বর্তমান সমাজের শিশুরা হয়তো ঠাকুরমার কাছ থেকে "ঠাকুমার ঝুলি " নামক গল্পের আসর হয়তো আর পাই না , কারন সেই ফোগলা ঠাকুরমার জায়গাটা নিয়েছে মোবাইল গেম আর সামাজিক মাধ্যমের বিভিন্ন কার্টুন । আর সেই দিক দিয়ে আমি গর্বিত কারন আমি উনিশ শতকের ছেলে, আমরা রেডিও থেকে শুরু করে অত্যাধুনিক মোবাইলের যুগ পর্যন্ত পরিবর্তনের ধারাকে নিজের চোখে দেখতে পেরেছি ,এমনকি সেগুলো ব্যবহার করতেও যথাযথ জানা আকছে । তবুও আমরা যা পেয়েছি তা হয়তো এখনকার ছেলেমেয়েরা হয়তো পাবে না । উদাহরণ স্বরুপ - ঠাকুরমার ঝুলি , আর এই ঠাকুরমার ঝুলি থেকে বিভিন্ন রাজারানির গল্পের পাশাপাশি পেয়েছিলাম মাহালি জনজাতির বিষয়ে হরেকরকম তথ্য ,যেগুলির সত্যতা বিষয়ে সঠিক কোন ধারণা না থাকলেও সেই বিষয়গুলো যে খুব রোমাঞ্চকর সেটা বলার জায়গা রাখে না । আজ সেই ঠাকুরমার ঝুলি থেকে পাওয়া তথ্য গুলি আপনাদের সামনে রাখছি ।
# আমার শৈশব আর মাহালি গল্প MAHALI TRIBE
প্রত্যেক শৈশবের মত আমার শৈশব ঠিক একই ভাবে কেটেছে , গল্পের আসরে রাক্ষস - খোক্ষস আর সময় পেলেই অজানা তথ্য । তার মধ্য মাহালি জাতির বিষয়ে বিভিন্ন তথ্যাবলি ছিল অন্যতম - ঠাকুরমার কথা মত মাহালি তথা তাদের পুর্বপুরুষদের আদি বাসস্থান বিহারের ডুমকা জেলাই ,জেটি বর্তমানে ঝাড়খন্ডের একটি জেলা , আমরা আমাদের ঠাকুরমাকে "বুডি " বলেই সম্বোধন করতাম ।
# বুডির গল্পে মাহলিদের আদি বাসস্থান MAHALI TRIBE
বুডির কথা মতে তাদের পূৰ্বপুরুষদের বাসতভূমি "মারে দিশম" বা প্রাচীন দেশ হিসাবে উল্লেখ করে থাকে । বুডি বলতেন যে তাদের পূৰ্বপুরুষ এবং পশ্চিমবঙ্গ তথা বাংলাদেশ ছাড়াও বিভিন্ন প্রদেশে মাহালি আদিবাসি সম্প্রদায় এর লোকেরা এই স্থান থেকেই ছড়িয়ে পরে । যার মধ্যে কিছু কিছু এলাকাই এই জনজাতির লোকেরা বিভিন্ন জায়গাই ছড়িয়ে পরেছিল বাবুদের জন্য **( বুডি বাবু বলতে তাদের বুঝিয়েছেন যারা শ্রমিক হিসাবে মাহালিদের বিভিন্ন জায়গাই নিয়ে যেতেন । )** , এই বাবুরা শিলিগুড়ির চা বাগান, আসামের চা বাগান , ছোটনাগপুরের খনি গুলোতে, এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে কাজ করাতেন । মাহালিদের কাজে খুশি হলে বাবুরা এই মাহালিদের সেখানে থাকার ব্যবস্থাও করে দেন । বুডির গল্প মতে এই ভাবে মাহালিদের কিছু অংশ এই ভাবেই মারে দিশম থেকে বিভিন্ন জায়গাই ছড়িয়ে পরে ।
# বুডির গল্প মতে মাহালিদের সমাজ ব্যবস্থা MAHALI TRIBE
বুডি মাহালিদের সমাজ ব্যবস্থা বিষয়ে বলতে গিয়ে "মহাল" শব্দের প্রয়োগ হামেশাই করতেন । শৈশবে শোনা সেই গল্পের মহাল বিষয়ে বলতে বুডি মাহালি সমাজব্যবস্থার কথা বলেছিলেন । বুডির গল্প মতে এই " মহাল " শব্দ থেকেই মাহালি শব্দটি এসেছে । বুডির কাছে শোনা তথ্যের ভিত্তিতে কোন এক স্থানের এই আদিবাসি সম্প্রদায়কে একত্রে বলা হত " মহল " , যাদের জীবিকা ছিল বাঁশের জিনিসপত্র তৈরি , আর এই মহলের পরিচালনার দায়িত্বে থাকতেন যিনি তাকে বলা হত " মহাল " । যাদের বাসস্থান ছিল মূলত মারে দিশমে । তা সে বহু পুরোনো দিনের কথা ।
# বুডির গল্পে মাহালিদের বংশ পরিচয় MAHALI TRIBE
আমার বুডি বা আমার ঠাকুরমার ঝুলিতে তথ্য কিংবা গল্পের কোন অভাব ছিল না , তা সে শাক-চুন্নির গল্প হোক বা বিভিন্ন জাতির বিষয়ে গোপন তথ্য , সব নিমেষেই জেনে যেতাম । বুডির সেই ঝুলি থেকে যা জানতে পেরেছিলাম সেটি হল মাহালিদের প্রকৃত পদবি নাকি ডুমরি, কারকুশা, বারে, কাউরিয়া, কেশরিয়া, তুমরাঁং, খাংগের,মানড্রি ইত্যাদি ইত্যাদি ।
WhatsApp
মাহালিদের শিল্প নিয়ে আমি |
# আমার শৈশব আর মাহালি গল্প MAHALI TRIBE
প্রত্যেক শৈশবের মত আমার শৈশব ঠিক একই ভাবে কেটেছে , গল্পের আসরে রাক্ষস - খোক্ষস আর সময় পেলেই অজানা তথ্য । তার মধ্য মাহালি জাতির বিষয়ে বিভিন্ন তথ্যাবলি ছিল অন্যতম - ঠাকুরমার কথা মত মাহালি তথা তাদের পুর্বপুরুষদের আদি বাসস্থান বিহারের ডুমকা জেলাই ,জেটি বর্তমানে ঝাড়খন্ডের একটি জেলা , আমরা আমাদের ঠাকুরমাকে "বুডি " বলেই সম্বোধন করতাম ।
# বুডির গল্পে মাহলিদের আদি বাসস্থান MAHALI TRIBE
বুডির কথা মতে তাদের পূৰ্বপুরুষদের বাসতভূমি "মারে দিশম" বা প্রাচীন দেশ হিসাবে উল্লেখ করে থাকে । বুডি বলতেন যে তাদের পূৰ্বপুরুষ এবং পশ্চিমবঙ্গ তথা বাংলাদেশ ছাড়াও বিভিন্ন প্রদেশে মাহালি আদিবাসি সম্প্রদায় এর লোকেরা এই স্থান থেকেই ছড়িয়ে পরে । যার মধ্যে কিছু কিছু এলাকাই এই জনজাতির লোকেরা বিভিন্ন জায়গাই ছড়িয়ে পরেছিল বাবুদের জন্য **( বুডি বাবু বলতে তাদের বুঝিয়েছেন যারা শ্রমিক হিসাবে মাহালিদের বিভিন্ন জায়গাই নিয়ে যেতেন । )** , এই বাবুরা শিলিগুড়ির চা বাগান, আসামের চা বাগান , ছোটনাগপুরের খনি গুলোতে, এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে কাজ করাতেন । মাহালিদের কাজে খুশি হলে বাবুরা এই মাহালিদের সেখানে থাকার ব্যবস্থাও করে দেন । বুডির গল্প মতে এই ভাবে মাহালিদের কিছু অংশ এই ভাবেই মারে দিশম থেকে বিভিন্ন জায়গাই ছড়িয়ে পরে ।
বাঁশের কাজে ব্যাস্ত মাহালি মহিলা |
# বুডির গল্প মতে মাহালিদের সমাজ ব্যবস্থা MAHALI TRIBE
বুডি মাহালিদের সমাজ ব্যবস্থা বিষয়ে বলতে গিয়ে "মহাল" শব্দের প্রয়োগ হামেশাই করতেন । শৈশবে শোনা সেই গল্পের মহাল বিষয়ে বলতে বুডি মাহালি সমাজব্যবস্থার কথা বলেছিলেন । বুডির গল্প মতে এই " মহাল " শব্দ থেকেই মাহালি শব্দটি এসেছে । বুডির কাছে শোনা তথ্যের ভিত্তিতে কোন এক স্থানের এই আদিবাসি সম্প্রদায়কে একত্রে বলা হত " মহল " , যাদের জীবিকা ছিল বাঁশের জিনিসপত্র তৈরি , আর এই মহলের পরিচালনার দায়িত্বে থাকতেন যিনি তাকে বলা হত " মহাল " । যাদের বাসস্থান ছিল মূলত মারে দিশমে । তা সে বহু পুরোনো দিনের কথা ।
