খেলা নই, এ যেন মরণখেলা, শিশু কিশোরদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে মোবাইল গেম বিংশ শতাব্দীতে বাধা হয়ে দাড়িয়েছে। বিশেষঙ্গদের মতে মোবাইল গেমের নেশাই মেতে থাকা কিশোর কিশোরীরা অন্য কিশোর কিশোরীদের তুলনায় বেশি হিংস্র স্বভাবের হয়, পাশাপাশি তারা অপেক্ষাকৃত অতিরিক্ত আত্ম শোচনায় ভোগে। তাদের কাছে জীবন হয়ে উঠে অনর্থক। বিশেষত এই ধরনের শিশুরাই প্রধানত জরিয়ে পরে অনলাইনের মারন খেলায়। এই সমস্ত খেলায় মত্ত কিশোর কিশোরিরা নিজের জীবন প্রযন্ত শেষ করতে পিছ পা হয়না।
এমন কোন খেলা? যা জীবন ছিনিয়ে নেই, হ্যাঁ আছে আছে বহুত আছে। তবে মোবাইলের মারনখেলার প্রথম নজীরটি উঠে আসে পাশ্চাত্যে, তবে ভারতে এই খেলা গুলি জায়গা করতে সময় নেই নি।
সিনিয় কিত বা ব্লু হোয়েল (নীল তিমি)
গোটা বিশ্বে প্রথম অনলাইন মারনখেলা হিসেবে ব্লু হোয়েল খেলাটি সবার নজরে আসে, যেটি "নীল তিমি প্রতিযোগিতা (ব্লু হোয়েল চ্যালেঞ্জ)" নামেও পরিচিত, তবে এই খেলার মূল নাম সিনিয় কিত। ফিলিপ বুদেইকিন নামে মনোবিজ্ঞানের এক প্রাক্তন ছাত্র নিজেকে ওই গেমের আবিষ্কর্তা বলে দাবি করেছিল, যদিও এর সত্যতা জানা সম্ভব হয়নি।
নীল তিমি খেলার শেষ পরিনতী |
খেলাটি রাশিয়ায় ২০১৩ সালে প্রথম শুরু বলে জানা যায়, একুশ বছরের ওই রাশিয়ান যুবকের দাবি, যারা নিজেদের বাস্তব জীবন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, যাদের জীবনে হিশেষ কোনো লক্ষ্য নেই এবং যারা মানসিক অবসাদে ভোগে, প্রতিনিয়ত আত্মহত্যার কথা ভাবে, তাঁদের আত্মহত্যার জন্য মজাদার সহজপন্থা পথ তৈরি করাই এই খেলার ভাবনা।
কেমন এই খেলা ? এই খেলায় ধাপে ধাপে পৌছতে শেষ পরিনতিতে, যেখানে রয়েছে আত্মহত্যা। মোট রয়েছে ৫০ টি ধাপ যা খেলার নির্দেশ মোতাবেক ৫০ (পঞ্চাশ) দিন ধরে বিভিন্ন কাজ করতে হয়, যেমন হাত কেঁটে তিমির ছবি আকাঁনো, রাত্রে একাকী ভূতের ছবি দেখা ইত্যাদি, প্রত্যেক ধাপ পেরোনোর পর তার প্রমান স্বরুপ ছবি তুলে পাঠিয়ে দিতে হয় খেলা নির্দেশকের কাছে এবং সর্বশেষ চ্যালেঞ্জ হিসেবে অংশগ্রহণকারীকে আত্মহত্যা করার নির্দেশ দেয়া হয়। বিশ্বে এখনও পর্যন্ত ব্লু হোয়েল খেলতে গিয়ে ১৫০ জনেরও বেশি কিশোর-কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবী করা হয়।
মোমো গেম
নীল তিমির মত, আর নীল তিমির মত এটিও একটি অনলাইন গেম। এই গেমেও রয়েছে কিছু মারাত্মক খেলার মায়াজাল, যা কেড়ে নিতে পারে কিছু অবুঝ কিশোর কিশোরীদের জীবন। এই খেলাটি প্রথম তার আঘাত হানে আর্জেন্টিনায়, তার পরেই এই খেলাটি বীশ্ববাসির নজরে আসে।
খেলাটি সামাজীক মাধ্যম হোয়াটসএপের মাধ্যমে লিংক পাঠিয়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয় কিশোর কিশোরিদের মাঝে, যার পর চলে মোমো নামের একটি ভয়ঙ্কর আকৃতির পাখির আলাপচারিতা, যে খেলায় অংশগ্রহনকারীদের নানাপ্রকার ভয় দেখিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে এক প্রকার বাধ্য করে।
ভারতেও এই মোমো গেম কিছুটা প্রভাব ফেলেছিল।
মোমো খেলার লগো |
খেলাটির নাম শুনেই বোঝা যাই, খেলাটি কেমন ধরনের হতে পারে। এই খেলায় নিজেদের হাত-পা নিজেরাই কেটে নিজেদের নাম কিংবা বান্ধবীর নাম অথবা কোনো বিশেষ চিত্র তুলে ধরে অংশগ্রহণকারীরা। সেই ছবি আপলোডও করে নিজেদের এই সোশ্যাল মিডিয়ায়। যদিও এই খেলায় এখনো প্রযন্ত কারো মৃত্য ঘটেনি।
আরো কিছু খেলা
দ্য সল্ট অ্যান্ড আইস চ্যালেন্জ
এই গেমে প্রথমে চামড়ার উপর নুন রাখতে হয়। তার উপর বরফ চেপে ধরতে হয়। এতে বরফের তাপমাত্রা কমে যায়। যা ত্বকের উপর ভয়ঙ্কর ক্ষতের সৃষ্টি করে। খেলায় এখনও কারও মৃত্যু হয়নি।
দ্য ফায়ার চ্যালেঞ্জ
এই ভয়ানক খেলার নেশায় গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় অংশগ্রহণকারীরা। অনেকেই আবার সেই ঘটনার ভিডিও আপলোড করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
দ্য পাস আউট চ্যালেঞ্জ
এটি এক ধরনের চোকিং গেম। ভারতের বাইরে , বিশেষ করে ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশগুলির মধ্যে এই গেমের জনপ্রিয়তা বিপুল। এখনও পর্যন্ত ১০০০ জনের প্রাণ কেড়েছে এই গেম। WhatsApp UNIQUE KNOWLEDGE
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন