FINDING HISTORY BY ME লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
FINDING HISTORY BY ME লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
শনিবার, ১৪ মার্চ, ২০২০
দক্ষিন দিনাজপুর গঙ্গারামপুরের দর্শনীয় ঐতিহাসিক স্থান সমূহ ।। DAKSHIN DINAJPUR GANGAMPUR HISTORICAL TOURIST PLACES .
মার্চ ১৪, ২০২০
সবে ভোর হয়েছে , পাখির ডাকে ঘুম ভাঙ্গার সাথে সাথে তৈরি হবার পালা। গৌন্তব্য দক্ষিন দিনাজপুর জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর গঙ্গারামপুর। শোনা কথার কীংব্যদন্তি আজ স্বচোখে দেখার পালা। দক্ষিন দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর নাকি ইতিহাসের দিক দিয়ে খুবই রত্নাকর। পৌরানিক বানরাজ থেকে বখতিয়ার খিলজী ভারতীয় ইতিহাসের সব অধ্যায়ের প্রমান রয়েছে নাকি এখানে। ইতিহাসের পাতাই গঙ্গারামপুরের নাম ছিল দেবীকুট পুন্ডবর্ধন, কোটিপুর ,শোণিতপুর , কোটিবর্ষ, কোটিপুর, দেবীকোটা , দমদমা ইত্যাদি ইত্যাদি। বৃহৎকথা কোষ অনুযায়ী গঙ্গারামপুর একসময় ব্রাহ্মনদের দ্বারা সু সজ্জিত মন্দিরের নগর ছিল। তাহলে চলুন আপনাদের গঙ্গারামপুরের সেই সমস্ত স্থান ঘুরিয়ে নিয়ে আসা যাক ।
পঞ্চরথ মন্দির
গঙ্গারামপুর শিববাড়ী রাস্তা ধরে সেখান থেকে বড়জোড় তিন কিমি দুরে হবে হামজাপুর স্টপেজ , সেই স্টপেজ থেকে মাহুর কিসমত গ্রামের দিকে ধাবিত হলে পথের ডানদিকে পেয়ে যাবেন এই অতিব প্রাচিন পঞ্চরথ মন্দিরটি। দেখলে অনুমান করা যায় প্রাচিনতার দিক দিয়ে হয়তো দ্বাদশ শতকের হতে পারে। মন্দিরে আপাতত কোন বিগ্রহের পূজা হয় না তবে এই মন্দিরটিকে কেন্দ্র করে একটি বিষ্ণু মেলার আয়োজন হয়ে থাকে প্রতি বছর ।
মন্দিরের প্রবেশ দ্বারেই রয়েছে অপূৰ্ব টেরাকোটা সম্মেলিত রামায়ন ও মহাভারতের কিছু দৃশ্য। যেটি সময়ের অন্তরালে ক্ষয়ে গেছে। রথের ন্যায় এই মন্দিরের ছিল পাঁচটি চূড়া , কিন্তু তার দুটি এখন নেই বললেই চলে।
বীরুপাক্ষ বানেশ্বর মন্দির
পঞ্চরথ মন্দির দেখা হলে সেখান থেকে ফিরে আসার পথে শিববাড়ী প্রবেশের সাথেই ডান হাতে পরবে আরেকটি প্রচিন মন্দির যার নাম বীরুপাক্ষ মন্দির । মন্দিরের প্রাচিনতা নিয়ে জানার চেষ্টা করলে জানা যাই এটি বিষ্ণু পুরাণে উল্লেখিত দ্বাপড় যুগে বানরাজার দ্বারা তৈরী।
মন্দিরের বাইরে রয়েছে প্রাচীন কালের নঙ্গীর একটি পাথরের মূর্তি এবং মন্দিরের ভেতরে রয়েছে স্বয়ং শিবের লিঙ্গে রুপান্তরিত হওয়া লিঙ্গটি ও সদ্য উদ্ধার করা দশাবতারের পস্তর খন্ড।
মিউজিয়াম
শিববাড়ীর শিব দর্শনের পর শিববাড়ীর মাঝেই রয়েছে একটি ছোট স্থানীয় মিউজিয়াম। যেখানে রয়েছে গঙ্গারামপুরে বিভিন্ন সময় আবিষ্কৃত হওয়া কিছু প্রাচিন মূৰ্তি। যা জনসাধারনদের দেখার জন্য সর্বদা খোলা থাকে।
গঙ্গারামপুর শিববাড়ী রাস্তা ধরে সেখান থেকে বড়জোড় তিন কিমি দুরে হবে হামজাপুর স্টপেজ , সেই স্টপেজ থেকে মাহুর কিসমত গ্রামের দিকে ধাবিত হলে পথের ডানদিকে পেয়ে যাবেন এই অতিব প্রাচিন পঞ্চরথ মন্দিরটি। দেখলে অনুমান করা যায় প্রাচিনতার দিক দিয়ে হয়তো দ্বাদশ শতকের হতে পারে। মন্দিরে আপাতত কোন বিগ্রহের পূজা হয় না তবে এই মন্দিরটিকে কেন্দ্র করে একটি বিষ্ণু মেলার আয়োজন হয়ে থাকে প্রতি বছর ।
পঞ্চরথ মন্দির গঙ্গারামপুর |
বীরুপাক্ষ বানেশ্বর মন্দির
পঞ্চরথ মন্দির দেখা হলে সেখান থেকে ফিরে আসার পথে শিববাড়ী প্রবেশের সাথেই ডান হাতে পরবে আরেকটি প্রচিন মন্দির যার নাম বীরুপাক্ষ মন্দির । মন্দিরের প্রাচিনতা নিয়ে জানার চেষ্টা করলে জানা যাই এটি বিষ্ণু পুরাণে উল্লেখিত দ্বাপড় যুগে বানরাজার দ্বারা তৈরী।
মন্দিরের বাইরে রয়েছে প্রাচীন কালের নঙ্গীর একটি পাথরের মূর্তি এবং মন্দিরের ভেতরে রয়েছে স্বয়ং শিবের লিঙ্গে রুপান্তরিত হওয়া লিঙ্গটি ও সদ্য উদ্ধার করা দশাবতারের পস্তর খন্ড।
মন্দিরের রাখা পঞ্চপান্ডবের মূর্তি |
শিববাড়ীর শিব দর্শনের পর শিববাড়ীর মাঝেই রয়েছে একটি ছোট স্থানীয় মিউজিয়াম। যেখানে রয়েছে গঙ্গারামপুরে বিভিন্ন সময় আবিষ্কৃত হওয়া কিছু প্রাচিন মূৰ্তি। যা জনসাধারনদের দেখার জন্য সর্বদা খোলা থাকে।
ঊষাতিটী
এবার শিববাডী হাট দিয়ে পুনর্ভবা নদি পার করলে পরবে দেবীপুর নামের একটি গ্রাম ,যে নামটি এসেছে প্রচীন নাম দেবীকোট থেকে। যেই গ্রামে রয়েছে একটি বড় আকারের মাটির ঢিঁবি যেটির স্থানিয় নাম ঊষাতিটী।
এখানে দেখার মত কিছু না থাকলেও ,জানানোর কর্তব্য রয়েছে। কথিত আছে যে এখানে বানরাজার ভয়ে শ্রীকৃষ্ণের নাতি অনিরুদ্ধ ও তার পত্নি ঊষা গান্ধর্ব বিবাহের পর এই স্থানেই অত্মগোপন করেছিল।
ঊষারানির স্তম্ভ
শিববাড়ীর শিব লিঙ্গ থেকে শুরু করে যাবতীয় দর্শনের পর খুব কাছেই রয়েছে মিশনপাড়া যেখানে রয়েছে বিশেষ পাথরের চারটি স্তম্ভ। এই চারটি পাথরের স্তম্ভকে মহাভারতের একটি ঘটনার সাথে যুক্ত করে দেখা হয়। কথিত আছে যে এটি হল কৃষ্ণ ঠাকুরের নাতি অনিরুদ্ধের বিয়ের ছাদনা তলা , আর এই চারটি পাথরের স্তম্ভ সেই ছাদনা তলার কলাগাছ যা পরবর্তি কালে পাথরে পরিনত হয়েছে।
ঊষারানির কলাগাছ গুলোকে নিয়ে একটি বিশ্বাস প্রচলিত আছে স্থানিয়দের কাছে । তাদের মতে যে বা যারা এই পাথরের স্তম্ভের চারটি জরিয়ে ধরতে পারে তার মনবাঞ্চা পূৰ্ন হয়।
জীবন ও মরনদায়ী পুকুর
স্তম্ভ গুলিকে জরিয়ে ধরার প্রবল ইচ্ছা পূৰ্ণ হলে বেরিয়ে বামদিকের রাস্তাই ঢালাই রাস্তা দিয়ে ৫০ মিটার পথ গেলেই বাঁ দিকে একটি ছোট অথচ গভির পুকুর দেখতে পাওয়া যায় যেটি পরিচীত জীবনদায়ী পুকুর বা জীয়নকুন্ড বলে। প্রচলিত ধারনা মতে বানরাজার আমলে এই পুকুরের মৃত মানুষকে বাঁচিয়ে তোলার বিশেষ ক্ষমতা ছিল।
আবার একি ভাবে পশ্চিমের ঢালাই রাস্তাই গেলে হাতের বাঁ দিকে আরেকটি গভির পুকুর দেখা যাবে যেটি আবার পরিচীত মরনদায়ি পুকুর বা মরনকুন্ড বলে। জীয়নকুন্ডর মতনি এই পুকুরেরো ছিল মৃত্যদান করার বিশেষ ক্ষমতা। রাজা বান অপরাধিদের মৃত্যদন্ড দেবার জন্যই এই পুকুরটি ব্যবহার করতেন বলে কথিত রয়েছে।
বানগড়
পুকুর দেখা সমাপ্ত হলেই পায়ে হেটেই চলে যেতে পারেন দক্ষিন দিনাজপুরের সবথেকে পরিচিত ঐতিহাসিক প্রাঙ্গনে। প্রাঙ্গন ঠিক বলা না গেলেও বিশাল এলাকা জুড়েই রয়েছে জলদ্বারা বেষ্টিত বানগড়। জলদ্বারা বেষ্টিত এই জলাভূমি একসময় পরিখা হিসাবে রাজার দূৰ্গকে বাইরের চটজলদি আক্রমন থেকে রক্ষা করতো।
বানগডের পশ্চিম প্রান্তে রয়েছে বড় একটা এলাকা জুড়ে প্রাচীন কালের ধ্বংসাবশেষ। যেটিকে স্থানীয় মানুষ বানরাজার প্রাসাদের অবশেষ হিসাবে মনে করে থাকেন। বানগড়ের মধ্যভাগে রয়েছে বানগডের উঁচু অংশটি , যেখানে বিগত দশকে খনন কার্যে উঠে আসা ধ্বংস্বাবশেষ রয়েছে। বানগড়ের দক্ষিন প্রান্তের সীমানা ঘেঁষে রয়ে প্রচিন কালের ইটের তৈরি বড় বড় দেওয়ালের ভগ্নাংশ এবং গোলাকার সজ্জিত দেওয়াল। সকলে এটিকে সেই সময়ের ব্যবহিত প্রতিরক্ষা চূড়ার ধ্বংস্বাবশেষ মনে করে থাকেন।
কালদিঘী ও ধলদিঘী
বানগড় দেখা হলে রওয়ানা দিন কালদিঘী ও ধলদিঘীর দিকে যেটি গঙ্গারামপুরের অন্য আকর্ষন গুলোর মধ্য একটি। কথিত আছে যে বানরাজার দুই কন্যা ঊষা যে অপূৰ্ব সুন্দরি ও গৌর বর্ণের অধিকারিনী ছিলেন তিনি ধলদিঘীতে স্নানের জন্য আসতেন এবং তার সাথে বানরাজের দ্বিতীয় কন্যা যে অপেক্ষাকৃত কালো বর্ণের ছিলেন তিনি কালদিঘীতে স্নানের জন্য আসতেন।
ধলদিঘীর পারেই রয়েছে একটি গুহামুখ কথিত আছে এই পথেই নাকি আসতেন ঊষারানি স্নান করতে , অন্যদিকে কালদিঘীতে উড়ে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে পরযায়ী পাখির দল।
আতাশাহের সমাধি
ধলদিঘীর যে প্রান্তে ঊষারানির স্নানের ঘাটটি রয়েছে সেই ঘাটের পাশেই রয়েছে একটি প্রাচীন দরগা । এই দরগাটিতে বিখ্যাত সুফি সন্ত মৌলানা আতাউদ্দিন শাহের মৃতদেহ কবরস্থ করা হয়েছে। যার কবরগাত্রে মোট চারটি প্রস্তরফলক দেখা যায়। মধ্যযুগে মুসলিম শাষন প্রতিষ্ঠা হলে সুফি সন্ত মৌলানা আতা উদ্দিন শাহ সুধিবাদ প্রচারে দিনাজপুরে পা রাখেন।
এই সুফি সন্ত আতাশাহ ছিলেন সেই সময়ের সুফি বাদের প্রচারকদের মধ্যে অন্যতম।
হাইস্কুল পাড়ার শিব মন্দির
আতাশাহের দরগা দেখার পর সেই রাস্তা ধরে পশ্চিমরাস্তা ধরে এক কিমি দুরে রয়েছে গঙ্গারামপুর উচ্চ বিদ্যালয় , সেই বিদ্যালয়ের সামনে ঘুপছি একটি গলিতে রয়েছে প্রাচীন আরেকটি ছোট শিব মন্দির। যেটি সংরক্ষন করা হয়েছে নতুন করে তাই এই মন্দিরের প্রাচীনতার যে ছাপ সেটি আর দেখা যায় না।
বখতিয়ার খিলজীর সমাধি
গঙ্গারামপুরের অভ্যন্তরে সবকিছু দেখা হয়ে গেলে , পুনর্ভবা নদির ওপারে কালিতলা হয়ে যেতে পারেন পীরপাল নামের গ্রামের উদ্দেশ্যে । এই পিরপাল গ্রামে রয়েছে ভারতের ইতিহাস বিখ্যাত তুর্কি বীর ইখতাইর উদ্দিন মহম্মদ বখতিয়ার খলজির সমাধি। যেটি স্থানীয়দের কাছে বুড়া পীড়ের দরগা নামে পরিচীত।
এই বিখ্যাত যোদ্ধা নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ,বহু বৌদ্ধমঠ ও মন্দির ধংস্ব করেন। তার কারনেই বাংলার বুকে মুসলিম রাজত্ব প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল, এবং গঙ্গারামপুরে রাজধানি হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেছিল। (এই পীরপাল গ্রামের অনেকেই বিছানাই ঘুমোন না ,কারন বখতিয়ার খলজির দেহ মাটিতে পোঁতা রয়েছে । তাই বখতিয়ার খলজির প্রতি সম্মান জানিয়ে গ্রামের অনেকেই বিছানাই নিদ্রা নেন না।)
সম্রাট অশোকের বৌদ্ধমঠ
বখতিয়ার খলজির কবর দেখে বেরিয়ে এসে রাস্তার বাঁ পাশে ঘন আগাছার আচ্ছাদনে ঢাকা প্রাচীন কালের ইটের ইমারতের ধ্বংস্বাবশেষ দেখতে পাওয়া যায়। যেটি পরিচীত বারোদুয়ারি ধ্বংস্বেবশেষ হিসাবে। বারোদুয়ারি নামে পরিচীত হলেও এটির প্রচিনত্ব নাকি বহু প্রচীন। অনেকের মতে এই ইমারতটি সম্রাট অশোকের আমলে তৈরি হওয়া একটি বৌদ্ধ মঠ। যেটি বখতিয়ার খিলজীর আমলে ধ্বংস্ব করে দেওয়া হয়।
এবার শিববাডী হাট দিয়ে পুনর্ভবা নদি পার করলে পরবে দেবীপুর নামের একটি গ্রাম ,যে নামটি এসেছে প্রচীন নাম দেবীকোট থেকে। যেই গ্রামে রয়েছে একটি বড় আকারের মাটির ঢিঁবি যেটির স্থানিয় নাম ঊষাতিটী।
এখানে দেখার মত কিছু না থাকলেও ,জানানোর কর্তব্য রয়েছে। কথিত আছে যে এখানে বানরাজার ভয়ে শ্রীকৃষ্ণের নাতি অনিরুদ্ধ ও তার পত্নি ঊষা গান্ধর্ব বিবাহের পর এই স্থানেই অত্মগোপন করেছিল।
ঊষারানির স্তম্ভ
শিববাড়ীর শিব লিঙ্গ থেকে শুরু করে যাবতীয় দর্শনের পর খুব কাছেই রয়েছে মিশনপাড়া যেখানে রয়েছে বিশেষ পাথরের চারটি স্তম্ভ। এই চারটি পাথরের স্তম্ভকে মহাভারতের একটি ঘটনার সাথে যুক্ত করে দেখা হয়। কথিত আছে যে এটি হল কৃষ্ণ ঠাকুরের নাতি অনিরুদ্ধের বিয়ের ছাদনা তলা , আর এই চারটি পাথরের স্তম্ভ সেই ছাদনা তলার কলাগাছ যা পরবর্তি কালে পাথরে পরিনত হয়েছে।
ঊষারানির কলাগাছ গুলোকে নিয়ে একটি বিশ্বাস প্রচলিত আছে স্থানিয়দের কাছে । তাদের মতে যে বা যারা এই পাথরের স্তম্ভের চারটি জরিয়ে ধরতে পারে তার মনবাঞ্চা পূৰ্ন হয়।
জীবন ও মরনদায়ী পুকুর
স্তম্ভ গুলিকে জরিয়ে ধরার প্রবল ইচ্ছা পূৰ্ণ হলে বেরিয়ে বামদিকের রাস্তাই ঢালাই রাস্তা দিয়ে ৫০ মিটার পথ গেলেই বাঁ দিকে একটি ছোট অথচ গভির পুকুর দেখতে পাওয়া যায় যেটি পরিচীত জীবনদায়ী পুকুর বা জীয়নকুন্ড বলে। প্রচলিত ধারনা মতে বানরাজার আমলে এই পুকুরের মৃত মানুষকে বাঁচিয়ে তোলার বিশেষ ক্ষমতা ছিল।
আবার একি ভাবে পশ্চিমের ঢালাই রাস্তাই গেলে হাতের বাঁ দিকে আরেকটি গভির পুকুর দেখা যাবে যেটি আবার পরিচীত মরনদায়ি পুকুর বা মরনকুন্ড বলে। জীয়নকুন্ডর মতনি এই পুকুরেরো ছিল মৃত্যদান করার বিশেষ ক্ষমতা। রাজা বান অপরাধিদের মৃত্যদন্ড দেবার জন্যই এই পুকুরটি ব্যবহার করতেন বলে কথিত রয়েছে।
বানগড়
পুকুর দেখা সমাপ্ত হলেই পায়ে হেটেই চলে যেতে পারেন দক্ষিন দিনাজপুরের সবথেকে পরিচিত ঐতিহাসিক প্রাঙ্গনে। প্রাঙ্গন ঠিক বলা না গেলেও বিশাল এলাকা জুড়েই রয়েছে জলদ্বারা বেষ্টিত বানগড়। জলদ্বারা বেষ্টিত এই জলাভূমি একসময় পরিখা হিসাবে রাজার দূৰ্গকে বাইরের চটজলদি আক্রমন থেকে রক্ষা করতো।
বানগড় গঙ্গারামপুর |
বানগডের পশ্চিম প্রান্তে রয়েছে বড় একটা এলাকা জুড়ে প্রাচীন কালের ধ্বংসাবশেষ। যেটিকে স্থানীয় মানুষ বানরাজার প্রাসাদের অবশেষ হিসাবে মনে করে থাকেন। বানগড়ের মধ্যভাগে রয়েছে বানগডের উঁচু অংশটি , যেখানে বিগত দশকে খনন কার্যে উঠে আসা ধ্বংস্বাবশেষ রয়েছে। বানগড়ের দক্ষিন প্রান্তের সীমানা ঘেঁষে রয়ে প্রচিন কালের ইটের তৈরি বড় বড় দেওয়ালের ভগ্নাংশ এবং গোলাকার সজ্জিত দেওয়াল। সকলে এটিকে সেই সময়ের ব্যবহিত প্রতিরক্ষা চূড়ার ধ্বংস্বাবশেষ মনে করে থাকেন।
কালদিঘী ও ধলদিঘী
বানগড় দেখা হলে রওয়ানা দিন কালদিঘী ও ধলদিঘীর দিকে যেটি গঙ্গারামপুরের অন্য আকর্ষন গুলোর মধ্য একটি। কথিত আছে যে বানরাজার দুই কন্যা ঊষা যে অপূৰ্ব সুন্দরি ও গৌর বর্ণের অধিকারিনী ছিলেন তিনি ধলদিঘীতে স্নানের জন্য আসতেন এবং তার সাথে বানরাজের দ্বিতীয় কন্যা যে অপেক্ষাকৃত কালো বর্ণের ছিলেন তিনি কালদিঘীতে স্নানের জন্য আসতেন।
ধলদিঘীর পারেই রয়েছে একটি গুহামুখ কথিত আছে এই পথেই নাকি আসতেন ঊষারানি স্নান করতে , অন্যদিকে কালদিঘীতে উড়ে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে পরযায়ী পাখির দল।
আতাশাহের সমাধি
ধলদিঘীর যে প্রান্তে ঊষারানির স্নানের ঘাটটি রয়েছে সেই ঘাটের পাশেই রয়েছে একটি প্রাচীন দরগা । এই দরগাটিতে বিখ্যাত সুফি সন্ত মৌলানা আতাউদ্দিন শাহের মৃতদেহ কবরস্থ করা হয়েছে। যার কবরগাত্রে মোট চারটি প্রস্তরফলক দেখা যায়। মধ্যযুগে মুসলিম শাষন প্রতিষ্ঠা হলে সুফি সন্ত মৌলানা আতা উদ্দিন শাহ সুধিবাদ প্রচারে দিনাজপুরে পা রাখেন।
আতাশাহের দরগা গঙ্গারামপুর |
এই সুফি সন্ত আতাশাহ ছিলেন সেই সময়ের সুফি বাদের প্রচারকদের মধ্যে অন্যতম।
হাইস্কুল পাড়ার শিব মন্দির
আতাশাহের দরগা দেখার পর সেই রাস্তা ধরে পশ্চিমরাস্তা ধরে এক কিমি দুরে রয়েছে গঙ্গারামপুর উচ্চ বিদ্যালয় , সেই বিদ্যালয়ের সামনে ঘুপছি একটি গলিতে রয়েছে প্রাচীন আরেকটি ছোট শিব মন্দির। যেটি সংরক্ষন করা হয়েছে নতুন করে তাই এই মন্দিরের প্রাচীনতার যে ছাপ সেটি আর দেখা যায় না।
গঙ্গারামপুর হাইস্কুল পাড়ার শিব মন্দির |
গঙ্গারামপুরের অভ্যন্তরে সবকিছু দেখা হয়ে গেলে , পুনর্ভবা নদির ওপারে কালিতলা হয়ে যেতে পারেন পীরপাল নামের গ্রামের উদ্দেশ্যে । এই পিরপাল গ্রামে রয়েছে ভারতের ইতিহাস বিখ্যাত তুর্কি বীর ইখতাইর উদ্দিন মহম্মদ বখতিয়ার খলজির সমাধি। যেটি স্থানীয়দের কাছে বুড়া পীড়ের দরগা নামে পরিচীত।
এই বিখ্যাত যোদ্ধা নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ,বহু বৌদ্ধমঠ ও মন্দির ধংস্ব করেন। তার কারনেই বাংলার বুকে মুসলিম রাজত্ব প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল, এবং গঙ্গারামপুরে রাজধানি হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেছিল। (এই পীরপাল গ্রামের অনেকেই বিছানাই ঘুমোন না ,কারন বখতিয়ার খলজির দেহ মাটিতে পোঁতা রয়েছে । তাই বখতিয়ার খলজির প্রতি সম্মান জানিয়ে গ্রামের অনেকেই বিছানাই নিদ্রা নেন না।)
সম্রাট অশোকের বৌদ্ধমঠ
বখতিয়ার খলজির কবর দেখে বেরিয়ে এসে রাস্তার বাঁ পাশে ঘন আগাছার আচ্ছাদনে ঢাকা প্রাচীন কালের ইটের ইমারতের ধ্বংস্বাবশেষ দেখতে পাওয়া যায়। যেটি পরিচীত বারোদুয়ারি ধ্বংস্বেবশেষ হিসাবে। বারোদুয়ারি নামে পরিচীত হলেও এটির প্রচিনত্ব নাকি বহু প্রচীন। অনেকের মতে এই ইমারতটি সম্রাট অশোকের আমলে তৈরি হওয়া একটি বৌদ্ধ মঠ। যেটি বখতিয়ার খিলজীর আমলে ধ্বংস্ব করে দেওয়া হয়।
**সুমন্ত মাহালী হেমরম**
বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
সাঁওতাল , মুন্ডা , কোল আদিবাসী বিদ্রোহ সমূহ । SAUTAL MUNDA ADIBASI BIDROHO
ফেব্রুয়ারী ২৭, ২০২০
ভারতের আদিবাসীরা আর্যদের ভারতে আসার পর থেকেই শোষন, শাষন, অস্পৃশ্যতা ,অত্যাচারের শিকার হয়ে আসছে , যা বর্তমান প্রজন্ম প্রযন্ত চলে আসছে । অনেকেই মনে করে আদিবাসীরা মূলত জঙ্গলবাসি , কিন্তু বাস্তবটা হল আদিবাসীরা জঙ্গলবাসী নয় , জঙ্গলবাসী বানানো হয়েছে । পক্ষান্তরে আদিবাসীরা ভারতের মূল নিবাসি , ভারতমাতার প্রথম সন্তান ।
দীর্ঘ কাল আদিবাসীরা জঙ্গলবাসে জঙ্গলকেই জীবনের সব চাহিদার আধার বানিয়ে ফেলেছে । যদি আরো সঠিক ভাবে বলি জঙ্গল আদিবাসীদের মা স্বরুপ , আর আদিবাসীরা জঙ্গলের সন্তান স্বরুপ । তাই যতবারি এই জঙ্গলের উপরে সরকার তার কালে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ততবারি আদিবাসীরা মাতৃস্বরুপ জঙ্গলকে বাঁচানোর জন্য অস্ত্র তুলে নিয়েছে ।
# ভারতীয় অরন্য আইন
সিপাহি বিদ্রোহের আগে ও পরে আদিবাসিরা জঙ্গলে তার অধিকার রক্ষার্তে অনেকবার বিদ্রোহ করেছে । ১৮৫৭ মহা বিদ্রোহের পর ভারতের শাষনভার সরাসরি ব্রিটিশ সরকার গ্রহন করে । কিন্তু ধিরে ধিরে ব্রিটিশ সরকার আদিবাসী অধ্যূষিত অরন্যের উপর তার অধিকার কায়েম করতে শুরু করে , এবং এক এক করে ১৮৬৫ সালে "ভারতীয় অরন্যে আইন " পাশ করে , এবং এই অরন্যে আইনকে আরো শক্ত করার লক্ষ্যে ১৮৭৮ সালে আরো একটি অরন্যে আইন পাশ করা হয় । যার জন্য আদিবাসিরা পুনরাই জঙ্গলের প্রতি তার প্রকৃত অধিকার সেটা হারাতে শুরু করে । যার জন্য আদিবাসীরা জঙ্গলের উপর তার অধিকার রক্ষার্তে বার বার বিদ্রোহ শুরু করে ADIBASI BIDROHO। আর যে সমস্ত আদিবাসী সম্প্রদায় বিদ্রোহ করেছিল সেগুলো হলো - হো ,কোল , মুন্ডা, চাকমা , গারো , সাঁওতাল যার কোন শেষ নেই ।
# হো বিদ্রোহ
সিংভূমে হো নামক আদিবাসীদের উপর জমি সংক্রান্ত অত্যাচার চললে তারা ব্রিটিশ কোম্পানির বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নেই । কিন্তু এই হো উপজাতিরা সংখ্যায় কম হওয়ার ফলে তাদের এই বিদ্রোহ খুব সহজেই দমিয়ে দেওয়া হয়েছিল , কিন্তু পরবর্তীকালে হো বিদ্রোহীরা একক বিপ্লবে না নেমে বরং কোল বিদ্রোহের সাথে নিজেদের যোগ করে ।
# কোল বিদ্রোহ
কোলরা হল ছোটনাগপুর ,রাঁচি, ও সিংভূম অঞ্চলের আদিবাসী উপজাতি । ১৮৩০ সাল নাগাদ ইংরাজরা ছোটনাগপুর ও সিংভূম দখল করতে শুরু করলে কোলরা বিদ্রোহ শুরু করে । এই সমস্ত স্থানে চড়া হারে খাজনা কোলদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয় ,যেগুলো পরিশোধ করা কোলদের পক্ষে খুব কঠিন হয়ে পরে । এছাড়াও তাদের উপর চলতো সামাজিক শাষন ও শোষন যার কোন শেষ ছিল না । তাই কোল উপজাতিরা বুদ্ধ ভগৎ , জোয়া ভগৎ, সুই মুন্ডা , ঝিনদাই মানকি এদের নেতৃত্বে কোল বিদ্রোহ শুরু করে ।
এই কোল বিদ্রোহ আরো ভয়ংকর আকার ধারন করে যখন এই কোলদের সাথে হো ,মুন্ডা , উড়াঁও এরাও মিলিত হয় ।
কোলদের বিদ্রোহ দমন করতে সরকার ক্যাপটেন উইলকিনসন কে নিযুক্ত করেন , যার দমন পিড়ন ,চড়ম হত্যালিলার ফলে এই বিদ্রোহ থেমে যাই ।
# গারো বিদ্রোহ
গারো উপজাতিরা অবিচ্ছিন্ন ভারতের ময়মনসিংহ ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকাই বসবাস করতো । ব্রিটিশ সরকারের আদিবাসী বিরোধি কার্য কলাপে গারোরা একত্রিত হতে শুরু করলে ১৮০২ সাল নাগাদ গারো নেতা ছাপাতি স্বাধীন গারো রাজ্য প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন কিন্তু সেটা ব্যর্থ হয়ে যায়। পরবর্তি কালে টিপু গারোর নেতৃত্বে ১৮২৫ সালের দিকে শেরপুরে নতুন গারো রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে ব্রিটিশ সরকারের শাষন অগ্রাহ্য করে এবং বিদ্রোহের ডাক দেই । যেগুলো পরে কোম্পানির দমন পিড়নের ফলে স্তব্ধ হয়ে যায় । গারো বিদ্রোহ ১৮০২ সাল থেকে ১৮৮২ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ছয়বার বিদ্রোহ করেছিল ।
# মুন্ডা বিদ্রোহ MUNDA BIDROHO
অরন্যের আইন সংকলনের পর ও মহাবিদ্রোহের পর মুন্ডা বিদ্রোহ ছিল প্রথম আদিবাসীদের দ্বারা সবথেকে ভয়ংকর আদিবাসী বিদ্রোহ । যেটিকে ইতিহাসের পাতায় **"মুন্ডা উলগুলান"** বলে পরিচীত যার অর্থ হল ভয়ংকর ।
মুন্ডা বীর "বিরসা মুন্ডা" এর নেতৃত্বে মুন্ডা উপজাতিগন দুটি পর্যায়ে বিদ্রোহ করেছিল । মুন্ডারা প্রধানত শান্তিপ্রিয় উপজাতি , যারা "খুন্তাকাঠি" প্রথায় চাষবাস করতো এবং যারা নিজেদের জীবনযাত্রাই বাইরের হস্তক্ষেপ ( দিকু ) পছন্দ করতো না । কিন্তু ব্রিটিশ কোম্পানি তাদের জামির উপর চড়া হারে কর ধার্য করে এবং খুন্তাকাঠি চাষবাস যোগ্য জমিতে হস্তক্ষেপ করলে মুন্ডারা বিদ্রোহ MUNDA BIDROHO করে ।
আদিবাসী বিদ্রোহ |
সিপাহি বিদ্রোহের আগে ও পরে আদিবাসিরা জঙ্গলে তার অধিকার রক্ষার্তে অনেকবার বিদ্রোহ করেছে । ১৮৫৭ মহা বিদ্রোহের পর ভারতের শাষনভার সরাসরি ব্রিটিশ সরকার গ্রহন করে । কিন্তু ধিরে ধিরে ব্রিটিশ সরকার আদিবাসী অধ্যূষিত অরন্যের উপর তার অধিকার কায়েম করতে শুরু করে , এবং এক এক করে ১৮৬৫ সালে "ভারতীয় অরন্যে আইন " পাশ করে , এবং এই অরন্যে আইনকে আরো শক্ত করার লক্ষ্যে ১৮৭৮ সালে আরো একটি অরন্যে আইন পাশ করা হয় । যার জন্য আদিবাসিরা পুনরাই জঙ্গলের প্রতি তার প্রকৃত অধিকার সেটা হারাতে শুরু করে । যার জন্য আদিবাসীরা জঙ্গলের উপর তার অধিকার রক্ষার্তে বার বার বিদ্রোহ শুরু করে ADIBASI BIDROHO। আর যে সমস্ত আদিবাসী সম্প্রদায় বিদ্রোহ করেছিল সেগুলো হলো - হো ,কোল , মুন্ডা, চাকমা , গারো , সাঁওতাল যার কোন শেষ নেই ।
# হো বিদ্রোহ
সিংভূমে হো নামক আদিবাসীদের উপর জমি সংক্রান্ত অত্যাচার চললে তারা ব্রিটিশ কোম্পানির বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নেই । কিন্তু এই হো উপজাতিরা সংখ্যায় কম হওয়ার ফলে তাদের এই বিদ্রোহ খুব সহজেই দমিয়ে দেওয়া হয়েছিল , কিন্তু পরবর্তীকালে হো বিদ্রোহীরা একক বিপ্লবে না নেমে বরং কোল বিদ্রোহের সাথে নিজেদের যোগ করে ।
# কোল বিদ্রোহ
কোলরা হল ছোটনাগপুর ,রাঁচি, ও সিংভূম অঞ্চলের আদিবাসী উপজাতি । ১৮৩০ সাল নাগাদ ইংরাজরা ছোটনাগপুর ও সিংভূম দখল করতে শুরু করলে কোলরা বিদ্রোহ শুরু করে । এই সমস্ত স্থানে চড়া হারে খাজনা কোলদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয় ,যেগুলো পরিশোধ করা কোলদের পক্ষে খুব কঠিন হয়ে পরে । এছাড়াও তাদের উপর চলতো সামাজিক শাষন ও শোষন যার কোন শেষ ছিল না । তাই কোল উপজাতিরা বুদ্ধ ভগৎ , জোয়া ভগৎ, সুই মুন্ডা , ঝিনদাই মানকি এদের নেতৃত্বে কোল বিদ্রোহ শুরু করে ।
এই কোল বিদ্রোহ আরো ভয়ংকর আকার ধারন করে যখন এই কোলদের সাথে হো ,মুন্ডা , উড়াঁও এরাও মিলিত হয় ।
কোলদের বিদ্রোহ দমন করতে সরকার ক্যাপটেন উইলকিনসন কে নিযুক্ত করেন , যার দমন পিড়ন ,চড়ম হত্যালিলার ফলে এই বিদ্রোহ থেমে যাই ।
# গারো বিদ্রোহ
গারো উপজাতিরা অবিচ্ছিন্ন ভারতের ময়মনসিংহ ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকাই বসবাস করতো । ব্রিটিশ সরকারের আদিবাসী বিরোধি কার্য কলাপে গারোরা একত্রিত হতে শুরু করলে ১৮০২ সাল নাগাদ গারো নেতা ছাপাতি স্বাধীন গারো রাজ্য প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন কিন্তু সেটা ব্যর্থ হয়ে যায়। পরবর্তি কালে টিপু গারোর নেতৃত্বে ১৮২৫ সালের দিকে শেরপুরে নতুন গারো রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে ব্রিটিশ সরকারের শাষন অগ্রাহ্য করে এবং বিদ্রোহের ডাক দেই । যেগুলো পরে কোম্পানির দমন পিড়নের ফলে স্তব্ধ হয়ে যায় । গারো বিদ্রোহ ১৮০২ সাল থেকে ১৮৮২ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ছয়বার বিদ্রোহ করেছিল ।
# মুন্ডা বিদ্রোহ MUNDA BIDROHO
অরন্যের আইন সংকলনের পর ও মহাবিদ্রোহের পর মুন্ডা বিদ্রোহ ছিল প্রথম আদিবাসীদের দ্বারা সবথেকে ভয়ংকর আদিবাসী বিদ্রোহ । যেটিকে ইতিহাসের পাতায় **"মুন্ডা উলগুলান"** বলে পরিচীত যার অর্থ হল ভয়ংকর ।
মুন্ডা বীর "বিরসা মুন্ডা" এর নেতৃত্বে মুন্ডা উপজাতিগন দুটি পর্যায়ে বিদ্রোহ করেছিল । মুন্ডারা প্রধানত শান্তিপ্রিয় উপজাতি , যারা "খুন্তাকাঠি" প্রথায় চাষবাস করতো এবং যারা নিজেদের জীবনযাত্রাই বাইরের হস্তক্ষেপ ( দিকু ) পছন্দ করতো না । কিন্তু ব্রিটিশ কোম্পানি তাদের জামির উপর চড়া হারে কর ধার্য করে এবং খুন্তাকাঠি চাষবাস যোগ্য জমিতে হস্তক্ষেপ করলে মুন্ডারা বিদ্রোহ MUNDA BIDROHO করে ।
মুন্ডা বিদ্রোহ উলগুলান |
বিরসা মুন্ডা নিজেকে মুন্ডাদের রাজা হিসাবে ঘোসনা করে বিদ্রোহের ডাক দেই ,কিন্তু তাকে গ্রেফতার করা হয় (১৮৯৫) । পরবর্তি কালে ১৮৯৭ সালে তাকে ছাড়া হলে বিরসা পুনরাই শক্তি সঞ্চয় করে আবার মুন্ডা বিদ্রোহ ঘোষনা করেন । যেই বিদ্রোহ টি চলে ১৮৯৯ থেকে ১৯০০ সাল প্রযন্ত । তার নেতৃত্বে ৬০০০ মুন্ডা উপজাতির লোকেরা অস্ত্র তুলে ধরেন । তার নেতৃত্বে রাঁচি , সিংভূমের গির্জাগুলোতে চলে হাঙ্গামা । পরবর্তি কালে পুলিশ তাদের শায়েস্তা করতে এলে মুন্ডা বিদ্রোহিরা একপ্রকার পুলিশদেরি শায়েস্তা করে ছেড়ে দেন । তাই বাধ্য হয়ে ব্রিটিশ কোম্পানি সেনাবাহিনীর সাহায্য নিয়ে এই মুন্ডা বিদ্রোহকে দমন করেন ।
# চাকমা বিদ্রোহ
চাকমা আদিবাসী উপজাতিরা অবিভক্ত বাংলাদেশের পাহাড়ীয়া এলাকার অধিবাসি । ১৭৬০ সালের নাগাদ কোম্পানির সাথে সিরাজ-উদ-দৌল্লার এক বিশেষ চুক্তির ফলে চট্টগ্রামের পাহাড়িয়া এলাকাই খাজনা সংক্রান্ত সমস্ত অধিকার ইংরাজদের হাতে চলে যায় । ইংরাজ কোম্পানি এই চাকমা অধ্যূষিত পার্বত্য এলাকাই চড়া হারে খাজনা আদায় করতে শুরু করে । যার ফলে চাকমারা বিদ্রোহ করতে বাধ্য হয় । চাকমাদের রাজা শৈর সিং ও তার সেনাপতি রামু খাঁ গারো পাহাড়ে বিদ্রোহ শুরু করে কিন্তু কোম্পানি সেটি হিংস্রতার সাথে দমন করে ফেলে ।
# সাঁওতাল বিদ্রোহ SAUTAL BIDROHO
সাঁওতালরা আদিবাসিদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি উপজাতি । যারা বিহাড়ের ভাগলপুর থেকে বীরভূম প্ৰযন্ত বিস্তৃত ছিল । ব্রিটিশ সরকারের হস্তক্ষেপ থেকে এরা দূরে সরে থাকতে "দামিন-এ-কোহ" নামের স্থান তৈরি করে সেখানে বসবাস করতে শুরু করে । ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ি বন্দোবস্ত শুরু হলে জমিদার ,মহাজন বা আদিবাসিদের ভাষায় দিকুরা তাদের জিবন-যাপনে হস্তক্ষেপ করতে শুরু করে এবং দামিন-এ-কোহ সমেত সমস্ত সাঁওতাল অধ্যূষিত এলাকাই রাজস্বের জন্য প্রচুর চাপ ও প্রয়োজনে অত্যাচার করতে শুরু করে ।যেই কাজে কোম্পানিও এইসব দিকুদের সাহায্য করতো , যে কারনে সাঁওতালরা চার ভাই সিধু ,কানু, চাঁদ ও ভৈরব এদের নেতৃত্বে ১৮৫৫ সালে বিদ্রোহ শুরু করতে বাধ্য হয় । এই সাঁওতাল বিদ্রোহ SAUTAL BIDROHO আরো ভয়ংকর আকার ধারন করে যখন অন্যান্য জাতির কৃষকেরাও এই বিদ্রোহে যোগ দেই । এই বিদ্রোহ আটকাতে প্রথম অবস্থায় পুলিশের সাহায্য নেওয়া হয় কিন্তু পুলিশ বিদ্রোহ আটকাতে গেলে কয়েকজন পুলিশের মৃত্য হয় । বাধ্য হয়ে কোম্পানি বিদ্রোহ দমনের জন্য মেজর বরোজের নেতৃত্বে সেনা পাঠাই ,কিন্তু সেটিও পরাজিত হয় ।
# চাকমা বিদ্রোহ
চাকমা আদিবাসী উপজাতিরা অবিভক্ত বাংলাদেশের পাহাড়ীয়া এলাকার অধিবাসি । ১৭৬০ সালের নাগাদ কোম্পানির সাথে সিরাজ-উদ-দৌল্লার এক বিশেষ চুক্তির ফলে চট্টগ্রামের পাহাড়িয়া এলাকাই খাজনা সংক্রান্ত সমস্ত অধিকার ইংরাজদের হাতে চলে যায় । ইংরাজ কোম্পানি এই চাকমা অধ্যূষিত পার্বত্য এলাকাই চড়া হারে খাজনা আদায় করতে শুরু করে । যার ফলে চাকমারা বিদ্রোহ করতে বাধ্য হয় । চাকমাদের রাজা শৈর সিং ও তার সেনাপতি রামু খাঁ গারো পাহাড়ে বিদ্রোহ শুরু করে কিন্তু কোম্পানি সেটি হিংস্রতার সাথে দমন করে ফেলে ।
# সাঁওতাল বিদ্রোহ SAUTAL BIDROHO
সাঁওতালরা আদিবাসিদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি উপজাতি । যারা বিহাড়ের ভাগলপুর থেকে বীরভূম প্ৰযন্ত বিস্তৃত ছিল । ব্রিটিশ সরকারের হস্তক্ষেপ থেকে এরা দূরে সরে থাকতে "দামিন-এ-কোহ" নামের স্থান তৈরি করে সেখানে বসবাস করতে শুরু করে । ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ি বন্দোবস্ত শুরু হলে জমিদার ,মহাজন বা আদিবাসিদের ভাষায় দিকুরা তাদের জিবন-যাপনে হস্তক্ষেপ করতে শুরু করে এবং দামিন-এ-কোহ সমেত সমস্ত সাঁওতাল অধ্যূষিত এলাকাই রাজস্বের জন্য প্রচুর চাপ ও প্রয়োজনে অত্যাচার করতে শুরু করে ।যেই কাজে কোম্পানিও এইসব দিকুদের সাহায্য করতো , যে কারনে সাঁওতালরা চার ভাই সিধু ,কানু, চাঁদ ও ভৈরব এদের নেতৃত্বে ১৮৫৫ সালে বিদ্রোহ শুরু করতে বাধ্য হয় । এই সাঁওতাল বিদ্রোহ SAUTAL BIDROHO আরো ভয়ংকর আকার ধারন করে যখন অন্যান্য জাতির কৃষকেরাও এই বিদ্রোহে যোগ দেই । এই বিদ্রোহ আটকাতে প্রথম অবস্থায় পুলিশের সাহায্য নেওয়া হয় কিন্তু পুলিশ বিদ্রোহ আটকাতে গেলে কয়েকজন পুলিশের মৃত্য হয় । বাধ্য হয়ে কোম্পানি বিদ্রোহ দমনের জন্য মেজর বরোজের নেতৃত্বে সেনা পাঠাই ,কিন্তু সেটিও পরাজিত হয় ।
সাঁওতাল বিদ্রোহের নেতা সিধু ও কানু |
কোম্পানির সব রকম প্রচেষ্টা ব্যর্থ হতে শুরু করলে , কোম্পানি নির্বিচারে সাঁওতাল হত্যায় মেতে উঠে । যার প্রসঙ্গে সাঁওতাল বিদ্রোহের জন্য প্রেরিত সেনাপতি জার্ভিস নিজেই বলেছেন - **" আমরা যুদ্ধ করিনি , করেছিলাম গনহত্যা ।"**। কোম্পানির চড়ম দমন নিতির ফলে ও সাঁওতালদের নেতা সিধু ও কানুর ধরা পরার পর ফাঁসি হলে এই বিদ্রোহ সমাপ্ত হয় ।
**সুমন্ত মাহালী হেমরম**
**সুমন্ত মাহালী হেমরম**
বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
মালদা পান্ডুয়ার বড় দরগাহ , লক্ষন সেন দালান , জুম্বা মসজিদ ও জালালুদ্দিন শাহ তাবরজের ইতিহাস । MALDA PANDUA BORO DORGAH HISTORY .
ফেব্রুয়ারী ২০, ২০২০
কেন যেন যেদিকেই দেখছি , শুধু ধর্ম নিয়ে ভেদাভেদি চোখে পরছে । আর এমন পরিবেশে আমার মত ছেলের পক্ষে থাকা মুশকিল । আমি যতটুকু জানি ধর্ম মানুষকে ভেদাভেদ নই বরং ভালেবাসতে শেখাই , তাই ছোট থেকেই পরধর্ম সহিস্নুতা জন্ম নিয়েছে আমার মধ্যে । যাই হোক ধর্ম নিয়ে বেশি কথা বলতে চাই না , নইলে আবার অন্ধভক্তরা আমাকে দেশদ্রোহি আর না জানি কার মুখ থেকে কি কি শুনতে হবে । আমার বিচারে এই দেশ না হিন্দুদের ,না মুশলিমদের , না বৌদ্ধদের, না খ্রীষ্টানদের ,এই দেশ তাদের যারা এই দেশকে ভালোবাসে ।
তাই আমার মত কিছু বখাটে ছেলেরা কখন মন্দির , কখন মসজিদ বা বৌদ্ধ মঠ গুলিতে ঘুড়ে বেড়াই , আর এমনটা করার পিছনে প্রধান কারন হল মানষিক শান্তি । তার সাথে আরেকটি বিষয় আমি যোগ করতে চাই , সেটি হল - সেই মন্দির বা মসজিদ যদি ঐতিহাসিক হয় তবে তো সোনায় সোহাগা ।
আর সেই তৃপ্তি পেতেই আমার এই স্থানে আসা । যে জায়গাটি রয়েছে মালদার পান্ডুয়াতে , পরিচীত নাম " বড় দরগাহ " । আর তার আদের স্টপেজে রয়েছে আদিনা মসজিদ ।
তাই আমার মত কিছু বখাটে ছেলেরা কখন মন্দির , কখন মসজিদ বা বৌদ্ধ মঠ গুলিতে ঘুড়ে বেড়াই , আর এমনটা করার পিছনে প্রধান কারন হল মানষিক শান্তি । তার সাথে আরেকটি বিষয় আমি যোগ করতে চাই , সেটি হল - সেই মন্দির বা মসজিদ যদি ঐতিহাসিক হয় তবে তো সোনায় সোহাগা ।
আর সেই তৃপ্তি পেতেই আমার এই স্থানে আসা । যে জায়গাটি রয়েছে মালদার পান্ডুয়াতে , পরিচীত নাম " বড় দরগাহ " । আর তার আদের স্টপেজে রয়েছে আদিনা মসজিদ ।
মালদা পান্ডুয়া বড় দরগাহ |
# পান্ডুয়া
বাংলাই সুলতানি শাষন শুরু হবার আগে গোটা বাংলাই ছিল হিন্দুদের রাজত্ব , কিন্তু ১২০৬ সালে বখতিয়ার খিলজী বাংলাই আক্রমনের পর সমগ্র ছবিটাই পাল্টে যাই এবং বাংলাই শুরু হয় মুসলিম রাজত্ব । ঠিক এই সময়ে ১৩৫২ - ১৪৫০ প্রযন্ত মালদার পান্ডুয়া ছিল বাংলার রাজধানি । যেটি একসময় ফিরোজাবাদ নামেও পরিচীত ছিল । যার ইতিহাস প্রথম খুঁজে বের করেন আলেকজান্ডার কানিংহাম ।
# বড় দরগাহ
এই পান্ডুয়াতেই রয়েছে মসজিদ সহ একটি দরগাহ , যেটি পরিচীত " বড় দরগাহ " নামে । মনে করা হয় এই বড় দরগাহটি লক্ষন সেন তৈরি করেন এবং বিখ্যাত মুসলিম সুফি সাধক হজরত জালালুদ্দিন শাহ তাবরেজকে উপহার স্বরুপ প্রদান করেন । কথিত আছে যে জালালুদ্দিন শাহ তাবরেজের অলৌকিক ক্ষমতা দেখে রাজা লক্ষন সেন এই জায়গাটি প্দান করেন ।
এই বড় দরগাহটিতে আপনি একটি ঐতিহাসিক জিনিস নই অনেকগুলো ঐতিহাসিক সাক্ষ্যে পাবেন , যেমন - দাখিল দরওয়াজা , লক্ষন সেনের দালান , জুম্বা মসজিদ , আরো কয়েকটি জিনিস এছাড়াও একটি অতিব পবিত্র জিনিস , যেটি সবার শেষে বলবো ।
# লক্ষন সেনের দালান
আমি যখন এই স্থানে আসি তখন এখানে নামাজ আদায়ের কাজ চলছিল । নামাজ আদায় হতেই প্রবেশ করলাম মসজিদ প্রাঙ্গনে । ঢোকার প্রথমেই হাতের বাঁদিকে লক্ষন সেনের দালান ।
বাংলাই সুলতানি শাষন শুরু হবার আগে গোটা বাংলাই ছিল হিন্দুদের রাজত্ব , কিন্তু ১২০৬ সালে বখতিয়ার খিলজী বাংলাই আক্রমনের পর সমগ্র ছবিটাই পাল্টে যাই এবং বাংলাই শুরু হয় মুসলিম রাজত্ব । ঠিক এই সময়ে ১৩৫২ - ১৪৫০ প্রযন্ত মালদার পান্ডুয়া ছিল বাংলার রাজধানি । যেটি একসময় ফিরোজাবাদ নামেও পরিচীত ছিল । যার ইতিহাস প্রথম খুঁজে বের করেন আলেকজান্ডার কানিংহাম ।
# বড় দরগাহ
এই পান্ডুয়াতেই রয়েছে মসজিদ সহ একটি দরগাহ , যেটি পরিচীত " বড় দরগাহ " নামে । মনে করা হয় এই বড় দরগাহটি লক্ষন সেন তৈরি করেন এবং বিখ্যাত মুসলিম সুফি সাধক হজরত জালালুদ্দিন শাহ তাবরেজকে উপহার স্বরুপ প্রদান করেন । কথিত আছে যে জালালুদ্দিন শাহ তাবরেজের অলৌকিক ক্ষমতা দেখে রাজা লক্ষন সেন এই জায়গাটি প্দান করেন ।
এই বড় দরগাহটিতে আপনি একটি ঐতিহাসিক জিনিস নই অনেকগুলো ঐতিহাসিক সাক্ষ্যে পাবেন , যেমন - দাখিল দরওয়াজা , লক্ষন সেনের দালান , জুম্বা মসজিদ , আরো কয়েকটি জিনিস এছাড়াও একটি অতিব পবিত্র জিনিস , যেটি সবার শেষে বলবো ।
# লক্ষন সেনের দালান
আমি যখন এই স্থানে আসি তখন এখানে নামাজ আদায়ের কাজ চলছিল । নামাজ আদায় হতেই প্রবেশ করলাম মসজিদ প্রাঙ্গনে । ঢোকার প্রথমেই হাতের বাঁদিকে লক্ষন সেনের দালান ।
লক্ষন সেন দালান |
# জালালুদ্দিন শাহ তাবরেজ
বড় দরগাহের ইতিহাস সম্পূৰ্ণ হবে না যদি জালালুদ্দিন শাহ তাবরেজ কে ছিলেন সেটা না বললে । জালালুদ্দিন শাহ তাবরেজ ছিলেন সেই সময়ের বিখ্যাত মুসলিম সাধক । যিনি ইরানের তাবরেজ নামের একটি জায়গাই জন্ম গ্রহন করেছিলেন এবং মুসলিম সাধক হিসাবে ভারতে আসলে কুতুবউদ্দিন আইবক তাকে সাদরে সম্মান করেন এবং তারকাছেই কয়েকটি বছর কাটিয়ে দেন ।
দিল্লি থেকে তিনি বাংলাই মুসলিম ধর্মের বাণী নিয়ে পরবর্তীকালে প্রবেশ করেন আর মালদা জেলার পান্ডুয়াতে আশ্রয় নেন । জালালুদ্দিন শাহ তাবরেজ একবার রাজা লক্ষন সেনের কাছে তুর্কি আক্রমনের ভবিষ্যত বাণী করে সতর্ক থাকতেও বলেছিলেন । যা পরবর্তীকালে ঘটেও ছিল । সেই সমস্ত সাল গুলো বলছিনা কারন ,সেই সময় ভারতে কয়েকজন একিই নামের ব্যাক্তির বিষয়ে জানা যায় , যার জন্য তথ্যগুলো অসম্পুর্ণ থেকে যাবে ।
# জুম্বা মসজিদ
লক্ষন সেনের দালান পার করলেই পাওয়া যায় জুম্বা মসজিদ । আর এই জুম্বা মসজিদের ডানদিকেই রয়েছে জালালুদ্দিন শাহ তাবরেজের ভান্ডার খানা ও রান্নাঘর । সবকিছু দেখার পরে ডুকলাম জুম্বা মসজিদে ।
বড় দরগাহের ইতিহাস সম্পূৰ্ণ হবে না যদি জালালুদ্দিন শাহ তাবরেজ কে ছিলেন সেটা না বললে । জালালুদ্দিন শাহ তাবরেজ ছিলেন সেই সময়ের বিখ্যাত মুসলিম সাধক । যিনি ইরানের তাবরেজ নামের একটি জায়গাই জন্ম গ্রহন করেছিলেন এবং মুসলিম সাধক হিসাবে ভারতে আসলে কুতুবউদ্দিন আইবক তাকে সাদরে সম্মান করেন এবং তারকাছেই কয়েকটি বছর কাটিয়ে দেন ।
দিল্লি থেকে তিনি বাংলাই মুসলিম ধর্মের বাণী নিয়ে পরবর্তীকালে প্রবেশ করেন আর মালদা জেলার পান্ডুয়াতে আশ্রয় নেন । জালালুদ্দিন শাহ তাবরেজ একবার রাজা লক্ষন সেনের কাছে তুর্কি আক্রমনের ভবিষ্যত বাণী করে সতর্ক থাকতেও বলেছিলেন । যা পরবর্তীকালে ঘটেও ছিল । সেই সমস্ত সাল গুলো বলছিনা কারন ,সেই সময় ভারতে কয়েকজন একিই নামের ব্যাক্তির বিষয়ে জানা যায় , যার জন্য তথ্যগুলো অসম্পুর্ণ থেকে যাবে ।
# জুম্বা মসজিদ
লক্ষন সেনের দালান পার করলেই পাওয়া যায় জুম্বা মসজিদ । আর এই জুম্বা মসজিদের ডানদিকেই রয়েছে জালালুদ্দিন শাহ তাবরেজের ভান্ডার খানা ও রান্নাঘর । সবকিছু দেখার পরে ডুকলাম জুম্বা মসজিদে ।
জুম্বা মসজিদের ভেতরে |
গোটা প্রাঙ্গনের সবথেকে পবিত্র স্থান এইটিই - কারন জুম্বা মসজিদের ভেতরেই রযেছে জালালুদ্দিন শাহ তাবরেজের সমাধিক্ষেত্রটি । আমি বাইরে থেকে যা কিছু এনেছিলাম তা এখানেই সমর্পন করি । তার পাশাপাশি জুম্বা মসজিদের ভেতরে আরেকটি পবিত্র জিনিস দেখার সুযোগ পেলাম , মসজিদের ভেতর থাকা সকলেই জানালেন এটি হল বিশ্ব নবী হজরত মহম্মদের পদচিহ্ন । সেটা দেখার সুযোগ পাওয়া আমার কাছে খুবি গর্বের বিষয় ।
**সুমন্ত মাহালী হেমরম **
**সুমন্ত মাহালী হেমরম **
রবিবার, ১২ জানুয়ারী, ২০২০
দক্ষিন দিনাজপুর ইতিহাস মদনাবতি নিলকুঠি ।। DAKSHIN DINAJPUR HISTORICAL AND TOURIST PLACE MADANABOTI NILKUTHI ।।
জানুয়ারী ১২, ২০২০
ভারতের স্বাধিনতা লাভের পূৰ্বে কৃষক বিদ্রোহে ছেয়ে গিয়েছিল প্রায় সমগ্র ভারতে । যার মূল আংশটিই ছিল বাংলার বুকে, । বাংলার কৃষক ভাইদের উপরে সেই নির্মম অত্যাচার সহ্য করেনি বাংলার কৃষকেরা । তাই এক এক করে দেখা দেই নিল বিদ্রোহ , তেভাগা আন্দোলন , আরো বহু বিদ্রোহ । যার কিছু কিছু তৎকালিন দিনাজপুর মোটেও আন্দোলনের দিক দিয়ে মোটেও পিছিয়ে ছিল না ।
# নিল চাষের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
ভারত উপমহাদেশে ইংরেজদের আগমনের বহু আগে থেকেই ভারতে নিল চাষ শুরু হয়েছিল । পরাধীন ভারতে নিল চাষ করে রপ্তানী করা যে খুব লাভজনক হতে পারে সেটি ব্রিটিশ আর ফরাসি উভয়েই বুঝতে পারেন । তাই ১৯৭৭ ফরাসি ব্যবসায়ী লুই বার্নাড বিঙ্গানসম্মত ভাবে নিলচাষের পদ্ধতি ভারতে নিয়ে আসেন ।
পরাধীন ভারতের অবিভক্ত বাংলার হুগলি নদির তীরবর্তি স্থান , মালদা, মুর্শিদাবাদ , দিনাজপুরের কিছু এলাকা , যশোর ,কালনা এছাড়া আরো বহু স্থান ছিল নিল চাষের পক্ষে উপযুক্ত । মূলত হুগলি নদির গোন্দালপারা ও তালডাঙ্গাতে লুই বার্নাডের দ্বারা আমেরিকার বিঙ্গানসম্মত উপায়ে নিল চাষ ১৭৯৯ সালে শুরু হলেও তার কয়েক বছর আগে থেকেই তৎকালিন দিনাজপুর জেলার কয়েকটি এলাকায় শুরু হয়ে গিয়েছিল নিল চাষ ।
# দক্ষিন দিনাজপুরের নিলকুঠি
বর্তমানের দক্ষিন দিনাজপুর সেই সময়ের অবিভক্ত দিনাজপুরের অংশ ছিল যার কিছু কিছু স্থান ছিল নিল চাষের পক্ষে উপযুক্ত । অষ্টাদশ শতকের দিকে ইংরাজদের প্রচেষ্টাই তৎকালিন দিনাজপুরের আর বর্তমানের দক্ষিন দিনাজপুরের মহিপাল আর মদনাবতিতে গড়ে উঠে নিল কুঠি । যার ধ্বংসাবশেষ আজও দেখতে পাওয়া যায় । তবে আজ মদনাবতির নিলকুঠির বিশয়ে আলোচনা করতে চাই ।
# মদনাবতি নিল কুঠির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
মদনাবতি দক্ষিন দিনাজপুরের বংশিহারি থানার অন্তর্গত একটি গ্রাম পন্ঞ্চায়েত এলাকা । যেখনে ১৭৬১ সালে গড়ে উঠেছিল একটি নিল কুঠি ,ইংরাজ সাহেব উডনির প্রচেষ্টায় । তার নেতৃত্বে মদনাবতি ও বর্তমান বুনিয়াদপুর আর বংশিহারি থানা এলাকার বেশ কিছু এলাকাই চলতো নিল চাষ । কিন্তু পরবর্তী কালে বিঙ্গান পদ্ধতিতে নিল চাষ শুরু হলেও , সেটি উডনি সাহেবের পক্ষে চালিয়ে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পরে ।
তাই তিনি মাত্র ৩০০ পাউন্ডের বিনিময়ে এই মদনাবতির নিলকুঠিটি ইংরাজ সাহেব উইলিয়াম কেরির কাছে বিক্রী করে দেন । তার নেতৃত্ব কিছু দিন যাবৎ নিল চাষ করা হলেও তার পক্ষেও সেটি চালিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়ে উঠে পরেছিল কঠিন বিষয় , কেননা এই স্থান থেকে নিল উৎপাদন করে বহিঃ বিশ্বে পাঠানো ছিল খরচাসাপেক্ষ , পাশাপাশি কৃষকদের নিল চাষে তেমন কোন লাভ না হওয়ার ফলে তারাও নিল চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন । তাই এই নিলকুঠিটি দাপট ধিরে ধিরে অবলুপ্ত হতে শুরু করে ।
# নিল চাষের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
ভারত উপমহাদেশে ইংরেজদের আগমনের বহু আগে থেকেই ভারতে নিল চাষ শুরু হয়েছিল । পরাধীন ভারতে নিল চাষ করে রপ্তানী করা যে খুব লাভজনক হতে পারে সেটি ব্রিটিশ আর ফরাসি উভয়েই বুঝতে পারেন । তাই ১৯৭৭ ফরাসি ব্যবসায়ী লুই বার্নাড বিঙ্গানসম্মত ভাবে নিলচাষের পদ্ধতি ভারতে নিয়ে আসেন ।
মদনাবতি নিলকুঠির ধ্বংসাবশেষ |
# দক্ষিন দিনাজপুরের নিলকুঠি
বর্তমানের দক্ষিন দিনাজপুর সেই সময়ের অবিভক্ত দিনাজপুরের অংশ ছিল যার কিছু কিছু স্থান ছিল নিল চাষের পক্ষে উপযুক্ত । অষ্টাদশ শতকের দিকে ইংরাজদের প্রচেষ্টাই তৎকালিন দিনাজপুরের আর বর্তমানের দক্ষিন দিনাজপুরের মহিপাল আর মদনাবতিতে গড়ে উঠে নিল কুঠি । যার ধ্বংসাবশেষ আজও দেখতে পাওয়া যায় । তবে আজ মদনাবতির নিলকুঠির বিশয়ে আলোচনা করতে চাই ।
মদনাবতির নিলকুঠির সামনে আমি |
মদনাবতি দক্ষিন দিনাজপুরের বংশিহারি থানার অন্তর্গত একটি গ্রাম পন্ঞ্চায়েত এলাকা । যেখনে ১৭৬১ সালে গড়ে উঠেছিল একটি নিল কুঠি ,ইংরাজ সাহেব উডনির প্রচেষ্টায় । তার নেতৃত্বে মদনাবতি ও বর্তমান বুনিয়াদপুর আর বংশিহারি থানা এলাকার বেশ কিছু এলাকাই চলতো নিল চাষ । কিন্তু পরবর্তী কালে বিঙ্গান পদ্ধতিতে নিল চাষ শুরু হলেও , সেটি উডনি সাহেবের পক্ষে চালিয়ে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পরে ।
নিলকুঠির স্মারক ও আমি |
সুমন্ত মাহালি হেমরম
রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৯
শিবপুরান এ বর্নিত ঊষাতিটি এর কাহিনী । দক্ষিন দিনাজপুর ও গঙ্গারামপুরের পৌরানিক যোগসুত্র ।
ডিসেম্বর ২৯, ২০১৯
দক্ষিন দিনাজপুর অনেকগুলো পৌরানিক আশ্চর্যে ভরে রয়েছে । আজ দক্ষিন দিনাজপুর ইতিহাসের যে অংশ নিয়ে বলছি , সেই অংশটির বিষয়ে বলা হয়েছে মূলত হিন্দুদের অন্যতম পবিত্র ধর্মগ্রন্থ " শিবপুরান " এর " রুদ্রসংহিতা" ই ।
তবে সেই বিষয়টি আলোচনা করার আগে কিছু বিষয়ের উপর আলোকপাত করা যাক -
তবে সেই বিষয়টি আলোচনা করার আগে কিছু বিষয়ের উপর আলোকপাত করা যাক -
শিব পুরান এর বীরুপাক্ষ মন্দির |
# বানগড়
"বানগড় " গঙ্গারামপুর তথা দক্ষিন দিনাজপুর জেলার অন্যতম আকর্ষন । যার বিবরণ হিন্দু পুরাণ গুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন ঐতিহাসিক পান্ডুলিপিতেও পাওয়া যায় ।ভিন্ন ভিন্ন সময়ের পার্থক্যে এই স্থানটিকে ভিন্ন ভিন্ন নামে ডাকা হয়েছে । তবে স্থানিয় লোকেদের মতে এই স্থানটি শিবপুরানে বর্ণিত বানরাজার ধ্বংসাবশেষ । তবে বানগড়ের ঢিঁবির কথা সকলে জানলেও এই শিবপুরানের সাথে জড়িত আরেকটি ঢিঁবি যে রয়েছে সেটা সকলে তেমন যানে না । সেই ঢিঁবির নাম "ঊষাতিটি" বা ঊষারানির ঢিঁবি নামে বেশ পরিচীত ।
# অন্নান্য বিষয়
এই ঊষারানির ঢিঁবির বিষয়ে বলার আগে এই ঢিঁবির অন্নান্য বিষয় সমূহ জেনে নেওয়া যাক । এই ঢিঁবিটি গঙ্গারামপুরের যে স্থানে রয়েছে সেই স্থানের নাম দেবীপুর । এই এলাকার স্থানিয় আদিবাসিরা এই ঢিঁবিটিকে "চুটিয়া বুরু" বা ইন্দুর দ্বারা তৈরি পাহাড় হিসাবে উল্লেখ্য করে থাকে । আবার অন্যদিকে স্থানিয় অধিবাসিরা এই টিলাটিকে ঊষারানির ঢিঁবি বলে থাকে ।
# ঊষারানি কে ?
ঊষারানির বিষয়ে আপনাদের নিশ্চয় জানা আছে - আর যার নিদর্শন হিসাবে রয়েছে - ধোল দিঘী , ঊষা রানির কলা গাছ , ঊষাহরন রোড ইত্যাদি ইত্যাদি । যেগুলো নিয়ে আমি এর আগে বিস্তারিত আলোচনা আগেই করেছি , তবুও আপনাদের সুবিধার্তে খুবি সংক্ষিপ্ত আকারে সেগুলো বলার চেষ্টা করছি ।
শিবপুরান মতে ঊষা ছিলেন অসুর রাজ বানের রুপবতি কন্যা । যার স্নানের জন্য ধোল দিঘি খনন করা হয়েছিল , এবং যার জন্য ঘটেছিল ভগবান শ্রীকৃষ্মের সাথে অসুর রাজ বানের যুদ্ধ ।
# শিবপুরানে সাথে ঊষাতিটির যোগসূত্ৰ
এবার সেই যুদ্ধ কেন ঘটেছিল সেটা একটু জেনে নেওয়া যাক । হিন্দু পুরান মতে "দ্বাপর " যুগে বর্তমানের বানগড় ছিল অসুররাজ বানের রাজধানি । এই বানাসুর বা বানরাজ ছিলেন শিবের চরম উপাসক । একবার শিব বানরাজের তপস্যায় মুগ্ধ হয়ে বানরাজাকে হাজার হাতের বর দেন এবং তার পাশাপাশি বানরাজা যাতে তার সাথে থাকতে পারে তার জন্য শিব নিজেকে আত্মলিংগ রুপে বিয়োজিত করে । যে লিংগ টিকে ঘিরে বানরাজা একটি মন্দিরো নির্মান করেন যেটি বীরুপাক্ষ মন্দির নামে পরিচীত ।
শিবপুরানে বর্নিত ঊষাতিটিতে আমি |
এই মন্দিরের পাশে বয়ে গেছে পুনর্ভবা নদি , এবং মন্দিরের পাশে বয়ে যাওয়া নদীর ওপারেই রয়েছে ঊষাতিটি ।
রাজা বান শিবের আত্মলিংগের বিরুপাক্ষ মন্দির নির্মান করলে বানরাজা মন্দিরের সিমানার অন্তর্গত এলাকাই কোন প্রকার রক্তক্ষরন বা কাকেও হত্যা করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন ।
কিন্তু অসুর রাজ বানের কন্যা ঊষা ছিল অপুর্ব সুন্দরি । কিন্তু যুদ্ধকালিন সহযোগিতা চাওয়ার জন্য শ্রীকৃষ্মের নাতি অনিরুদ্ধ বানরাজার দরবারে এলে বানরাজ কন্যা ঊষার সাথে প্রেমবন্ধনে আবদ্ধ হন । অনিরুদ্ধ বানরাজাকে তার সুন্দরি কন্যা ঊষাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বানরাজা সেই প্রস্তাব অগ্রাহ্য করে ।
অনিরুদ্ধ কোন প্রকার উপায় না দেখে , অনিরুদ্ধ ঊষার সাথে গান্ধর্ব বিবাহ বা পালিয়ে বিয়ে করেন । যেহেতু বানরাজা ছিলেন খুবই শক্তিশালি রাজা , তাই অনিরুদ্ধ ঊষার সাথে আত্মগোপন থাকায় প্রয়োজন মনে করেন । যেহেতু বানরাজা বিরুপাক্ষ মন্দিরের সিমানাই কোন প্রকার রক্তক্ষরন বা হত্যা করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন , তাই অনিরুদ্ধ আর ঊষা মন্দিরের সিমানার মধ্যেই আত্মগোপন করা বুদ্ধিমানের কাজ মনে করে । মনে করা হয় ঊষারানি আর অনিরুদ্ধ গান্ধর্ব বিবহের পর , এই ঊষাতিটির স্থানে আত্মগোপন করেছিল । যেটি বর্তমানে একটি টিলার আকারে দেখা যায় ।
অনিরুদ্ধ কোন প্রকার উপায় না দেখে , অনিরুদ্ধ ঊষার সাথে গান্ধর্ব বিবাহ বা পালিয়ে বিয়ে করেন । যেহেতু বানরাজা ছিলেন খুবই শক্তিশালি রাজা , তাই অনিরুদ্ধ ঊষার সাথে আত্মগোপন থাকায় প্রয়োজন মনে করেন । যেহেতু বানরাজা বিরুপাক্ষ মন্দিরের সিমানাই কোন প্রকার রক্তক্ষরন বা হত্যা করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন , তাই অনিরুদ্ধ আর ঊষা মন্দিরের সিমানার মধ্যেই আত্মগোপন করা বুদ্ধিমানের কাজ মনে করে । মনে করা হয় ঊষারানি আর অনিরুদ্ধ গান্ধর্ব বিবহের পর , এই ঊষাতিটির স্থানে আত্মগোপন করেছিল । যেটি বর্তমানে একটি টিলার আকারে দেখা যায় ।
# বাড়তি তথ্য
এবার একটু বাড়তি তথ্যের দিকে এগোনো যাক । ঊষারানি ও অনিরুদ্ধ এই স্থানে কয়েকদিন থাকার পর অনিরুদ্ধ এই ঊষাতিটি ছাড়ার প্রয়োজন মনে করে এবং সেখান থেকে পলায়ন করার চেষ্টা করে । কথিত আছে যে রাস্তা দিয়ে তারা পালানোর চেষ্টা করেছিল সেই রাস্তাটি এখন " ঊষাহরন রোড" নামে পরিচীত । কিন্তু অনিরুদ্ধের এই চেষ্টা বিফল হয় এবং বানরাজা অনিরুদ্ধকে কারাগারে নিক্ষেপ করে ।
পরবর্তিকালে ভগবান শ্রীকৃষ্ম তার নাতি অনিরুদ্ধকে রক্ষা করতে এলে বানরাজের সাথে শ্রীকৃষ্মের যুদ্ধ হয় । মনে করা হয় বানরাজার সাথে শ্রীকৃষ্মের যুদ্ধ গঙ্গারামপুরের নারায়নপুর গ্রামের বিস্তৃত এলাকাই ঘটে ছিল । যেটি এখন চাষবাসের জমিতে পরিনত হয়েছে ।
এবার একটু বাড়তি তথ্যের দিকে এগোনো যাক । ঊষারানি ও অনিরুদ্ধ এই স্থানে কয়েকদিন থাকার পর অনিরুদ্ধ এই ঊষাতিটি ছাড়ার প্রয়োজন মনে করে এবং সেখান থেকে পলায়ন করার চেষ্টা করে । কথিত আছে যে রাস্তা দিয়ে তারা পালানোর চেষ্টা করেছিল সেই রাস্তাটি এখন " ঊষাহরন রোড" নামে পরিচীত । কিন্তু অনিরুদ্ধের এই চেষ্টা বিফল হয় এবং বানরাজা অনিরুদ্ধকে কারাগারে নিক্ষেপ করে ।
পরবর্তিকালে ভগবান শ্রীকৃষ্ম তার নাতি অনিরুদ্ধকে রক্ষা করতে এলে বানরাজের সাথে শ্রীকৃষ্মের যুদ্ধ হয় । মনে করা হয় বানরাজার সাথে শ্রীকৃষ্মের যুদ্ধ গঙ্গারামপুরের নারায়নপুর গ্রামের বিস্তৃত এলাকাই ঘটে ছিল । যেটি এখন চাষবাসের জমিতে পরিনত হয়েছে ।
সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৯
বালুরঘাট ট্যাঙ্ক মোড় ও তার ইতিহাস , বালুরঘাটের ফিরে দেখা ইতিহাস ।
নভেম্বর ২৫, ২০১৯
অবিভক্ত দিনাজপুরের বলহরঘট্ট , সময়ের ব্যাবধানে আজ দ: দিনাজপুর জেলার সদর দফতর বালুরঘাটে পরিনত হয়েছে। না জানি কত ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটে গেছে এই বালুরঘাট শহরের বুকের উপর দিয়ে।তেভাগা আন্দোলন থেকে শুরু করে ভারত ছাড়ো আন্দোলন পর্যন্ত সব কিছুর উপরেই একটি অগ্রগন্য ভূমিকা পালন করেছিল এই বালুরঘাট শহরটি ।কিন্তু সেটি এখন অতিত ছারা কিছুই নয়। কিন্তুু নতুন প্রজন্ম উঠে এসেছে সেই অতিতটিকে ইতিহাসের রুপ দেওয়ার জন্য , যার জন্য ইতিমধ্যে দুটি পূৰ্ণ দৈর্ঘ্যের ছায়াছবি তৈরি হচ্ছে দক্ষিন দিনাজপুর ও বালুরঘাটের স্বাধীনতার ইতিহাস কে নিয়ে ।
সেই সময়ের বলহরঘট্ট অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষি থাকলেও GOOGLE এ বালুরঘাটের ইতিহাসের উপরে তেমন কোন তথ্যই নেই । যদিও বা সার্চ করেন ,তবে ঐতিহাসিক স্থান হিসাবে উঠে আসবে বালুরঘাটের ট্যাঙ্কমোড়ের ছবি । আপনাদের মনে হয়তো এই প্রশ্ন উঠে আসছে যে ,এই মোড়টির সাথে নিশ্চয় কোন ঐতিহাসিক ঘটনা জড়িত আছে ।
বালুরঘাটের এই মোড়টির সাথে কোন ঐতিহাসিক ঘটনা জড়িত আছে কিনা সেটা আমারো জানা নেই ,তবে যে যুদ্ধ অস্ত্র মারফত এই স্থানের নাম ট্যাঙ্ক মোড় পরেছে ,সেই ট্যাঙকটি অবশ্যই একটি বড় ঐতিহাসিক ঘটনার সাথে যুক্ত । তাহলে সেই ইতিহাসটা কি জানা যাক ।
বাংলাদেশের পরাধীনতা
দেশভাগের পর , বাংলাদেশ তখন পাকিস্থানের অধিনে ছিল ,আর তখন বাংলাদেশ পরিচীত ছিল পূৰ্ব পাকিস্থান নামে।বাংলা ভাষার উপর ভর ভিত্তি করে আর " জয় বাংলা " শ্লোগানটিকে আঁকড়ে ধরে পাকিস্থানের হাত থেকে স্বাধিনতা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ ঝাঁপিয়ে পরে , আর যার পথ প্রদর্শক ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান । বাংলাদেশ স্বাধিনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পরলেও পরাধিন রাষ্ট্র হিসাবে সেটা চালিয়ে যাওয়া মুশকিল ছিল ।
সেই সময়ের বলহরঘট্ট অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষি থাকলেও GOOGLE এ বালুরঘাটের ইতিহাসের উপরে তেমন কোন তথ্যই নেই । যদিও বা সার্চ করেন ,তবে ঐতিহাসিক স্থান হিসাবে উঠে আসবে বালুরঘাটের ট্যাঙ্কমোড়ের ছবি । আপনাদের মনে হয়তো এই প্রশ্ন উঠে আসছে যে ,এই মোড়টির সাথে নিশ্চয় কোন ঐতিহাসিক ঘটনা জড়িত আছে ।
বালুরঘাটের এই মোড়টির সাথে কোন ঐতিহাসিক ঘটনা জড়িত আছে কিনা সেটা আমারো জানা নেই ,তবে যে যুদ্ধ অস্ত্র মারফত এই স্থানের নাম ট্যাঙ্ক মোড় পরেছে ,সেই ট্যাঙকটি অবশ্যই একটি বড় ঐতিহাসিক ঘটনার সাথে যুক্ত । তাহলে সেই ইতিহাসটা কি জানা যাক ।
বাংলাদেশের পরাধীনতা
দেশভাগের পর , বাংলাদেশ তখন পাকিস্থানের অধিনে ছিল ,আর তখন বাংলাদেশ পরিচীত ছিল পূৰ্ব পাকিস্থান নামে।বাংলা ভাষার উপর ভর ভিত্তি করে আর " জয় বাংলা " শ্লোগানটিকে আঁকড়ে ধরে পাকিস্থানের হাত থেকে স্বাধিনতা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ ঝাঁপিয়ে পরে , আর যার পথ প্রদর্শক ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান । বাংলাদেশ স্বাধিনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পরলেও পরাধিন রাষ্ট্র হিসাবে সেটা চালিয়ে যাওয়া মুশকিল ছিল ।
বালুরঘাট ট্যাঙ্ক মোড় |
ভারতীয় সৈন্যের সহযোগিতা ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভ
কিন্তু একপ্রকার বোকার মত পাকিস্থান ১৯৭১ সালের ৩ ই ডিসেম্বর স্বাধীন ভারতের কিছু এয়ার বেশে অকারনে আক্রমন করে বসে । ব্যাস আর কি ভারতের রাষ্ট্রপতি ভি . ভি গিরি পাকিস্থানকে শায়েস্তা করার জন্য যুদ্ধের আদেশ দিয়ে দেন , আর এদিকে সুযোগ বুঝে এই সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালিন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রি শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধির সাথে চুক্তি করেন , ভারতীয় সৈনিকদের সহযোগিতায় তৎকালিন পূৰ্ব পাকিস্থানের মুক্তি যোদ্ধা একত্রে মিলিত হয়ে "অপারেশন চেঙ্গিস খাঁ" নামে পাকিস্থানের বিরুদ্ধে অভিযান শুর করে , আর যেই যুদ্ধটি ইতিহাসের পাতায় পরিচীত ৭১ এর যুদ্ধ হিসাবে । ভারতের পক্ষ থেকে এই যুদ্ধের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন জেনারেল মানেকশ, লেফটানেন্ট জেনারেল জগজিৎ সিং ,লেফটানেন্ট জি . জি গিরি , স্বাগত শিং প্রমুখ ', আর বাংলাদেশের মুক্তি যোদ্ধাদের প্রতিনিধিত্ব করেছিল জেনারেল মহঃ আতাউল গনি ওয়াহাবি , মেজর কে. এম সাফিউল্লা প্রমূখ । আর এই ৭১ এর যুদ্ধে ভারতের সৈন্য ও বাংলাদেশের মুক্তি যোদ্ধা একত্রে মিলিত হয়ে খুব সহজে ও খুবি অল্প সময়ে পাকিস্থানকে পরাজিত করলে ,পাকিস্থান আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয় । যার পরিণতী স্বরুপ ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পূর্ব পাকিস্থান স্বাধিন হয়ে একটি নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্ম হয় ।ট্যাঙ্কমোড়ের সাথে ঐতিহাসিক যোগসূত্ৰ
অনেকের মনে হয়ত প্রশ্ন আসতে পারে , তাহলে ৭১ এর যুদ্ধের সাথে বালুরঘাট ট্যাঙ্ক মোড়ের কি কোন সম্পর্ক রয়েছে ? এবার তাহলে এই প্রশ্নের উত্তর খুজি । বালুরঘাটের ট্যাঙ্ক মোড়ে যে ট্যাঙ্কটি রয়েছে সেটি আসলে সেই যুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছিল । যুদ্ধ শেষ হলে ভারতীয় সৈন্য সকলে ফিরে আসার সময় এই ট্যাঙ্কটি নষ্ট হয়ে পরে , আর সেই নষ্ট ট্যাঙ্কটিকেই সেই যুদ্ধের স্মৃতি হিসাবে বালুরঘাটে রেখে দেওয়া হয় । পূৰ্বে যে স্থানে ট্যাঙ্কটি ছিল , রাস্তা সম্প্রসারনের সময় সেই ট্যাঙ্কটিকে বালুরঘাটের এই মোড়ে নগরসৌন্দর্য ও সেই যুদ্ধের স্মৃতি হিসাবে স্থাপন করা হয় । পরবর্তি কালে এই ট্যাঙ্কটির উপরেই ভিত্তি করে এই এই স্থানের নাম হয়েছে ট্যাঙ্ক মোড় ।
অনেকের মনে হয়ত প্রশ্ন আসতে পারে , তাহলে ৭১ এর যুদ্ধের সাথে বালুরঘাট ট্যাঙ্ক মোড়ের কি কোন সম্পর্ক রয়েছে ? এবার তাহলে এই প্রশ্নের উত্তর খুজি । বালুরঘাটের ট্যাঙ্ক মোড়ে যে ট্যাঙ্কটি রয়েছে সেটি আসলে সেই যুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছিল । যুদ্ধ শেষ হলে ভারতীয় সৈন্য সকলে ফিরে আসার সময় এই ট্যাঙ্কটি নষ্ট হয়ে পরে , আর সেই নষ্ট ট্যাঙ্কটিকেই সেই যুদ্ধের স্মৃতি হিসাবে বালুরঘাটে রেখে দেওয়া হয় । পূৰ্বে যে স্থানে ট্যাঙ্কটি ছিল , রাস্তা সম্প্রসারনের সময় সেই ট্যাঙ্কটিকে বালুরঘাটের এই মোড়ে নগরসৌন্দর্য ও সেই যুদ্ধের স্মৃতি হিসাবে স্থাপন করা হয় । পরবর্তি কালে এই ট্যাঙ্কটির উপরেই ভিত্তি করে এই এই স্থানের নাম হয়েছে ট্যাঙ্ক মোড় ।
শনিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৯
বোল্লা কালি মেলা বিষয়ে কিছু কথা ও তার ইতিহাস। ALL ABOUT BOLLA KALI MELA
নভেম্বর ১৬, ২০১৯
কয়েকজন বন্ধু মিলে রাতারাতি আয়োজন, গতকাল শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী জনপ্রিয় বোল্লামেলা, পতিরামের বিদ্বেশ্বরি মন্দির থেকে প্রায় ৮ কিমি পশ্চিমে রয়েছে বোল্লা স্টপিজ। দক্ষিণ দিনাজপুরের বুকে যদি কোন বড় মেলার কথা বলা হয়ে থাকে, তবে সেটি বোল্লা মেলা , আর দক্ষিণ দিনাজপুরের ছেলে হিসাবে মেলাতে ভিড় জমাবো না, এমনটা হওয়ার সুযোগ খুবি অল্প, আমাদের যেমন পরিকল্পনা তেমনি কাজ, তবে বোল্লা মেলাতে যাওয়ার প্রধান উদ্দেশ্যই ছিল পুজায় ভোগ দেওয়া আর একটা পাঁঠা বলি।১০ টাই রওনা দিলাম, গাড়ি রিজার্ভ করে, বড়জোর ৩০ মিনিটের রাস্তা, কিন্তু রওনা হওয়ার পরপরই বুঝলাম সঠিক সময়ে পৌঁছানো মুশকিল কারণ মেলাটি চলবে আগামী সোমবার বিকেল পর্যন্ত, তাছাড়াও কলকাতা, শিলিগুড়ি আর না জানি পশ্চিমবঙ্গের কোন কোন জায়গা থেকে এসেছে অনেক ভক্তবৃন্দ , যার জন্য ফুলবাড়ী পর থেকেই দেখা দিল ট্রাফিক জ্যাম, ব্যাস ৩০ মিনিটের রাস্তা পার করতে সময় নিল ৩ ঘণ্টা ৩০ মিনিট, রাত তখন ১.৩০। ভক্তদের সমাগম তখনো বেড়েই চলেছে।
বোল্লা কালি, বোল্লা মন্দির, বোল্লা মেলা, বোল্লা ঠাকুর, বোল্লা মা, বোল্লা,
বোল্লা কালি মন্দির |
বোল্লা মেলার সাতকাহন
বোল্লার মোড় থেকেই দোকানের পসরা শুরু হয়েছে, গাড়ি থেকে নেমে বোল্লা মন্দিরে যেতে তেমন বেগ পেতে হয়নি, পিছনের ভিড় আপনাকে ঠেলে আপনাকে সঠিক জায়গাই পৌঁছে দেবে, এই ভিড়ের ঠেলায় একবার মনে হল এই বোল্লায় না এসে বরং আমাদের লোকাল বোল্লা মেলায় গেলে হয়ত ভালো হত, দক্ষিণ দিনাজপুরে শুধু এখানে নয়, আরো কয়েক জায়গাই বোল্লা মায়ের পূজা হয়ে থাকে, যেমন - কাটাবাড়ি, গঙ্গারামপুর আরো কয়েকটি জায়গাই, যাই হোক আমার সাথে থাকা যে সমস্ত বন্ধুরা ভোগ দেবার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল, তারা মেলার একটি দোকান থেকে কিনে নিল ভোগের বাতাসা, কদমা, সন্দেশ ইত্যাদি ইত্যাদি। বছরের বারো মাসই শুক্রবারের দিন বোল্লার পুজা হয়ে থাকে, তবে মুল পুজাটি হয় রাস পুর্নিমার পরের শুক্রবার। ভোগ কেনার পরে চলিল আরেকটি খণ্ডযুদ্ধ, মন্দিরের সামনে গিয়ে কে আগে তার ভোগ উপসর্গ করতে পারে , শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয় অন্য রাজ্য থেকেও ভক্তরা আসে ভোগ আর বলি দিতে, তাই সেই সমস্ত ভক্তদের কথা চিন্তা করে বোল্লীপুজোর কয়েকদিন বোল্লাতে অস্থায়ীভাবে ট্রেন দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে স্টপিজ ছাড়াই, তাও ধানক্ষেতের মাঝে। কোন মতে ঠেলেঠুলে পৌছালাম মন্দিরের সামনে, যারা ভোগ হিসাবে বাতাসা এনেছিল, তারা বাতাসা ছুড়ে মারছে বোল্লা কালির দিকে, উপরে তাকাতেই দেখি চারদিক থেকে ছুটে আসছে বাতাসার ঝাঁক, তবুও শত কষ্টের পরেও এই প্রথমবার বোল্লা কালির হাতে থাকা ২ কিলো ওজনের সোনার রামদা আর প্রায় ২০ কেজি ওজনের সোনা দিয়ে সাজানো বোল্লা মায়ের গয়না দেখলাম । মন্দিরের সামনে থেকে ফিরে আসতেই নাকে ভেসে এল রক্তের তাজা গন্ধ, প্রতি বছরি বোল্লা পুজায় আয়োজিত হয় পাঁঠা বলি, আর সেই পাঁঠা বলির সংখ্যা প্রতিবছরি ৫০০০ এর বেশিও ছাপিয়ে যায়। আর এত বেশী সংখ্যা হওয়ার পিছনে কারণ হল, বোল্লা মা অত্যন্ত জাগ্রত তাই বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা মানসিত কারিরা পাঁঠা বলির মানসিত করে থাকেন। ওখান থেকে বেরিয়ে আসতেই চোখে পরলো একটি ছোট মাপের পাকা করা মুসলিম কবর, আমার বুঝতে অসুবিধা হয়নি আমরা এখন মুসলিমদের কবরস্থানে রয়েছি ,যেই কবরস্থানের নাম "সম্প্রীতি" ,যে কবরস্থানটি ঠিক মন্দিরের সামনেই অবস্থিত , মেলার বেশ কিছু এলাকাও এই কবরস্থানের উপর রয়েছে, এমন হিন্দু মিলনমেলায় মুসলিমদের এমন দৃষ্টান্ত বাস্তবেই একটি সম্প্রীতির চিহ্ন তৈরি করেছে, তাই এই কবরস্থানের নাম "সম্প্রীতি"।।বোল্লা মেলার সাতকাহন।।বোল্লা মেলার ইতিহাস ।
আমাদের আয়োজন এবার শেষ, এখন বাড়ি ফিরার পালা, এর মধৌই আমাদের মধ্যে থাকা একজন জানালো, তার মানসিতের পাঁঠার এখনো বলি হয়নি, তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই তাকে বিদায় জানাতে হল, মোড়ে এসে গাড়িতে উঠে বসলাম, এই বোল্লা পুজার প্রাচীনত্ব প্রায় ৪০০ বছর। তবে এই পুজার আয়োজন ও নামকরণ দুটো আলাদা আলাদা সময়ে দুটো ভিন্ন ব্যাক্তিদের নাম শোনা যায়,।বোল্লা নামকরন ও পুজা
অনেকের মতে তৎকালিন হিন্দু রাজা বল্লভ মুখোপাধ্যায় এই স্থানে কালি পুজার প্রচলন ও স্থাপন করেন । আর এই রাজার নাম অনুসারেই এই স্থানের নামপরে যাই বোল্লা । পরবর্তী কালে স্থানের নামের উপরেই ভিত্তি করে এই কালি ঠাকুরের নাম হয় বোল্লা কালি। যাইহোক রাজা বল্লভ মুখার্জির দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এই কালি পুজাটি বড় আকার ধারন করে যখন জমিদার মুরারীমোহন চৌধুরী কোনও একটি মামলায় জড়িয়ে পড়লে তিনি রাজা বল্লভ মুখার্জি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত কালি ঠাকুরের কাছে মানত করেন, এবং তার ফল স্বরূপ তিনি সেই মামলায় জিতে যান। তারপর থেকে বোল্লার জমিদারদের পৃষ্ঠপোষকতায় এই পুজা প্রতি বছর রাসপুর্নিমার পরের শুক্রবার আড়ম্বরের সাথে আয়োজিত হতে শুরু করে। আর সেই পুজোটিই সময়ের ব্যবধানে আজকের পশ্চিমবঙ্গ প্রসিদ্ধ বোল্লা পুজায় পরিণত হয়েছে।বোল্লা কালি, বোল্লা মন্দির, বোল্লা মেলা, বোল্লা ঠাকুর, বোল্লা মা, বোল্লা,
মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৯
দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন এলাকার ইতিহাস।। DAKSHIN DINAJPUR TAPAN HISTORY
নভেম্বর ১২, ২০১৯
আজকে আমরা যে দক্ষিণ দিনাজপুরের যে তপন এলাকাটি চিনি, সেই তপন এলাকাটি, পূর্বেও এমন ছিল সেটা বলা কঠিন, বিষ্ণুপুরাণ ও মহাভারতের একটি খণ্ডে এই এলাকা বিষয়ে অনেক কিছুই বলা হয়েছে,সেই বিষয় গুলো কি সেটা বলার আগে আপনাদের তর্পন ও তপোবন এই দুটি শব্দের অর্থ কী সেটা জানতে হবে।।
অসুরাজ বান ছিলেন শৈব ও শিবের চরম উপাসক।। তিনি প্রায় এই দিঘীতে আসতেন ও শিবের উদ্দেশ্য তর্পন করতেন, কথিত আছে একবার ভগবান শিব তার তপস্যায় মুগ্ধ হয়ে বানরাজাকে বর প্রদান করেন, সুতরাং রাজাবান নিজেও তপস্যা করতেন, ঠিক একই ভাবে তার রাজ্যের মুনি ঋষিরা যাতে তপস্যা করতে পারেন তার জন্য এই তপন দীঘির পশ্চিম পারে তপস্যার জন্য একটি বিশাল বনের বা "তপোবন" নির্মান করেন।। যেখানে বর্তমানে একটি আশ্রম রয়েছে।। "তর্পন" শব্দের পাশাপাশি অনেকের মতে এই তপস্যার জন্য নির্মিত এই "তপোবন" শব্দ থেকে এই স্থানের নাম হয়েছে তপন।।
তর্পন শব্দের অর্থ
এই তর্পন শব্দটির অর্থ পৃথক পৃথক শব্দ, সংস্কৃত শব্দ তৃপ ও অনহ থেকে তৈরী হয়েছে।। এই তৃপ শব্দের অর্থ হল - তৃপ্তি প্রদান করা বা তৃপ্তি সম্পন্ন করা, আমি যদি সম্পুর্নভাবে বলি তবে "তর্পন " শব্দের অর্থ হল মৃত ব্যক্তিদের বা তাদের জলদান করে তৃপ্ত প্রদান করানোকে বোঝায় যারা বা যাদের আত্মা পৃথিবীতে নেই।।তপোবন শব্দের অর্থ
এবার আসছি "তপোবন " শব্দ নিয়ে এটিও ঠিক দুটো শব্দ নিয়ে গঠিত "তপহ" বা "তপ" আরেকটি হল বন। এই তপ শব্দের অর্থ হল তপস্যা করা। অর্থাৎ "তপোবন" শব্দের অর্থ হল যে বনে তপস্যা করা হয়।।পৌরাণিক যোগসূত্র
তপন এলাকার সাথে যে পৌরাণিক যোগসূত্র পাওয়া যায় সেটি বর্নিত আছে -বিষ্ণুপুরাণ ও শিবপুরানের রুদ্র সাংহিতায় পাওয়া যায়,যেটি সরাসরি যুক্ত গঙ্গারামপুরে অবস্থিত বানগরের পৌরাণিক কাহিনী ও এখানকার পৌরাণিক অসুর রাজা বানরাজার সাথে, তবে বানরাজার বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা হল। তিনি হলেন অসুর রাজ দানবীর বলির সন্তান। বিষ্ণুপুরাণ ও শিবপুরান মতে তিনি ছিলেন শিবের উপাসক, -একবার ভগবান শিব বানরাজার তপস্যাই খুশি হয়ে: সহস্র হাতের বরদান দেন, সেই জন্য বানরাজাকে শিবপুরান ও বিষ্ণুপুরানে "সহস্রহস্ত " বলা হয়েছে।। এছাড়াও বানরাজা একটি বিশেষ মন্দির বানিয়েছিলেন যেটি বর্তমানে গঙ্গারামপুরের শিববাড়িতে অবস্থিত বিরূপাক্ষ মন্দির।তপন দিঘি |
তপন দিঘী
তপনে পুরানের সাথে জরিত ঐতিহাসিক উপাদান টি রয়েছে সেটি কোন শিব মন্দির কিংবা কোন প্রাচীন ইমারতের কোন ধ্বংসাবশেষ না, তপনে যে ঐতিহাসিক উপাদানটি রয়েছে সেটি হল একটি বিশাল দীঘি যেটি আমাদের পজলায় পরিচিত আছে তপন দীঘি নামে।বর্তমানে এই দীঘিটি বহুদিন যাবত অবহেলায় থাকায় এই দীঘিটির জল এখন নেই বললেই চলে তবে যতটুকু স্থানে জল রয়েছে ততটুকু স্থানে চলছে মাছ চাষ।।তপন নামকরণ
পুরাণ মতে অসুর রাজ বান, ভগবান শিবের তর্পনের জন্য এই বিশাল দীঘিটি খনন করেন। অনেকের মতে বানরাজার খনন করা তর্পনের জন্য তৈরী এই দীঘিটির থেকে এই স্থানের নাম হয়েছে তপন অর্থাৎ "তর্পন " শব্দ থেকে এই স্থানের নাম হয়েছে তপন।অসুরাজ বান ছিলেন শৈব ও শিবের চরম উপাসক।। তিনি প্রায় এই দিঘীতে আসতেন ও শিবের উদ্দেশ্য তর্পন করতেন, কথিত আছে একবার ভগবান শিব তার তপস্যায় মুগ্ধ হয়ে বানরাজাকে বর প্রদান করেন, সুতরাং রাজাবান নিজেও তপস্যা করতেন, ঠিক একই ভাবে তার রাজ্যের মুনি ঋষিরা যাতে তপস্যা করতে পারেন তার জন্য এই তপন দীঘির পশ্চিম পারে তপস্যার জন্য একটি বিশাল বনের বা "তপোবন" নির্মান করেন।। যেখানে বর্তমানে একটি আশ্রম রয়েছে।। "তর্পন" শব্দের পাশাপাশি অনেকের মতে এই তপস্যার জন্য নির্মিত এই "তপোবন" শব্দ থেকে এই স্থানের নাম হয়েছে তপন।।
অন্যান্য স্থান রাধা গোবিন্দ মন্দির
সুতারং এটা বলা যায় যে, তপনে যদি আপনি ঐতিহাসিক বা পৌরাণিক কোন স্থান দেখতে চান তবে এখানে দীঘি ছারা আর কিছু নেই, যেহেতু আমি আপনাদের হোষ্ট প্লাস দোস্ত তাই আপনাদের আন্তরিক চাহিদা পুরানের জন্য -একটি মন্দিরের বিষয়ে জানাচ্ছি যেটি কোন ঐতিহাসিক মন্দির তো নয় তবে এটি দক্ষিণ দিনাজপুরে তৈরি সবথেকে বড় ও সুন্দর মন্দির যেটি এখনো সম্পূর্ণ ভাবে তৈরি হয়নি বটে কিন্তু আপনাদের আন্তরিক চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট।। তাই আপনারা যদি তপনে যান তবে এই মন্দিরটি অবশ্যই ঘুরে আসুন, তবে আমি আপনাদের রথ যাত্রার সময় এই মন্দিরে যাবার পরামর্শ দেব , কারণ এখানকার রথ যাত্রাটি বেশ বড় মাপের আয়োজিত হয় ।তপন রাধা গোবিন্দ মন্দির |
কারবালার মাঠ ও করদহ
আর এই মন্দিরের প্রবেশের আগেই একটি ছোট মাঠ দেখতে পাওয়া যায় সেটি কারবালার মাঠ নামে পরিচিত। এই মাঠটির মধ্যে একটি প্রাচীন ইমারতের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে।। এই কারবালার মাঠের একটি ঐতিহাসিক ভূমিকা রয়েছে, যেটি আমি অনেক দিন আগে পরেছিলাম,তবে এখন মনে নেই। আমি চেষ্টা করব আগামীতে সেই বিষয়ে সঠিক তথ্য জানানোর আর আপনাদের যদি সে বিষয়ে জানার থাকে তবে কমেন্ট করে জানাবেন। এছাড়া তপন থানার অন্তর্গত "করদহ" প্রদেশটি পৌরাণিক দিক দিয়ে একটি বিশেষ ঘটনার সাক্ষী হয়ে আছে। আর সেটি হল এক সময় বানগড়ের বানরাজা ভগবান শ্রী কৃষ্ণের প্রপৌত্র অনিরুদ্ধকে বন্দি করেছিলেন, তাই দ্বারকার রাজা শ্রী কৃষ্ণ তার প্রপৌত্র অনিরুদ্ধকে উদ্ধার করতে এলে, ভগবান শ্রী কৃষ্ণের সাথে বানরাজার যুদ্ধ হয়, সেই যুদ্ধে শ্রী কৃষ্ণ বানরাজার দুটি হাত রেখে বাকি সব হাত কেটে ফেলেন, পরে সেই কাটা হাতগুলো একটি বিশেষ স্থানে নিয়ে গিয়ে পুরিয়ে ফেলা হয় , যেই জায়গাটি বর্তমানে করদহ নামে পরিচিত। তাই "কর" অর্থাৎ হাত আর "দহ" শব্দের অর্থ হল পুরিয়ে ফেলা।শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৯
দক্ষিণ দিনাজপুরে পাওয়া কিছু ঐতিহাসিক উপাদান শিলালিপি ও তাম্রপট্ট । DAKSHIN DINAJPUR SOME HISTORICAL EVIDENTS
নভেম্বর ০৯, ২০১৯
আমাদের দক্ষিণ দিনাজপুরের ইতিহাস জানার পিছনে যে সমস্ত প্রত্নতান্ত্রিক নিদর্শন বেশি সাহায্য করেছে সেগুলো হলো বিভিন্ন লিখিত উপাদান বা বিভিন্ন শিলালেখ বা তামার পাতের উপর লিখিত আকারে খোদাই করা বেশ কিছু নিদর্শন (তাম্রপট্ট)। ইতিমধ্যে ঐতিহাসিকদের কাছে দক্ষিণ দিনাজপুরের ইতিহাস বিষয়ে যে সমস্ত লিখিত উপাদান রয়েছে তা সে কোন শিলালিপি হোক বা তাম্রপট্ট, তার বেশির ভাগই পাওয়া গিয়েছে গঙ্গারামপুরের বানগড় ও গঙ্গারামপুরের বিভিন্ন পার্শ্ববতী এলাকাই এছাড়া ও বিভিন্ন সময়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় বিভিন্ন স্থানে আরো কিছু লিখিত উপাদান পাওয়া গেছে সেগুলো দক্ষিণ দিনাজপুর সহ বাংলার বিভিন্ন কালের ইতিহাস বর্ননা করে। আমাদের প্রীয় জেলা দক্ষিণ দিনাজপুর বাস্তবেই ইতিহাসের দিক দিয়ে একটি বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে, আর এই ইতিহাসের বিচারে গঙ্গারামপুর ছিল এই সমস্ত ঐতিহাসিক পরিবর্তনের কেন্দ্র বিন্দু । বিভিন্ন শিলালিপি, স্তম্ভলিপি ও বিভিন্ন সময়ে প্রাপ্ত তাম্রপট্টের পাশাপাশি কিছু গ্রন্থ থেকে এই জেলার গঙ্গারামপুরের বিশেষ উৎকৃষ্ঠতার কথা জানতে পারা যায়।
যার মধ্যে প্রধান হল কবি সন্ধ্যাকর নন্দির রামচরিত, এছারাও বায়ুপুরান ও বৃহৎসংহিতা গ্রন্থে ও এই স্থানের উল্লেখ পাওয়া যায়, যা থেকে এই সময়ে গঙ্গারামপুর তথা দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রাচুর্যের কথা জানতে পাওয়া যায়। তবে এই সমস্ত গ্রন্থের পাশাপাশি যে সমস্ত শিলালেখা আমাদের জেলার ইতিহাস জানার বিষয়ে অগ্রগন্য সেগুলোর বেশ বড় অংশ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর তথা তার পার্শ্ববর্তী এলাকাই বিশেষ করে বানগর এলাকাই পাওয়া গেছে। যেমন- পালযুগের কিছু শিলালিপি ও তাম্রপট্ট, উদাহারনসরুপ পালরাজ মহিপালের তাম্রপট্ট ও পালরাজ নয়পালের শিলালিপি যেগুলো গঙ্গারামপুরের বানগড় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এছারা গৌরের কুঞ্জরাঘবনের শিলালিপি এই বানগর থেকে উদ্ধার করা হয়। এছারাও বানগর থেকে আবিষ্কৃত পালযুগের যে সকল শিলালিপি বা তাম্রপট্ট উদ্ধার হয়েছে তার মধ্যে মহিপালের তাম্রলিপি প্রধান ।
এছাড়াও তপন এলাকার কয়েকটি জায়গা থেকে কিছু শিলালিপি ও তাম্রপট্ট পাওয়া গেছে সেগুলো সঠিক ভাবে বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায় যে সেই সময় কোটিবর্ষ ছিল বাংলার অন্যতম প্রসিদ্ধ নগরী।
এই শিলালিপি থেকে জানা যায় সুলতান রুকনুউদ্দিন একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। বর্তমানে এই শিলালিপিটিকে মৌলানা আতাউদ্দিন কবরগাত্রে স্থাপন করা হয়।
গঙ্গারামপুর বানগড় |
। মহিপাল তাম্রপট্ট ।
মহিপালের এই তাম্রপট্ট থেকে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের পূর্বনাম জানতে পারা যায়, আর সেই নাম হল কোটিবর্ষ। এই তাম্রপট্টতে উল্লেখ আছে বানগর রাজ দেবিকোট নগরটি এক ব্রাম্ভনকে দান হিসাবে দিয়েছিলেন, আর এই তথ্যটি সমর্থিত করে সন্ধ্যাকর মন্দির লিখিত গ্রন্থ রামচরিত কেও।কারণ এই গ্রন্থে সন্ধ্যাকর নন্দি কোটিবর্ষ কে সম্পুর্ন ভাবে ব্রাম্ভ্রনদের আশ্রিত নগর বলেছেন।। নয়পালের শিলালেখ।
পালরাজ নয়পালের বানগড় শিলালেখ বানগড় গঙ্গারামপুর থেকে উৎখনিত হয় , এই শিলালেখাতে কিছু উল্লেখযোগ্য বৌদ্ধ মঠ ও কিছু মন্দিরের উল্লেখ্য পাওয়া যায়।। কুঞ্জরাঘবনের শিলালিপি ।
বানগড়ে আবিষ্কৃত এই শিলালিপিটি বানগড়ে উদ্ধার হওয়া কোন এক ধ্বংসপ্রাপ্ত শিব মন্দিরের স্তম্ভে ক্ষদিত ছিল, যেটি বর্তমানে বাংলাদেশে রয়েছে। যার পাঠদ্ধারের পর দক্ষিণ দিনাজপুরের একটি জটিল দিক উন্মোচিত হয়েছে। কারণ, এই শিলালিপিটি ছিল দশম শতকের এবং ঠিক রাজা মহীপাল ও রাজা নয়পালের মধ্যবর্তী সময়ের। এইখানে এই জিনিসটি মনে রাখতে হবে যে কুঞ্জরাঘবন ছিলেন গৌড়ের শাসক ও তার পাশাপাশি তিনি ছিলেন কোম্বজ বংশীয়, সুতরাং যেহেতু এই শিলালিপিটি বানগড় থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল সেহেতু অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন যে দক্ষিণ দিনাজপুর সহ বেশ কিছু এলাকা মহীপাল ও নয়পালের রাজত্বের মধ্যবর্তী সময়ে কোম্বজ বংশীয় রাজাদের হাতে চলে গিয়েছিল ।এছাড়াও তপন এলাকার কয়েকটি জায়গা থেকে কিছু শিলালিপি ও তাম্রপট্ট পাওয়া গেছে সেগুলো সঠিক ভাবে বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায় যে সেই সময় কোটিবর্ষ ছিল বাংলার অন্যতম প্রসিদ্ধ নগরী।
। মৌলানা আতাউদ্দিন শাহের শিলালিপি।
বর্তমানে এই শিলালিপিটি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাই অবস্থিত গঙ্গারামপুরের ধলদিঘীর উত্তরপারে আতা শাহের দরগার গাত্রে মোট চারটি শিলালিপি এখনো রয়েছে। যেহেতু আতা শাহ একজন সুফিসন্ত ছিলেন, তাই সহজেই বলা যায় যে, সুলতানী আনলে দেবিকোট সুফিবাদের আতুরঘরে পরিণত হয়েছিল।আতা শাহের শিলালিপি গঙ্গারামপুর |
। বৈগ্রাম তাম্রপট্ট ।
অবিভক্ত বাংলার দিনাজপুর জেলার হিলির বৈগ্রামে (বর্তমান হিলি দঃ দিনাজপুর) 1930 খ্রীঃ তৎকালিন নায়েব কৃষ্ণচন্দ্র সাহা একটি পুকুর খনন করার সময় অর্ধপ্রাকৃত ভাষায় লেখা 9" * 5" বিশিষ্ট কয়েকটি গুপ্তযুগের তামার পাত বা তাম্রপট্ট খুজে পান। এই তাম্রপট্ট থেকে জানা যায় গুপ্ত যুগে আমাদের জেলা পুন্ড্রবর্ধন নামে পরিচিত ছিল। মুলত এই তাম্রপট্টটি ছিল গুপ্ত যুগের কোন এক জমির দলিল, যেটি বর্তমানে বৈগ্রাম তাম্রপট্ট নামে পরিচিত। যেহেতু এটি ছিল একটি জমির দলিল সেহেতু এই তাম্রপট্ট থেকে সেই সময়ের জমি পদ্ধতির বিষয়ে অনেক কিছুই জানা যায়।। আমার কিছু কথা।
এই সমস্ত প্রামাণ্য থেকে এতটুকু তো পরিষ্কার যে, বাংলার ইতিহাসে আমাদের জেলার গুরুত্ব কতটা ছিল, আবার এটাও পরিষ্কার যে এখন আরো অনেক শিলালিপি ও তাম্রপট্ট রয়েছে যেগুলো আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে পারবে। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা যে সমস্ত শিলালিপি এখনো উদ্ধার হয় নি। এছাড়া এমন অনেক গ্রন্থ রয়েছে যেগুলো আমাদের জেলার ঐতিহাসিক গুরুত্ব উজাগার করেছে। আমি চেষ্টা করব খুব শিঘ্রই সেই সমস্ত গ্রন্থ ও গ্রন্থে উল্লেখিত সেই সমস্ত বিষয় সমূহ আপনাদের জানানোর।বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৯
দক্ষিণ দিনাজপুরের ইতিহাস ও বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের ঐতিহাসিক মেলবন্ধন ।
অক্টোবর ২৩, ২০১৯
বৌদ্ধ ধর্ম ও দক্ষিণ দিনাজপুর
আমাদের জেলা প্রথম থেকেই এমন ছিল, আসলে তেমন টা না, পূর্বে আমাদের জেলা পুন্ড্রবর্ধন নামের জনপদের অংশ ছিল, যার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ছিল কোটিবর্ষ , এই পুন্ড্রবর্ধন শিক্ষা ঐতিহ্য ও ধর্মের দিক দিয়ে বিশেষ মর্যাদা অর্জন করেছিল। যার মধ্যে অন্যতম হল বৌদ্ধ ধর্ম ও জৈন ধর্ম । যার প্রমান অনেক গুলো বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মগ্রন্থে পাওয়া যায়। যেমন বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ "বধি স্থাবদান কল্পলতা " এ বলা হয়েছে যে একসময় বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধ তার বানি প্রচারের জন্য পুন্ড্রবর্ধনে এসেছিলেন । এছাড়াও চিনা পর্যটক হিয়েন সাং তার গ্রন্থ " সে ইউ কি, তে আমাদের জেলার বিষয়ে উল্লেখ করেছেন, তার মতে দেবিকোট বা কোটিবর্ষ ( বর্তমান গঙ্গারামপুর বানগড় ) বৌদ্ধ ও জৈন ধর্ম চর্চার এক বিশেষ কেন্দ্র বিন্দু ছিল। এছাড়া ও মনে করা হয় এক সময়ের বিশ্ব প্রসিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় তথা বৌদ্ধ ধর্ম তথা জৈন ধর্ম চর্চাস্থল জগদ্দল বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের দক্ষিণ দিনাজপুরে অবস্থিত ছিল।
তৎকালিন পুন্ড্রবর্ধনের নগর দেবিকোট |
জৈনধর্ম ও দক্ষিণ দিনাজপুর
এটাতো গেল বৌদ্ধ ধর্ম ও দক্ষিণ দিনাজপুরের মেলবন্ধনের স্বল্পবিস্তর আলোচনা, এবার আসি জৈন ধর্ম ও দক্ষিণ দিনাজপুরের যোগসূত্র নিয়ে আলোকপাতে। গুপ্তযুগে জম্বুস্বামি নামের একজনের কথা জানতে পারা যায়, জৈনধর্ম মতে জম্বুস্বামি ছিলেন সময়ের অর্ধেক চক্রের শেষ কৈবল্ল (সর্বজ্ঞ) ছিলেন। তার কাছেই চন্দ্রগুপ্ত জৈন ধর্মের দীক্ষা নিয়েছিলেন। মনে করা হয় জাম্বুস্বামী তার জীবনের অন্তিমকালে গঙ্গারামপুরের এই এলাকা আসেন আর এখানে জৈন ধর্মের প্রচার করেন ও দেহ ত্যাগ করেন, আর সেই সময় গঙ্গারামপুর পুন্ডবর্ধন নামে পরিচিত ছিল।অনান্য বিষয়
1942 সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের খননকার্যে উঠে এসেছে এমন তথ্য যেগুলো পর্যালোচনার পর জানা যায় যে পূর্বে আমাদের জেলাই বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের প্রসার ঘটে, উদাহরণ স্বরূপ গঙ্গারামপুরের আতাশাহের দরগা থেকে পদ্মফুলের ভাস্কর্য উঠে আসায় মনে করা হয় যে এটি পূর্বে কোন এক বৌদ্ধ মঠ ছিল, এছাড়াও জগদ্দল বিশ্ববিদ্যালয়ে (দেবীকোট) ভিক্ষুনী মেখলা, অদ্বয়বস্ত, উধিলিপা প্রমুখ তপস্বী ও পণ্ডিতবৃন্দ থাকতেন এছাড়া ও কৌটিল্যের অর্থশান্তেও পুণ্ডুবর্ধনের উল্লেখ একটি জৈন ধর্মের কেন্দ্র হিসাবে উল্লেখ পাওয়া যায় আবার অন্যদিকে জম্বুস্বামি ছিলেন যার কবর এখন গঙ্গারামপুরের নিতপুরে রয়েছে তিনি ছিলেন ধর্মগ্রন্থ দ্বাদশ অঙ্গের রচয়িতা।নিতপুর, গঙ্গারামপুর |
ঐতিহ্যের অবসান
এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে,তাহলে আমাদের জেলার সেই ঐতিহ্য নেই কেন, তার কারণ হন ১২০২ খ্রীষ্টাব্দে বখতিয়ার খিলজীর আক্রমণ ও তার পৈশাচিক ও নারকীয় হত্যা লিলা , এবং তার আদেশেই ধ্বংস করে দেওয়া হয় দক্ষিণ দিনাজপুরের বিশ্ব প্রসিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় জগদ্দল , পুন্ড্রবর্ধনের বেশির ভাগ বৌদ্ধ মঠ ও জৈন স্থাপত্য গুলি তিনি ধংস্ব করে দেন। যার জন্য বেশিরভাগ বৌদ্ধ পণ্ডিত তাদের প্রান বাচিয়ে তিব্বতে চলে যান। যার জন্য আমাদের জেলার যে গর্ব সেটি ধিরে ঘিরে হারিয়ে যায়।
মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৯
কোচবিহার রাজবাড়ী অন্দরমহল ও ইতিহাস ।। COOCHBIHAR RAJBARI AND ITS HISTORY.
অক্টোবর ২২, ২০১৯
রাজারানির কাহিনী আর কিংবদন্তি আমরা ছোট থেকেই শুনে আসছি, সেটা কখনো ঠাকুমার ঝুলি হিসাবে, আর কখন ইতিহাসের পরা হিসাবে । রাজা রানিদের গল্প শুনতে তো বেশ ভালোই লাগে, কিন্ত ইতিহাস হিসাবে মনে রাখতে খুব বিরক্তিকর লাগে। কিন্তু আবার হিন্দি ফিল্মে ঐতিহাসিক রাজাদের উত্থান পতন দেখলে প্রান জুরে যাই। ঠিক এমনি মনরোন্ঞ্জন পুর্ন কাহিনী রয়েছে কোচবিহারের রাজবাড়ীর আর রাজপরিবারের। মুলত একটি জাতি (মেচিয়া) বা কোচ জাতিকে জি আই টেগ হিসাবে ধরে নিয়ে, উত্তরবঙ্গের শেষ জেলার নাম হয়েছে কোচবিহার। আর এই কোচবিহার জেলার প্রধান আকর্ষণি হল কোচবিহার রাজবাড়ীটি , এই কোচবিহার রাজবাড়ীটি ছাড়াও আরো অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন রয়েছে, তবে সেগুলোর বেশির ভাগই কোচ রাজাদের শাসন কালো তৈরি।
যেহেতু আমি এই পর্বে শুধুমাত্র কোচবিহার রাজবাড়ীর বিশয়ে আলোচনা করতে চাইছি, তাই , রাজপরিবারের উত্থান পতন নিয়ে তেমন আলোচনা করব না, কিন্তু যেগুলো এই কোচবিহার রাজবাড়ীর আলোচনার জন্য প্রাথমিক শুধুমাত্র সেগুলো প্রথমে জেনে নেওয়া যাক ।
মোট বারোটি গোষ্ঠী নিজেদের শক্তি বাড়ানোর জন্য প্রায়শই একে অপরের উপর আঘাত হানত । এই বারোটি গোষ্ঠীকেই বারভূঞা বলে ডাকা হত। অন্যদিকে কামরুপ রাজ্য ভেঙ্গে গেলে বারভূঞা রাজ্য ও কমতা রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয় । আর, এমন পরিস্থিতিতে পরবর্তী কালে সেই সময়ের কোচ (মেচ) জনগোষ্ঠীর নেতা হাড়িয়া মণ্ডলের সন্তান বিশু বিভিন্ন জনগোষ্ঠীকে একত্রিত করে আর বারভূঞাদের পরাজয় ঘটিয়ে সমগ্র কমতা রাজ্যের শাসন নিজের হাতে নিয়ে নেন ও বিশ্ব সিংহ উপাধি নিয়ে কোচ রাজ্য তৈরি করেন , এবং বংশপরম্পরাই ভাবে নারায়ন যুক্ত নাম নিয়ে রাজত্ব করতে থাকে। আর এই কোচ বংশের রাজা মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ ১৮৮৭ সালে লন্ডনের বাকিংহাম পেলেসের আদলে এই কোচবিহার রাজবাড়িটি তৈরি হয়েছিল৷
কোচবিহার রাজবাড়ী coochbihar rajbari |
কোচ রাজত্ব
পাল বংশের শেষ রাজা দেবপাল মারা গেলে কামরুপ রাজ্য সহ বাংলাই বিচ্ছিন্ন বাদি কিছু গোষ্ঠী তাদের মাথা চাড়া দিয়ে উঠে আর কয়েকটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে ভাগ হয়ে পরে।মোট বারোটি গোষ্ঠী নিজেদের শক্তি বাড়ানোর জন্য প্রায়শই একে অপরের উপর আঘাত হানত । এই বারোটি গোষ্ঠীকেই বারভূঞা বলে ডাকা হত। অন্যদিকে কামরুপ রাজ্য ভেঙ্গে গেলে বারভূঞা রাজ্য ও কমতা রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয় । আর, এমন পরিস্থিতিতে পরবর্তী কালে সেই সময়ের কোচ (মেচ) জনগোষ্ঠীর নেতা হাড়িয়া মণ্ডলের সন্তান বিশু বিভিন্ন জনগোষ্ঠীকে একত্রিত করে আর বারভূঞাদের পরাজয় ঘটিয়ে সমগ্র কমতা রাজ্যের শাসন নিজের হাতে নিয়ে নেন ও বিশ্ব সিংহ উপাধি নিয়ে কোচ রাজ্য তৈরি করেন , এবং বংশপরম্পরাই ভাবে নারায়ন যুক্ত নাম নিয়ে রাজত্ব করতে থাকে। আর এই কোচ বংশের রাজা মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ ১৮৮৭ সালে লন্ডনের বাকিংহাম পেলেসের আদলে এই কোচবিহার রাজবাড়িটি তৈরি হয়েছিল৷
রাজবাড়ীর বিষয়ে কিছু তথ্য।
লন্ডনের বাকিংহাম প্রাসাদের আদলে এই কোচবিহার রাজবাড়িটি তৈরি করার জন্য মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণকে বহু অর্থ খরচ করতে হয়েছে, মুলত সেই সময়ের বিখ্যাত আর্কিটেক্ট কোম্পানি মার্টিন এন্ড বার্ন এই সুন্দর কোচবিহার রাজমহল মোট ৫১,৩০৯ বর্গফুট এলাকার উপর তৈরি করে । যদিও এই শিল্পকর্মে ইংরেজরা সাহায্য করেছিল, এই জন্য এই শিল্পকর্মে সম্পুর্ণভাবে ক্যাসিক্যাল ওয়েস্টার্ন শৈলীর দেখা মেলে। এমনকি রাজমহলের অন্দর সজ্জা জন্য বিভিন্ন আসবাবপত্র বিদেশ থেকে আনা হয়েছিল, যার বেশির ভাগ আসবাবপত্র এর অন্দরমহলে দর্শনার্থীদের দেখার জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে। এই সুন্দর কোচবিহার রাজবাড়ীটি প্রায় ৩৯৫ ফুট লম্বা ও ২৯৬ ফুট চওড়া। শুরুর প্রথম দিকে কোচবিহারের এই রাজবাড়ির নাম ছিল ভিক্টর জুবিলি প্যালেস , কিন্তু পরবর্তী কালে জনসাধারণের কৃপাই এটি এখন পরিচিত কোচবিহার শহরের একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থান কোচবিহার রাজবাড়ী হিসাবে।অন্যান্য তথ্য
মহারাজা বীর রাজেন্দ্র নারায়ন এই রাজবাড়ীটিকে সরকারের হাতে তুলে দিয়েছেন । বর্তমানে রাজপরিবারের সকল সদস্যরাই লন্ডনে বসবাস করছেন যেমন মহারাজা রাজেন্দ্র নারায়নের সন্তান মহারাজা ইন্দ্রজিৎ নারায়ন । এই রাজবাড়ীটিতে ছোট বড় রুম মিলে প্রায় ৫০ টি রুম রয়েছে যার মধ্যে রয়েছে ডাইনিং রুম, ড্রেসিং রুম, বেডরুম , লাইব্রেরী, লেডিজ গ্যালারি ইত্যাদি। বর্তমানে এটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দখলে দেখাশোনাই রয়েছে, আর দর্শনার্থীদের দেখার জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে, তাই আপনি চাইলে এই সুন্দর কোচবিহার রাজবাড়ীটিকে দেখা আসতে পারেন। তবে সেটার জন্য আপনাকে কোচবিহার যেতে হবে।সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৯
বিদ্বেশ্বরী মন্দির পতিরাম দক্ষিণ দিনাজপুর পৌরাণিক কাহিনী ।। DAKSHIN DINAJPUR PATIRAM BIDDESWARY TEMPLE HISTORY .
অক্টোবর ২১, ২০১৯
আমি এর আগে অনেক বলেছি আজ আবার বলছি আমি বড্ড ভ্রমণ পিপাসু তবে আমার পছেন্দর জায়গা কোনো পাহাড় ,পর্বত, নই কিংবা সমুদ্র নই আমার প্রিয় ভ্রমণ ডেস্টিনেশের হল পবিত্র জায়গাগুলি তা সে মন্দির হোক মসজিদ হোক কিংবা বৌদ্ধমঠ। আমি এই সমস্ত জায়গায় আদ্ধাত্তিক শান্তি
খুজেঁ পায় তবে আমি নিজে জন্মগত খ্রীষ্টান। তার উপর সেই পবিত্র স্থান গুলি যদি ঐতিহাসিক কিংবা পৌরাণিক ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকে তবে তো সোনাই সোহাগা । তাই আজ আপনাদের এমন জায়গার বিষয়ে বলবো যেটি আমাদের প্রিয় জেলা দক্ষিণ দিনাজপুরের পতিরামে অবস্থিত। বালুঘাট শহর থেকে 13কিলোমিটার উত্তর দিকে গেলে পাওয়া যাবে এই স্থানটি, আর পতিরাম চৌ রাস্তা মোড়ে পাশে বেটে গেলেই এই স্থানটি দেখতে পাবেন আর এই পবিত্র স্থানটি আর এই পবিত্র স্থানের নাম হলো পতিরাম
বিদ্বেশ্বরী মন্দির ( দক্ষিণ দিনাজপুর ) ।
যার ফলে ব্রম্ভার বানানো এই সুন্দর পৃথিবীতে প্রলয় আসতে শুরু করে তাই বাধ্য হয়ে বিষ্ণুর কাছে ব্রম্ভা তার সৃষ্টিকে বাঁচানোর জন্য অনুরোধ করে, অবস্থা বেগতিক দেখে বিষ্ণু তার সুদর্শন চক্র দ্বারা সতির শরির অনেকগুলো খন্ডে বিভক্ত করেন ,আর যে খন্ডগুলি ভারতের বিভিন্ন স্থানে ছরিয়ে পরে সেই সমস্ত জায়গায় একটি করে পীঠস্থান বা শক্তিপীঠ বা শক্তিস্থল গড়ে উঠে। মনে করা হয় সতির শরিরের একটি খন্ড পতিরামের এই স্থানে এসে পরে, সুতরাং বলা যায় যে পতিরামের এই বিদ্বেশরী মন্দিরটি ( দক্ষিণ দিনাজপুর ) হল সেই সমস্ত শক্তিপীঠের মধ্যে একটি শক্তিস্থল।
সাধারণত ৫১ টি শক্তিস্থলের কথা বলা হলেও বিভিন্ন শাস্ত্র আর পুরাণে বিভিন্ন রকম বলা হয়েছে। যেমন পীঠনির্নয় গ্রন্থে ৫১ টি শক্তিপীঠের কথা বলা হয়েছে, আবার একি ভাবেই শীবচরিতম ও শীবপুরাণে ৫১ টি শক্তিস্থলের পাশাপাশি আরো ২৬ টি উপপীঠের কথা বলা হয়েছে, আবার অন্য দিকে আরো কয়েকটি গ্রন্থে যেমন কব্জিকাতন্ত্র গ্রন্থে ৪২ টি পীঠের কথা বলা হয়েছে। সত্য যাই হোক, যদি এই পতিরাম বিদ্বেশরী মন্দিরের ( দক্ষিণ দিনাজপুর ) সঠিক প্রচার করা যায় তবে এই পতিরাম বিদ্বেশরী মন্দিরটি ( দক্ষিণ দিনাজপুর ) ভারতের বুকে একটি বিশেষ জায়গা করে নিতে পারত।
মন্দিরের ভিতরে লাল পাড় যুক্ত সাদা শাড়ি দিয়ে ঢাকা একটি স্থান বা থান দেখতে পাবেন। মনে করা এই স্থানটিই সতির খণ্ডিত হওয়া শরিরের অংশ। তাই পতিরাম বিদ্বেশ্বরী মন্দিরে ( দক্ষিণ দিনাজপুর ) ভক্তের সমাগম লেগেই থাকে।
এটা আমার ছোটো প্রচেষ্টা দক্ষিণ দিনাজপুরের ইতিহাস তুলে ধরার আমি এমনি তথ্য আরো দিতে চাই তাই আপনারা আমার এই ,,Website টিকে ফলো করে উৎসাহিত করবেন। এছাড়া দক্ষিণ দিনাজপুরের ইতিহাস জানার জন্য আমার ইউটিউব চেনেল UNIQUE KNOWLEDGE BANGLA কে সাব্সক্রাইব করুন।
Ever such a nice boy
SUMANTA HEMBROM
খুজেঁ পায় তবে আমি নিজে জন্মগত খ্রীষ্টান। তার উপর সেই পবিত্র স্থান গুলি যদি ঐতিহাসিক কিংবা পৌরাণিক ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকে তবে তো সোনাই সোহাগা । তাই আজ আপনাদের এমন জায়গার বিষয়ে বলবো যেটি আমাদের প্রিয় জেলা দক্ষিণ দিনাজপুরের পতিরামে অবস্থিত। বালুঘাট শহর থেকে 13কিলোমিটার উত্তর দিকে গেলে পাওয়া যাবে এই স্থানটি, আর পতিরাম চৌ রাস্তা মোড়ে পাশে বেটে গেলেই এই স্থানটি দেখতে পাবেন আর এই পবিত্র স্থানটি আর এই পবিত্র স্থানের নাম হলো পতিরাম
বিদ্বেশ্বরী মন্দির ( দক্ষিণ দিনাজপুর ) ।
পৌরাণিক কাহিনী
এবার আসি এই পতিরাম বিদ্বেশ্বরী মন্দিরের ( দক্ষিণ দিনাজপুর ) সঙ্গে পৌরাণিক কোনো ঘটনাই যোগসূত্র আছে মূলত এই ঘটনাটি শিবপুরাণ, চন্ডিকাপুরানে, সম্পুর্ণ ভাবে লিখিত আছে ।পুরাণ মতে শিবের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য রাক্ষস রাজা বৃহস্পতি নামে এক যঙ্গের আয়োজন করে আর এই সঙ্গে শিব বা মহাদেব ও তার পত্নি পার্বতী কে আমন্ত্রন করা হয়নি তবুও শীবের পত্নি পার্বতী, মহাদেবের অন্যান্য ভক্তদের সাথে সেই যঙ্গে উপস্থিত হয়। আমন্ত্রিত না হওয়ার পরেও সতি পার্বতী সেই যঙ্গে উপস্থিত হলে রাক্ষস রাজা শিবের প্রতি যে রাগ সেইটি পূরণ করার জন্য সতিকে চরমভাবে অপমান করে , আর এই চরম অপমানে সতি পার্বতী সহ্য না করতে পেরে আত্মহত্যা করেন , আর এই বিষয়ে শিব অবগত হলে সমস্ত যঙ্গঅনুষ্ঠান পন্ড করে দেন , তারপর সতির মৃত দেহ কাঁধে নিয়ে গোটা পৃথিবী জুড়ে প্রলয় নৃত্য শুরু করেন।বিদ্বেশ্বরী মন্দির পতিরাম দক্ষিণ দিনাজপুর |
এমনি কয়েকটি শক্তিস্থল হল কামরূপ, বক্রেশ্বর, যেগুলি সঠিক প্রচারের জন্য ভারতের অন্যতম ধর্মীয়স্থানে পরিণত হয়েছে।
শক্তিপীঠের সংখ্যা
মন্দিরের অন্দরমহল
আপনারা যদি পতিরামের এই বিদ্বেশ্বরী মন্দিরে ( দক্ষিণ দিনাজপুর ) যান তবে মন্দিরের ভিতরে কোনো কালি ঠাকুরের মূর্তি দেখতে পাবেন না বরংমন্দিরের ভিতরে লাল পাড় যুক্ত সাদা শাড়ি দিয়ে ঢাকা একটি স্থান বা থান দেখতে পাবেন। মনে করা এই স্থানটিই সতির খণ্ডিত হওয়া শরিরের অংশ। তাই পতিরাম বিদ্বেশ্বরী মন্দিরে ( দক্ষিণ দিনাজপুর ) ভক্তের সমাগম লেগেই থাকে।
এটা আমার ছোটো প্রচেষ্টা দক্ষিণ দিনাজপুরের ইতিহাস তুলে ধরার আমি এমনি তথ্য আরো দিতে চাই তাই আপনারা আমার এই ,,Website টিকে ফলো করে উৎসাহিত করবেন। এছাড়া দক্ষিণ দিনাজপুরের ইতিহাস জানার জন্য আমার ইউটিউব চেনেল UNIQUE KNOWLEDGE BANGLA কে সাব্সক্রাইব করুন।
Ever such a nice boy
SUMANTA HEMBROM
রবিবার, ২০ অক্টোবর, ২০১৯
দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগন্জ দালানতলি এলাকার নদিগ্রাম ঐতিহাসিক ইমারত ধ্বংসের মুখে
অক্টোবর ২০, ২০১৯
দক্ষিণ দিনাজপুরের ইতিহাস নিয়ে যত বেশী বলা যাবে ঠিক ততটাই কম হয় আর মজার বিষয়টা হল প্রশাসন এই বিষয়ে একটু হলেও উদাসিন এমনকি প্রাচীন কালের ধংসাবশেষ গুলো কোথাই আছে আর কী অবস্থায় আছে সে বিষয়ে কোনো হেলদোল নেই যে সমস্ত ঐতিহাসিক স্থান গুলো কিছুটা পরিচিত লাভ করেছে শুধুমাত্র সেই গুলো প্রশসন রক্ষা করতে কিছুটা এগিয়ে এসেছে যেমন বানগড় ,মহিপালের নীলকুঠি, এছাড়া আরো কয়েকটি ঐতিহাসিক স্থান ও ধংসাবশেষ। কিন্তু সেই সমস্ত ঐতিহাসিক স্থান বা ধংসাবশেষের কী যেগুলো পরিচিতি পাইনি, বা মানুষের কাছে সম্পুর্ণভাবে অজানা। সেগুলো সম্পুর্ণভাবে অজত্নের জন্য ধংস হয়ে যাচ্ছে আর না বল্লে নই এর মধ্যেই অনেক প্রাচীন মন্দির কিংবা দরগা, বা মসজিদ ইতিমধ্যেই ধংস হয়ে গেছে আর দ্বিতীয় মজার বিষয়টি হলো প্রসাষণিক ভাবে দক্ষিণ দিনাজপুরের বিভিন্ন জায়গাই ইতিহাস তুলেধরার কোন পরিকল্পনাই নেই যার জন্য সেই সমস্ত স্থানের লুকায়িত তথ্য ইতিহাস ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। যার মধ্যে প্রধান কয়েকটি স্থান হল পতিরামে নাজিরপুর, বোটুল গ্রাম, হরিরামপুরের বৈরাষ্ঠা, কুষামন্ডির করঞি গ্রাম, হিলির বৈ গ্রাম, আরো বহু জায়গা আছে যেখানে খনন কার্যের প্রয়োজন আছে "ঠিক এমনি একটি প্রাচীন নিদর্শন রয়েছে পতিরাম মৌজার দালানতলিতে বা নদিগ্রামে।
দালানতলির এই ধংসাবশেষ টি বেশ বড় আকারের আর বটগাছ ও পাকুর গাছের আচ্ছাদনে সম্পুর্ণভাবে ঘিরে ধরেছে আর সেই গাছের কারণে এই দালানতালির এই প্রত্নতান্ত্রিক নিদর্শনটি ধংস্ব হওয়ার মুখে। প্রথম প্রথম আমিও দেশে অবাক হয়েছিলাম এই প্রান্তিক গ্রামে পরে থাকা এই ইমারত টিকে দেখে ,কারণ এই প্রাচীন ইমারতের বিষয়ে আমার কাছে কোনো সঠিক তথ্য ছিল না, আর এই নিদর্শনটি প্রমান করে দিল যে একসময় আমাদের এই জেলা দক্ষিণ দিনাজপুর কতটা উন্নত ছিল আর পাশাপাশি এটাও বুঝতে পারলাম আমাদের এই জেলার না জানি কতগুলো প্রত্নতান্ত্রিক নিদর্শন রয়েছে যেগুলো, মানুষেরতো বটেই প্রশাষনের কাছেও অজানা। বরাবারি আমি ভ্রমণ পিপাসু তাই পথ চলতি আমি এই প্রাচীন ইমারতটি উদ্ধার করি যার জন্য আমার কাছে এই প্রাচীন ইতিহাসিক ইমারতটির রিষয়ে তেমন কোনো তথ্য বা ধারণা নেই।
যখন ঘুরতে ঘুরতে এই নিদর্শনটি দেখতে পাই তখন একপ্রকার সময় নষ্ট না করে আামি এর ভিতরে ঢুকার জন্য তৎপর হয়ে পরি, যদিও ফিরে এসে আমি এই ঐতিহাসিক ইমারত বিষয়ে জানার জন্য ইন্টারনেটের সাহায্য নিয়েছিলাম কিন্তু এই বিষয়ে কোনো তথ্যই পেলাম না যদিও আমি এখানকার গ্রামের কিছু লোকদের কাছে এই প্রাচীন ইমারতের বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম তবে তারাও এই বিষয়ে সঠিক কোনো তথ্য দিতে পারলো না । গ্রামবাসীদের মতে এটি একটি মন্দির ছিল আর কিছু কিছু গ্রামবাসিদের মতে এটি কোন এক মসজিদ ছিল আর প্রাচীনত্বের বিষয়ে তাদের স্পষ্ট কোন ধারণা নেই, আর তার কারণ হিসাবে তারা বলেন তাদের আসার বহু আগে থেকেই এই প্রাচীন ইমারতটি এখানে রয়েছে। কার বক্তব্য কতটা সঠিক সেটা জানার জন্য আমি এই ইমারতটির ভিতরে প্রবেশ করি। তখন দেখতে পাই ছাদের বেশ বড় অংশ ভেঙ্গে পরেছে আর তার মধ্যে থেকে গাছের শিকরগুলো ঝুলে রয়েছে, আর আমার যে অনুভূতি হচ্ছিল সেটা বলার ভাষা আমার কাছে নেই।
এবার আসি আমার অভিজ্ঞতা থেকে পাওয়া কিছু ধারণা। এর আগে আমি দক্ষিণ দিনাজপুরের যতগুলো ঐতিহাসিক স্থান ঘুরেছি, এটি তার মধ্যে থেকে সম্পুর্ণভাবে আলাদা, তার কারণ হল এর আগে আমি যতগুলো ঐতিহাসিক ইমারত দেখেছি তার সবগুলোতেই টেরাকোটার কাজ অবশ্যই ছিল, কিন্তু এই ইমারত সেটি নেই, তবুও এটি যদি কোন মন্দির হয়ে থাকে তবে এর প্রাচীনত্ব 800 বছরের বেশী হওয়া উচিত, কারণ, 1204 খ্রীষ্টাব্দের পর থেকে আমাদের জেলাই মুসলিম শাষনের শুরু হয়, আর বাস্তবেই যদি এটি কোন মন্দির হয়ে থাকে তবে এর গায়ে অবশ্যই টেরাকোটার শিল্প থাকতো, সুতরাং এটি মন্দির হওয়ার সুযোগ খুব একটা নেই। আর যদি এই ইমারতটি কোন মসজিদ হয়ে থাকে তবে বল্ব ঐতিহাসিক কালে যে পরিকল্পনার দ্বারা মসজিদ বানানো হত, তার একটুও আমি এই ইমারতের মধ্যে লক্ষ্য করেনি, সুতরাং মসজিদ হওয়ার সুযোগটাও কম, তাহলে আমার মতে এটি কোন সুফি সন্তদের প্রচার স্থান হতে পারে। কারণ হিসাবে বলা যায়, 1204 খ্রীষ্টাব্দের পরবর্তী কালে ধর্মক্ষেত্রে এক অপূর্ব পরিবর্তন আসে যেটি সুফিবাদ নামে পরিচিত, ঠিক এমনি এক সুফিসন্ত আতা শাহের দরগা গঙ্গারামপুরের ধলদিঘীতে রয়েছে। আর বাংলাই মুসলিম রাজত্ব শুরু হলে সুফি সন্তরা খুব সহজেই তাদের মতবাদটি প্রচারের সুযোগ খুব ভালোভাবে পেয়ে যায়,।
সবশেষে আমি যেটা বলতে চাই সেটি হল, উপরি উক্ত যা কিছু বলেছি সেগুলো আমার ধারণা মাত্র, সত্য অন্যকিছু ও হতে পারে। তবে যেটা সত্য সেটা হল দক্ষিণ দিনাজপুরের এমন অনেক প্রাচীন ইমারত আছে যেগুলো রক্ষা করার দরকার, কারণ এগুলো সব আমাদের জেলার প্রাচীন ঐতিহ্য।
Ever such a nice boy SUMANTA HEMBROM,
কুমারগন্জ দালানতলি নদিগ্রাম ঐতিহাসিক ইমারত |
দালানতলির এই ধংসাবশেষ টি বেশ বড় আকারের আর বটগাছ ও পাকুর গাছের আচ্ছাদনে সম্পুর্ণভাবে ঘিরে ধরেছে আর সেই গাছের কারণে এই দালানতালির এই প্রত্নতান্ত্রিক নিদর্শনটি ধংস্ব হওয়ার মুখে। প্রথম প্রথম আমিও দেশে অবাক হয়েছিলাম এই প্রান্তিক গ্রামে পরে থাকা এই ইমারত টিকে দেখে ,কারণ এই প্রাচীন ইমারতের বিষয়ে আমার কাছে কোনো সঠিক তথ্য ছিল না, আর এই নিদর্শনটি প্রমান করে দিল যে একসময় আমাদের এই জেলা দক্ষিণ দিনাজপুর কতটা উন্নত ছিল আর পাশাপাশি এটাও বুঝতে পারলাম আমাদের এই জেলার না জানি কতগুলো প্রত্নতান্ত্রিক নিদর্শন রয়েছে যেগুলো, মানুষেরতো বটেই প্রশাষনের কাছেও অজানা। বরাবারি আমি ভ্রমণ পিপাসু তাই পথ চলতি আমি এই প্রাচীন ইমারতটি উদ্ধার করি যার জন্য আমার কাছে এই প্রাচীন ইতিহাসিক ইমারতটির রিষয়ে তেমন কোনো তথ্য বা ধারণা নেই।
|
যখন ঘুরতে ঘুরতে এই নিদর্শনটি দেখতে পাই তখন একপ্রকার সময় নষ্ট না করে আামি এর ভিতরে ঢুকার জন্য তৎপর হয়ে পরি, যদিও ফিরে এসে আমি এই ঐতিহাসিক ইমারত বিষয়ে জানার জন্য ইন্টারনেটের সাহায্য নিয়েছিলাম কিন্তু এই বিষয়ে কোনো তথ্যই পেলাম না যদিও আমি এখানকার গ্রামের কিছু লোকদের কাছে এই প্রাচীন ইমারতের বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম তবে তারাও এই বিষয়ে সঠিক কোনো তথ্য দিতে পারলো না । গ্রামবাসীদের মতে এটি একটি মন্দির ছিল আর কিছু কিছু গ্রামবাসিদের মতে এটি কোন এক মসজিদ ছিল আর প্রাচীনত্বের বিষয়ে তাদের স্পষ্ট কোন ধারণা নেই, আর তার কারণ হিসাবে তারা বলেন তাদের আসার বহু আগে থেকেই এই প্রাচীন ইমারতটি এখানে রয়েছে। কার বক্তব্য কতটা সঠিক সেটা জানার জন্য আমি এই ইমারতটির ভিতরে প্রবেশ করি। তখন দেখতে পাই ছাদের বেশ বড় অংশ ভেঙ্গে পরেছে আর তার মধ্যে থেকে গাছের শিকরগুলো ঝুলে রয়েছে, আর আমার যে অনুভূতি হচ্ছিল সেটা বলার ভাষা আমার কাছে নেই।
এবার আসি আমার অভিজ্ঞতা থেকে পাওয়া কিছু ধারণা। এর আগে আমি দক্ষিণ দিনাজপুরের যতগুলো ঐতিহাসিক স্থান ঘুরেছি, এটি তার মধ্যে থেকে সম্পুর্ণভাবে আলাদা, তার কারণ হল এর আগে আমি যতগুলো ঐতিহাসিক ইমারত দেখেছি তার সবগুলোতেই টেরাকোটার কাজ অবশ্যই ছিল, কিন্তু এই ইমারত সেটি নেই, তবুও এটি যদি কোন মন্দির হয়ে থাকে তবে এর প্রাচীনত্ব 800 বছরের বেশী হওয়া উচিত, কারণ, 1204 খ্রীষ্টাব্দের পর থেকে আমাদের জেলাই মুসলিম শাষনের শুরু হয়, আর বাস্তবেই যদি এটি কোন মন্দির হয়ে থাকে তবে এর গায়ে অবশ্যই টেরাকোটার শিল্প থাকতো, সুতরাং এটি মন্দির হওয়ার সুযোগ খুব একটা নেই। আর যদি এই ইমারতটি কোন মসজিদ হয়ে থাকে তবে বল্ব ঐতিহাসিক কালে যে পরিকল্পনার দ্বারা মসজিদ বানানো হত, তার একটুও আমি এই ইমারতের মধ্যে লক্ষ্য করেনি, সুতরাং মসজিদ হওয়ার সুযোগটাও কম, তাহলে আমার মতে এটি কোন সুফি সন্তদের প্রচার স্থান হতে পারে। কারণ হিসাবে বলা যায়, 1204 খ্রীষ্টাব্দের পরবর্তী কালে ধর্মক্ষেত্রে এক অপূর্ব পরিবর্তন আসে যেটি সুফিবাদ নামে পরিচিত, ঠিক এমনি এক সুফিসন্ত আতা শাহের দরগা গঙ্গারামপুরের ধলদিঘীতে রয়েছে। আর বাংলাই মুসলিম রাজত্ব শুরু হলে সুফি সন্তরা খুব সহজেই তাদের মতবাদটি প্রচারের সুযোগ খুব ভালোভাবে পেয়ে যায়,।
সবশেষে আমি যেটা বলতে চাই সেটি হল, উপরি উক্ত যা কিছু বলেছি সেগুলো আমার ধারণা মাত্র, সত্য অন্যকিছু ও হতে পারে। তবে যেটা সত্য সেটা হল দক্ষিণ দিনাজপুরের এমন অনেক প্রাচীন ইমারত আছে যেগুলো রক্ষা করার দরকার, কারণ এগুলো সব আমাদের জেলার প্রাচীন ঐতিহ্য।
Ever such a nice boy SUMANTA HEMBROM,
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)