পাপমুক্ত সমাজ ,পাপাচার থেকে মানব সমাজকে রক্ষার্থে ধর্ম তার বিকাশ ঘটাই। কিন্তু বর্তমান বিশ্ব ব্রম্ভান্ডে এমন কেও নাই যে অন্তরে হাত রেখে বলতে পারে সে পাপ করেনি এই বিষয়ে বাইবেলের যোহনের ১ম পত্রের ১ অধ্যায়ের ১০ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে - **আর যদি বলি, আমরা পাপ করিনি, তবে আমরা ঈশ্বরকে মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন করি এবং তাঁর বার্তা আমাদের অন্তরে নেই৷**
পাপ কি?
পাপ ও পূণ্য এই দুটির সম্পর্ক ব্যাস্তানুপাতিক। পাপের কোন বিশেষ সংঙ্গা নেই, তবে একটি মৌলিক ধারনা বর্তমান "যা কিছু ঈশ্বর ও মানব কল্যান বিরুদ্ধ তাহা হইলো পাপ।"প্রভু আমাদের পাপ ক্ষমা কর |
মৌলিক ধারনা ব্যতিত বাইবেলে পাপাচার মুক্ত সমাজ গড়ার ক্ষেত্রে ঈশ্বর দশটি আজ্ঞা পস্তর ফলকে লিপিবদ্ধ করেন এবং মোশিকে তা প্রেরন করেন এবং বলেন যেটি রয়েছে যাত্রা পুস্তকের ২৪ অধ্যায়ের ১২ অনুচ্ছেদে- ** প্রভু মোশিকে বললেন, “পর্বতের ওপর আমার কাছে এসো এবং ওখানে থাকো| আমি লোকদের জন্য আমার শিক্ষামালা ও বিধিগুলি দুটো প্রস্তর ফলকে লিখে রেখেছি| আমি এই প্রস্তর ফলকগুলি তোমাকে দিতে চাই|”**
সেই প্রস্তর ফলকে যে সমস্ত আদেশ বা আজ্ঞা ক্ষোদিত করা হয়েছে সেগুলো নিম্ন রুপ।
১) “আমি ব্যাতিত অন্য কোন দেব-দেবতা আরাধ্য করবে না”
২) “ কোন প্রকার মূর্তি পূজা করবে না।
৩) “তোমরা তোমাদের ঈশ্বর-সদাপ্রভুর নামে অনর্থক লইবে না।
৪) “বিশ্রামবার পবিত্রতার সাথে তা পালন করবে।
৫) “ তোমরা তোমাদের মা-বাবাকে সম্মান করবে।
৬) “নর হত্যা বা খুন করবে না”।
৭) “ব্যভিচার করবে না।
৮) “চুরি করবে না।”
৯) “কারো বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিবে না”
১০) পরের দ্রব্য লোভ করবে না।
( এই দশ আজ্ঞাগুলো পবিত্র বাইবেলের যাত্রা পুস্তক ২০:১-১৭ এবং দ্বিতীয় বিবরণ ৫:৬-২১ পদের মধ্যে পাবেন আমি এখানে সংক্ষিপ্ত আকারে দিলাম বিস্তারিত পড়তে বাইবেলে লিখিত ঈশ্বরের দশ আজ্ঞা প্রতিবেদন পড়তে পারেন।)
এমন প্রতিহিংসা পরায়ণ পরস্থিতীতে মানবজাতীকে রক্ষা করার একমাত্র উপায় ক্ষমাশীল ধর্মবিশ্বাসের। যথার্থেই প্রভু যীশু বলেছেন যেটি রয়েছে মার্ক লিখিত ১১ অধ্যায়ের ২৫ অনুচ্ছেদে - **তোমরা যখনই প্রার্থনা করতে দাঁড়াও, যদি কারোর বিরুদ্ধে তোমাদের কোন কথা থাকে, তাকে ক্ষমা কর,’ **
সুতরাং খ্রীষ্ট ধর্মমতে পাপের ক্ষমা রয়েছে, আর এই পাপের একমাত্র উপায় হল প্রায়শ্চিত্ত বা অনুতাপ। এই বিষয়ে বাইবেলের লুক লিখিত ১৭ অধ্যায়ের ৪ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে -**সে যদি এক দিনে সাতবার তোমার বিরুদ্ধে পাপ করে, আর সাতবারই তোমার কাছে ফিরে এসে বলে, ‘আমি অনুতপ্ত,’ তবে তাকে ক্ষমা কর৷’** এই প্রসঙ্গে অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন আমি কেনই বা আমার শত্রুকে ঘনঘন ক্ষমা করতে যাব? এর উত্তর স্বরুপ বাইবেলের মথি লিখিত ৬ অধ্যায়ের ১৪ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে -**তোমরা যদি অন্যদের অপরাধ ক্ষমা কর, তবে তোমাদের স্বর্গের পিতাও তোমাদের ক্ষমা করবেন৷**
সেই প্রস্তর ফলকে যে সমস্ত আদেশ বা আজ্ঞা ক্ষোদিত করা হয়েছে সেগুলো নিম্ন রুপ।
১) “আমি ব্যাতিত অন্য কোন দেব-দেবতা আরাধ্য করবে না”
২) “ কোন প্রকার মূর্তি পূজা করবে না।
৩) “তোমরা তোমাদের ঈশ্বর-সদাপ্রভুর নামে অনর্থক লইবে না।
৪) “বিশ্রামবার পবিত্রতার সাথে তা পালন করবে।
৫) “ তোমরা তোমাদের মা-বাবাকে সম্মান করবে।
৬) “নর হত্যা বা খুন করবে না”।
৭) “ব্যভিচার করবে না।
৮) “চুরি করবে না।”
৯) “কারো বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিবে না”
১০) পরের দ্রব্য লোভ করবে না।
( এই দশ আজ্ঞাগুলো পবিত্র বাইবেলের যাত্রা পুস্তক ২০:১-১৭ এবং দ্বিতীয় বিবরণ ৫:৬-২১ পদের মধ্যে পাবেন আমি এখানে সংক্ষিপ্ত আকারে দিলাম বিস্তারিত পড়তে বাইবেলে লিখিত ঈশ্বরের দশ আজ্ঞা প্রতিবেদন পড়তে পারেন।)
ঈশ্বরের দশটি আজ্ঞা |
পাপের ক্ষমা
প্রতিনিয়ত পাপাচার বেড়েই চলেছে পৃথিবীতে, বিচারের আশাই সকলেই হত্যাকারির হত্যা করাকেই অগ্রগন্য মনে করেন। ভারতীয় তথা বীশ্ব সমাজের প্রত্যেক নাগরিক জোর গলায় আর্তনাদ করে খুনিদের বিচার চাই , আর এই অপরাধের একমাত্র বিচার হিসাবে খুনির মৃত্যদন্ডকেই অগ্রাধিকার মনে করা হচ্ছে (আঁখকে বাদলে আঁখ ,খুনকে বাদলে খুন)। আমার বিচারে কোন অপরাধির মৃত্যদন্ড কাম্য করার অর্থ "আমি তো আমার সন্তান বা প্রীয়জনকে হারিয়েছি , বিনিময়ে আপনাকেও আপনার প্রীয়জনকে হারাতে হবে।"এমন প্রতিহিংসা পরায়ণ পরস্থিতীতে মানবজাতীকে রক্ষা করার একমাত্র উপায় ক্ষমাশীল ধর্মবিশ্বাসের। যথার্থেই প্রভু যীশু বলেছেন যেটি রয়েছে মার্ক লিখিত ১১ অধ্যায়ের ২৫ অনুচ্ছেদে - **তোমরা যখনই প্রার্থনা করতে দাঁড়াও, যদি কারোর বিরুদ্ধে তোমাদের কোন কথা থাকে, তাকে ক্ষমা কর,’ **
সুতরাং খ্রীষ্ট ধর্মমতে পাপের ক্ষমা রয়েছে, আর এই পাপের একমাত্র উপায় হল প্রায়শ্চিত্ত বা অনুতাপ। এই বিষয়ে বাইবেলের লুক লিখিত ১৭ অধ্যায়ের ৪ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে -**সে যদি এক দিনে সাতবার তোমার বিরুদ্ধে পাপ করে, আর সাতবারই তোমার কাছে ফিরে এসে বলে, ‘আমি অনুতপ্ত,’ তবে তাকে ক্ষমা কর৷’** এই প্রসঙ্গে অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন আমি কেনই বা আমার শত্রুকে ঘনঘন ক্ষমা করতে যাব? এর উত্তর স্বরুপ বাইবেলের মথি লিখিত ৬ অধ্যায়ের ১৪ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে -**তোমরা যদি অন্যদের অপরাধ ক্ষমা কর, তবে তোমাদের স্বর্গের পিতাও তোমাদের ক্ষমা করবেন৷**
অনুতাপ ও প্রায়শ্চিত্ত |
ক্ষমাহীন পাপ
বাইবেলে উল্লেখ্য দশ আজ্ঞা বিরুদ্ধ কর্মের প্রত্যেকটির জন্য আপনি ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য, তা সে ঈশ্বরের বিরুদ্ধ অনর্থক হোক বা নর হত্যা কিন্তু তার জন্য একান্ত অবশ্যক প্রায়শ্চিত্ত , যে বিষয়ে বলা হয়েছে যোহনের ১ অধ্যায়ের ৯ অনুচ্ছেদে-**আমরা যদি নিজেদের পাপ স্বীকার করি, বিশ্বস্ত ও ধার্মিক ঈশ্বর আমাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা করবেন ও সকল অধার্মিকতা থেকে আমাদের শুদ্ধ করবেন৷**কিন্তু তার পরেও একটি বিশেষ পাপ রয়েছে যেটি বাইবেল অনুসারে ক্ষমার অযোগ্য যেটি বলা হয়েছে মথি ১২ অধ্যায়ের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদে-**"তাই আমি তোমাদের বলছি, মানুষের সব পাপ এবং ঈশ্বর নিন্দার ক্ষমা হবে, কিন্তু পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে কোন অসম্মানজনক কথা-বার্তার ক্ষমা হবে না।**এবং ৩২ অনুচ্ছেদ **মানবপুত্রের বিরুদ্ধে কেউ যদি কোন কথা বলে, তাকে ক্ষমা করা হবে, কিন্তু পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে কথা বললে তার ক্ষমা নেই , এযুগে বা আগামী যুগে কখনইনা৷**
পাপ থেকে বাঁচার উপায়
পাপ থেকে রক্ষা পাওয়ার যেমন উপায় রয়েছে তেমনি পাপাচার থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় রয়েছে বাইবেলে। মানবজাতীর প্রত্যেকেই পাপাচার থেকে মুক্ত থাকতে সচেষ্ট, কেননা স্বর্গরাজ্যে পাওয়ার একমাত্র উপায় পাপাচার থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা, কেননা পাপাচার মুক্ত থাকা পবিত্রতার প্রতিক আর পবিত্রতা সরলতার প্রতীক , সুতরাং পাপ থেকে মুক্ত থাকতে হলে শিশুর ন্যায় সরল থাকা বাঞ্চনিয়, প্রভু যীশু এই প্রসঙ্গে মথি ১৮ অধ্যায়ের ৩ অনুচ্ছেদে বলেছেন -**আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যতদিন পর্যন্ত না তোমাদের মনের পরিবর্তন ঘটিয়ে এই শিশুদের মতো হবে, ততদিন তোমরা কখনই স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না৷** এছাড়াও মথি লিখিত ৫ অধ্যায়ের ৩ অনুচ্ছেদ -**‘ধন্য সেই লোকেরা যাঁরা আত্মায় নত-নম্র, কারণ স্বর্গরাজ্য তাদেরই৷**সরলতার পাশাপাশি "ক্রোধ" সংযমের কথাও বলা হয়েছে অনেক জায়গাই যার মধ্যে একটি হল কলসিয় ৩ অধ্যায়ের ১৩ অনুচ্ছেদে -**পরস্পরের প্রতি ক্রুদ্ধ ভাব রেখো না কিন্তু একে অপরকে ক্ষমা কর৷**
