ইতিহাসের পাতায় বিরসা মুন্ডার নাম চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে, এমন এক বীর যোদ্ধা যেকিনা খ্রীষ্ট ধর্ম নিয়েছিল শিক্ষা পাওয়ার জন্যে, কিন্তু তার মনের বৈপ্লবিক চিন্তাধারা দমিয়ে রাখতে পারেনি ইংরেজরা, আদিবাসী জনসমাজের জন্য এগিয়ে আসেন। যার নামে ভারতের বুকে মুন্ডা আদিবাসীরা বিশেষ পরিচয় পেয়েছে। কারা এই মুন্ডা? কেমন এদের ভাষা, রীতিনীতি? কেমনই বা এদের আচার আচরণ, তা ইতিহাসের পাতায় তেমন ঠাঁই পাইনি।
সমস্যা নেই, সেই দিকগুলো আজ তুলে ধরবো একদম সাধারণ ভাষায়।
মুন্ডা সম্প্রদায়েরা যুবকেরা |
জাতি পরিচয়
বর্তমানে বাংলাদেশ সহ ভারতের ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ সহ বিভিন্ন রাজ্যে এদের দেখা গেলেও, এদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ঝাড়খন্ডে বেশি দেখা যায়। মুন্ডা দক্ষিণ এশিয়ার একটি বড় উপজাতি এবং জাতিতাত্ত্বিক দিক থেকে দ্রাবিড় উপজাতি হিসাবে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন আদিবাসী সহবস্থানের কারনে কিছু কিছু অঞ্চলে দ্রাবিড় উপজাতি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধর্মী প্রোটো অষ্ট্রলয়েড মনে হয়। আবার এই সহবস্থানের কারনে মুন্ডাদের কিছু কিছু অঞ্চলে কোল নামে পরিচিত।
ভাষা পরিচয়
মুন্ডারা যে ভাষায় কথা বলে, তার নাম মুন্ডারি বা মান্দারি। এটি অস্ট্রো- এশিয়াটিক ভাষা গোষ্ঠীর পাশাপাশি খেড়োয়াড়ী ভাষার অন্তর্গত। বিভিন্ন আদিবাসী ভাষা খেড়োয়াড়ী ভাষার মধ্যেই পরে। তবে বর্তমানে বিভিন্ন স্থানে মুন্ডাদের ভাষা অন্য খেড়োয়াড়ী ভাষার সাথে মিশ্রিত হয়ে পড়ায়, স্থানভেদে মুন্ডাদের ভাষার তারতম্য দেখা যায়। যেহেতু এটি খেড়োয়াড়ী ভাষার অন্তর্গত,তাই এই ভাষাটিও রোমান, দেবনাগরী বাংলা এবং উড়িয়ান লিপিতে লেখা হয়ে থাকে।
জীবিকা
বিভিন্ন সমাজ বিজ্ঞানীদের মতে, মুন্ডা সম্প্রদায়েরা কৃষি ভিত্তিক সমাজের অংশ। আবার কারো কারো মতে মুন্ডাদের আদি জীবিকা পশু শিকার ছিল, যা কালক্রমে চাষবাসে পরিবর্তন হয়েছে। তবে বর্তমানে এরা চাষবাসের পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মে নিজেকে নিযুক্ত করেছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুন্ডাদের একটি বিশাল অংশ চা বাগানের সাথে যুক্ত, এবং এই চা বলয়যুক্ত অঞ্চলের বেশি ভাগ মুন্ডাদের মুন্ডারি ভাষা লোপ পেয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন