পরিচিত নাম ইষ্ট, আবার অনেকে বাকল-ফলও বলে থাকে। যাইহোক পানীয়গুলো তৈরীর সম্পূৰ্ণ বর্ণমালা বলতে চাইনা, কেননা বর্তমানের পাঠক-বর্গ বড্ড চালাক চতুর,পাছে তারা বানানোর পদ্ধতি শিখেনিয়ে আদিবাসীদের সর্বনাশ না করে ফেলে, বাস্তব সত্য আদিবাসী সমাজের একটা বিশাল অংশের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো এই নেশাজাতীয় পানীয় তৈরীর উপর নির্ভরশীল, যা আদিবাসী সমাজ ব্যবস্থাকে ঠেঁলে দিচ্ছে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে। পরিচিত ভ্রাতা-ভগিনীদের বলেছি, এটাই কি উপার্জন আর জীবনধারনের উত্তম পন্থা, এছাড়াও বহু পন্থা রয়েছে, কথা মত কিছু পরিবর্তন আসলেও, পেশা পরিবর্তনে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটলো না, বরং আর্থিক পরিবর্তনে টান পরে, কাজেই এই পানীয় তৈরীর পেশাই হয়ে উঠে অন্যতম।
যেন এক অসহিষ্ণু দৃশ্য, শিশু কার্তিকেরা কাঁদছে ক্ষিদের জ্বালাই, আর পালক পিতা ভোলেনাথ নেশায় বুঁদ নিজ আষনে। নেশার প্রতি আকর্ষণ হঠাৎ যেন সম্পর্কের আকর্ষণকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে। এগুলো বাস্তবের খন্ডচিত্র, অভিঙ্গতার পটভূমি, কিন্তু নিন্দনীয় নই, নিন্দা করলেই তুমি "দিকু"।

WhatsApp

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন