History of dakshin dinajpur, bangla bible, DAKSHIN DINAJPUR, Uttar DINAJPUR, Malda, chiristanity, santhal,indian tribe,mahli tribe, unknown facts, tourist place of Malda, tourist place of Dakshin DINAJPUR ,bible, bible story, bible story in bangla,dakshin dinajpur news,adibashi,sautal,indian tribe culture,

TRANSLATE ARTICLE TO YOUR LANGUEGE

বুধবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

গঙ্গারামপুর বানগড়ের সম্পূর্ণ ইতিহাস।

দক্ষিন দিনাজপুর আমাদের প্রীয় জেলা। আর এই জেলার বিভিন্ন এলাকাই ছরিয়ে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন কালের বিভিন্ন ঐতিহাসিক সাক্ষি বহনকারী বিভিন্ন ধংসাবশেষ। কিন্তু দুংখের বিষয় হল যদিও প্রশাসন এগুলি রক্ষার্তে এগিয়ে এসেছে, তবুও তা যথেষ্ট না। আর পাশাপাশি এটাও বলতে চাই, দক্ষিন দিনাজপুরের ইতিহাস জেলাবাসির কাছে খুব একটা পরিচিত না, আর যার ফলে দক্ষিণ দিনাজপুরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে অনেক ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। আর এটা আমার ছোট একটি প্রচেষ্টা যাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের মানুষ এই জেলার প্রকৃত ইতিহাস ও ঐতিহ্য জানতে পারে।
গঙ্গারামপুর শহর আমার বাড়ির শহর, সেইজন্য আমি দক্ষিণ দিনাজপুরে অবস্থিত আমার শহরকে হৃদয় থেকে ভালোবাসি।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব 

দক্ষিণ দিনাজপুরে জেলা তার সমৃদ্ধশালী ঐতিহাসিক স্থানসমূহ ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও ঐতিহাসিক স্থানগুলোর পৌরাণিক সংযোগের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত, আর যে বিষয় সমূহ গুলো বিভিন্ন গ্রন্থে রয়েছে এছাড়াও অনেক পাণ্ডুলিপিতে বর্ণনা করা হয়েছে। পূর্বে পশ্চিমবাংলার অবিভাজিত দিনাজপুর জেলা সমূহ একটি অংশ হিসাবে পরিচিত ছিল যা প্রাচীনকালে পুন্ড্র বর্ধন নামে পরিচিত ছিল।
বৃহৎ কথাকোষ অনুসারে চন্দ্রগুপ্ত পুন্ড্র বর্ধনের দেবকোটের একজন ব্রাহ্মণের পুত্র ছিলেন, যিনি ভারতের মৌর্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রাচীনকালে গঙ্গারামপুর দেবিকোট নামে পরিচিত ছিল এবং এটি সেই সময়ের রাজধানী ছিল, আর এই নাগরিক ধ্বংসাবশেষগুলো এখনও পাওয়া যায় এবং গঙ্গারামপুরের বানগড়ের চারপাশে এটির প্রমাণ পাওয়া যায় ।

গঙ্গারামপুর বানগড়

বানগড় দক্ষিণ দিনাজপুরের একটি অন্যতম পর্যটন এলাকা। এটি আমাদের শহর গঙ্গারামপুরের অন্তর্গত। গঙ্গারামপুরের বানগড়ের ধ্বংসাবশেষ টিকে রাজা বানের প্রাসাদ হিসাবে মনে করা হয়। রাজা বান শিবের এক মহান উপাসক ছিলেন। রাজা বানের ঊষা নামক একটি মেয়ে ছিল, এবং ঊষার সাথে অনিরুদ্ধে প্রেম ছিল, যিনি কৃষ্ণের নাতি ছিলেন। একবার অনিরুদ্ধ উষাকে জোর করে মথুরাতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন, আর যে রাস্তা দিয়ে অনিরুদ্ধ ঊষাকে হরন করছিলেন সেই রাস্তাএখন ঊশাহরন রোড নামে পরিচিত।
যাইহোক, পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে অনিরুদ্ধের জন্য ঊশার ভালবাসা তার বাবা রাজা বান এবং তার সাম্রাজ্যকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেয়। মনে করা হয় ব্রহ্মণী নদীর তিরে নারায়ণপুর নামক একটি স্থান যেখানে কৃষ্ণ ও বান রাজা মধ্যে মহান যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল।

এই স্থান এর প্রধান নাম

গঙ্গারামপুর অতীত থেকে বর্তমান পর্যন্ত এটি তার নাম ধাপে ধাপে পরিবর্তিত করেছে। অনেক পাণ্ডুলিপিতে এবং পৌরাণিক কাহিনীতে এমনকি মহাভারতেও এই স্থানটির নাম খুঁজে পাওয়া যায়। কটিবর্ষ নামে এই শহরটিকে প্রথম দিকের উল্লেখগুলি বায়ু পুরাণে এবং ব্রহ্ম সংহিতাতেও পাওয়া যায় । হেমচন্দ্র (অভিঙ্গানচিন্তামনি) এবং পুরুষোত্তম (ত্রিকনদশাশা) গ্রন্থে এই এলাকার অনেক নাম উল্লেখ করেছেন যেমন উমাবন, ঊষাভানা, বানাপুর, দেবীকোট, দেবিকুট, শনিতপুরনগর এবং আরও অনেক কিছু। রামচরিতের লেখক সন্ধাকর নন্দীর বানগড়কে ব্রাম্ভন দের নগর হিসাবে উল্লেখ করেছেন , যা রামচরিত শহরের দৈর্ঘ্য এবং মন্দিরের প্রায়শই বর্ণনা করে। এটি পুন্ড্রবর্ধনের অংশ হিসাবে গোটা পুন্ডবর্ধন বা রার অঞ্চল পরিচালিত করত। সন্ধাকর নন্দির মতে এখানে ব্রাহ্মণদের ঘনত্ব ছিল, যেটি এখন দক্ষিণ দিনাজপুরের বানগড়ে অবস্থিত।

খনন কার্য 

বানগড়ের খনন কাজ  কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এর সহযোগিতায় ও অধাপক কে জি গোস্বামীর নেতৃত্বে একটি দল দ্বারা পরিচালিত হয়, যেটি 1938-41 সময পর্যন্ত খুব অল্প সময়ের জন্য হয়েছিল। পুনর্ভবা নদীর তীরে অবস্থিত খননকৃত স্থানটি নগর চরিত্রকে প্রতিফলিত করে যেটি  একটি দুর্গের আকারে ঘেরা রয়েছে  । প্রাথমিক পর্যায়ে খননকার্যে এখানে মৌর্য যুগের নিদর্শন পাওয়া গেছে এছাড়া পরবর্তী পর্যায়ের কুষান যুগের নিদর্শন পাওয়া  গেছে আর যেটি সম্ভবত 200 খ্রিষ্টপূর্বাব্দ - 300 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে অবস্থিত। এছাড়া খনন কার্যে পাঁচটি মাটির স্তর উঠে এসেছে যেগুলো পাঁচটি পৃথক পৃথক যুগের বায়ান করে। এই বানগড় এলাকাটি চারেপাশে প্রচুর ইটের টুকরো দেখা যায়। এখানকার খনন কার্যে একটি ইট নির্মিত প্রশস্ত প্রাঙ্গণ প্রাচীর ,পোড়া ইট দিয়ে তৈরি ড্রেন,তামার মুদ্রা, ষোড়শপদ্ম বিশিষ্ট জলাধার, কিছু মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ এবং আবাসিক ভবনগুলির  ধ্বংসাবশেষ গুলো পাওয়া যায়। এই এলাকাই খননকার্যে মৌর্য, গুপ্ত, কিষান এছাড়া পাল যুগের অস্তিত্বের কথা জানা যায়। 
WhatsApp

1 টি মন্তব্য: