দক্ষিন দিনাজপুর অনেকগুলো পৌরানিক আশ্চর্যে ভরে রয়েছে । আজ দক্ষিন দিনাজপুর ইতিহাসের যে অংশ নিয়ে বলছি , সেই অংশটির বিষয়ে বলা হয়েছে মূলত হিন্দুদের অন্যতম পবিত্র ধর্মগ্রন্থ " শিবপুরান " এর " রুদ্রসংহিতা" ই ।
তবে সেই বিষয়টি আলোচনা করার আগে কিছু বিষয়ের উপর আলোকপাত করা যাক -
তবে সেই বিষয়টি আলোচনা করার আগে কিছু বিষয়ের উপর আলোকপাত করা যাক -
শিব পুরান এর বীরুপাক্ষ মন্দির |
# বানগড়
"বানগড় " গঙ্গারামপুর তথা দক্ষিন দিনাজপুর জেলার অন্যতম আকর্ষন । যার বিবরণ হিন্দু পুরাণ গুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন ঐতিহাসিক পান্ডুলিপিতেও পাওয়া যায় ।ভিন্ন ভিন্ন সময়ের পার্থক্যে এই স্থানটিকে ভিন্ন ভিন্ন নামে ডাকা হয়েছে । তবে স্থানিয় লোকেদের মতে এই স্থানটি শিবপুরানে বর্ণিত বানরাজার ধ্বংসাবশেষ । তবে বানগড়ের ঢিঁবির কথা সকলে জানলেও এই শিবপুরানের সাথে জড়িত আরেকটি ঢিঁবি যে রয়েছে সেটা সকলে তেমন যানে না । সেই ঢিঁবির নাম "ঊষাতিটি" বা ঊষারানির ঢিঁবি নামে বেশ পরিচীত ।
# অন্নান্য বিষয়
এই ঊষারানির ঢিঁবির বিষয়ে বলার আগে এই ঢিঁবির অন্নান্য বিষয় সমূহ জেনে নেওয়া যাক । এই ঢিঁবিটি গঙ্গারামপুরের যে স্থানে রয়েছে সেই স্থানের নাম দেবীপুর । এই এলাকার স্থানিয় আদিবাসিরা এই ঢিঁবিটিকে "চুটিয়া বুরু" বা ইন্দুর দ্বারা তৈরি পাহাড় হিসাবে উল্লেখ্য করে থাকে । আবার অন্যদিকে স্থানিয় অধিবাসিরা এই টিলাটিকে ঊষারানির ঢিঁবি বলে থাকে ।
# ঊষারানি কে ?
ঊষারানির বিষয়ে আপনাদের নিশ্চয় জানা আছে - আর যার নিদর্শন হিসাবে রয়েছে - ধোল দিঘী , ঊষা রানির কলা গাছ , ঊষাহরন রোড ইত্যাদি ইত্যাদি । যেগুলো নিয়ে আমি এর আগে বিস্তারিত আলোচনা আগেই করেছি , তবুও আপনাদের সুবিধার্তে খুবি সংক্ষিপ্ত আকারে সেগুলো বলার চেষ্টা করছি ।
শিবপুরান মতে ঊষা ছিলেন অসুর রাজ বানের রুপবতি কন্যা । যার স্নানের জন্য ধোল দিঘি খনন করা হয়েছিল , এবং যার জন্য ঘটেছিল ভগবান শ্রীকৃষ্মের সাথে অসুর রাজ বানের যুদ্ধ ।
# শিবপুরানে সাথে ঊষাতিটির যোগসূত্ৰ
এবার সেই যুদ্ধ কেন ঘটেছিল সেটা একটু জেনে নেওয়া যাক । হিন্দু পুরান মতে "দ্বাপর " যুগে বর্তমানের বানগড় ছিল অসুররাজ বানের রাজধানি । এই বানাসুর বা বানরাজ ছিলেন শিবের চরম উপাসক । একবার শিব বানরাজের তপস্যায় মুগ্ধ হয়ে বানরাজাকে হাজার হাতের বর দেন এবং তার পাশাপাশি বানরাজা যাতে তার সাথে থাকতে পারে তার জন্য শিব নিজেকে আত্মলিংগ রুপে বিয়োজিত করে । যে লিংগ টিকে ঘিরে বানরাজা একটি মন্দিরো নির্মান করেন যেটি বীরুপাক্ষ মন্দির নামে পরিচীত ।
শিবপুরানে বর্নিত ঊষাতিটিতে আমি |
এই মন্দিরের পাশে বয়ে গেছে পুনর্ভবা নদি , এবং মন্দিরের পাশে বয়ে যাওয়া নদীর ওপারেই রয়েছে ঊষাতিটি ।
রাজা বান শিবের আত্মলিংগের বিরুপাক্ষ মন্দির নির্মান করলে বানরাজা মন্দিরের সিমানার অন্তর্গত এলাকাই কোন প্রকার রক্তক্ষরন বা কাকেও হত্যা করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন ।
কিন্তু অসুর রাজ বানের কন্যা ঊষা ছিল অপুর্ব সুন্দরি । কিন্তু যুদ্ধকালিন সহযোগিতা চাওয়ার জন্য শ্রীকৃষ্মের নাতি অনিরুদ্ধ বানরাজার দরবারে এলে বানরাজ কন্যা ঊষার সাথে প্রেমবন্ধনে আবদ্ধ হন । অনিরুদ্ধ বানরাজাকে তার সুন্দরি কন্যা ঊষাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বানরাজা সেই প্রস্তাব অগ্রাহ্য করে ।
অনিরুদ্ধ কোন প্রকার উপায় না দেখে , অনিরুদ্ধ ঊষার সাথে গান্ধর্ব বিবাহ বা পালিয়ে বিয়ে করেন । যেহেতু বানরাজা ছিলেন খুবই শক্তিশালি রাজা , তাই অনিরুদ্ধ ঊষার সাথে আত্মগোপন থাকায় প্রয়োজন মনে করেন । যেহেতু বানরাজা বিরুপাক্ষ মন্দিরের সিমানাই কোন প্রকার রক্তক্ষরন বা হত্যা করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন , তাই অনিরুদ্ধ আর ঊষা মন্দিরের সিমানার মধ্যেই আত্মগোপন করা বুদ্ধিমানের কাজ মনে করে । মনে করা হয় ঊষারানি আর অনিরুদ্ধ গান্ধর্ব বিবহের পর , এই ঊষাতিটির স্থানে আত্মগোপন করেছিল । যেটি বর্তমানে একটি টিলার আকারে দেখা যায় ।
অনিরুদ্ধ কোন প্রকার উপায় না দেখে , অনিরুদ্ধ ঊষার সাথে গান্ধর্ব বিবাহ বা পালিয়ে বিয়ে করেন । যেহেতু বানরাজা ছিলেন খুবই শক্তিশালি রাজা , তাই অনিরুদ্ধ ঊষার সাথে আত্মগোপন থাকায় প্রয়োজন মনে করেন । যেহেতু বানরাজা বিরুপাক্ষ মন্দিরের সিমানাই কোন প্রকার রক্তক্ষরন বা হত্যা করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন , তাই অনিরুদ্ধ আর ঊষা মন্দিরের সিমানার মধ্যেই আত্মগোপন করা বুদ্ধিমানের কাজ মনে করে । মনে করা হয় ঊষারানি আর অনিরুদ্ধ গান্ধর্ব বিবহের পর , এই ঊষাতিটির স্থানে আত্মগোপন করেছিল । যেটি বর্তমানে একটি টিলার আকারে দেখা যায় ।
# বাড়তি তথ্য
এবার একটু বাড়তি তথ্যের দিকে এগোনো যাক । ঊষারানি ও অনিরুদ্ধ এই স্থানে কয়েকদিন থাকার পর অনিরুদ্ধ এই ঊষাতিটি ছাড়ার প্রয়োজন মনে করে এবং সেখান থেকে পলায়ন করার চেষ্টা করে । কথিত আছে যে রাস্তা দিয়ে তারা পালানোর চেষ্টা করেছিল সেই রাস্তাটি এখন " ঊষাহরন রোড" নামে পরিচীত । কিন্তু অনিরুদ্ধের এই চেষ্টা বিফল হয় এবং বানরাজা অনিরুদ্ধকে কারাগারে নিক্ষেপ করে ।
পরবর্তিকালে ভগবান শ্রীকৃষ্ম তার নাতি অনিরুদ্ধকে রক্ষা করতে এলে বানরাজের সাথে শ্রীকৃষ্মের যুদ্ধ হয় । মনে করা হয় বানরাজার সাথে শ্রীকৃষ্মের যুদ্ধ গঙ্গারামপুরের নারায়নপুর গ্রামের বিস্তৃত এলাকাই ঘটে ছিল । যেটি এখন চাষবাসের জমিতে পরিনত হয়েছে ।
এবার একটু বাড়তি তথ্যের দিকে এগোনো যাক । ঊষারানি ও অনিরুদ্ধ এই স্থানে কয়েকদিন থাকার পর অনিরুদ্ধ এই ঊষাতিটি ছাড়ার প্রয়োজন মনে করে এবং সেখান থেকে পলায়ন করার চেষ্টা করে । কথিত আছে যে রাস্তা দিয়ে তারা পালানোর চেষ্টা করেছিল সেই রাস্তাটি এখন " ঊষাহরন রোড" নামে পরিচীত । কিন্তু অনিরুদ্ধের এই চেষ্টা বিফল হয় এবং বানরাজা অনিরুদ্ধকে কারাগারে নিক্ষেপ করে ।
পরবর্তিকালে ভগবান শ্রীকৃষ্ম তার নাতি অনিরুদ্ধকে রক্ষা করতে এলে বানরাজের সাথে শ্রীকৃষ্মের যুদ্ধ হয় । মনে করা হয় বানরাজার সাথে শ্রীকৃষ্মের যুদ্ধ গঙ্গারামপুরের নারায়নপুর গ্রামের বিস্তৃত এলাকাই ঘটে ছিল । যেটি এখন চাষবাসের জমিতে পরিনত হয়েছে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন