History of dakshin dinajpur, bangla bible, DAKSHIN DINAJPUR, Uttar DINAJPUR, Malda, chiristanity, santhal,indian tribe,mahli tribe, unknown facts, tourist place of Malda, tourist place of Dakshin DINAJPUR ,bible, bible story, bible story in bangla,dakshin dinajpur news,adibashi,sautal,indian tribe culture,

TRANSLATE ARTICLE TO YOUR LANGUEGE

সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯

মালদা ইতিহাস এর এক অংশ আদিনা ফরেস্ট এর হামাম খানা বা লুকোচুরি ঘর ।। যা এখন অবহেলিত ।।


শীতের মরশুম শুরু হতেই  মালদার আদিনাতে উপচে পরেছে ভিড়   ।সারা বছরের মতো এবারো তার কোনো খামতি হয় । ঠান্ডার দিন আমার খুব পছন্দের  তাই এবারের গৌন্তব্য মালদা জেলার আনাচে - কানাচে ।সবাই ঠান্ডার মজা নিতে ছুট দেই দুর দুরান্তে ।আর আমি পরিত্যাক্ত ঐতিহসিক ইমারত গুলোর সন্ধানে । তবে আমার বিশেষ পছন্দ ঐতিহাসিক পবিত্রস্থান সমুহ -যেমন মন্দির ,মসজিদ সমূহ - তার  ফাকে অন্য  জিনিস দেখলে ক্ষতি  নেই।
কিন্তু আজকে প্রতিবেদনের বিষয়টি সেই সমস্ত পর্যটকদের জন্য যারা আদিনা মসজিদ বা ফরেস্ট এ তো যান কিন্তু তার পাশে থাকা এই ঐতিহাসিক স্থানটি দেখতে পান না। কেননা এই স্থানটির বিষয়ে কোন প্রকার প্রচার বা প্রষাশনিক হেল দোল দেখা যায় না । আর এই ইমারতটির স্থানিয় নাম লুকোচুরি ঘর । কিন্তু বাস্তবে এটি একটি সেই সময়ের প্রসিদ্ধ হামাম খানা ।
আদিনা ফরেস্ট, মালদা আদিনা, মালদা আদিনা ফরেস্ট, লুকোচুরি, লুকোচুরি ঘর, হামামখানা,
আদিনার হামামখানার ধ্বংসাবশেষ 
# হামাম খানার অর্থ
"হামাম খানা " শব্দটি নিশ্চয় আপনাদের কাছে নতুন শব্দ হতে পারে ,তাহলে  জেনে রাখুন হামাম খানার অর্থ হল "স্নানাগার" , যেটি প্রধানত তুর্কি আমলে রাজা ও অভিজাতদের স্নানের জন্য ব্যবহৃত হত । জানা যাই যে মোঘল যুগে তৈরি করা হামামখানা গুলোতে তিনটি প্রধান কক্ষ থাকতো - যার প্রথমটি " জাম খানা" দ্বিতীয়টি "নামি গার্ম খানা " আর "গার্ম খানা" । যার মধ্য জাম খানা - জামা কাপর রাখা ও পরিবর্তনের কক্ষ ছিল , নামি গার্ম খানাটি - হাল্কা উষ্ম গরম জলের কক্ষ, আর গার্ম খানাটিতে গরম জলের ব্যাবস্থা থাকতো ।
পরবর্তিকালে আশা মুঘল রাজারাও বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন হামাম খানা তাদের স্নানের জন্য তৈরি করে ।
# আবস্থান
আদিনা ডিয়ার পার্কের বাইরে বনভোজন স্থানটি পার করেই ডান দিক দিয়ে একটি ছোট আটোঁসাটোঁ গলি রয়েছে , সেই গলির শেষেই রয়েছে এই লুকোচুরি ঘর বা হামামখানাটি । আমি যখন এই হামাম খানাটি দেখতে আসি,তখন আমি এই বর্তমান পরিস্থিতি দেখে অবাক হয়ে ছিলাম , কারন এই ইমারতের সংরক্ষনের জন্য শুধু একটি আর্কোলজিকালের সাইন বোর্ড ছাড়া আর তেমন কিছু দেখতে পেলাম না , গোটা হামাম ঘরটি যেন আগাছাই ভরে গেছে । আর এই আগাছার মাঝেই এই ইমারতটি কোন মতে তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে । বর্তমান পরিস্থিতী দেখে এটা বুঝতে অসুবিধা হয়নি যে , এই হামাম খানাটি মানুষের কাছে খুব একটা পরিচীত না । যদি পরিচীত থাকতো তবে আদিনার বুকে এই হামামা খানাটিও আদিনা মসজিদের মত অন্যতম ঐতিহাসিক আকর্ষনে পরিনত হতে পারতো ।
# অন্নান্য বিষয়
এবার আপনাদের মনে তৈরি হওয়া দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি ।
এই হামাম খানাটিকে স্থানিয় লোকেরা লুকোচুরি ঘরও বলে থাকে, কারন একসময় স্থানিয় শিশুরা এই পরিত্যাক্ত  এই স্থানটিকে লুকোচুরি খেলার আস্থানা বানিয়েছিল বলে । এই হামাম খানাটি মুঘল আমলে সপ্তদশ শতকে তৈরি হয়েছিল সম্পুর্নভাবে তুর্কি রিতিতে । সপ্তদশ শতকে তৈরি এই হামাম খানাটি যতটা সম্ভব অভিজাতদের জন্য বানানো হয়েছিল ।
এটি ছিল একটি স্নানাগার ,তাই এর জলনিকাশি ও জল পরিবহনের ব্যাবস্থাটি ছিল দারুন উন্নত । যার দরুন হামাম ঘরের প্রত্যেকটি কক্ষ জলের আদান প্রদানের সু-ব্যাবস্থা ছিল ।
আদিনা, আদিনা মালদা,আদিনা ফরেস্ট, মালদা আদিনা ফরেস্ট, মালদা, হামামখানা, লুকোচুরি, লুকোচুরিঘর,
হামামখানার ধ্বংসাবশেষের সামনে আমি
যেগুলি উপরের দিক দিয়ে ঢাকা থাকতো ,, এই হামাম ঘরের মাঝে ছিল বিশেষ ধরনের ফোয়ারা ও জলনিকাশি ব্যাবস্থা ,যেটি গোলাকার নালা আকারে এখানে এখনো দেখতে পাওয়া যায়। যাই হোক গোটা ভারতবর্ষে খুব বেশি ঐতিহাসিক হামাম খানা দেখতে পাওয়া যায় না । তাই আদিনার পাশে থাকা এই হামাম খানাটি কতটা গুরত্বপুর্ন সেটা বলার প্রয়োজন রাখে না ।মুঘল আমলে তৈরি যে কটি হামামখানার অস্তিত্ব পাওয়া যায় তার বেশিরভাগ ছিল পার্শিয়ান রিতীতে তৈরি । মনে করা হয় তৎকালিন সমাজে হামামখানা ছিল বিনোদন তথা অভিজাত সমাজের মিলনস্থল ।
অষ্টাদশ শতকের দিকে মুঘল সাম্রাজ্য ভেঙ্গে পরলে এই সমস্ত হামাম খানা গুলির অস্তিত্ব ক্রমশঃ নষ্ট হতে শুরু করে । যার মধ্যে আদিনা ফরেষ্টের পাশে থাকা এই হামাম খানাটি অন্যতম।
আশা করছি আমার এই ছোট্ট প্রচেষ্টা সকলের কাছে অবগত হবে , এবং পর্যটকরা আদিনা ফরেস্টে ঘুরতে এলে এই ইমারতটির উপর তাদের রুচিবোধ প্রকাশ করবে , আর যদি তা সম্ভব হয় তাহলে আশা করা যায় এই ইমারতটি ধ্বংশের হাত থেকে পুনরায় নতুন করে সেজে উঠবে ।
WhatsApp

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন