শরৎের আকাশ আর কাশফুল দেবী আগমনের বার্তাবাহক। একদিকে যখন ঢাঁকিরা এই করোনাময় পরিস্থিতীতে যৎসামান্য উপার্জনের আশাই তাদের ঢাঁকে রশি কশছে, অপরদিকে সাঁওতাল পাড়ার দাঁশাই শিল্পীরা তাদের ধাঁমসা মাদলের রশি কশছে শহরতলিতে গিয়ে খানিক উপার্জনের আশাই। শারদীয়ার সমাবেশে ঢাঁকি আর দাঁশাই নৃত্য শিল্পীদের বাস্তবিক মেল বন্ধন, আলাদা আলাদা আক্ষরিক অর্থ বহন করে, একপক্ষ দেবী বন্দনাই তার ঢাঁকের তাল তোলে আর একপক্ষ দেবী নিন্দাই ধাঁমসাই তাল তোলে, সাথে মৌখিক বোল - "হাইরে হাইরে!"
দাঁসাই নৃত্যের এই বোল অসুর নিধনের প্রতি সমবেদনা ব্যক্ত করে, আর্য রমনির হাতে বীর শহীদ অসুরের নিধন। আজো পশ্চিমবঙ্গের অনেক আদিবাসী অধ্যূষিত এলাকাই দেবী দূৰ্গার নই বরং অসুরের পূজা করা হয়। ভারতে অসুর বন্দনা ও দূৰ্গাকে হত্যাকারিনি পতিতা হিসাবে উল্লৈখ্যকরণ সকল মানুষের চোখে প্রথম আসে যখন জওহরলাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘অল ইন্ডিয়া ব্যাকওয়ার্ড স্টুডেন্টস ফেডারেশন” “মহিষাসুর শহীদ উৎসব” পালন করা শুরু করে এবং সেই উৎসবের প্রচারে প্রচারপত্র বের করে, যেখানে দূৰ্গাকে পতিতা (বেশ্যা) এবং অসুরকে মহান অনার্য রাজা হিসাবে অভিহিত করা হয়, যা তৎকালিন শিক্ষামন্ত্রী মাননীয়া স্মৃতি ইরাণী পার্লামেন্টের অধিবেশনে প্রবল ভাবে বিরোধ করে।
দূৰ্গা পূজা দূৰ্গা প্রতিমা |
অসুর পূজা কারা করে
আদিবাসী খেড়ওয়াল জনজাতির প্রধানত অসুর, সাঁওতাল, মাহালী,মুন্ডা,কোল, কুর্মি (তপশিলী উপজাতির মর্যাদা এখনো পাইনি) আদিবাসীরা বাংলার বহু স্থানে অসুর পূজা করে থাকেন। তার মধ্যে দুই দিনাজপুর, জলপাইগুড়ী, কোচবিহার, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম আরো বহু জেলাই। তাদের মতে দূৰ্গা পূজো ব্রাহ্মন্যবাদের তৈরি স্বকীয় অনুষ্ঠান, যার পিছনে রয়েছে অনার্যদের পরাজয়ের অশেষ চাতুরতা ও ব্রাহ্মন্যবাদ প্রচারের কার্যকলাপ এবং আর্য ও অনার্য সংঘাতের স্মৃতি। তাদের মতে দূৰ্গা কোনো নারির নাম নই বরং পুরুষের নাম, আর যে পুরুষ ছিলেন অসুর জাতির রাজা হুদূরদূৰ্গা, আদিবাসী অনার্য রাজা, সেই রাজাকে হত্যা করেই পতিতা নারি দূর্গা নাম অর্জন করে। আশ্চর্যজনকভাবে ভারতে খেড়ওয়াল জাতির মধ্যে এখনো অনেকের অসুর জাতিদের অসুর পদবী দেখা যায়।
মহিষাষুর বধ নাকি হুদূর দূৰ্গা হত্যা? |
অসুর
"অসুর" শব্দটি ভগবান বিরোধি, অপশক্তি, মানব বিরোধি ভীমকায় শরিরের অধিকারি আক্ষরিক অর্থ বহন করে, কিন্তু খোদ হিন্দু শাস্ত্রগুলোই অসুরদের নিন্দাসূচক হিসাবে ব্যক্ত করেনি বরং হিন্দুদের সর্বোচ্চ শাস্ত্র বেদে দেবতাদেরো অসুর উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে, যেমন- মরুৎকে মারুতাসুর ( ঋগ্বেদ ৬৪/২), রুদ্রকে রুদ্রাসুর(ঋগ্বেদ ৫/৪২/২১), ইন্দ্রকে ইন্দ্রাসুর(ঋগ্বেদ ৫৪/৩), বরুণকে বরুনাসুর(ঋগ্বেদ ২/২৭/১০), অগ্নিকে অগ্নিসুর(ঋগ্বেদ ৫/১২/১)। বেদের একটি শ্লোকে আবার অসুরকে প্রানদান কারি বলা হয়েছে - অসুন্ প্রাণান রাতি দদাতি ইত্যসুরঃ।
সংস্কৃত শব্দ "অস" লোহা, তবে "সুর" শব্দ বিবিধ অর্থ বহন করে -ধ্বনি, নেশা জাতীয় পানিয়, নিশ্বাসের বায়ু প্রভৃতি। সম্ভবতঃ আর্য ও অনার্যদের মাঝে দীর্ঘ-সংঘাত অসুর শব্দটিকে নেতিবাচক করে তুলেছে। আদিবাসী খেড়ওয়াল জাতির অসুরেরা যে প্রাচীন ভারতের প্রজাহৈতষী রাজা ছিলেন তার বিষয়ে বহুল প্রমানাদি পাওয়া গেছে, এবং আর্যদের জয়ে ও অনার্যদের পরাজয়ে আজ আদিবাসীরাই ভূমিহিন। এই প্রসঙ্গে দাড়ি দিয়ে অনেকেই মনে করেন ব্যাবিলনের শাষক অসুরসিরিপাল, অসুরবনিপাল অসুর জাতিরি অংশ যারা আর্যদের কাছে পরাজিত হয়ে ব্যাবিলনে চলে যান এবং সেখানে অসুর বা আসীরিয়া নামক সাম্রাজ্যের স্থাপন করেন, যার রাজধানীর নাম ছিল অস্মুর। কিন্তু অনেকেই এর সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে থাকেন। যাই হোক ভারতে পরাজিত অনার্য আদিবাসী অসুর উপজাতিরা বংশ পরম্পরাই দূৰ্গা পূজাকে বয়কট করে আসছে দীর্ঘদিন থেকে যাদের বাস পশ্চিমবঙ্গ,ঝাড়খন্ড ও বিহারের কিছু কিছু স্থানে।
খেড়ওয়াল হুদূর দূৰ্গা হত্যার কাহিনী।
খেড়ওয়াল আদিবাসী গোষ্ঠিগুলোর মধ্যে অসভ্য,বর্বর আর্যজাতিদের দ্বারা সরল অথচ শক্তিশালী অনার্যদের পরাজয়ের ও আদিবাসী রাজা হুদূর দূৰ্গার হত্যালিলার কাহিনী এক প্রজন্ম থেকে পরের প্রজন্ম চলে আসছে। হুদূর দূৰ্গার এই কাহিনীর লিখিত উপাদান নাই, তথাপি লোককাহিনী অনুসারে প্রচলিত, তবে এর সত্যতার প্রতিউত্তর রয়েছে, খেড়ওয়াল বীদ্বজনেরা যুক্তি প্রদানে এগিয়ে এসে বলেন, হিন্দু ধর্মের মহান পবিত্র ধর্মগ্রন্থ "বেদ" , যেটি একসময় বংশপরম্পরাই শুনে আসা শ্লোকের সত্যতা যাচাই ছাড়া বেদে রুপান্তরিত করে সেটি সর্বসম্মত বলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যদিও বা আদিবাসী অনার্য রাজা হুদূর দূৰ্গার লিখিত গ্রন্থ থেকে থাকতো তবে তা ব্রাহ্মন্যবাদের হঠকারিতাই ধ্বংস্ব করা হয়েছে।
আরো পড়ুন- বোকা আদিবাসী এবার একটু চালাক হও, সময় হয়েছে পরিবর্তনের।
তাহলে কেমন সেই কাহিনী- আর্য আগমনের পরবর্তিকালে অনার্য এবং আর্যের চড়ম সংঘাত ঘটে, কিন্তু শারীরিক শক্তিতে শক্তিশালী অনার্যদের পরাজিত করা আর্যদের সম্ভবপর হয়ে উঠছিল না। হিন্দু বেদের এক জায়গাই অসুর শব্দের অর্থ ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপে পটু জাতি হিসাবে বর্ণিত করা হয়েছে, যেটি অনার্য খেড়ওয়াল জনজাতির যুদ্ধ পারদর্শিতারই ইঙ্গিত দেই। অনার্য আদিবাসী অসুর জনজাতির রাজা হুদূর দূৰ্গা নিজ মাতৃভূমি চাইচম্পা রক্ষার্থে বদ্ধ পরিকর। শারীরিক ক্ষমতাই অনার্যদের পরাস্ত করা কোনোমতেই সহজসাধ্য হয়ে উঠবে না আর্যদের পক্ষে, সুতরাং ছলচাতুরির দ্বারা অসুর আদিবাসী সম্প্রদায়ের রাজা হুদূর দূৰ্গাকে পরাস্থ করার যোযনা করে।
অসুর পূজা |
অসুর আদিবাসী সম্প্রদায়েরা নারি সম্মানে অগ্রসর ও নারির উপরে হাত তোলাও কাপুরুষের নামান্তর মনে করতো। সুতরাং নারীই হয়ে উঠলো অসুর জনজাতির রাজা হুদূর দূৰ্গাকে পরাস্ত করার কান্ডারি। আর্য এবং অনার্যদের যুদ্ধে আর্যরা পরাজিত হয়ে হুদূর দূৰ্গার সাথে মিথ্যা মিত্রতার হাত বাড়ীয়ে দেই এবং উপহার স্বরুপ অপূৰ্ব সুন্দরী এক পতিতা (বেশ্যা) নারীকে হুদূর দূৰ্গার সেবার্থে প্রদান করে। এই লাস্যময়ী ছলা-কলাই পারদর্শী এই পতিতা নারী শীঘ্রই আদিবাসী অসুর জনজাতির রাজা হুদূর দূৰ্গাকে নিজের প্রেম বন্ধনে আবদ্ধ করে নেই এবং শীঘ্রই রাজা হুদূর দূৰ্গা সেই নারীকেই বিবাহ করেন। একদিন রাত্রীকালিন খেড়ওয়াল অসুর আদিবাসী সম্প্রদায়ের রাজা হুদূর দূৰ্গাকে হত্যা করার সুযোগ পেয়ে সেই নারী রাজা হুদূর দূৰ্গাকে হত্যা করে, যেই মহূৰ্তে প্রাসাদের বাকি অসুর সম্প্রদায়ের পুরুষেরা নিজের প্রান বাঁচাতে নারীর ছদ্মবেশ ধারন করে পালিয়ে যাই, যেই ঘটনাটিকে সামনে রেখেই দূৰ্গা পূজা চলা কালিন দাঁসাই নৃত্যে পুরুষেরা নারী পরিধান ব্যবহার করে।
দাঁসাই নাচ
সেই পতিতা নারীর চক্রান্তে রাজা হুদূর দূৰ্গা মারা যাই, এবং দূৰ্গা হত্যাকারিনী বির হিসাবে আর্যরা সেই পতিতা নারীকেই দূৰ্গা উপাধিতে অভিষিক্ত করে। যে ঘটনাটি আদিবাসী সাঁওতাল জনজাতির বংশপরম্পরাই চলে আসা বিভিন্ন গানের দ্বারা মানুষদের জানিয়ে থাকে। খেড়ওয়াল আদিবাসী জনজাতীর মধ্যে একটি সাঁওতাল, যারা দূৰ্গা পূজার সেই মহূৰ্তে পাড়াই পাড়াই গিয়ে দাঁসাই নাচ আর গানে তাদের বীর যোদ্ধা হুদূর দূৰ্গার বীরগাঁথা সকলের সামনে প্রস্তুত করে।
"দাঁসাই" প্রথম থেকেই আদিবাসীদের দুঃখ প্রকাশের অনুষ্ঠান ছিল না, বছরের অন্যসময়েও এই নৃত্য নাচা হয়, কিন্তু সেখানে খেড়ওয়াল বীরগাঁথা অংশ পাই না, বরং আনন্দই স্থান পাই। দাঁসাই প্রধানত পুরুষদের দ্বারাই পরিবেশিত হয়, দূৰ্গা পূজাই দাঁসাই নৃত্যে পুরুষেরা ধামসা,মাদল,করতাল সহযোগে এছাড়াও লাঁও এর খোলস এবং ধনুকের ছিলা দিয়ে তৈরি বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা হয় যা প্রতিকী স্বরুপ, এইসময় সাঁওতাল আদিবাসী পুরুষেরা ময়ূরের পাখনা মাথাই গুঁজে, সিন্দুর, ও কাজল দিয়ে নারীসুলভ রুপ ধারন করে।
নীতিহীন যুদ্ধে আর্যদের পরাস্ত করে আর্যাবর্ত নামে আর্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আর্যপক্ষ যখন সেই পতিতা নারীকে দূৰ্গা উপাধি দিয়ে বিজয় উৎসবে মেতে উঠেছিল সেই সময় সাঁওতাল, মুণ্ডা, কোল, কুরমি, মাহালি, কোড়া-সহ খেরওয়াল গোষ্ঠীর আদিবাসীরা তাঁদের বশ্যতা স্বীকার না করে নিজেদের মান বাঁচানোর উদ্দেশ্যে নারীর ছদ্মবেশে দাঁশাই নাচের মাধ্যমে আধ্যাত্তিক বেদনা নিয়ে আনন্দের অভিনয় করতে করতে স্বভূমি চাইচম্পা ছেড়ে ভারতের বিভিন্ন বনে-জঙ্গলে আশ্রয় নেয়। যেই চিত্রনাট্য দাঁসাই নাচেই ফুঁটে উঠে।
দাঁসাই নাচ (ছবি ইউটিউব গ্রেবশট) |
সুতরাং ভারতীয় সংস্কৃতিতে যে দেবাসুরের সংগ্রামের কথা পাই, সেটা বাস্তবে শক্তির সঙ্গে প্রজ্ঞার লড়াই ছিল, যেখানে ছলচাতুরিতে পারদর্শী আর্যরা জয় লাভ করে ছিল, আর অনার্যরা পরাজিত হয়ে স্বভূমি ত্যাগ করে।
অসুর পূজার অনুষ্ঠান পর্ব
সাঁওতালি দাঁশাইয়ের বিধি অনুযায়ী, দূৰ্গা পূজোর পাঁচদিন দেবী দুর্গার মুখ দর্শন বন্ধ থাকে। তবে অসুর পূজার আয়োজন শুরু হয় মহালয়ার পর্ব থেকেই, যেদিন খেড়ওয়াল আদিবাসীরা শহিদ দিবস হিসাবে পালন করে থাকে। বেদের বেশীর ভাগ অংশেই অসুরদের শুভশক্তির উৎস হিসাবেই দেখিয়েছে, কিন্তু কালক্রমে অনার্য আর আর্যদের মাঝে বিশৃঙ্খলা অসুরদের জনবিরোধি প্রতিচ্ছবি করে তুলে, অসুরাঃ রাক্ষসাঃ দেবনিন্দকাঃ শ্লোকটি তার সত্যতা তুলে ধরে। যাইহোক, এইসময় অনেক আদিবাসী জনগোষ্ঠী শোকপালন করতে গিয়ে ওই দিনগুলিতে বাড়ি থেকে বের হন না, কেন না ভূমিপুত্র আদিবাসী খেড়ওয়ালরা তাদের পূৰ্ব গৌরব আর ক্ষমতা হারায়, যে দুঃখ আজও তারা মেনে নিতে পারেননা। হুদূর দূৰ্গা হত্যার দিন চলে তার বীরত্বের জয়গাঁথা ও স্মরনসভা যেটি দাশানি বলে পরিচীত, ব্রাহ্মন্যবাদের সেই হঠকারিতাই এই দাঁশানিই হয়ে উঠেছে বিজয়া দশমী। পূজার পনেরো দিন পরেই অধিবাসীদের দ্বারা পালিত বাঁদনা পরবে গৃহপালিত পশু হিসেবে মহিষের পুজো করা হয়।
আরো পড়ুন- ভাষা হারানোর ভয়ে মাহালী আদিবাসী সমাজ।
ভূমিপূত্রদের বিরুদ্ধে জয় লাভ করা আর্যরা দূৰ্গা পূজাই আত্মহারা, অপরদিকে অসুর আদিবাসীরা দুঃখের সাথে দিনকাটাই, অসুর পূজা ইদানিংকালে বেশ বড় মাপের করা হয়। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী মাননীয়া স্মৃতি ইরানি আদিবাসী ছাত্রদলের অসুর শহীদ স্বরণ দিবসকে অশুভ শক্তির প্রসারের নাম দিয়ে বলেন যে এতে হিন্দুদের আস্থায় আঘাত হানছে, তিনি সঠিকই বলেছেন কিন্তু এই যুক্তির খন্ডন সহজ, আদিবাসী সমাজের যারা অসুরকে পূৰ্বপুরুষ হিসাবে জেনে আসছে তাদের কাছে তবে দূৰ্গা পূজাও তাদের পূৰ্বপুরুষদের প্রতি অসম্মানের প্রতিক হিসাবে মনে করবে। এই প্রসঙ্গে বামপন্থি নেতা মাননীয় সিতারাম ইয়েচুরি আদিবাসী ছাত্রদলের পক্ষ নিয়ে পার্লামেন্ট অধিবেশনে যুক্তি দেখান। ভারত বৈচিত্রে ভরপুর সুতরাং একে অপরের প্রতি আস্থা রেখে নিজেদের বিশ্বাস আর সংস্কৃতি জিইয়ে রাখতে হবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রির ভাষাই - ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।
সুমন্ত মাহালী হেমরম
শুরু হোক অসুর পূজা। জয় হোক আদিবাসীর সংগ্রাম!
উত্তরমুছুন