এবং ক্রোধের পাশাপাশি আরো অনেক কিছু বলা হয়েছে যেগুলো মানুষকে পাপ কাজ থেকে দুরে রাখে যেটি রয়েছে এফিসিয় ৪ অধ্যায়ের ৩১ অনুচ্ছেদে-** সব রকমের তিক্ততা, রোষ, ক্রোধ, চেঁচামেচি, নিন্দা ও সব রকমের বিদ্বেষভাব তোমাদের থেকে দূরে রাখ৷**
খ্রীষ্ট ধর্মে ক্ষমার স্থান
খ্রীষ্ট ধর্মে ক্ষমার স্থান সর্বোচ্চ। ক্ষমার বিষয়ে বাইবেলে প্রচুর বলা হয়েছে, যথার্থেই বলা চলে খ্রীষ্ট ধর্ম মানবতার প্রতিক, শত্রুদের ক্ষমা করাও তার একটি অংশ যেমনটি লেখা রয়েছে লুক লিখিত ৬ অধ্যায়ের ২৭ অনুচ্ছেদে-** ‘তোমরা যাঁরা শুনছ, আমি কিন্তু তোমাদের বলছি, তোমরা তোমাদের শত্রুদের ভালবেসো৷ যাঁরা তোমাদের ঘৃণা করে, তাদের মঙ্গল কোর৷** এছাড়াও রোমিও ১২ অধ্যায়ের ১৪ অনুচ্ছেদ -**তোমাদের যাঁরা নির্য়াতন করে তাদের জন্য প্রার্থনা করো, যেন ঈশ্বর তাদের আশীর্বাদ করেন৷ তাদের মঙ্গল কামনা কর, অভিশাপ দিও না৷** এছাড়াও আরো প্রচুর জায়গাই।খ্রীষ্ট ধর্মে ক্ষমাই হল মূল কথা প্রভু যীশু নিজেও ক্রুশে বিদ্ধ হওয়া কালিন বলেছিলেন - **হে পিতা তুমি এদের ক্ষমা কর ,কারন এরা জানে না এরা কি করছেন।**
প্রভু যীশু এই প্রসঙ্গে আরো বলেছেন -**পাপিকে নই বরং পাপকে ঘৃনা কর।** আর এমনটা বলার পিছনে যে ব্যাক্ষাটি রয়েছে সেটি হল ভালো এবং খারাপের মধ্যে পার্থক্য ,আর এই পার্থক্য বিশ্লেষনের জন্য প্রভু যীশু লুক লিখিত ৬ অধ্যায়ের ৩২ ও ৩৩ অনুচ্ছেদে বলেছেন-**যাঁরা তোমাদের ভালবাসে, তোমরা যদি কেবল তাদেরই ভালবাস, তবে তাতে প্রশংসার কি আছে? কারণ পাপীরাও তো একই রকম করে৷** এবং ৩৩ অনুচ্ছেদ **যাঁরা তোমাদের উপকার করে, তোমরা যদি কেবল তাদেরই উপকার কর, তাতে প্রশংসার কি আছে? পাপীরাও তো তাই করে৷ **
বাস্তবেই মহান ধর্ম এই খ্রীষ্ট ধর্ম যেখানে গোটা বিশ্ব প্রতিহিংসা মূলক কার্যকলাপকে উন্নয়নের সোপান হিসাবে গ্রহন করা হচ্ছে সেখানে পুরো মানবজাতীকে মানবতার পাঠ পড়ানোর দিকে নিজের পদাঙ্ক অগ্রসর করেছে খ্রীষ্ট ধর্ম। যেখানে বিশ্বে "খুন কে বাদলে খুন" বানীতে সবাই ভরাডুবি খাই সেই স্থানে বাইবেলের স্তিফান নামক চরিত্র মৃত্য কালিন তার হত্যাকারিদেরো ক্ষমা প্রার্থনা করেছিল ,যেটি রয়েছে বাইবেলের শিষ্যচরিতের ৭ অধ্যায়ের ৫৯ ও ৬০ অনুচ্ছেদে-**তারা যখন স্তিফানকে পাথর মেরে চলেছে তখন তিনি প্রার্থনা করে বললেন, ‘প্রভু যীশু আমার আত্মাকে গ্রহণ কর!’এরপর তিনি হাঁটু গেড়ে বসে চিৎকার করে বললেন, ‘প্রভু, এঁদের বিরুদ্ধে এই পাপ গন্য করো না!’ এই বলে তিনি মৃত্যুতে ঢলে পড়লেন৷**
সুমন্ত মাহালী হেমরম
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন