শীতের মরশুম শুরু হতেই মালদার আদিনাতে উপচে পরেছে ভিড় ।সারা বছরের মতো এবারো তার কোনো খামতি হয় । ঠান্ডার দিন আমার খুব পছন্দের তাই এবারের গৌন্তব্য মালদা জেলার আনাচে - কানাচে ।সবাই ঠান্ডার মজা নিতে ছুট দেই দুর দুরান্তে ।আর আমি পরিত্যাক্ত ঐতিহসিক ইমারত গুলোর সন্ধানে । তবে আমার বিশেষ পছন্দ ঐতিহাসিক পবিত্রস্থান সমুহ -যেমন মন্দির ,মসজিদ সমূহ - তার ফাকে অন্য জিনিস দেখলে ক্ষতি নেই।
কিন্তু আজকে প্রতিবেদনের বিষয়টি সেই সমস্ত পর্যটকদের জন্য যারা আদিনা মসজিদ বা ফরেস্ট এ তো যান কিন্তু তার পাশে থাকা এই ঐতিহাসিক স্থানটি দেখতে পান না। কেননা এই স্থানটির বিষয়ে কোন প্রকার প্রচার বা প্রষাশনিক হেল দোল দেখা যায় না । আর এই ইমারতটির স্থানিয় নাম লুকোচুরি ঘর । কিন্তু বাস্তবে এটি একটি সেই সময়ের প্রসিদ্ধ হামাম খানা ।
# হামাম খানার অর্থ
"হামাম খানা " শব্দটি নিশ্চয় আপনাদের কাছে নতুন শব্দ হতে পারে ,তাহলে জেনে রাখুন হামাম খানার অর্থ হল "স্নানাগার" , যেটি প্রধানত তুর্কি আমলে রাজা ও অভিজাতদের স্নানের জন্য ব্যবহৃত হত । জানা যাই যে মোঘল যুগে তৈরি করা হামামখানা গুলোতে তিনটি প্রধান কক্ষ থাকতো - যার প্রথমটি " জাম খানা" দ্বিতীয়টি "নামি গার্ম খানা " আর "গার্ম খানা" । যার মধ্য জাম খানা - জামা কাপর রাখা ও পরিবর্তনের কক্ষ ছিল , নামি গার্ম খানাটি - হাল্কা উষ্ম গরম জলের কক্ষ, আর গার্ম খানাটিতে গরম জলের ব্যাবস্থা থাকতো ।
পরবর্তিকালে আশা মুঘল রাজারাও বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন হামাম খানা তাদের স্নানের জন্য তৈরি করে ।
# আবস্থান
আদিনা ডিয়ার পার্কের বাইরে বনভোজন স্থানটি পার করেই ডান দিক দিয়ে একটি ছোট আটোঁসাটোঁ গলি রয়েছে , সেই গলির শেষেই রয়েছে এই লুকোচুরি ঘর বা হামামখানাটি । আমি যখন এই হামাম খানাটি দেখতে আসি,তখন আমি এই বর্তমান পরিস্থিতি দেখে অবাক হয়ে ছিলাম , কারন এই ইমারতের সংরক্ষনের জন্য শুধু একটি আর্কোলজিকালের সাইন বোর্ড ছাড়া আর তেমন কিছু দেখতে পেলাম না , গোটা হামাম ঘরটি যেন আগাছাই ভরে গেছে । আর এই আগাছার মাঝেই এই ইমারতটি কোন মতে তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে । বর্তমান পরিস্থিতী দেখে এটা বুঝতে অসুবিধা হয়নি যে , এই হামাম খানাটি মানুষের কাছে খুব একটা পরিচীত না । যদি পরিচীত থাকতো তবে আদিনার বুকে এই হামামা খানাটিও আদিনা মসজিদের মত অন্যতম ঐতিহাসিক আকর্ষনে পরিনত হতে পারতো ।
# অন্নান্য বিষয়
এবার আপনাদের মনে তৈরি হওয়া দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি ।
এই হামাম খানাটিকে স্থানিয় লোকেরা লুকোচুরি ঘরও বলে থাকে, কারন একসময় স্থানিয় শিশুরা এই পরিত্যাক্ত এই স্থানটিকে লুকোচুরি খেলার আস্থানা বানিয়েছিল বলে । এই হামাম খানাটি মুঘল আমলে সপ্তদশ শতকে তৈরি হয়েছিল সম্পুর্নভাবে তুর্কি রিতিতে । সপ্তদশ শতকে তৈরি এই হামাম খানাটি যতটা সম্ভব অভিজাতদের জন্য বানানো হয়েছিল ।
এটি ছিল একটি স্নানাগার ,তাই এর জলনিকাশি ও জল পরিবহনের ব্যাবস্থাটি ছিল দারুন উন্নত । যার দরুন হামাম ঘরের প্রত্যেকটি কক্ষ জলের আদান প্রদানের সু-ব্যাবস্থা ছিল ।
যেগুলি উপরের দিক দিয়ে ঢাকা থাকতো ,, এই হামাম ঘরের মাঝে ছিল বিশেষ ধরনের ফোয়ারা ও জলনিকাশি ব্যাবস্থা ,যেটি গোলাকার নালা আকারে এখানে এখনো দেখতে পাওয়া যায়। যাই হোক গোটা ভারতবর্ষে খুব বেশি ঐতিহাসিক হামাম খানা দেখতে পাওয়া যায় না । তাই আদিনার পাশে থাকা এই হামাম খানাটি কতটা গুরত্বপুর্ন সেটা বলার প্রয়োজন রাখে না ।মুঘল আমলে তৈরি যে কটি হামামখানার অস্তিত্ব পাওয়া যায় তার বেশিরভাগ ছিল পার্শিয়ান রিতীতে তৈরি । মনে করা হয় তৎকালিন সমাজে হামামখানা ছিল বিনোদন তথা অভিজাত সমাজের মিলনস্থল ।
কিন্তু আজকে প্রতিবেদনের বিষয়টি সেই সমস্ত পর্যটকদের জন্য যারা আদিনা মসজিদ বা ফরেস্ট এ তো যান কিন্তু তার পাশে থাকা এই ঐতিহাসিক স্থানটি দেখতে পান না। কেননা এই স্থানটির বিষয়ে কোন প্রকার প্রচার বা প্রষাশনিক হেল দোল দেখা যায় না । আর এই ইমারতটির স্থানিয় নাম লুকোচুরি ঘর । কিন্তু বাস্তবে এটি একটি সেই সময়ের প্রসিদ্ধ হামাম খানা ।
আদিনার হামামখানার ধ্বংসাবশেষ |
"হামাম খানা " শব্দটি নিশ্চয় আপনাদের কাছে নতুন শব্দ হতে পারে ,তাহলে জেনে রাখুন হামাম খানার অর্থ হল "স্নানাগার" , যেটি প্রধানত তুর্কি আমলে রাজা ও অভিজাতদের স্নানের জন্য ব্যবহৃত হত । জানা যাই যে মোঘল যুগে তৈরি করা হামামখানা গুলোতে তিনটি প্রধান কক্ষ থাকতো - যার প্রথমটি " জাম খানা" দ্বিতীয়টি "নামি গার্ম খানা " আর "গার্ম খানা" । যার মধ্য জাম খানা - জামা কাপর রাখা ও পরিবর্তনের কক্ষ ছিল , নামি গার্ম খানাটি - হাল্কা উষ্ম গরম জলের কক্ষ, আর গার্ম খানাটিতে গরম জলের ব্যাবস্থা থাকতো ।
পরবর্তিকালে আশা মুঘল রাজারাও বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন হামাম খানা তাদের স্নানের জন্য তৈরি করে ।
# আবস্থান
আদিনা ডিয়ার পার্কের বাইরে বনভোজন স্থানটি পার করেই ডান দিক দিয়ে একটি ছোট আটোঁসাটোঁ গলি রয়েছে , সেই গলির শেষেই রয়েছে এই লুকোচুরি ঘর বা হামামখানাটি । আমি যখন এই হামাম খানাটি দেখতে আসি,তখন আমি এই বর্তমান পরিস্থিতি দেখে অবাক হয়ে ছিলাম , কারন এই ইমারতের সংরক্ষনের জন্য শুধু একটি আর্কোলজিকালের সাইন বোর্ড ছাড়া আর তেমন কিছু দেখতে পেলাম না , গোটা হামাম ঘরটি যেন আগাছাই ভরে গেছে । আর এই আগাছার মাঝেই এই ইমারতটি কোন মতে তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে । বর্তমান পরিস্থিতী দেখে এটা বুঝতে অসুবিধা হয়নি যে , এই হামাম খানাটি মানুষের কাছে খুব একটা পরিচীত না । যদি পরিচীত থাকতো তবে আদিনার বুকে এই হামামা খানাটিও আদিনা মসজিদের মত অন্যতম ঐতিহাসিক আকর্ষনে পরিনত হতে পারতো ।
# অন্নান্য বিষয়
এবার আপনাদের মনে তৈরি হওয়া দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি ।
এই হামাম খানাটিকে স্থানিয় লোকেরা লুকোচুরি ঘরও বলে থাকে, কারন একসময় স্থানিয় শিশুরা এই পরিত্যাক্ত এই স্থানটিকে লুকোচুরি খেলার আস্থানা বানিয়েছিল বলে । এই হামাম খানাটি মুঘল আমলে সপ্তদশ শতকে তৈরি হয়েছিল সম্পুর্নভাবে তুর্কি রিতিতে । সপ্তদশ শতকে তৈরি এই হামাম খানাটি যতটা সম্ভব অভিজাতদের জন্য বানানো হয়েছিল ।
এটি ছিল একটি স্নানাগার ,তাই এর জলনিকাশি ও জল পরিবহনের ব্যাবস্থাটি ছিল দারুন উন্নত । যার দরুন হামাম ঘরের প্রত্যেকটি কক্ষ জলের আদান প্রদানের সু-ব্যাবস্থা ছিল ।
হামামখানার ধ্বংসাবশেষের সামনে আমি |
অষ্টাদশ শতকের দিকে মুঘল সাম্রাজ্য ভেঙ্গে পরলে এই সমস্ত হামাম খানা গুলির অস্তিত্ব ক্রমশঃ নষ্ট হতে শুরু করে । যার মধ্যে আদিনা ফরেষ্টের পাশে থাকা এই হামাম খানাটি অন্যতম।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন