মানুষ প্রথম থেকেই অজানাকে জানার চেষ্টা করে আসছে , যেটি বাস্তবেই একটি ভালো দিকের পরিচায়ক , আর এই জানার চেষ্টার মাঝে মানুষ যখন তার জ্ঞানের মাধ্যমে কোন ঘটনার রহস্য ভেদ করতে পারে তখন সেটি হয় বিজ্ঞান ,আর যখন সেটি সম্ভব হয় না তখন সেটিকে বলা হয় অলৌকিক । যার থেকে জন্ম নিয়েছে একটি বিশেষ বিতর্ক " ধর্ম কি বাস্তবেই বিজ্ঞানের পরিপন্থী " ।
বাইবেল ও বিজ্ঞান |
এই বিষয়ে আলোচনা করতে হলে প্রথমে আমাদের জানতে হবে বিজ্ঞান কি ? আবিষ্কার কি? আর ধর্ম কি ?
বিজ্ঞান শব্দের অর্থ হল বিশেষ জ্ঞান , অর্থাৎ কোন কিছুর ভৌতিক ও জৈবিক পরিক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে কোন সিদ্ধান্তে আসার নামি হল বিজ্ঞান । আর এই সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে কোন কিছু তৈরি করার প্রক্রিয়াকে বলা হয় আবিষ্কার । উদাহরণ স্বরুপ প্রত্যেক বস্তুরি কোন না কোন ধর্ম থাকে , যেমন চুম্বক ,যার দুটি বিশেষ ধর্ম হল - লোহাকে আকর্ষন করা আর উত্তর ও দক্ষিন মেরু সর্বদা অনুসরন করা ,আর চুম্বকের এই ধর্মের উপর নির্ভর করে কম্পাস তৈরি ও বুলেট ট্রেন তৈরি করা হয়েছে । সুতরাং এটা বলা ভুল হবে না বিজ্ঞান ছাড়া ধর্ম চলে যাবে ,কিন্তুু ধর্ম ছাড়া বিজ্ঞান সম্পুর্ন ভাবে অন্ধ । এখানে আমার বিশেষ জ্ঞানে (বিজ্ঞান) আমার এটা বলা ভুল হবে না , বিজ্ঞান নতুন করে এখনো নতুন কিছু বানাতে পারেনি অর্থাৎ বিজ্ঞান শুধুমাত্র সেই জিনিসের ভোল বদল করতে পারবে যেটি পৃথিবীতে প্রথম থেকেই ছিল বা রয়েছে ।
যার উদাহরন আমি আগেই দিয়েছি , কিন্তু সেই চুম্বকে দিক নির্নয়ের যোগ্যতা আর লোহাকে আকর্ষনের ক্ষমতা কোথা থেকে এল তার উত্তর বিজ্ঞান কখনই দিতে পারবে না ।
যার উদাহরন আমি আগেই দিয়েছি , কিন্তু সেই চুম্বকে দিক নির্নয়ের যোগ্যতা আর লোহাকে আকর্ষনের ক্ষমতা কোথা থেকে এল তার উত্তর বিজ্ঞান কখনই দিতে পারবে না ।
এবার একটু আমার প্রসঙ্গে বলি , আমি একজন খ্রীষ্টভক্ত , আর খ্রীষ্টভক্ত হিসাবে মাঝে মাঝেই শুনতে হত "বাইবেল " নাকি বিজ্ঞানের পরিপন্থী , উদাহরন স্বরুপ - মানুষ বাঁদরের ন্যায় প্রানির থেকে সৃষ্টি , পৃথিবীর আকৃতির বিষয়ে বাইবেলে ভুল বলা হয়েছে ইত্যাদী ইত্যাদী । আমার শিশুমনে এই জিনিসটির প্রভাব পরতে সময় নেই নি , সেইজন্যই পুর্বে আমার কিছু কিছু মহুর্তে এমনো মনে হয়েছিল যদি বাইবেল বিজ্ঞানের পরিপন্থী হয়েই থাকে তবে সেই কল্পনার কিতাবকে মানবো কেন ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে কত প্রকার অভিঙ্গতা হয়েছে সেটা না হয় অন্য দিন বলা যাবে , তবে অভিঙ্গতা গুলো মোটেও সুখের ছিল না । তাই এই প্রশ্নের উত্তর নিজের থেকে খোঁজার চেষ্টা শুরু করি , শেষে যা জানলাম তার কিছুটা আপনাদের কাছে তুলে ধরছি । তবে সেই বিষয়টি তুলে ধরার আগে কয়েকটি জিনিস আপনাদের জেনে রাখা উচিত - সেটি হল পবিত্র বাইবেল কোন বৈজ্ঞানের আলোচনা মূলক কিতাব নয় , তবে পবিত্র বাইবেল বিজ্ঞানের পরিপন্থীও নই । বাস্তবে পবিত্র বাইবেল বিজ্ঞানের সমর্থন করে আর বহু আগেই বিজ্ঞানের স্বপক্ষে এমন অনেক কিছুই বলা রয়েছে যেটি বর্তমানে বিজ্ঞান মতে সর্বসম্মত ও বাস্তব । তো চলুন বাইবেলের সেই বিষয়গুলোর উপর আলোকপাত করা যাক ।
পৃথিবীর আকৃতি
অনেকের মতে বাইবেল পৃথিবীর আকৃতির বিষয়ে ভুল ব্যাখা প্রদান করে । বিগত কয়েক শত বছর আগে (দূরবীন আবিষ্কারের আগের মহুর্ত ) এটা মনে করা হত যে পৃথিবীর আকৃতি গোলাকার নয় বরং চ্যাপ্টা । যদিও কয়েক শতক আগে কিছু কিছু বিজ্ঞানিক ও দার্শনিক এই তথ্যটিকে ভুল বলেছিলেন আর পৃথিবীর আকৃতি গোলাকার বলেছিলেন ,কিন্তু তাদের দ্বারা সেটা প্রমান করা সম্ভব হয় নি । প্রথম বার পৃথিবীর আকৃতি যে গোলাকার, এই কথাটি বলেছিলেন মহান গ্রীক দার্শনিক পিথাগোরাস (খ্রী. পূ. ৫৭০-৪৯৫)।এর পর ধিরে ধিরে অ্যারিস্টোটল , কোপারোনিকাস আরো অনেকেই গোলাকার পৃথিবীর কথা বলেছিলেন , যেটি পরবর্তি কালে সত্যি বলে প্রমানিত হয় । কিন্তু পিথাগোরাসের বহু আগেই পবিত্র বাইবেলে পৃথিবী যে গোল সেটা বলা হয়েছিল । আর সেটা আছে পবিত্র বাইবেলের "ইশাইয়া" লিখিত মঙ্গল সমাচারের ৪০ অধ্যায়ের ২২ অনুচ্ছেদে ।
-প্রভুই সত্যিকারের ঈশ্বর! তিনি পৃথিবীর বৃত্তের ওপর বসে থাকেন|
ইশাইয়া লিখিত এই অনুচ্ছেদে পরিষ্কার ভাবেই বলা হয়েছে পৃথিবীর বৃত্তে, অর্থাৎ ঈশ্বর গোলাকার পৃথিবীর উপরে বিচরন করেন ।
গোলাকার পৃথিবী |
অনেকের মতে বাইবেল পৃথিবীর আকৃতির বিষয়ে ভুল ব্যাখা প্রদান করে । বিগত কয়েক শত বছর আগে (দূরবীন আবিষ্কারের আগের মহুর্ত ) এটা মনে করা হত যে পৃথিবীর আকৃতি গোলাকার নয় বরং চ্যাপ্টা । যদিও কয়েক শতক আগে কিছু কিছু বিজ্ঞানিক ও দার্শনিক এই তথ্যটিকে ভুল বলেছিলেন আর পৃথিবীর আকৃতি গোলাকার বলেছিলেন ,কিন্তু তাদের দ্বারা সেটা প্রমান করা সম্ভব হয় নি । প্রথম বার পৃথিবীর আকৃতি যে গোলাকার, এই কথাটি বলেছিলেন মহান গ্রীক দার্শনিক পিথাগোরাস (খ্রী. পূ. ৫৭০-৪৯৫)।এর পর ধিরে ধিরে অ্যারিস্টোটল , কোপারোনিকাস আরো অনেকেই গোলাকার পৃথিবীর কথা বলেছিলেন , যেটি পরবর্তি কালে সত্যি বলে প্রমানিত হয় । কিন্তু পিথাগোরাসের বহু আগেই পবিত্র বাইবেলে পৃথিবী যে গোল সেটা বলা হয়েছিল । আর সেটা আছে পবিত্র বাইবেলের "ইশাইয়া" লিখিত মঙ্গল সমাচারের ৪০ অধ্যায়ের ২২ অনুচ্ছেদে ।
-প্রভুই সত্যিকারের ঈশ্বর! তিনি পৃথিবীর বৃত্তের ওপর বসে থাকেন|
ইশাইয়া লিখিত এই অনুচ্ছেদে পরিষ্কার ভাবেই বলা হয়েছে পৃথিবীর বৃত্তে, অর্থাৎ ঈশ্বর গোলাকার পৃথিবীর উপরে বিচরন করেন ।
পৃথিবীর অভ্যন্তর লাভা দিয়ে তৈরি
শুধুমাত্র পৃথিবীর আকৃতির বিষয়েই বলা হয়েছে এমন নয় এছাড়াও পবিত্র বাইবেলে পৃথিবীর অভ্যন্তর যে উত্তপ্ত লাভা দিয়ে তৈরি হয়েছে সেটিও বলা হয়েছে ,যেটি বর্তমানে সকলের জানা , কিন্তু যে সময় বাইবেল লেখা হয়েছিল সেই সময় মানুষের কাছে এই বিজ্ঞানিক সত্যতাটি ছিল অজানা ,কারন প্রভু যিশু খ্রীষ্টের জন্মের দেড় হাজার বছর আগেই পবিত্র বাইবেলের ওল্ড টেষ্টামেন্টে এই কথাটি বলা হয়েছে ,যেটি বাস্তবেই অবাক করার মত তথ্য । এই বিষয়ে বলা হয়েছে "যোব" লিখিত সু সমাচারের ২৮ অধ্যায়ের ৫ অনুচ্ছেদে ।
মাটির ওপরে ফসল ফলে, ***কিন্তু মাটির তলা সম্পূর্ণ অন্যরকম, সব কিছুই যেন আগুনের দ্বারা গলিত হয়ে রযেছে|**
পৃথিবীর অবস্থান
যতদিন না মহান বিজ্ঞানি গ্যালিলিয় গ্যালিলী দূরবিন আবিষ্কার করতে পেরেছিলেন তার আগে সৌরজগতের প্রাথমিক ধারনাটি ছিল বাস্তব ধারনার ঠিক উল্টো ,যদিও অনেক বিজ্ঞানি তাদের পৃথিবী ও সৌরজগৎ বিষয়ে সঠিক ধারনা উল্লেখ্য করেছিলেন ,কিন্তু সে সময়এই ধারনাগুলো হয়েছিল নিন্দীত কারন সেই সময় মানুষের পক্ষে এই বিষয়ে বুঝতে পারা ছিল খুব কঠিন বিষয়, সেই সময় অনেক ধর্মেই মনে করা হত যে পৃথিবী কোন এক দেবতা বা প্রানির উপরে টিকে রয়েছে , উদাহরন স্বরুপ - গ্রীকদের প্রাচিন গ্রন্থ অনুসারে পৃথিবী তাদের দেবতা জিয়ুস অথবা এটলান্টিসের কাঁধে রয়েছে । কিন্তু বর্তমানে আমরা বিজ্ঞানের আলোকে এটা জানতে পেরেছি যে পৃথিবী কারো কাঁধে নই বরং উলম্ব অবস্থায় রয়েছে , কোন প্রকার অবলম্বন ছাড়াই টিকে রয়েছে। আর এই প্রসঙ্গে পবিত্র বাইবেল বলে ," যোব" লিখিত সুসমাচারের ২৭ অধ্যায়ের ৭ অনুচ্ছেদে ।
ঈশ্বর উত্তর আকাশকে শূন্য লোকে প্রসারিত করে দিয়েছেন| ***ঈশ্বর পৃথিবীকে শূন্যতায় ঝুলিয়ে দিয়েছেন| **
আবার একই সাথে যোব লিখিত এই সু সমাচারের এই অনুচ্ছেদের প্রথম অংশটি পরেন ,
***ঈশ্বর উত্তর আকাশকে শূন্য লোকে প্রসারিত করে দিয়েছেন**
তবে বুঝতে অসুবিধা হবে না যে এখানে ঈশ্বর তার পবিত্র ধর্মপুস্তক বাইবেলে সৌরজগৎের বিস্তারের কথা বলেছেন , আর এই তথ্যটি বিজ্ঞানের জগৎে মাত্র কয়েক দশক হল আবিষ্কার হয়েছে, যে সৌর জগৎের আকার কল্পনার থেকেও বিশাল ।
ঈশ্বর উত্তর আকাশকে শূন্য লোকে প্রসারিত করে দিয়েছেন| ***ঈশ্বর পৃথিবীকে শূন্যতায় ঝুলিয়ে দিয়েছেন| **
আবার একই সাথে যোব লিখিত এই সু সমাচারের এই অনুচ্ছেদের প্রথম অংশটি পরেন ,
***ঈশ্বর উত্তর আকাশকে শূন্য লোকে প্রসারিত করে দিয়েছেন**
তবে বুঝতে অসুবিধা হবে না যে এখানে ঈশ্বর তার পবিত্র ধর্মপুস্তক বাইবেলে সৌরজগৎের বিস্তারের কথা বলেছেন , আর এই তথ্যটি বিজ্ঞানের জগৎে মাত্র কয়েক দশক হল আবিষ্কার হয়েছে, যে সৌর জগৎের আকার কল্পনার থেকেও বিশাল ।
রক্ত জীবনের মুল ভিত্তি |
মানুষের শরিরে রক্ত মানুষের শরিরে জীবন ধরে রাখার অন্যতম যৌগিক উপাদান , আধুনিক বিজ্ঞান এটা প্রমান করেছে যে রক্ত শরিরের প্রত্যেকটি কোষে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন ,খাদ্যবস্তু আদান-প্রদান ঘটাই । রক্তের এমন সত্যতা কোন একক বিজ্ঞানী দ্বারা সম্পুর্ন হয় নি । এই প্রসঙ্গে কার্লষ্টেইনার রক্তের A ,B, C শ্রেনীবিভাগ করেন , তার আগে রক্তের মধ্য এমন শ্রেনীবিভাগ নিয়ে বিজ্ঞানের শাখায় কোন আলাদা ধারনা ছিল না , আবার বিজ্ঞানী উইলিয়াম হার্ভে মানবদেহে কিভাবে রক্ত পরিচালিত হয় সেটি আবিষ্কার করেন , যেগুলো প্রমান করে রক্ত ব্যাতিত শরির জীবনধারনের অযোগ্য হয়ে পরে । যা বিগত মাত্র কয়েক দশক আগেই আবিষ্কার করা হয়েছে । কিন্তু এই বিষয়টিকে নিয়ে পবিত্র বাইবেল প্রায় তিন হাজার বছর আগেই এই কথাটি লিপিবদ্ধ করেছে। যেটি রয়েছে " লেবী" বা লেভিটিকাস লিখিত মঙ্গল সমাচার অধ্যায় ১৭ , অনুচ্ছেদ ১৪ তে।
***প্রতিটি প্রাণীর রক্তেই তার জীবন রয়েছে|**
যদিও পবিত্র বাইবেল কোন বৈজ্ঞানিক পুস্তক নয় , তবুও বিজ্ঞানের বিষয়ে যে সমস্ত কিছু বলা হয়েছে তা সম্পুর্ন ভাবে বিজ্ঞানসম্মত । এছাড়া আরো অনেক কিছু বলা হয়েছে পবিত্র বাইবেলে , যেগুলো এই পর্বে আলোচনা করছি না ,যেমন - বিং ব্যাং থিওরী , বাষ্পিকরন , আর আমার ধারনায় সবথেকে বেশি গুরত্বপুর্ন বিষয় বিবর্তনবাদ , এই সমস্ত বিষয় আমি পরের প্রতিবেদনে আলোচনা করব , আর চেষ্টা করব সেই সমস্ত বিষয় গুলিকেও অন্তর্ভুক্ত করার যেগুলি পবিত্র বাইবেলে বলা তো হয়েছে কিন্তু সেগুলি এখনো আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি । বাইবেল যে বাস্তবে বিজ্ঞানের বিরোধি নই , কিন্তু তবুও বিজ্ঞানের আলোকে মানুষ সৃষ্টিকর্তার কথা ভুলে যাচ্ছে , বাইবেলের আদম-হাওয়ার কথা নিশ্চয় জানা আছে ,যেখানে ঈশ্বর আদম-হাওয়াকে জ্ঞানের ফলটি খেতে বারন করেছিলেন , কারন ঈশ্বর জানতেন এতে মানুষ জ্ঞান তো পাবে কিন্তু তার পরিনামে মানুষ ঈশ্বরের থেকে অনেক দুরে যেতে শুরু করবে । এই প্রসঙ্গে অয়ার্ডসয়োর্থ সুন্দর একটি কথা বলেছেন - " দিন-দিন মানুষের যে হারে জ্ঞানের প্রসার ঘটছে ,ঠিক সেই হারেই ঈশ্বরের প্রতি মানুষের বিশ্বাস কমছে , আর সেই জন্যই ঈশ্বর সেদিন মানুষকে জ্ঞানের আপেল ফলটি খেতে বারন করেছিল " ।
***সুমন্ত হেমরম***
ধন্যবাদ আপনাকে।
উত্তরমুছুনঅনেক কিছু জানতে পারলাম।
ধন্যবাদ আপনাকে,
উত্তরমুছুনঅনেক কিছু জানতে পারলাম
একটি সঠিক ধারণা পেলাম
উত্তরমুছুন