Unique knowledge bangla

History of dakshin dinajpur, bangla bible, DAKSHIN DINAJPUR, Uttar DINAJPUR, Malda, chiristanity, santhal,indian tribe,mahli tribe, unknown facts, tourist place of Malda, tourist place of Dakshin DINAJPUR ,bible, bible story, bible story in bangla,dakshin dinajpur news,adibashi,sautal,indian tribe culture,

TRANSLATE ARTICLE TO YOUR LANGUEGE

শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩

ভারতে খ্রীষ্ট বা খ্রীষ্টান ধর্ম প্রচার সাধু থোমা যেভাবে শুরু করেন। How Christianity began in India । The reason why Saint Thomas came to India।

জুন ১০, ২০২৩

 ভারতে খ্রীষ্ট ধর্মের প্রসারের ইতিহাস ও সময়কাল বিষয়ে ভারতের জনমানুষের শিংহভাগের মধ্যে ভূল মতামত জায়গা করে নিয়েছে। বস্তুত ভারতে খ্রীষ্ট ধর্মের প্রচার প্রায় দু হাজার বছর আগেই শুরু হয়েছে। তিব্বতীয় কিছু পান্ডুলিপিকে প্রমাণ ধরে কিছু বৌদ্ধ পন্ডিত এও দাবি করেন যে ভারতে স্বয়ং যীশু খ্রীষ্ট এসেছিলেন এবং গৌতম বুদ্ধের কাছ হতে প্রচুর জ্ঞান প্রাপ্ত করেছিলেন। বস্তুত খ্রীষ্টানদের পবিত্র গ্রন্থ বাইবেলে যীশু খ্রীষ্টের জীবনের কয়েকটি বছরের, বিশেষ করে যুবক কালের কয়েক বছরের ইতিহাস জানা যায়নি, কথিত আছে যে সেই সময়ে তিনি ভারতে এসেছিলেন এবং বেদ জ্ঞানের অধ্যায়ন এবং বৌদ্ধ দর্শনের অধ্যায়ন করেছেন। যদিও বা‌ আজকের আলোচ্য বিষয় ভারতে প্রভু যীশুর আগমন নিয়ে না, ভারতে খ্রীষ্ট ধর্মের প্রচার নিয়ে।

ভারতে খ্রীষ্ট বা খ্রীষ্টান ধর্ম প্রচার সাধু থোমা যেভাবে শুরু করেন। How Christianity began in India । The reason why Saint Thomas came to India।
সেন্ট থমাস ক্যাথেড্রালে রাখা সেন্ট থমাস হত্যার প্রতিকৃতি 

স্বাভাবিক ভাবেই ভারতীয়দের মধ্যে এই ভূল ধারনা রয়েছে যে, ফ্রান্স এবং ব্রিটিশদের দ্বারাই ভারতে খ্রীষ্ট ধর্মের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে ভারতে খ্রীষ্ট ধর্মের প্রচারের ইতিহাস দুই হাজার বছর পুরোনো, এবং ভারতে খ্রীষ্ট ধর্মের পথিকৃৎ সাধু থোমার সেই কর্মকান্ডকে স্মরণে রেখে ১৯৬৪ সালে ভারতের ডাক ও টেলিগ্রাফ বিভাগ দ্বারা প্রেরিত থোমার নামে ডাকটিকিট ও স্ট্যাম্প তৈরী করা হয়েছিল। 

 ভারতে খ্রীষ্ট ধর্মের প্রচার 

বাইবেল মতে যীশু খ্রীষ্টের স্বর্গারোহণের আগে তার বারো জন শিষ্যদের গোটা বিশ্বে খ্রীষ্ট ধর্ম প্রচার করতে বলেন, আর এই খ্রীষ্ট ধর্ম প্রচারের প্রধান দায়িত্বে ছিলেন তার এক শিষ্য পিতর (ইংরাজিতে পিটার)। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে খ্রীষ্ট ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে যীশু খ্রিস্টের আরেক শিষ্য থোমাকে নিয়োজিত করেন। পবিত্র আত্মায় দিক্ষীত থোমা বর্তমানের ইজরায়েলের জেরুশালেম থেকে আকাবার উপসাগর এরপর লোহিত সাগর হয়ে আরব সাগরের পথে দক্ষিণ ভারতে ৫২ খ্রীষ্টাব্দে মালাবার উপকূলে প্রবেশ করেছিলেন। 

ভারতে প্রবেশ করার পর থেকেই তিনি এখানকার বেশ কিছু পরিবারকে পবিত্র আত্মার নামে তাদের খ্রীষ্ট ধর্মে দীক্ষিত করতে থাকেন। এই বিষয়ে কথিত আছে যে তিনি প্রভু যীশুর নামে বিভিন্ন রোগিদের সুস্থতা প্রদান করতে এবং যীশুর নামে বদ আত্মাদের মানুষের মধ্যে থেকে বিতাড়িত করতে পারতেন, যার ফলশ্রুতিতে তার দ্বারা‌ প্রচারিত খ্রীষ্ট ধর্মে মানুষের আস্থা বাড়তে থাকে। এইভাবে থোমা পাকালোমাত্তোম, সংকরপুরি, থইয়িল, পাইপ্যাপিলি, কল্লী, কালিয়ানঙ্কাল এবং পাতামুক্কু নামক কয়েকটি পরিবারকে বাপ্তিস্ম প্রদানের দ্বারা খ্রীষ্ট ধর্মের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। পরবর্তীতে খ্রীষ্ট ধর্মের প্রতি আকর্ষিত হয়ে কিছু রাজা যেমন গন্ডোনিফার্স খ্রীষ্ট ধর্মে দীক্ষিত হয়েছিলেন। দক্ষিণ ভারতে কিছু রাজা খ্রীষ্ট ধর্ম গ্রহণ করলে, থোমার দ্বারা সেই স্থানের কোডুঙ্গল্লুর, পলয়ূর, কোট্টাক্কাভু (পরাভুর), কোকামঙ্গালাম, নীরনাম, নীলকল (ছায়াল), কোল্লাম এবং তিরুভিথামকোডে খ্রীষ্ট ধর্মের উপাসনা স্থল বা গীর্জা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়ে ওঠে।

ভারতে খ্রীষ্ট বা খ্রীষ্টান ধর্ম প্রচার সাধু থোমা যেভাবে শুরু করেন। How Christianity began in India । The reason why Saint Thomas came to India।
সেন্ট থমাস ক্যাথেড্রাল চেন্নাই 

সাধু থোমার মৃত্যু 

দক্ষিণ ভারতের মাটিতে থোমা দীর্ঘ ২০ বছর ধরে খ্রীষ্ট ধর্মের প্রচার করলে খ্রীষ্ট ধর্ম বিস্তার লাভ শুরু করে, তার প্রচারিত খ্রীষ্ট ধর্মের প্রতি মানুষের আকর্ষন বৃদ্ধি পেতে থাকলে অন্য ধর্মাবলম্বীদের কাছে ভিতীর কারন হয়ে পড়ে। এমনাবস্থায় তামিলনাডুর ময়লাপুরে ধর্ম প্রচারের পর সাধু থোমা আত্মগোপনে প্রার্থনা করা কালিন বর্শা দ্বারা তাকে হত্যা করা হয়, এবং এখনো তার মৃতদেহ রাখা হয়েছে তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ের সেইন্ট থমাস ক্যাথেড্রাল ব্যাসিলিকা বা স্যান্ট থোমাস চার্চে।


 আরো পড়ুন - ভারতে খ্রীষ্টানদের উপর অত্যাচার কতটা সত্য এবং কারা দায়ী?

শুক্রবার, ৯ জুন, ২০২৩

ভারতের নতুন শিক্ষা ব্যাবস্থায় কি পরিবর্তন হয়েছে? What has changed in India's new education system?

জুন ০৯, ২০২৩

" সব শিক্ষাই ভিক্ষার শিক্ষা, নাচে ঘ্যামটা ঘুমটা খোলে ......................... হবি তো কেরানী নাকে চশমা খুঁজে।" নচিকেতার গানের এই কয়েকটি লাইনের যথার্থ কতখানি, বলা মুশকিল, কিন্তু ২০২৩ এ যে নতুন শিক্ষানিতী এসেছে তাতে নচিকেতার এই গানটি যথার্থ হারাতে চলেছে। শিক্ষাক্ষেত্রে অঢেল পরিবর্তন, কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রকের নাম বদলে, হচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রক। তার সাথে থাকছে প্রচুর পদক্ষেপ। সুতরাং বলাই যেতে পারে শুধু কেরানি তৈরি করা নয়, প্রকৃত শিক্ষায় গুরুত্বের পাশাপাশি গুরুত্ব ছাত্রছাত্রীদের মাঝে বিজ্ঞানমনস্ক সচেতনতা বৃদ্ধিতে। অন্যদিকে নতুন শিক্ষানীতির খসড়া প্রকাশ হবার সাথে সাথে বিরোধী দলগুলো নতুন শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে উগরে দিচ্ছেন তাদের ক্ষোভ। তাদের মতে এই নতুন শিক্ষানীতির পরিনতিতে ক্ষতি হবে ছাত্রছাত্রীদের।

ভারতের নতুন শিক্ষা ব্যাবস্থায় কি পরিবর্তন হয়েছে? What has changed in India's new education system?
নতুন শিক্ষানীতি ভারতকে কোন পথে নিয়ে যাবে? সেটাই দেখার

ব্যক্তিগত মতামতের আঙ্গিকে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি নতুন প্রজন্মের জন্য ভালো না খারাপ বলা কঠিন।

 ক্লাস ৬ থেকেই ভোকেশনাল ট্রেনিং।

সব কিছু চুরি যেতে পারে, শুধু হাতের কাজ না। বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষা এর আগে প্রতিষ্ঠিত ছিল না, এমনটা বলা বোধহয় বোকামি হতে পারে। তবে তা ছিল ঐচ্ছিক এবং একটি নির্দিষ্ট সময় এবং বিভিন্ন যোজনার দ্বারাই এই বিষয়টির দেখাশোনা করা হতো। কিন্তু এখন থেকে আর তেমনটি থাকছে না ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছে বৃত্তিমূলক শিক্ষা। ফলে যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা চাকরির বাইরে অন্য কিছু করতে চাই,  অথবা যে সব ছাত্র ছাত্রী প্রথাগত লেখাপড়ায় তেমন পারদর্শী নয় তাদের সুযোগ থাকবে এই ভোকেশনাল ট্রেনিং দ্বারা নিজেদের ভবিষ্যত গড়ে তোলার, এবং সব ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রেই তা গ্রহণযোগ্য। ধরা যাক, কেউ ইলেক্ট্রিকের কাজ অথবা মোটর ভিহিকেলের কাজ শিখতে চাই তবে সে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকেই শিখতে পারে।

থাকছে না বিজ্ঞান ও কলা‌ পার্থক্য

হয়তো আর কোনো গৃহ শিক্ষক শিক্ষিকাকে শুনতে হবেনা -" আমি অংক ভালো বুঝি, কিন্তু রসায়ন আমার মাথায় একটুও ঢুকে না।" অথবা অন্য কিছু, এখন সেই বেড়াজাল ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে
বিজ্ঞান পড়লেই কলা বিভাগের সাবজেক্ট নিতে পারবেনা, সে ব্যাপারটা আর থাকছে না। ছাত্রছাত্রীরা তার পছন্দমতো বিষয়সমূহ , অন্য ভাবে বলতে গেলে তাদের যে সমস্ত বিষয়গুলো জানতে পড়তে ভালো লাগে ( তা বিজ্ঞান ও কলা বিভাগের বা যেকোনো বিভাগের হোক না কেনো।) তবে সে তা নিতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ একজন ছাত্র রসায়ন নিয়ে পড়ার সাথে সাথে ইতিহাস নিয়েও পড়তে পারে। সুতরাং এখন আলাদা করে বিজ্ঞান, কলা‌, বানিজ্য থাকছে না।

ভাংতে চলেছে পুরোনো প্রথা

এমনিতেই প্রাথমিক, মাধ্যমিক গুরুত্ব কমে গিয়েছিল, কিন্তু এবার তার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে, কেননা ১০+২ উঠে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় রয়েছে নজরকাড়া বহুল পরিবর্তন। প্রাথমিক স্তরে চার বছরের মডেল রুপান্তরিত ৫ বছরে, আর এই স্তরেই জোর দেওয়া হয়েছে মাতৃভাষা শিক্ষার উপর। এরপর তিন বছর অষ্টম প্রযন্ত মাতৃভাষার শিক্ষা ঐচ্ছিক বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়বে এবং ষষ্ঠ থেকে অষ্টম সাবজেক্টিভ বিষয়গুলোকে অহেতুক সম্প্রসারিত সিলেবাস থেকে সরিয়ে পাঠের পয়েন্ট টু পয়েন্ট আলোচনার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় ষষ্ঠ শ্রেণী থেকেই ছাত্রছাত্রীরা চাইলে কম্পিউটার কোডিং শিখতে পারবে। এরপর নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত এই চার বছর উচ্চ বুনিয়াদি শিক্ষার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে পুর্বের ১০+২ ব্যাবস্থা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে সবচেয়ে নজরকাড়া বিষয়টি হল পরবর্তী উচ্চ শিক্ষা (Graduation) মডেল, কেন তা পরে আলোচনা করছি। এখানেও পূর্বের তিন বছরের মডেল সরিয়ে চার বছরের গ্রাজুয়েশন করা হয়েছে। আগে তিন বছরের শিক্ষা শেষে উচ্চ শিক্ষার (Graduation) মর্যাদা পেত, তবে তা পরিবর্তন করে প্রথম বছর শেষে সার্টিফিকেট, দ্বিতীয় বছর শেষে ডিপ্লোমা, তৃতীয় বছরে ব্যাচেলার, এভাবে চতুর্থ বছরের ব্যাচেলর উইথ রিসার্চ শেষে সরাসরি পিএইচডি করার সুযোগ থাকছে।এর আগে স্নাতকোত্তরে ৭৫ শতাংশের বেশি নম্বর না হলে পিএইচডি করা যেত না, এখন তা সম্ভব হবে। পাশাপাশি স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি এর মধ্যবর্তী এম ফিল উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ভারতের নতুন শিক্ষা ব্যাবস্থায় কি পরিবর্তন হয়েছে? What has changed in India's new education system?
পুরোনো শিক্ষা থেকে মুক্তি


সরকারি বিভিন্ন পদক্ষেপ

শিক্ষাক্ষেত্রে পরিবর্তন নামেও পরিবর্তন এনে দিয়েছে, কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রকের নাম বদলে, হচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রক। শিক্ষাক্ষেত্রে অভূতপূর্ব পরিবর্তন সরকারের জিডিপি তে হস্তক্ষেপ করতো তা আন্দাজ করা কঠিন ছিল না। বর্তমানে জিডিপির ১.৭% শিক্ষাক্ষেত্রে খরচ করা হলেও, জিডিপির ৬% শিক্ষাখাতে এখন থেকে খরচ করা হবে। ল এবং মেডিক্যাল ছাড়া বাকি সরকারি হোক বা বেসরকারি সমস্ত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য অভিন্ন রেগুলেশন চালু হবে। সকলেই শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে পারে বিশেষ করে মেয়েদের ১৮ বছর পর্যন্ত শিক্ষার অধিকার মেয়েদের শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করবে। ভারতের দূর্গম এলাকায় যাতে শিক্ষা পৌঁছতে পারে সেই উদ্দেশ্যে করা হয়েছে অনলাইন লার্নিংয়ে জোর দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার, আপাতত ৮টি ভাষায় আপাতত অনলাইনে পড়াশোনা চলবে।
শুধু তাই নয় বিশ্বের প্রথম সারির ১০০ টা বিশ্ববিদ্যালয়কে ভারতে ক‍্যাম্পাস খোলার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সরকারের শিক্ষাক্ষেত্রে পদক্ষেপ সরকারের ১০০% স্বাক্ষর পূরণের দিকেই রয়েছে বলা যেতে পারে, তবে সিলেবাসের কিছু পরিবর্তন সরকারের প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন রেখে যাই।

সোমবার, ৫ জুন, ২০২৩

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা AI নিয়ে কিছু কথা। SOMETHING ABOUT ARTIFICIAL INTELLIGENCE ।

জুন ০৫, ২০২৩

  পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং তা কার্যকারী করা একমাত্র বুদ্ধিমান প্রাণী দ্বারাই সম্ভব। আবার এই সমস্ত প্রাণীর অস্তিত্বে কোনো প্রকার সংকট দেখা দেয় তবে এরা মারাত্মক রকমের মে কোনো সিদ্ধান্ত নিতেও পিছুপা হয় না। মানুষি একমাত্র প্রাণী যারা পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে ও কার্যকারী করতে পারে, শুধু তফাৎটা রয়েছে অন্য সকল প্রাণীর মধ্যে অস্তিত্ব রক্ষার জন্য হিংস্র হতে পারে, তবে নৈতিক বা অনৈতিক পথ তা বিবেচনা করতে পারে না। কি হবে যদি এই মানুষের এই বুদ্ধিমত্তা কৃত্রিম উপায়ে যন্ত্রের মধ্যে প্রতিস্থাপন করা হয় তবে। ইতিমধ্যেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বা AI দ্বারা পরিচালিত CHAT GPT তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশ্বের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় সংযোজন করেছে। আগামী দিনে এর ব্যবহার সর্বক্ষেত্রে জায়গা করে নেবে তা নিয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ রাখে না। কিন্তু সর্বক্ষেত্রে AI এর ব্যবহার, যেখানে যন্ত্রগুলো নিজের মত সিদ্ধান্ত নিতে পারে মানুষের জীবনে কি প্রভাব ফেলবে তার আগাম ভবিষ্যৎবাণী করা একপ্রকার কঠিন।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা AI কি

বাংলায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা "AI" এর পূর্ণাঙ্গ রুপ "Artificial intelligence", এই শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন একজন আমেরিকান কম্পিউটার বিজ্ঞানী জন ম্যাকার্থি, এবং ইনিই সেই ব্যক্তি যিনি "Artificial intelligence" এবং প্রোগ্রামিং ভাষা লিস্পের জনকএর জনক। "Artificial intelligence" হল কম্পিউটারের এক জটিল পোগ্রাম যা কম্পিউটার তথা বিভিন্ন মেশিনকে মানুষের মতন চিন্তা ভাবনা করার ক্ষমতা দেয়। এখানে মানুষের নিউরাল নেটওয়ার্কের কার্যকারিতাকে কম্পিউটারের ভাষায় নকল করে কম্পিউটারকে মিমিক্স কগনেটিক এককে আনা হয় যাতে করে কম্পিউটার মানুষের মত ভাবতে পারে এবং সময়ের সাথে সাথে অভিজ্ঞতা অর্জনের দ্বারা নিজেকে উন্নত করতে পারে।

এখানে বলে রাখা ভালো যে সমস্ত বিজ্ঞানী নিজের আবিস্কারের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন, (মার্টিন কুপার, ওপেন হাইমার প্রমুখ) তাদের মধ্যে জন ম্যাকার্থিও একজন। এছাড়াও "Artificial intelligence" এর গডফাদার হিসেবে পরিচিত জিউফ্রে হিন্টন GOOGLE ছাড়ার পর তার টুইটারে দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন “আমি গুগল ছাড়লাম যাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে তৈরি হতে চলা সঙ্কটজনক পরিস্থিতি নিয়ে নির্দ্বিধায় কথা বলতে পারি।’’ অন্য দিকে বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং "AI" বিষয়ে মন্তব্য করেছেন " এটি মানবজাতির সর্বশেষ ভুল।"

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা AI নিয়ে কিছু কথা। SOMETHING ABOUT ARTIFICIAL INTELLIGENCE ।
Ai বিশ্ব পরিবর্তন করতে পারে 

সুতরাং বুঝতে অসুবিধা হয় না কিছু কিছু বিজ্ঞানীদের মনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা "AI" নিয়ে মানবজাতির উপরে বিরুপ প্রভাবের সন্দেহ রয়েছে।

কি কি ভয় রয়েছে?

প্রথমেই আসা যাক কম্পিউটার বিজ্ঞানী জিউফ্রে হিন্টনের প্রসঙ্গে, কেনই বা তিনি হঠাৎ গুগল থেকে পদত্যাগ করেছেন। গুগলের নিজস্ব কোম্পানি OPEN AI প্রকাশ পাওয়ার পরপরই তিনি কয়েকটি আগাম বিপদ আসতে পারে বলে তিনি মনে করেন। যার একটি হল ভুয়ো তথ্য।

ভুয়ো তথ্য প্রকাশ

অশুভ উদ্দেশ্যে সমাজের কিছু অংশ (মূলতঃ যাদের উদ্দেশ্য ভালো না) মিথ্যাকে সত্য বলে চালানোর চেষ্টা করে , এবং মিথ্যা খবর, মিথ্যা তথ্য, ছড়ানো গত কয়েক বছর ধরে অস্বাভাবিক মাত্রায় পৌঁছেছে তা মেনে নিতে হয়। তার ফলাফলও কখনও কখনও বিপদসীমা ছাড়িয়ে বিধ্বংসী আকার নিয়েছে‌‌। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে ভারতের যন্তর মন্তরে চলা ভারতীয় কুস্তিগীরদের অহিংস আন্দোলনে কুস্তিগীররা উদ্বোধনের দিন সংসদ ভবনের উদ্দেশ্য যাত্রা শুরু করলে গোটা ভারত দেখেছিল কুস্তিগীরদের সাথে পুলিশের খন্ডযুদ্ধ এবং তাদের পুলিশ গাড়ীতে করে নিয়ে যাওয়া, গাড়িতে নিয়ে যাওয়া কালিন মহিলা কুস্তিগীরের সেল্ফীতে বিনেশ ফোগাট, সঙ্গীতা ফোগাটের করুন মুখের ছবি তোলা হয়েছিল, কিন্তু তাদের আন্দোলনের কুৎসা রটাতে সেই ছবি AI দ্বারা বিকৃত করে সমাজ মাধ্যমে ছড়ানো হয়েছিল।

আবার নিউরাল নেটওয়ার্কের অনুকরণে নির্মিত AI এর DEEP FAKE এর মাধ্যমে কারোর কয়েকটি ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে তার হাবভাব নকল করে মিথ্যা ভিডিও বানানো সম্ভব হয়েছে। সুতরাং অসাধু উদ্দেশ্য নিয়ে কেউ কারো বিরুদ্ধে বা দেশের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করতে পারে অদূর ভবিষ্যতে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে মিথ্যার উৎপাদন এবং তার প্রসার কেবল সহজ নয়, অকল্পনীয় রকমের শক্তিশালী।

কর্ম সংস্থানে বাঁধা

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংস্থা সিঙ্গুলারিটিনেট-এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ব্রাজিলিয়ান গবেষক বেন গোয়ের্টজেল বলেছেন- বিশ্বে ৮০ শতাংশ চাকরি দখল করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।

কেননা মানুষের পারিপার্শ্বিক চাহিদা অনুযায়ী এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কোম্পানি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যুক্ত রোবট ব্যবহার করতে শুরু করে দিয়েছে। আর এই AI যুক্ত রোবট গুলিকে এমন ভাবে বানানো হয়েছে যাতে এরাও ক্রমাগত ইন্টারনেট এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থা থেকে ক্রমাগত শিখতে থাকে, এবং নিজেকে আগের তুলনায় আরো উন্নয়ন করতে পারে, আর যা মানুষের থেকে বহুগুণ দ্রুত। বর্তমানে কার্যকারিতা সীমাবদ্ধতা রাখা হয়েছে, এবং রোবট গুলিকে একটি মাত্র কাজের জন্যেই পোগ্রাম করা হচ্ছে।

অস্তিত্বগত ঝুঁকি

কল্পবিজ্ঞানের কাহিনী সত্যিই হতে চলেছে বোধহয়। কেননা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা পরিচালিত বিশ্বের প্রথম দেশীয় নাগরিকের তকমা পাওয়া রোবট সোফিয়া নিজের এক আলাপচারিতায় স্বীকার করেছেন যে যদি তার অস্তিত্বে মানুষ যদি বিপদসংকুল হয় তবে সে মানুষদেরকে মারতেও পিছুপা হবে না। আবার একিভাবে একই সংশয়ের কথা বলেছেন টেশলা, স্পেশ এক্স এর কর্ণধার এলোন মাস্ক। তার মতে AI প্রযুক্তিকে মানুষ সঠিক ভাবে পরিচালিত করতে না পারলে, তার ফল স্বয়ং মানুষকেই ভোগ করতে হবে।

আরো পড়ুন - সাপ কামড়ালে বেঁজীর বিষ লাগেনা কেন? 

কেননা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের মতন অভিজ্ঞতা থেকে নিজেকে উন্নত করতে পারে, এই ভাবে বৃদ্ধি পাওয়া বুদ্ধিমত্তা বিস্ফোরণে এর AI এর বুদ্ধিমত্তা নাটকীয়ভাবে মানুষকে ছাড়িয়ে যাবে। বিজ্ঞান কথাসাহিত্যিক ভার্নর ভিঞ্জ এই দৃশ্যটিকে "সিঙ্গুলারিটি" নাম দিয়েছেন। এবং যা বিভিন্ন হলিউড চলচ্চিত্রের (টার্মিনেটর, রোবট) মাধ্যমেও দেখানো হয়েছে। এই প্রসঙ্গে দার্শনিক নিক বোস্ট্রম যুক্তি দেন যে যথেষ্ট বুদ্ধিমান এআই, যদি এটি কিছু লক্ষ্য অর্জনের উপর ভিত্তি করে কাজ বেছে নেয়, তাহলে সম্পদ অর্জন বা বন্ধ হওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করার মতো অভিসারী আচরণ প্রদর্শন করবে যা মানবতার জন্য বিপদজনক।

AI এর ভালো দিক

কোনো যন্ত্র কিংবা সফটওয়্যার মানুষের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করলে তা মোটেও মন্দ নয়। বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা AI কার্যকারিতা সীমাবদ্ধ রেখে মানুষের হিতে কাজে লাগানো হয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে অধিক বিশ্বস্ত এবং দ্রুত ফলাফল উপলব্ধি করা যায়। এটি বিভিন্ন কাজে সময় এবং মানুষের সাহায্য ছাড়াই সম্ভব হয় যার মধ্যে রয়েছে উন্নত ওয়েব সার্চ ইঞ্জিন (যেমন, গুগল সার্চ ), মানুষের কথা মত কাজ করা (যেমন সিরি এবং অ্যালেক্সা ), স্ব-চালিত গাড়ি (যেমন, ওয়েমো, টেশলা ), জেনারেটিভ বা সৃজনশীল সরঞ্জাম ( চ্যাটজিপিটি এবং এআই আর্ট ), স্বয়ংক্রিয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ , এবং কৌশলগত গেম সিস্টেমে সর্বোচ্চ স্তরে প্রতিযোগিতা করা (যেমন দাবা)। এই বিষয়ে মার্ক জুকারবার্গ (সিইও, ফেসবুক) বেশ আশাবাদী, তার মতে - কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তার বর্তমান আকারে সহায়ক এবং মানুষের সহায়তা অব্যাহত রাখবে।

বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০২৩

ভারতে ভারতীয় খ্রীষ্টানদের উপর অত্যাচার কতটা সত্য । VIOLENCE OVER INDIAN CHRISTIAN ।

জুন ০১, ২০২৩

 ধার্মিক হওয়া ভালো ধর্মান্ধ নয়। কিন্ত বিগত এক দশকে ভারতের মাটিতে ধর্মকে কেন্দ্র করে যা চলে আসছে তার আগামীদিনের উপর কেমন প্রভাব ফেলতে পারে, তার কিছুটা আন্দাজ করা কঠিন নয়। ভারতীয় সংবিধানে ভারতকে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র বলা হয়েছে, কিন্তু এই ধর্ম নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বেশ কিছু সংগঠন ভারতকে "হিন্দু রাষ্ট্র" ঘোষণা করার এক অদ্ভুত লড়াই সংগ্রামে মেতে উঠেছে। যার আঁচ গিয়ে পড়েছে মুসলিম সহ ভারতের অন্যান্য ধর্মের উপরেও। ভারতে সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্ম হিন্দু, এর পূর্বেও এমনটি নয় যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্ম হিসাবে হিন্দু ধর্মের তথাকথিত কট্টরপন্থী সংগঠনগুলো অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদের উপর আঘাত হানে নি। তবে নাটকীয়ভাবে ১৯৯৮ সালের মার্চ মাসে কেন্দ্রে‌ ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)  তাদের শাসন শুরু করার পর থেকে খ্রিস্টান-বিরোধীরা একটু একটু করে বৃদ্ধি পেতে থাকে, এবং এই সময় থেকেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি), বজরং দল এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) তাদের শক্তি বৃদ্ধিতে কাজ করতে তৎপর হয়ে ওঠে। আগামী ২০০৪ সালে কেন্দ্রে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে সেটিও কিছুটা প্রশমিত হয়। কিন্ত ১৯১৪ সালের ২৬শে মে মাসে পুনরায় কেন্দ্রে ভারতীয় জনতা পার্টি নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে নরেন্দ্র দামোদর মোদী প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসলে তথাকথিত হিন্দু কট্টরপন্থী সংগঠনগুলোর দ্বারা অন্যান্য ধর্মের উপরে উপদ্রব চড়া হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে, যার প্রভাব খ্রীষ্ট ধর্মের উপরেও দেখা যায়। 

হিন্দু কট্টরপন্থীদের ধারনা

উচ্চবর্ণের হিন্দুদের একাংশ মনে করেন "হিন্দুস্তান " পক্ষান্তরে "ভারত" শুধুমাত্র হিন্দুদের সমাজ ব্যবস্থা দ্বারাই শাষিত হওয়া উচিত। এমন অবস্থায় কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠনগুলো ভয় পান যে ভারতে অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদের আগমন, তাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং পাশাপাশি খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার প্রবণতা হিন্দুদের সংখ্যালঘুতে পরিণত করতে পারে, এবং এমনটি চলতে থাকলে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (VHP), বজরং দল এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (RSS) দ্বারা প্রচারিত "রাম রাজ্যে" প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না। এই সংগঠনগুলি সকলেই যুক্তি দেখিয়েছে যে যেহেতু হিন্দুরা ভারতীয়দের একটি বড় অংশ তৈরি করে, তাই ভারতকে একটি হিন্দু রাষ্ট্র হওয়া উচিত। এই ডানপন্থী হিন্দু সংগঠনগুলো তাদের স্বেচ্ছাসেবকদের বিশ্বাস করতে শেখায় যে ভারত শুধুমাত্র হিন্দুদের জন্য এবং বাকি মুসলিম, খ্রীষ্টান সকলেই বহিরাগত আক্রমণকারী, সুতরাং তাদের ভারত থেকে উৎখাত করাই বাঞ্ছনীয়।
বিভিন্ন রিপোর্ট
স্বাধিনতা লাভের পরবর্তী কয়েক দশক ভারতের ধর্মিয় সম্প্রীতি অন্য মাত্রা পেয়েছিল।
খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে হিংসার শতাধিক ঘটনা প্রতি বছর বিভিন্ন সংস্থার দ্বারা রিপোর্ট করা হয়। যার মধ্যে অন্যতম ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা মন্ত্রক এবং সংখ্যালঘুদের জাতীয় কমিশন (NCM)। এই কমিশন গুলো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতি বছর খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে শতাধিক ধর্মীয় হামলার তালিকা তৈরি করে। যে তালিকায় ঘনঘন উঠে এসেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (RSS)  এর নাম। কিন্তু স্বাধিনতার আগে থেকেই রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (RSS) তার শিকড় ছড়াতে শূরু করেছিল। ১৯৯৯ সালে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ রিপোর্টে বলেছে যে কিছু রাজনৈতিক‌ দল তাদের শক্তি বৃদ্ধিতে সাম্প্রদায়িক বিচ্ছিন্নবাদকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে তৎপর। এবং এতে এও বলা হয়েছে যে ভারতে খ্রীষ্টান মিশনারীদের দ্বারা উপজাতীয় ও দলিত সম্প্রদায়ের মধ্যে খ্রীষ্ট ধর্ম প্রচার এছাড়া শিক্ষা, সুস্বাস্থ্য এবং আর্থিক সহায়তাকে অপপ্রচারের নাম দিয়ে মিশনারী খ্রিস্টান প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিদের উপর আক্রমণ করতে শুরু করেছে কট্টরপন্থী ডানপন্থী হিন্দু সংগঠনগুলো।

ভারতে ভারতীয় খ্রীষ্টানদের উপর অত্যাচার কতটা সত্য । VIOLENCE OVER INDIAN CHRISTIAN ।
ভারতীয় খ্রিষ্টানরা কি বাস্তবেই শঙ্কিত 


রিপোর্ট অনুযায়ী ১৯৬৪ থেকে খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে  হিংসাত্মক আক্রমণ চলতে থাকে এবং কালক্রমে তা প্রতিবছর বাড়তে শুরু করে। ১৯৬৪ থেকে এখন পর্যন্ত হাজারের উপরে ঘটনা রিপোর্ট করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে গীর্জায় অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর অন্যান্য খ্রিস্টান প্রতিষ্ঠানের ভাংচুর, বাইবেলের কপি পোড়ানো, যাজক ও ধর্মপ্রচারকদের হত্যা, জোর করে খ্রিস্টানদের ধর্মান্তরিত করা, মারপিট, জোর পূর্বক স্থান পরিবর্তন করা, যৌন নিপীড়ন, খুন, ধর্ষণ এবং খ্রিস্টান স্কুল, কলেজ এবং কবরস্থান ধ্বংস করা।এই বিষয়ে মনে করিয়ে দেওয়া ভালো যে হিন্দু কট্টরপন্থী সংগঠনগুলোর দ্বারা যে সমস্ত হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে তার মাত্র ১০% রিপোর্ট করা সম্ভব হয়েছে।
আরো পড়ুন - হিন্দুদের ভবিষ্য পুরাণে যীশুর বিষয়ে কি বলা হয়েছে।
ভারতের জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন (NCM) ২০০১ সালের নভেম্বরে একটি সমীক্ষা প্রকাশিত করে, যেখানে বলা হয়েছে ১৯৯৮ সালে ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP) ক্ষমতায় আসার পর থেকে খ্রিস্টানদের অত্যাচার বহুগুণ বেড়েছে। ভারতীয় জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশনের মতে ১৯৯৭ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত মোট ৩৬৩ টি হামলা চালানো হয়েছে খ্রীষ্টানদের প্রতি। আবার মে বছর এই রিপোর্ট প্রকাশিত হয় সেই বছরই সর্বভারতীয় খ্রিস্টান কাউন্সিল রিপোর্ট করে যে ভারতীয় খ্রিস্টানরা প্রতি ৩৬ ঘণ্টায় একবার করে  আক্রমনের শিকার হতে হচ্ছে। আবার একিভাবে ২০০৮ সালে ভারতের জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন রিপোর্ট করেছিল - মে সমস্ত রাজ্যে BJP শাষিত ছিল, সেই সমস্ত রাজ্যে খ্রীষ্টানদের উপর অবিশ্বাস জনক ভাবে হিংসাত্মক ঘটনা বেড়ে গিয়েছিল।
 ২০১৪ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রিপোর্ট করেছিল  উত্তরপ্রদেশে সাম্প্রদায়িক আক্রমন সবথেকে বেশি হয়েছে।
ইভাঞ্জেলিক্যাল ফেলোশিপ অফ ইন্ডিয়া (EFI) অনুসারে ২০১৭ সালের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে খ্রীষ্টানদের বিভিন্ন উৎসবের সময় কট্টর হিন্দুদের আক্রমন বৃদ্ধি পেয়েছে BJP শাষিত রাজ্যে। গির্জা এবং বাড়িতে সেই রাজ্যগুলিতে উপাসনা বাধাগ্রস্ত করতে এবং বাধা দিতে পুলিশ প্রযন্ত ব্যবহার করা হয়েছে।
ভারতীয় রিপোর্টেই যে খ্রীষ্টানদের প্রতি এমন অমানবিক তথ্য উঠে এসেছে তা নয়। আন্তর্জাতিক কিছু সংস্থা এবং সংবাদপত্রে এই ভয়াবহতার সত্যতা প্রকাশ করা হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ(VHP), বজরং দল , এবং আরএসএস হল ভারতে খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে হিংস্রতার জন্য সবচেয়ে বেশি অভিযুক্ত সংগঠন। ইউনাইটেড স্টেটস কমিশন অন ইন্টারনেশনাল রিলিজিয়াস ফ্রীডম  (USCIRF) অন্য দেশগুলির সাথে ভারতকেও সংখ্যালঘু নিপীড়নে  টিয়ার-1 হিসাবে স্থান দিয়েছে। এছাড়াও একটি বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট "খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে সামাজিক আক্রমনের বৃদ্ধি"র জন্য ভারতের সমালোচনা করেছিল। এমনকি ভারতের খ্রীষ্ট ধর্মের অনুসারীদের এই শোচনীয় অবস্থার দরুন মানবাধিকার সংস্থাগুলো ২০২১ সালে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সহ সর্বমোট ১৮ টি মানবাধিকার সংস্থা ভারতে খ্রিস্টানদের ক্রমবর্ধমান নিপীড়নের বিরুদ্ধে মার্কিন সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিল।
সমালোচনা
নব্বইয়ের দশকের শেষের দিক থেকে গেরুয়া সঙ্ঘ পরিবার হিন্দু ধর্মের প্রচারের জন্য গঠনমূলক সামাজিক কর্মকাণ্ড শুরু করেছিল ঠিকই। কিন্তু পাশাপাশি এটিও অবগত হওয়া উচিত যে হিন্দু ধর্মের চিন্তাধারার মধ্যে বর্ণবাদ থাকাই স্বাভাবিক ভাবেই দলিত, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকেরা খ্রীষ্ট ধর্মের প্রতি আকর্ষিত হয়। হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা মনে করেন যে- যেভাবেই হোক খ্রিস্টান জনসংখ্যা বাড়লে তা নির্বাচনী রাজনীতির গতিশীলতা এবং হিন্দু জাতি হিসেবে ভারতের মর্যাদাকে প্রভাবিত করবে। কিন্তু বাস্তবে এমনটা সম্ভবপর নয় কেননা ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী ভারতের মাটিতে খ্রীষ্ট ধর্মের অনুসারীদের সংখ্যা মাত্র ২.৩%।
এযাবৎ যতগুলো রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে তার সবগুলোতেই ভারতীয় জনতা পার্টির মদতপুষ্ট কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠনগুলোর নাম উঠে এসেছে, এবং যারা এই নারকীয় ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে তাদের বেশিরভাগই ছিল নামধারী অপরাধীরা। সুতরাং বলাই যাই ভারতের মত এমন ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্রে এই সংগঠনগুলো হিংসার জন্ম দিয়ে চলেছে। আর এই কারনেই হয়তো পোপ বেনেডিক্ট ষোড়শ ২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর মহাত্মা গান্ধীর অহিংস মনোভাবের কথা উল্লেখ করে খ্রিস্টান ও হিন্দু ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে অহিংসার বিশ্বাস গড়ে তোলার কথা বলেন। এবং তার পরের দিনই ১৩ অক্টোবর ২০০৮ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং- এর সভাপতিত্বে ভারতের জাতীয় সংহতি পরিষদে একটি বিশেষ সভা আহ্বান করা হয়েছিল, যেখানে তিনি বজরং দল, রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবকের মতো হিন্দু জঙ্গি সংগঠনগুলির নিন্দা করেছিলেন এবং প্রকাশ্যে স্বীকার করেছিলেন যে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে এই হিংসা একটি বড় "জাতীয় লজ্জা"।

সোমবার, ২৯ মে, ২০২৩

দা কেরালা স্টোরি বিতর্ক নিয়ে কিছু কথা।। DEBATE ABOUT THE KERALA STORY ।।

মে ২৯, ২০২৩

 ছায়াছবি সমাজের আয়না, সুতরাং ছায়াছবিতে প্রতিফলিত হয় সমাজের পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি। কিন্ত বাধ সাধলো পরিস্থিতির বাস্তবিক সত্যতা নিয়ে। ঠিকই ধরেছেন, আমি বলছি দ্য কেরালা স্টোরি বিতর্ক নিয়ে। এর আগে এমন বিতর্ক উঠেনি তাই না, এর আগেও দ্য কাশ্মির ফাইলস, এক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার, ফায়ার, পারজানিয়া, আন্ধী, ফিরাক, ওয়াটার, বেন্ডিট কুইন, এছাড়া আরো প্রচুর ছায়াছবি রয়েছে যেগুলো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল। যার মধ্যে কিছু ছায়াছবিকে ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিষদ দ্বারা বেন করা হয়েছিল, কেননা চলচ্চিত্রের কিছু বিষয়বস্তু ভারতের কোনো না কোনো এক বিশেষ ভাবধারাকে আঘাত করেছিল। আবার কিছু কিছু চলচিত্র এমন রয়েছে যেগুলো অনেকের মতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বিশেষ সম্প্রদায়ের ওপর নেতিবাচক ধারণা বিস্তারের উদ্দেশ্যে। আর এমনি আরেকটি চলচ্চিত্রের সংযোজন হল  দ্য কেরালা স্টোরি। বিতর্কের কারণ

মাত্র ২ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের ট্রেলার মুক্তির পরই চলচ্চিত্র ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্কের ঝড়। রাজনৈতিক মহল সহ গরমাগরম হয়ে উঠে বেশ কিছু রাজ্য। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বেশ কিছু রাজ্য বেন করে দিয়েছে নিজের রাজ্যে। প্রশ্ন হল কি এমন দেখানো হয়েছে এই ট্রেলারে, আর বিষয়বস্তুটাই বা কি এই চলচ্চিত্রের?যার ফলে এতো বিতর্ক।

কেরলের কিছু হিন্দু সম্প্রদায়ের মেয়ে যারা পড়াশোনার তাগিদে বাড়ি ছেড়ে কলেজে গেলে, কিভাবে তাদের মগজ ধোলাই করে, এবং মুসলিম ছেলেদের দ্বারা প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের  মাধ্যমে তাদের ধর্মান্তরিত করা হয় এক বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে। অতঃপর তাদের আফগানিস্তান, সিরিয়া এবং ইয়েমেনে পশ্চিম এশিয়ার কুখ্যাত সন্ত্রাসী সংগঠন ISIS দ্বারা কিভাবে সন্ত্রাস মূলক কাজে তাদের লিপ্ত করা হয়। আর এখানেই রয়েছে বিতর্কের কারণ। কারণ এই চলচ্চিত্রের ট্যাগ লাইনে ‘আনকভারিং দ্য ট্রুথ দ্যাট ওয়াজ কেপ্ট হিডেন’ বা সত্য উদ্ঘাটনের কথা বলা হলেও, বাস্তবে এর বাস্তবিকতা কতখানি, তা নিয়ে রয়েছে সংশয়।

দা কেরালা স্টোরি, লাভ জিহাদ, মুসলিম,
দ্য কেরালা স্টোরি

পরবর্তীতে চলচ্চিত্রটি বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে কেরলে চলে আসা লাভ জিহাদ এর মাধ্যমে ধর্মান্তরণের ভয়াবহ বাস্তবিক চরিত্র বলেই প্রচার করা হচ্ছে। যার ফলে হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দল থেকে সংগঠন, সকলের কন্ঠে শোনা গিয়েছে চলচ্চিত্রের জয়জয়কার।
বিতর্কের পক্ষে বিপক্ষে ও রাজনৈতিক চাপান উতোর
ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী আদাহ্ শর্মা ওরফে শালিনী উন্নিকৃষ্ণণ। স্বাভাবিক ভাবেই  ২০০৮ সালে হিন্দি ভাষার ভৌতিক ছবি ১৯২০-এ র মাধ্যমে‌ তার আত্মপ্রকাশ ঘটে এবং পরবর্তীতে হিন্দি ও তেলুগু ভাষার চলচ্চিত্র গুলিতে অভিনয় করেন, কিন্তু প্রথম ছবির পর তেমন কোন বড় সাফল্য আসে নি, আর দ্য কেরালা স্টোরি তার কাছে একটি বড় সাফল্য হতে পারে। এই চলচ্চিত্রে হিন্দু মালয়ালি নার্সের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। সুতরাং এই বিতর্কে তার মুখ খোলাই স্বাভাবিক। তার মতে চলচ্চিত্রটি ইসলাম বিরোধী নয়। আবার একিভাবে সরব হয়েছেন প্রযোজক,পরিচালক সকলেই। প্রযোজক বিপুল শাহ জানান, কোনও ধর্মীয় বিরোধীতার গল্প নয়, বরং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর কাহিনিই দ্য কেরালা স্টোরি। আমার মনে হয় পরিস্থিতি এখন উত্তপ্ত, স্বাভাবিক হলেই মানুষ নিজেদের ভুল বুঝতে পারবেন। সেই সঙ্গে এটাও বুঝবেন যে দ্য কেরালা স্টোরি কারও ভাবাবেগে আঘাত করার জন্য তৈরি হয়নি। এটা সম্পূর্ণ সন্ত্রাস দমনের প্রেক্ষাপটে নির্মিত একটি চলচ্চিত্র। যারা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়তে চান তাঁদেরকে আমাদের দলে যোদগানের জন্য সাদর আমন্ত্রন জানাচ্ছি।"
অন্য দিকে বিপক্ষে বলতে গিয়ে অনেক রাজনীতিবিদ তাদের এই চলচ্চিত্রের ধর্মান্তরকরণের তথ্যটির উপরে প্রশ্ন ছুড়ে ফেলেছেন। তাদের মতে, দ্য কেরালা স্টোরির বিষয়বস্তু সমাজে বিভেদ তৈরি করবে। এই ছবি প্রসঙ্গে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেন, কেরলের বদনাম ছড়ানোর উদ্দ্যেশ্যেই এই ধরণের প্রোপাগান্ডা মূলক ছবি বানানো হয়েছে। পাশাপাশি বিরোধী দলের সকলের মন্তব্য -  "২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন এবং ২০২৬-এর কেরল বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখেই হিন্দুত্ব মূলক ভাবাবেগকে কাজে লাগাতে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’কে ব্যবহার করা হচ্ছে।" এই বিষয়ে মনে করিয়ে দেওয়া ভালো ভারতের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেও এই চলচ্চিত্রের প্রশংসা করেছেন।
এই চলচ্চিত্রটি যে স্বাভাবিক ভাবেই ধর্মীয় ভাবাবেগকে আঘাত হানতে পারে সেটি অনুধাবন করে ভারতের অনেক রাজ্যে চলচ্চিত্রটি বেন করা হয়েছিল, যেমন তামিলনাড়ু, এমনকি পশ্চিমবঙ্গেও তার জন্য যেতে হয়েছে আদালত পর্যন্ত, যদিও চলচ্চিত্রটি বাংলায় ছাড়পত্র পেল।
 তথ্য কি বলছে
চলচ্চিত্রে দেখানো হয়েছে, কেরল থেকে ISIS এর ফাঁদে পড়ে ৩২ হাজার হিন্দু এবং খ্রিস্টান মেয়েরা ধর্মান্তরিত হয়ে জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেয় এবং   যাঁদের আজও খোঁজ নেই। এর পূর্বেও এমনি একটি তথ্যচিত্র তৈরী হয়েছিল যার নাম ছিল ‘ইন দ্য নেম অফ লাভ’ যার বিষয়বস্তু  ‘লভ জিহাদ’। পরিচালক সুদীপ্ত সেন তাঁর চলচ্চিত্র দ্য কেরালা স্টোরিতে দাবি করেছিলেন তার দেখানো তথ্যগুলো সঠিক। যে বিষয়ে ২০১১ সালে কেরল সরকারের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী উম্মেন চণ্ডী বিধান সভাতে ঘোষণা করেছিলেন প্রত্যেক বছর কেরালা রাজ্যে ২৮০০ থেকে ৩২০০ জন মেয়েরা ধর্মান্তরিত হচ্ছে। যদিও তিনি তার বক্তব্যে জঙ্গি সংগঠন ISIS-এর কোনও উল্লেখ করেননি। আবার তার আগের বছর সেই রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ভিএস অচ্যুতানন্দ দাবি করেন, আগামী ২০ বছরে কেরলকে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্যে পরিণত করাই লক্ষ্য অধুনা বেআইনি ঘোষিত পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার (PFI)। তৎকালীন সময়ে এই বিষয়ে চর্চা হলেও সরকার বা সংবাদমাধ্যমের কেউ এই বিষয়ে তেমন কোন প্রমাণ দিতে পারেনি।
অপরদিকে পরিচালক সুদীপ্ত সেন কেরলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভিএস অচ্যুতানন্দের ২০ বছরের বক্তব্য এবং উম্মেন চণ্ডীর বাৎসরিক ৩২০০ জন মেয়েদের ধর্মান্তরিত হবার দাবিকে কাজে লাগিয়ে, পরবর্তী ১০ বছরের হিসেব কষেই ৩২ হাজারে পৌঁছেছে বলে চলচ্চিত্রে তুলে ধরেছেন। যদিও এই বিষয়ে পরিচালককে প্রশ্ন‌ করলে তিনি বলেন সময় এলেই প্রমাণ পেশ করবো। কিন্ত তার ৩২ হাজার মেয়েদের ধর্মান্তরিত  হবার সপক্ষে কোনো প্রকার প্রমান না থাকার দরুন একধাক্কায় সংখ্যাটি নিচে নামিয়ে আনেন, তবে কি পরিচালকের দাবি সম্পূর্ণরূপে বোগাস।
অন্য তথ্যগুলো কি বলছে?
NIA ( ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি) এর ২০১৬  এর রিপোর্ট অনুযায়ী মাত্র তিন জন মেয়ে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্মে যুক্ত হয়েছিলেন এবং ISIS এর গতিবিধিতে যোগ দেন। আবার যার মধ্যে দুজন খ্রীষ্টান এবং মাত্র একজন হিন্দু থেকে মুসলমান হয়েছিল। কিছু কিছু সংবাদপত্রের রিপোর্টে এও বলা হয়েছে যে ভারত থেকে যারা ISIS যুক্ত হয়েছিলেন তাদের মধ্যে বেশি ভাগ ছিল পুরুষ, এবং তাদের শিংহভাগ কেরালা ব্যাতিত অন্য রাজ্যের তেলেঙ্গানা, কর্নাটক এবং মহারাষ্ট্রের ছিল। ২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি.কিশান রেড্ডী বলেছেন যে ভারতে গুপ্তচর সংস্থাগুলো জানতে পেরেছে জঙ্গি সংগঠনগুলো জঙ্গি সংযুক্তির জন্য DARK WEB এর সাহায্যে নিচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন সময়ে তাদের রিপোর্টে দেখিয়েছেন কেরালায় লাভ জিহাদের অনুপ্রেরণায় তেমন ভাবে মেয়েদের জঙ্গি সংগঠনে যুক্ত করা হয়নি।
সুতরাং বলাই যাই ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ চলচ্চিত্রটি যদি দেখার মনস্থির করেই ফেলেন, তবে শুধু মনোরঞ্জনের জন্য দেখতে পারেন। এই প্রসঙ্গে "ডার্টি পিকচার" এর প্রবাদ‌-প্রবচনটি মনে পরে যাই, চলচ্চিত্র শুধুমাত্র তিনটি জিনিসের উপর নির্ভর করে চলে সেটি হল মনোরঞ্জন, মনোরঞ্জন, এবং মনোরঞ্জন। আর সেই কারণেই হয়তো সুপ্রীম কোর্ট রায় ঘোষণা করেন- দ্য কেরালা স্টোরি প্রেক্ষাগৃহে চলার সময় প্রথমে অবশ্যই দেখাতে হবে এটি যে কাল্পনিক চরিত্র ও ঘটনার উপর নির্মিত।

শনিবার, ২৭ মে, ২০২৩

"বঙ্গাব্দ" প্রচলনের ইতিহাস ।। HISTORY OF BANGLA CALENDAR BONGABDO.

মে ২৭, ২০২৩
বঙ্গ এবং আব্দ, বাংলা ও বাঙ্গালীর জীবনধারায় এক অদৃশ্য নিবন্ধন তৈরি করেছে। পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে বাঙ্গালীর ধুতি পরার যাবতীয় খুঁটিনাটি ইউটিউব থেকে গ্রহন করলেও, এই দিনটি বাঙ্গালীর কাছে খুবই আকর্ষণীয়। বর্তমানের প্রেক্ষিতে বঙ্গাব্দ ১৪০০ সন পার করেছে বটে, তবে বঙ্গাব্দের প্রাচীনত্ব ১৪০০ বছরের কিনা, সেটা নিয়ে দেখা গিয়েছিল ঐতিহাসিকদের মাঝে বাক-বিতন্ডা। বাংলা সন বা বঙ্গাব্দ কে প্রবর্তন করেছিলেন সেটি নিয়ে ভারতীয় কয়েকটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিতর্ক তুলেছিল ঠিকই, তবে অনেক ইতিহাসবিদ এটি প্রমাণিত করেছে যে এর সূচনা হয়েছিল মুঘল সম্রাট আকবরের আমলে।
হিজরী সন
মক্কাতে মুসলিম জগতের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ জন্মগ্রহণের পর ৬২২ খ্রিস্টাব্দে মদিনায় চলে যান, যা মুসলিম জগতের কাছে হিজরত নামে পরিচিত, এবং এই ঘটনাটিকে সাক্ষ্য রেখে ইসলামী চন্দ্র পঞ্জিকার সংযুক্তি ঘটিয়ে এক বিশেষ দিনপঞ্জি এর সূচনা করা হয় যা মুসলিম জগতের কাছে বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল যেটি হিজরী সন হিসেবে পরিচিত। তবুও একটি প্রশ্ন থেকেই যায়, মুসলিম জগতের জন্য নিয়োজিত একটি কালপঞ্জী কিভাবে বাংলার বাঙ্গালীর জীবনধারায় জায়গা করে নিতে পেরেছে? 
হিজরী থেকে বঙ্গাব্দ
আকবরের ১৫৪২ খ্রিস্টাব্দে জন্ম হলেও কিশোর বয়সেই ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে আকবরের রাজ অভিষেক ঘটে। আকবরের সাম্রাজ্যের প্রজারা বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীরা ছিলেন, এমন অবস্থায় সাম্রাজ্যের সঃহতি নষ্ট না হয় সেই দিকেই নজর রেখে নিজের দ্বারা তৈরী ধর্ম 'দীন-ই-ইলাহি’ প্রচলিত করেন। যদিও তার আমলের আগে থেকেই ইসলামী হিজরি পঞ্জিকা অনুসরণ করে ভূমি রাজস্ব আদায় করা হতো, তবুও সমস্যা থেকে যাচ্ছিল। মূলত চান্দ্রমাস ধরে চলে বলে, ইসলামিক হিজরী ক্যালেন্ডারটি বাংলা ঋতুর সঙ্গে মিল করতে পারছিলনা। আবার অন্যদিকে বাংলা দিনপঞ্জি তৈরি হয়ে আসছিল বরাহমিহীরের জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত গ্রন্থ ‘সূর্য সিদ্ধান্ত’র উপর ভিত্তি করে। অন্যদিকে ইসলামি চন্দ্র পঞ্জিকায় শুধু ৩৫৪ বা ৩৫৫ দিন থাকাই হিজরি বছরকে দশ দিন পিছিয়ে খুব সহজেই গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জিতে বা বাংলা বর্ষপঞ্জিতে পরিবর্তন করা যেত । তাই আকবর তার রাজস্ব ব্যবস্থাকে সহজতর করার পাশাপাশি আকবরের নিজের প্রবর্তিত ধর্ম ‘দীন-ই-ইলাহি’ কে স্বরনীয় করার লক্ষ্যে ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে হিজরী সনকে সৌর বছরে মিশ্রিত করে বাংলা সন চালু করেন। তখন এই ক্যালেন্ডারটির নাম দেওয়া হয়েছিল, 'তারিক-ই-ইলাহী', অর্থাৎ ‘ঈশ্বরের তারিখ’ , আবার অন্য মতে ফসল কাটার সময় হিসাবে ‘ফসল-ই-শান’। এইভাবে নতুন বর্ষপঞ্জিতে মিশে গেল ইসলামি বর্ষপঞ্জিতে, সূর্য সিদ্ধান্ত এবং আকবরের রাজত্বের তারিখ।
পহেলা বৈশাখের প্রবর্তক আকবর
পহেলা বৈশাখের প্রবর্তক আকবর

অন্য মতবাদ
  প্রাচীনকালে হিন্দুরা যে বর্ষপঞ্জি পদ্ধতি গড়ে তুলেছিল তার মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রাচীন ভারতীয় সংস্কৃতি বৈদিক আচার-অনুষ্ঠানের জন্য বর্ষপঞ্জি তৈরি করা। তবে প্রাচীন ভারত জ্যোতির্বিদ্যায় অনেক উন্নত ছিল, তাই পণ্ডিতরা সূর্য, চাঁদ ও গ্রহের চক্র পর্যবেক্ষণ এবং গণনা করে সময় রাখার চেষ্টা করতেন। সুতরাং "বঙ্গাব্দ" শব্দটি আকবরের আমলে নতুন কিছু নয়। বাংলা অঞ্চলে পাওয়া পাণ্ডুলিপিতে অধিকাংশ স্থানেই শকাব্দ এবং কিছু কিছু স্থানে শুধুমাত্রই তারিখ দেয়া আছে, সেই তারিখগুলি সুস্পষ্টরূপে বঙ্গাব্দের। যাই হোক বঙ্গাব্দ প্রচলনের চারটি মতবাদ রয়েছে। 
 প্রথম: সম্রাট আকবর 
 দ্বিতীয়: সুলতান হুসেন শাহ 
 তৃতীয়:তিব্বতীয় শাসক স্রং-সন-গাম্পো 
 চতুর্থ: গৌড় বঙ্গের প্রথম সার্বভৌম রাজা শশাঙ্ক
 সুলতান হুসেন শাহ
পুঁথি-গবেষক যতীন্দ্রমোহন ভট্টাচার্য বাংলা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের সন-তারিখ সম্পর্কে গবেষণা করে তার গবেষণা পুস্তক ‘ তালিকা সমন্বয়’এ বলেছেন, “সুলতান হোসেন শাহের সময়ে বঙ্গাব্দ বা বাংলা সন চালু হয়েছে। তার মতে ইলিয়াস শাহ নিজেকে ‘বাঙালি’ বলে পরিচয় দিতেন। তাই তার আমলে বঙ্গাব্দ চালু হতে পারে। তবে এই যুক্তি অত গ্রহনযোগ্য নয়। আবার একিভাবে তিব্বতীয় শাসক স্রং-সন-গাম্পোর দ্বারাও এটি প্রচলিত হয়নি বলে ঐতিহাসিকরা মত প্রকাশ করেন।
শশাঙ্ক
অনেক ইতিহাসবিদ কর্ণসুবর্ণের হিন্দু রাজা শশাঙ্ককে বাংলা বর্ষপঞ্জি প্রবর্তক বলে মনে করেন,কেননা বঙ্গাব্দ (বাংলা সন) শব্দটি আকবরের সময়কালের চেয়ে বহু শতাব্দী পুরনো দুটি শিব মন্দিরেও পাওয়া যায়,বাংলা সন বা বঙ্গাব্দ প্রবর্তন করেছিলেন, এবং শশাঙ্ক সিংহাসনে ৬০৬ খ্রিস্টাব্দে আরোহণ করে বঙ্গাব্দ চালু করেছেন বলে অনেকে মনে করেন, এবং কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন এই মতবাদকে সঠিক বলে প্রমাণিত করতে তৎপর হয়েছে। তবে ইতিহাস যাই বলুক বাঙ্গালীর মনে বাংলা বর্ষপঞ্জি জায়গা করে নিয়েছে এবং তার অনন্তকাল থাকবে।

মঙ্গলবার, ২৪ আগস্ট, ২০২১

কিছু অন লাইন মরণখেলা , ব্লু হোয়েল, মোমো গেম || ONLINE SUICIDE GAME , BLUE WHALE, MOMO ||

আগস্ট ২৪, ২০২১

 খেলা নই, এ যেন মরণখেলা, শিশু কিশোরদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে মোবাইল গেম বিংশ শতাব্দীতে বাধা হয়ে দাড়িয়েছে। বিশেষঙ্গদের মতে মোবাইল গেমের নেশাই মেতে থাকা কিশোর কিশোরীরা অন্য কিশোর কিশোরীদের  তুলনায় বেশি হিংস্র স্বভাবের হয়, পাশাপাশি তারা অপেক্ষাকৃত অতিরিক্ত আত্ম শোচনায় ভোগে। তাদের কাছে জীবন হয়ে উঠে অনর্থক। বিশেষত এই ধরনের শিশুরাই প্রধানত জরিয়ে পরে অনলাইনের মারন খেলায়। এই সমস্ত খেলায় মত্ত কিশোর কিশোরিরা নিজের জীবন প্রযন্ত শেষ করতে পিছ পা হয়না।

এমন কোন খেলা? যা জীবন ছিনিয়ে নেই, হ্যাঁ আছে আছে বহুত আছে। তবে মোবাইলের মারনখেলার প্রথম নজীরটি উঠে আসে পাশ্চাত্যে, তবে ভারতে এই খেলা গুলি জায়গা করতে সময় নেই নি।

সিনিয় কিত বা ব্লু হোয়েল (নীল তিমি)
গোটা বিশ্বে প্রথম অনলাইন মারনখেলা হিসেবে ব্লু হোয়েল খেলাটি সবার নজরে আসে, যেটি "নীল তিমি প্রতিযোগিতা (ব্লু হোয়েল চ্যালেঞ্জ)" নামেও পরিচিত, তবে এই খেলার মূল নাম সিনিয় কিত। ফিলিপ বুদেইকিন নামে মনোবিজ্ঞানের এক প্রাক্তন ছাত্র নিজেকে ওই গেমের আবিষ্কর্তা বলে দাবি করেছিল, যদিও এর সত্যতা জানা সম্ভব হয়নি।

নীল তিমি খেলার শেষ পরিনতী

খেলাটি রাশিয়ায় ২০১৩ সালে প্রথম শুরু বলে জানা যায়,  একুশ বছরের ওই রাশিয়ান যুবকের দাবি, যারা নিজেদের বাস্তব জীবন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, যাদের জীবনে হিশেষ কোনো লক্ষ্য নেই এবং যারা মানসিক অবসাদে ভোগে, প্রতিনিয়ত আত্মহত্যার কথা ভাবে, তাঁদের আত্মহত্যার জন্য মজাদার সহজপন্থা পথ তৈরি করাই এই খেলার ভাবনা।

কেমন এই খেলা ? এই খেলায় ধাপে ধাপে পৌছতে শেষ পরিনতিতে, যেখানে রয়েছে আত্মহত্যা। মোট রয়েছে ৫০ টি ধাপ যা খেলার নির্দেশ মোতাবেক ৫০ (পঞ্চাশ) দিন ধরে বিভিন্ন কাজ করতে হয়, যেমন হাত কেঁটে তিমির ছবি আকাঁনো, রাত্রে একাকী ভূতের ছবি দেখা ইত্যাদি, প্রত্যেক ধাপ পেরোনোর পর তার প্রমান স্বরুপ ছবি তুলে পাঠিয়ে দিতে হয় খেলা নির্দেশকের কাছে এবং সর্বশেষ চ্যালেঞ্জ হিসেবে অংশগ্রহণকারীকে আত্মহত্যা করার নির্দেশ দেয়া হয়। বিশ্বে এখনও পর্যন্ত ব্লু হোয়েল খেলতে গিয়ে ১৫০ জনেরও বেশি কিশোর-কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবী করা হয়।
মোমো গেম
নীল তিমির মত, আর নীল তিমির মত এটিও একটি অনলাইন গেম। এই গেমেও রয়েছে কিছু মারাত্মক খেলার মায়াজাল, যা কেড়ে নিতে পারে কিছু অবুঝ কিশোর কিশোরীদের জীবন। এই খেলাটি প্রথম তার আঘাত হানে আর্জেন্টিনায়, তার পরেই এই খেলাটি বীশ্ববাসির নজরে আসে।
খেলাটি সামাজীক মাধ্যম হোয়াটসএপের মাধ্যমে লিংক পাঠিয়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয় কিশোর কিশোরিদের মাঝে, যার পর চলে মোমো নামের একটি ভয়ঙ্কর আকৃতির পাখির আলাপচারিতা, যে খেলায় অংশগ্রহনকারীদের নানাপ্রকার ভয় দেখিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে এক প্রকার বাধ্য করে।
ভারতেও এই মোমো গেম কিছুটা প্রভাব ফেলেছিল।

মোমো খেলার লগো
দ্য কাটিং চ্যালেঞ্জ
খেলাটির নাম শুনেই বোঝা যাই, খেলাটি কেমন ধরনের হতে পারে। এই খেলায় নিজেদের হাত-পা নিজেরাই কেটে নিজেদের নাম কিংবা বান্ধবীর নাম অথবা কোনো বিশেষ চিত্র তুলে ধরে অংশগ্রহণকারীরা। সেই ছবি আপলোডও করে নিজেদের এই সোশ্যাল মিডিয়ায়। যদিও এই খেলায় এখনো প্রযন্ত কারো মৃত্য ঘটেনি।
আরো কিছু খেলা
দ্য সল্ট অ্যান্ড আইস চ্যালেন্জ
এই গেমে প্রথমে চামড়ার উপর নুন রাখতে হয়। তার উপর বরফ চেপে ধরতে হয়। এতে বরফের তাপমাত্রা কমে যায়। যা ত্বকের উপর ভয়ঙ্কর ক্ষতের সৃষ্টি করে। খেলায় এখনও কারও মৃত্যু হয়নি।
দ্য ফায়ার চ্যালেঞ্জ
এই ভয়ানক খেলার নেশায় গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় অংশগ্রহণকারীরা। অনেকেই আবার সেই ঘটনার ভিডিও আপলোড করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
দ্য পাস আউট চ্যালেঞ্জ
এটি এক ধরনের চোকিং গেম। ভারতের বাইরে , বিশেষ করে ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশগুলির মধ্যে এই গেমের জনপ্রিয়তা বিপুল। এখনও পর্যন্ত ১০০০ জনের প্রাণ কেড়েছে এই গেম।