# বুডির গল্পে মাহালিদের বংশ পরিচয় MAHALI TRIBE
আমার বুডি বা আমার ঠাকুরমার ঝুলিতে তথ্য কিংবা গল্পের কোন অভাব ছিল না , তা সে শাক-চুন্নির গল্প হোক বা বিভিন্ন জাতির বিষয়ে গোপন তথ্য , সব নিমেষেই জেনে যেতাম । বুডির সেই ঝুলি থেকে যা জানতে পেরেছিলাম সেটি হল মাহালিদের প্রকৃত পদবি নাকি ডুমরি, কারকুশা, বারে, কাউরিয়া, কেশরিয়া, তুমরাঁং, খাংগের,মানড্রি ইত্যাদি ইত্যাদি ।
বাঁশের কাজে ব্যাস্ততা |
সেগুলো নাকি এখন পরিবর্তন হয়েছে , বুডি এই পদবি পরিবর্তনের পিছনে একটি কাহিনীও আমাদের শুনিয়েছিল , আর সেই কাহিনীটি বলতে গিয়ে বুডি সাঁওতাল মাঁঝি পরগনা আর মহালদের মধ্যে একটি চুক্তির কথা বলেছিলেন । বুডির সেই কাহিনী মতে সেই চুক্তিতে কিছু শর্তের কথাও বলেছিলেন , আর সেই শর্ত মতে মাহালিরা সাঁওতাল জনজাতির পদবি গ্রহন করবে , এবং যার বিনিময়ে সাঁওতাল জনজাতীর লোকেরা তাদের যে কোন অনুষ্ঠানে মাহালিদের দ্বারা তৈরি বাশেঁর ডালা-কুলা অবশ্যই কিনবে ও ব্যবহার করবে , এবং তার পাশাপাশি মাহালিদের সমাজব্যবস্থার মহাল প্রথা বিলুপ্ত করে শুধু মাঁঝি পরাগনার দ্বারাই পরিচালিত হবে । যাতে দুই সমাজ ব্যবস্থা এক হয়ে আরো শক্তিশালি সমাজ ব্যবস্থা গড়ে উঠে ।
বুডির মতে মাহালিদের "বারে "পদবি পরিবর্তিত হয়েছে" টুডু" পদবিতে, তেমনি "মান্ড্রি " হয়েছে মারান্ডি বা মার্ডিতে, "কারকুশা" হয়েছে "কিস্কু", "খাংগের" হয়েছে "বাস্কে", "কাউরিয়া " হয়েছে "সরেন", "ডুমরি" পরিবর্তিত হয়েছে মুর্মুতে।
# আমার কিছু কথা
বুডির কাছে শোনা এক একটি কাহিনী, আমার কাছে এক একটি হিরের সমান । তবে কোন কিছু বলার আগে সেগুলোর সত্যতা যাচাই করার প্রয়োজন । আমি আমার বুডির মুখে শোনা কাহিনী গুলি বলেছি , যেটি সত্যিও হতে পারে ,আবার মিথ্যাও হতে পারে ।
# আমার কিছু কথা
বুডির কাছে শোনা এক একটি কাহিনী, আমার কাছে এক একটি হিরের সমান । তবে কোন কিছু বলার আগে সেগুলোর সত্যতা যাচাই করার প্রয়োজন । আমি আমার বুডির মুখে শোনা কাহিনী গুলি বলেছি , যেটি সত্যিও হতে পারে ,আবার মিথ্যাও হতে পারে ।
আলাদা কিছু করার চেষ্টাই আমি |
আমি এটা বলছি না যে বুডির কাহিনী সর্বসম্মত আর সত্যি ,তবে আমি যেটা বলছি মাহালিদের ইতিহাস আর ছড়িয়ে পরার বাস্তব ঘটনাটি জানতে হবে । কারন সময় হয়েছে সত্যতা যাচাই করার । তবে মাহালিদের মধ্যে বুডির মুখে শোনা সেই সমস্ত উপাধি ধারি **(ডুমরি, কারকুশা, বারে, কাউরিয়া,ইত্যাদি ইত্যাদি )** মাহালিদের বিভিন্ন প্রান্তে এখনো দেখা যায় , তার পাশাপাশি "মহাল" সমাজ ব্যবস্থার কথা অনেক প্রাচীন পুস্তকে এখনো লিপিবদ্ধ আকারে পাওয়া যায় । এমনকি শিলিগুড়ি তথা আসামের চা বাগানে মাহালিদের শ্রমিক হিসাবে নিয়ে যাওয়ার সত্যতা হিসাবেও প্রমানো পাওয়া যায় ।
**সুমন্ত মাহালি হেমরম
**সুমন্ত মাহালি হেমরম
আরো জানতে চাই। নূতন করে অনেক কিছুই জানছি।
উত্তরমুছুনআমি অবশ্যই চেষ্টা করবো , আরো অনেক তথ্য প্রদান করার
মুছুন